অর্ণব সান্যাল
একটি হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। একটি হাত নিয়ে নিচ্ছে। এই দুই হাতের মধ্যে সেতু তৈরি করছে কাগজ, স্রেফ কাগজ। দেওয়া-নেওয়ার এই জটিল প্রক্রিয়া চলমান থাকতে থাকতেই কাগুজে টাকা গুণে চলা মানুষটি (হ্যাঁ, মানুষই, সন্দেহ করার কিছু নেই) বলে চলেছেন, ‘সকাল বেলা কি পচা কামডা নিয়ে আইছো?’
চিন্তা করুন একবার। সক্কাল সক্কাল ‘পচা কাম’ করতে একজনকে প্রায় বাধ্য করা হচ্ছে! এই দেশ কি আমরা চেয়েছিলাম? সকালে কারও কি ‘পচা কাম’ করতে মন চায়? ঠিক যেমনটা বাদাম খেতে খেতে ‘পচা’ পেলে আমাদের নাক-মুখ কুঁচকে যায়। মুখের ভেতরটা হয়ে যায় তিতকুটে। সেই তিতা বোধ কাটাতে একটু ঝাল ঝাল লবণ পেলে অবশ্য খারাপ লাগে না।
তবে কি ঝালে তিতা কমে? বাদামে কিছুটা কমে অবশ্য, বাস্তব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী। আর অন্যান্য ক্ষেত্রেও যে কমে কিছুটা, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ তৈরি করেছেন বাবুল চন্দ্র সরকার। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক। দেখুন, এখানেও কিন্তু ‘কাম’ আছে। এই কামের বিষয় নিয়েই এবার আমরা একটু আলোচনা করি। সেই সঙ্গে আসবে পচা বাদামও।
আজকের পত্রিকার খবরে প্রকাশ, ‘সকাল বেলা কি পচা কামডা নিয়ে আইছো?’ এমন কথা বলেই নাকি প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন বাবুল। এই ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিওচিত্রও এসেছে আজকের পত্রিকার সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের কাছে। সেই ভিডিওর শুরুতেই শোনা গেছে সেই স্মরণীয় ‘পচা কাম’ সংক্রান্ত উক্তি, বেশ অনুযোগের সঙ্গেই। তখন পাশে থাকা এক ব্যক্তি বলে ওঠেন, ‘না বাবু, পচা না, এইগুলো করে দিতে হবে।’
ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, এর মধ্যেই বাবুল একজন বয়স্ক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। আর তার পরই বাবুলের বাম হাত চলে যায় নিচে, টেবিলের নিচে। চোখ তখন নিবিড়ভাবে নিচে নিবদ্ধ। বোঝা যায় হাতের ঈষৎ কম্পন। এরপর আবার বাবুলের অনুযোগমাখা দৃষ্টি। আর সেই দৃষ্টির জবাবে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির অভয়, ‘আরও দেবেনে, মুরব্বি মানুষ, আমি, আমি আছি।’
এ থেকে আমরা কী শিখলাম? আমরা শিখলাম যে, ‘পচা কাম’ নিয়ে সচেতনতা ও অনিচ্ছা থাকলেও পর্যাপ্ত অনুপ্রেরণা পেলে সকালবেলায়ও তা করা যায় এবং অবশ্যই তাতে বাম হাত ব্যবহার করতে হবে। বাবুল চন্দ্র সরকারের নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ আছে। আর সেই নিয়ম অনুসরণ করেই তিনি হাতের সুনির্দিষ্ট ব্যবহার করেছেন। সুতরাং তাঁর কাছ থেকে পাওয়া ফ্রি ভিডিও টিউটোরিয়ালে আমরা বাম হাতের ব্যবহার নিয়ে দেওয়া শিক্ষায় শিক্ষিত হতেই পারি। নিন্দুকেরা অবশ্য এই পুরো কাজটিকে ঘুষ নেওয়া বলছেন। তবে অভিজ্ঞ বাবুল যেহেতু ‘পচা কাম’ বলেছেন, অতএব সেই অভিজ্ঞতার দাম আমাদের দেওয়া উচিত। এ-ও বোঝা উচিত যে, ‘কাম’ যতই ভালো হোক বা পচা, একবার স্বীকার করে নিলে তাতে মানসিক বাধা বা লজ্জা লজ্জা ভাব বেশ কেটে যায়।
এর সঙ্গে পচা বাদাম কীভাবে মেলে? আরে আগেই তো বলেছি, পচা বাদাম মুখে ঢোকার পর ঝাল খেলে একটু স্বস্তি মেলে। ঠিক যেমনটা বাবুল টাকার বান্ডিলের বিনিময়ে ‘পচা কাম’ করে ফেলেন। এখানে টাকার বান্ডিল হলো সেই ঝাল ঝাল বিট লবণ, যা ‘পচা কাম’ (রূপক অর্থে পচা বাদাম)-এর তিতকুটে স্বাদকে বদলে দেয়।
