ইশতিয়াক হাসান
সাগরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা অদ্ভুত চেহারার জিনিসগুলো কী বুঝতে প্রথমে কিছুটা সময় লাগবে আপনার। এটাও ভাবতে পারেন, কোনো বিজ্ঞান কল্পকাহিনির দৃশ্যায়নের জন্য এগুলো তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু শুনে অবাক হবেন, এই দালানগুলো আসলে একটি দুর্গের অংশ, যদিও এখন পরিত্যক্ত। এখন নিশ্চয় মনে প্রশ্ন জাগছে, এগুলো তৈরি করা হয়েছিল কেন?
টেমস নদী যেখানে উত্তর সাগরে পড়েছে, সেখানে তৈরি করা হয়েছে এই আশ্চর্য কাঠামো অর্থাৎ দুর্গগুলোকে। এগুলো একসময় যুক্তরাজ্যের কেন্ট উপকূলকে রক্ষা করত জার্মান আক্রমণ থেকে। ক্রমেই ক্ষয় বা ধ্বংস হতে থাকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন বলতে পারেন একে।
টেমস এসটুয়ারি ডিফেন্স নেটওয়ার্কের অংশ এই দুর্গগুলো আসলে একধরনের বিমানবিধ্বংসী টাওয়ার বা দুর্গ। এগুলো তৈরি হয় ১৯৪২ সালে। প্রতিটি দুর্গে মাঝখানের একটি নিয়ন্ত্রণকারী টাওয়ার বা স্তম্ভের চারপাশে আছে ছয়টি ছোট দালান। সাগরের পানিতে যেন দাঁড়িয়ে থাকতে পারে সে জন্য লম্বা খুঁটির ওপর বসানো হয় এই দালানগুলো। কংক্রিট ও ইস্পাত দিয়ে বানানো হয় এসব দুর্গ।
যখন এই দুর্গগুলো ব্যবহার করা হতো, তখন একটার থেকে আরেকটা সরু সেতু বা সাঁকোর মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল। প্রথমে মূল ভূখণ্ডে এগুলো বানানো হয়। তারপর নিয়ে আসা হয় জলের রাজ্যে। ব্রিটিশ পুরকৌশল প্রকৌশলী গাই মোনসেল দুর্গগুলোর নকশা করেন। পরবর্তী সময়ে কংক্রিটের সেতুর নকশা করার জন্য আলোচিত হন এই প্রকৌশলী। তাঁর নামে মোনসেল ফোর্ট নামে পরিচিতি পায় দালানগুলো।
যুদ্ধের সময় এই নেভি ফোর্টের পাশাপাশি কয়েকটি আর্মি ফোর্টও কাজ করে কেন্ট উপকূল প্রতিরক্ষায়। এই দুর্গগুলোতে অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গানের সঙ্গে ছিল রাডারও। বলা হয়, যুদ্ধের সময় ২২টি উড়োজাহাজ ও ৩০টি বোমা ভূপাতিত করা হয় এসব দুর্গ থেকে। পাশাপাশি জার্মানির একটি বোটও ডুবিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।
যুদ্ধের সময় নিরাপত্তার খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও কয়েকটি বছর চমৎকার রক্ষণাবেক্ষণ হয় এগুলোর। তবে একপর্যায়ে এই দুর্গগুলোর কোনো কাজ না থাকায় গুরুত্ব হারাতে থাকে। ১৯৫০-এর দশকে পরিত্যক্ত হয় মোনসেল ফোর্ট। তার পর থেকে এগুলো অতীতের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবেই আছে। অবশ্য মাঝেমধ্যে কেউ এদের ব্যবহার করেছেন নানা কারণে।
প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের তিনটি দুর্গ বানানো হয়। এগুলোর মধ্যে দুটি এখনো টিকে আছে, একটি রেডসেন্ডস ফোর্ট ও অন্যটি শিভারিং সেন্ডস ফোর্ট। নর আর্মি ফোর্টটি ঝড়ের কারণে এবং জাহাজের ধাক্কায় খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটাকে ভেঙে সরিয়ে ফেলা হয়। ১৯৬০ ও ৭০-এর দশকে বাকি দুটি দুর্গ পাইরেট (অনুমোদন নেই এমন) রেলস্টেশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
