সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পড়ছিলাম সেলিনার (ছদ্মনাম) গল্প। সংসারে বছরের পর বছর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করেছিলেন তিনি। একপর্যায়ে স্বামীর কাছ থেকে দুই সন্তান নিয়ে আলাদা হয়ে যান। সে ঘটনা বছর দশেক আগের। কিন্তু এই এক দশক তিনি নীরবে নিজের সংগ্রাম চালিয়ে যান এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তারপর জীবনের গল্প বলার উপলক্ষ হিসেবে বেছে নেন সন্তানের এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করার দিনটিকে।
ব্যক্তিগতভাবে সেলিনার সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ তৈরি হলো। যোগাযোগ করলাম। জানতে চাইলাম, এত দিন পরে কেন জানালেন তাঁর কষ্টের কথাগুলো। সেলিনা (ছদ্মনাম) জানালেন, তিনি অপেক্ষা করছিলেন নিজের ও সন্তানের সাফল্যের জন্য। এসএসসির ফল প্রকাশের ঠিক দুই দিন আগে নিজের একটি শোরুম উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। তার আগে অনলাইনে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘ সময়।
মাত্র কয়েক দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে এসে আত্মহত্যা করেন রেমি নামের একটি মেয়ে। জীবনের শেষ মুহূর্তে তাঁর বলে যাওয়া কথা অনেকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আত্মহত্যা অবশ্যই কোনো সমাধান নয়। তবে আত্মহত্যা মানুষ করে। ভীষণ কষ্ট আর অভিমান বুকে নিয়েই মানুষ সে কাজটি করতে বাধ্য হয়। রেমির বুকে চেপে রাখা কষ্টগুলো তাঁকে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা দিতে পারেনি সেলিনার মতো।
বিভিন্ন কারণে প্রতিনিয়ত মানুষের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলেছে। শারীরিক ও মানসিক আঘাত তো বটেই, একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব ধ্বংস ও মর্যাদা অস্বীকার করাও নির্যাতন। যদিও আন্তর্জাতিক আইন বলছে, এগুলো সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কিন্তু কে শুনছে সে কথা।
নির্যাতনের শিকার বিপুলসংখ্যক নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতনের ধরন এক নয়। এদের মধ্যে কেউ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার, কেউ সামাজিক আবার কেউ রাজনৈতিকভাবে নির্যাতনের শিকার।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন ২২৬ জন নারী। তাঁদের মধ্যে ৬৭ জন আত্মহত্যা করেন। আর মহিলা পরিষদের তথ্যমতে, এ বছর শুধু মে মাসেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৪৩ জন নারী ও কন্যাশিশু। যে সংখ্যাটি এপ্রিলে ছিল ১৯৩।
নির্যাতনের শিকার এই বিপুলসংখ্যক নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতনের ধরন এক নয়। এদের মধ্যে কেউ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার, কেউ সামাজিক আবার কেউ রাজনৈতিকভাবে নির্যাতনের শিকার। তাঁদের মধ্যে কেউ আত্মহত্যা করেছেন মানসিক চাপে, কেউ শারীরিক নির্যাতন সইতে না পেরে। শুধু তা-ই নয়, পুলিশ কিংবা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থাতেও অনেকের মৃত্যু হয়। কিন্তু তাঁদের মৃত্যুর সঠিক কারণ অজানাই থেকে যায়।
পৃথিবীতে বাড়ছে যুদ্ধ। আর যুদ্ধের কারণে বাড়ছে নানামুখী নির্যাতন ও আগ্রাসন। তালেবানের মতো সরকারব্যবস্থা যেমন নারীদের ঘরে বেঁধে ফেলছে, তেমনই অনেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রও নারীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে নারীদের নির্যাতনের মাত্রার কথা তো বলাই বাহুল্য। জাতিসংঘের ইউক্রেনীয় সাইটে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি রিপোর্টের তথ্য জানাচ্ছে, রাশিয়ানদের পূর্ণ মাত্রার আগ্রাসনের শুরু থেকে প্রায় ৩ হাজার ২৩৮ জন নারী ও কিশোরী নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৪ হাজার ৮৭২। আনুমানিক ৪০ লাখ মানুষ দেশের ভেতরেই বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ নারী। আল জাজিরায় প্রকাশিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য জানাচ্ছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৪ হাজার ১৮৩ জন নিহত এবং ৭৭ হাজার ৮৪ জন আহত হয়েছে। যে সংখ্যার প্রায় ৭২ শতাংশ নারী ও শিশু।
তবে এটা উল্লেখ করা দরকার যে নির্যাতনের শিকার মানুষের এ সংখ্যার বাইরেও নথিবদ্ধ না হওয়া মানুষ আছে। কোনো কোনো মাসে নির্যাতিতদের সংখ্যার তারতম্য ঘটলেও এর শেষ নেই। নির্যাতনবিরোধীরা গলা ফাটিয়ে প্রতিরোধের ডাক দিয়ে গেলেও নির্যাতনের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না মোটেই। এই আধুনিক পৃথিবীতে নির্যাতনের শিকার মানুষের সংখ্যা গুনে যাওয়াই কি তাহলে আমাদের নিয়তি?