অথচ পচা জিনিসকে ভালোতে রূপান্তরিত করা বাবুলকে নাকি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিরত রাখা হয়েছে অফিসের সব কাজ থেকে। অর্থাৎ, বাবুলের বাম হাতের ব্যবহারও এখন পুরোপুরি বন্ধ। বলুন তো, এ প্রকৃতির কেমন বিচার? যে মানুষটা সকাল সকাল পচা কাজ করার দুঃসাহস দেখাতে পারেন, তাঁকে যদি এভাবে দমিয়ে দেওয়া হয়, তবে অন্যরা কীভাবে উৎসাহিত হবে? আশা করি, বৈশ্বিক কল্যাণে নিজের অবদান রাখার বিষয়টি বাবুল তাঁর কারণ দর্শানোর চিঠিতে তুলে ধরবেন। সেই সঙ্গে রূপক অর্থে পচা বাদামের বিষয়টিও তুলে ধরা যেতে পারে।
সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা এই দেশে বাবুলের মতো ‘পচা কাম’ করে দেশকে পঙ্কিলমুক্ত রাখা পরোপকারী (!) মানুষ আরও অনেক আছেন বলেই বোধ হয়। নইলে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কের ম্যারাথনে অংশ নেয় কীভাবে? সুতরাং সদয় অনুরোধ, এমন স্বেচ্ছায় পচা বাদাম খাওয়া মহামান্যদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে দ্রুত গতিতে চলা গাড়ির চাকার হাওয়া ফুট্টুস করে দেবেন না। এসবে চোখ ছলছল হয়, মন বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়, হতাশ হতে হয়। আর এক বুক হতাশা নিয়ে কি সামগ্রিক উন্নতি সম্ভব?
একটি হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। একটি হাত নিয়ে নিচ্ছে। এই দুই হাতের মধ্যে সেতু তৈরি করছে কাগজ, স্রেফ কাগজ। দেওয়া-নেওয়ার এই জটিল প্রক্রিয়া চলমান থাকতে থাকতেই কাগুজে টাকা গুণে চলা মানুষটি (হ্যাঁ, মানুষই, সন্দেহ করার কিছু নেই) বলে চলেছেন, ‘সকাল বেলা কি পচা কামডা নিয়ে আইছো?’
চিন্তা করুন একবার। সক্কাল সক্কাল ‘পচা কাম’ করতে একজনকে প্রায় বাধ্য করা হচ্ছে! এই দেশ কি আমরা চেয়েছিলাম? সকালে কারও কি ‘পচা কাম’ করতে মন চায়? ঠিক যেমনটা বাদাম খেতে খেতে ‘পচা’ পেলে আমাদের নাক-মুখ কুঁচকে যায়। মুখের ভেতরটা হয়ে যায় তিতকুটে। সেই তিতা বোধ কাটাতে একটু ঝাল ঝাল লবণ পেলে অবশ্য খারাপ লাগে না।
তবে কি ঝালে তিতা কমে? বাদামে কিছুটা কমে অবশ্য, বাস্তব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী। আর অন্যান্য ক্ষেত্রেও যে কমে কিছুটা, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ তৈরি করেছেন বাবুল চন্দ্র সরকার। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক। দেখুন, এখানেও কিন্তু ‘কাম’ আছে। এই কামের বিষয় নিয়েই এবার আমরা একটু আলোচনা করি। সেই সঙ্গে আসবে পচা বাদামও।
আজকের পত্রিকার খবরে প্রকাশ, ‘সকাল বেলা কি পচা কামডা নিয়ে আইছো?’ এমন কথা বলেই নাকি প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন বাবুল। এই ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিওচিত্রও এসেছে আজকের পত্রিকার সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের কাছে। সেই ভিডিওর শুরুতেই শোনা গেছে সেই স্মরণীয় ‘পচা কাম’ সংক্রান্ত উক্তি, বেশ অনুযোগের সঙ্গেই। তখন পাশে থাকা এক ব্যক্তি বলে ওঠেন, ‘না বাবু, পচা না, এইগুলো করে দিতে হবে।’
ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, এর মধ্যেই বাবুল একজন বয়স্ক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। আর তার পরই বাবুলের বাম হাত চলে যায় নিচে, টেবিলের নিচে। চোখ তখন নিবিড়ভাবে নিচে নিবদ্ধ। বোঝা যায় হাতের ঈষৎ কম্পন। এরপর আবার বাবুলের অনুযোগমাখা দৃষ্টি। আর সেই দৃষ্টির জবাবে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির অভয়, ‘আরও দেবেনে, মুরব্বি মানুষ, আমি, আমি আছি।’
এ থেকে আমরা কী শিখলাম? আমরা শিখলাম যে, ‘পচা কাম’ নিয়ে সচেতনতা ও অনিচ্ছা থাকলেও পর্যাপ্ত অনুপ্রেরণা পেলে সকালবেলায়ও তা করা যায় এবং অবশ্যই তাতে বাম হাত ব্যবহার করতে হবে। বাবুল চন্দ্র সরকারের নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ আছে। আর সেই নিয়ম অনুসরণ করেই তিনি হাতের সুনির্দিষ্ট ব্যবহার করেছেন। সুতরাং তাঁর কাছ থেকে পাওয়া ফ্রি ভিডিও টিউটোরিয়ালে আমরা বাম হাতের ব্যবহার নিয়ে দেওয়া শিক্ষায় শিক্ষিত হতেই পারি। নিন্দুকেরা অবশ্য এই পুরো কাজটিকে ঘুষ নেওয়া বলছেন। তবে অভিজ্ঞ বাবুল যেহেতু ‘পচা কাম’ বলেছেন, অতএব সেই অভিজ্ঞতার দাম আমাদের দেওয়া উচিত। এ-ও বোঝা উচিত যে, ‘কাম’ যতই ভালো হোক বা পচা, একবার স্বীকার করে নিলে তাতে মানসিক বাধা বা লজ্জা লজ্জা ভাব বেশ কেটে যায়।
এর সঙ্গে পচা বাদাম কীভাবে মেলে? আরে আগেই তো বলেছি, পচা বাদাম মুখে ঢোকার পর ঝাল খেলে একটু স্বস্তি মেলে। ঠিক যেমনটা বাবুল টাকার বান্ডিলের বিনিময়ে ‘পচা কাম’ করে ফেলেন। এখানে টাকার বান্ডিল হলো সেই ঝাল ঝাল বিট লবণ, যা ‘পচা কাম’ (রূপক অর্থে পচা বাদাম)-এর তিতকুটে স্বাদকে বদলে দেয়।
অথচ পচা জিনিসকে ভালোতে রূপান্তরিত করা বাবুলকে নাকি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিরত রাখা হয়েছে অফিসের সব কাজ থেকে। অর্থাৎ, বাবুলের বাম হাতের ব্যবহারও এখন পুরোপুরি বন্ধ। বলুন তো, এ প্রকৃতির কেমন বিচার? যে মানুষটা সকাল সকাল পচা কাজ করার দুঃসাহস দেখাতে পারেন, তাঁকে যদি এভাবে দমিয়ে দেওয়া হয়, তবে অন্যরা কীভাবে উৎসাহিত হবে? আশা করি, বৈশ্বিক কল্যাণে নিজের অবদান রাখার বিষয়টি বাবুল তাঁর কারণ দর্শানোর চিঠিতে তুলে ধরবেন। সেই সঙ্গে রূপক অর্থে পচা বাদামের বিষয়টিও তুলে ধরা যেতে পারে।
সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা এই দেশে বাবুলের মতো ‘পচা কাম’ করে দেশকে পঙ্কিলমুক্ত রাখা পরোপকারী (!) মানুষ আরও অনেক আছেন বলেই বোধ হয়। নইলে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কের ম্যারাথনে অংশ নেয় কীভাবে? সুতরাং সদয় অনুরোধ, এমন স্বেচ্ছায় পচা বাদাম খাওয়া মহামান্যদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে দ্রুত গতিতে চলা গাড়ির চাকার হাওয়া ফুট্টুস করে দেবেন না। এসবে চোখ ছলছল হয়, মন বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়, হতাশ হতে হয়। আর এক বুক হতাশা নিয়ে কি সামগ্রিক উন্নতি সম্ভব?
চীনের এক কিশোর ১৬ হাজার ৭০০ ইউয়ান (প্রায় ২ হাজার ৩৫০ ডলার) খরচ করে উচ্চতা বাড়ানোর চিকিৎসা নিলেও শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়েছেন। ছয় মাসের চিকিৎসায় তাঁর উচ্চতা সামান্য বেড়েছিল। তবে চিকিৎসা বন্ধ করার দুই সপ্তাহের মধ্যে আবার আগের উচ্চতায় ফিরে যান তিনি।
২ দিন আগেচীনের এক নারী উদ্যোক্তা তাঁর অধীনস্থ এক বিবাহিত তরুণের প্রেমে পড়েন। প্রেম এতই গভীর হয় যে তিনি তাঁর অধীনস্থ সেই কর্মীকে ৪ লাখ ২০ হাজার ডলার দেন, যেন তিনি তাঁর স্ত্রীকে তালাক দেন। চীনা মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩০ লাখ ইউয়ান।
৩ দিন আগেবিবাহ বিচ্ছেদের পর কন্যা সন্তানের কাস্টডি পান বাবা লি। গত সাত বছর ধরে তাঁকে বড় করেছেন। সম্প্রতি ক্যানসারের কারণে শারীরিক অবস্থার খুব বেশিই অবনতি হলে নিজের মৃত্যুর পর যেন সন্তান ভালো থাকে, তা নিশ্চিতে প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন লি। এক পর্যায়ে লি জানতে পারেন যে সন্তানের জন্য...
৮ দিন আগেলন্ডনের একটি আর্ট গ্যালারি থেকে মাত্র ৩৬ সেকেন্ডে চুরি হয়ে গেছে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় ৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা) মূল্যের একটি ব্যাঙ্কসি আর্টের শিল্পকর্ম। ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে লন্ডনের ফিটজরোভিয়াতে গ্রোভ গ্যালারির সামনের কাচের দরজা ভেঙে চোর ভেতরে প্রবেশ করে স্ট্রিট আর
৯ দিন আগে