সূত্র: ইউএন ওমেন ইউক্রেন, আল জাজিরা, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, মহিলা পরিষদ
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পড়ছিলাম সেলিনার (ছদ্মনাম) গল্প। সংসারে বছরের পর বছর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করেছিলেন তিনি। একপর্যায়ে স্বামীর কাছ থেকে দুই সন্তান নিয়ে আলাদা হয়ে যান। সে ঘটনা বছর দশেক আগের। কিন্তু এই এক দশক তিনি নীরবে নিজের সংগ্রাম চালিয়ে যান এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তারপর জীবনের গল্প বলার উপলক্ষ হিসেবে বেছে নেন সন্তানের এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করার দিনটিকে।
ব্যক্তিগতভাবে সেলিনার সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ তৈরি হলো। যোগাযোগ করলাম। জানতে চাইলাম, এত দিন পরে কেন জানালেন তাঁর কষ্টের কথাগুলো। সেলিনা (ছদ্মনাম) জানালেন, তিনি অপেক্ষা করছিলেন নিজের ও সন্তানের সাফল্যের জন্য। এসএসসির ফল প্রকাশের ঠিক দুই দিন আগে নিজের একটি শোরুম উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। তার আগে অনলাইনে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘ সময়।
মাত্র কয়েক দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে এসে আত্মহত্যা করেন রেমি নামের একটি মেয়ে। জীবনের শেষ মুহূর্তে তাঁর বলে যাওয়া কথা অনেকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আত্মহত্যা অবশ্যই কোনো সমাধান নয়। তবে আত্মহত্যা মানুষ করে। ভীষণ কষ্ট আর অভিমান বুকে নিয়েই মানুষ সে কাজটি করতে বাধ্য হয়। রেমির বুকে চেপে রাখা কষ্টগুলো তাঁকে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা দিতে পারেনি সেলিনার মতো।
বিভিন্ন কারণে প্রতিনিয়ত মানুষের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলেছে। শারীরিক ও মানসিক আঘাত তো বটেই, একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব ধ্বংস ও মর্যাদা অস্বীকার করাও নির্যাতন। যদিও আন্তর্জাতিক আইন বলছে, এগুলো সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কিন্তু কে শুনছে সে কথা।
নির্যাতনের শিকার বিপুলসংখ্যক নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতনের ধরন এক নয়। এদের মধ্যে কেউ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার, কেউ সামাজিক আবার কেউ রাজনৈতিকভাবে নির্যাতনের শিকার।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন ২২৬ জন নারী। তাঁদের মধ্যে ৬৭ জন আত্মহত্যা করেন। আর মহিলা পরিষদের তথ্যমতে, এ বছর শুধু মে মাসেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৪৩ জন নারী ও কন্যাশিশু। যে সংখ্যাটি এপ্রিলে ছিল ১৯৩।
নির্যাতনের শিকার এই বিপুলসংখ্যক নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতনের ধরন এক নয়। এদের মধ্যে কেউ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার, কেউ সামাজিক আবার কেউ রাজনৈতিকভাবে নির্যাতনের শিকার। তাঁদের মধ্যে কেউ আত্মহত্যা করেছেন মানসিক চাপে, কেউ শারীরিক নির্যাতন সইতে না পেরে। শুধু তা-ই নয়, পুলিশ কিংবা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থাতেও অনেকের মৃত্যু হয়। কিন্তু তাঁদের মৃত্যুর সঠিক কারণ অজানাই থেকে যায়।
পৃথিবীতে বাড়ছে যুদ্ধ। আর যুদ্ধের কারণে বাড়ছে নানামুখী নির্যাতন ও আগ্রাসন। তালেবানের মতো সরকারব্যবস্থা যেমন নারীদের ঘরে বেঁধে ফেলছে, তেমনই অনেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রও নারীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে নারীদের নির্যাতনের মাত্রার কথা তো বলাই বাহুল্য। জাতিসংঘের ইউক্রেনীয় সাইটে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি রিপোর্টের তথ্য জানাচ্ছে, রাশিয়ানদের পূর্ণ মাত্রার আগ্রাসনের শুরু থেকে প্রায় ৩ হাজার ২৩৮ জন নারী ও কিশোরী নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৪ হাজার ৮৭২। আনুমানিক ৪০ লাখ মানুষ দেশের ভেতরেই বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ নারী। আল জাজিরায় প্রকাশিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য জানাচ্ছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৪ হাজার ১৮৩ জন নিহত এবং ৭৭ হাজার ৮৪ জন আহত হয়েছে। যে সংখ্যার প্রায় ৭২ শতাংশ নারী ও শিশু।
তবে এটা উল্লেখ করা দরকার যে নির্যাতনের শিকার মানুষের এ সংখ্যার বাইরেও নথিবদ্ধ না হওয়া মানুষ আছে। কোনো কোনো মাসে নির্যাতিতদের সংখ্যার তারতম্য ঘটলেও এর শেষ নেই। নির্যাতনবিরোধীরা গলা ফাটিয়ে প্রতিরোধের ডাক দিয়ে গেলেও নির্যাতনের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না মোটেই। এই আধুনিক পৃথিবীতে নির্যাতনের শিকার মানুষের সংখ্যা গুনে যাওয়াই কি তাহলে আমাদের নিয়তি?
সূত্র: ইউএন ওমেন ইউক্রেন, আল জাজিরা, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, মহিলা পরিষদ
মানুষ স্বপ্নবাজ প্রাণী। যুদ্ধ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে ভিটে চ্যুত মানুষও স্বপ্ন দেখে। এই স্বার্থ আর সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষ তার জীবনের চেয়েও বড়। নইলে বেঁচে থাকে কীভাবে! বিশ্ব শরণার্থী দিবসে তেমনি কিছু নারীর গল্প রইল, যাঁরা উদ্বাস্তু জীবনেও স্বপ্ন দেখেছেন জীবনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
৩ দিন আগেকারও কোলে শিশুসন্তান, কেউ অন্তঃসত্ত্বা, কারও হাতে স্যালাইনের ক্যানুলা। চাকরি বাঁচাতে এই অবস্থায় ২১ দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন তাঁরা। করবেন নাই-বা কেন, তাঁদের কেউ সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, কারও বেতনের টাকায় চলছে পরিবারের অসুস্থ সদস্যের চিকিৎসা; কেউ আবার বেতনের টাকায় সন্তানের জন্য...
৫ দিন আগেযুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং দৈনন্দিন আতঙ্ক ইসরায়েলি নারীদের গভীরভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন তথ্যের আভাস পাওয়া গেছে।
৫ দিন আগেঅনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় মাত্র ২০ হাজার টাকায় বোরকার ব্যবসা শুরু করেন। ডিজাইন, কাপড় সংগ্রহ, ডেলিভারি—সবই এক হাতে সামলাতেন তিনি। বর্তমানে ঢাকায় তাঁর দুটি শোরুম রয়েছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বহু আগেই কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে...
৫ দিন আগে