মজার ঘটনা, রাফস টাওয়ার নামের অন্য নকশার একটি নেভি ফোর্ট ব্যবহার করে মাইক্রো নেশন সিল্যান্ড। মাইক্রো নেশনগুলো নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র বা রাজ্য দাবি করলেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই। অর্থাৎ ছোট্ট এই দুর্গটিকেই রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই দুর্গটির নকশাও করেন প্রকৌশলী গাই মোনসেল।
২০০৩ সালে প্রজেক্ট রেডসেন্ডস নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। দুর্গটিকে রক্ষা ও কোনোভাবে পুনর্ব্যবহারের লক্ষ্যে নিয়েই গড়ে ওঠে এটি। শিভারিংয়ের বদলে রেডসেন্ডসকে বেছে নেওয়ার কারণ, এটার অবস্থা তুলনামূলক ভালো ছিল। মজার ঘটনা ২০০৫ সালে দুর্গটিতে স্টিফেন টার্নার নামের এক শিল্পী ৩৬ দিন কাটান। একে একাকী থাকার একটি পরীক্ষা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। এখানকার অভিজ্ঞতা নিয়ে বইও প্রকাশ করেন তিনি। ২০০৮ সালে ব্রিটিশ মিউজিক ব্যান্ড দ্য প্রডিজি রেডসেন্ডসে একটা মিউজিক ভিডিওর শুটিং করে।
কেন্টের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা নিয়ে কাজ করা সংস্থা আন্ডারগ্রাউন্ড কেন্ট সূত্রে জানা যায়, এসব দুর্গে পোস্টিং হওয়া ব্যক্তিদের প্ল্যাটফর্মের গোড়ার একটা প্রবেশ পথ দিয়ে ভেতরে ঢুকতে হতো। যে মইগুলো ব্যবহার করতেন এখানে দায়িত্বে থাকা সৈনিকেরা, সেগুলোর কোনো কোনোটি এখনো আছে। তবে এগুলোর অবস্থা এখন সঙ্গীন। এই দুর্গের দালানগুলোতে ঢোকাটা এখন একই সঙ্গে দুরূহ ও বিপজ্জনক। নৌকা বা অন্য কোনো নৌযান থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে এদের দেখাটাই ভালো। পরিষ্কার দিনে কাছের শোবারিনেস ইস্ট বিচ থেকেও এগুলো দেখতে পাবেন।
অবস্থা তুলনামূলক ভালো থাকায় রেডসেন্ডস দুর্গটি সংস্কারের প্রচেষ্ট এখনো চলমান আছে। দুর্গগুলোর বেশ কাছেই অবস্থান কেন্টের হুইটসেবলের। সেখান থেকে আট মাইল নৌপথ পেরোলেই পৌঁছে যাবেন আশ্চর্য চেহারার কাঠামোগুলোর কাছে। দিনে দিনে লন্ডন শহর থেকেও দেখে যেতে পারবেন সাগরের বুকে দাঁড়িয়ে থাকা আশ্চর্য এই দালানগুলোকে।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, অ্যালুরিং ওয়ার্ল্ড ডট কম, দ্য ট্রাভেল ডট কম
সাগরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা অদ্ভুত চেহারার জিনিসগুলো কী বুঝতে প্রথমে কিছুটা সময় লাগবে আপনার। এটাও ভাবতে পারেন, কোনো বিজ্ঞান কল্পকাহিনির দৃশ্যায়নের জন্য এগুলো তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু শুনে অবাক হবেন, এই দালানগুলো আসলে একটি দুর্গের অংশ, যদিও এখন পরিত্যক্ত। এখন নিশ্চয় মনে প্রশ্ন জাগছে, এগুলো তৈরি করা হয়েছিল কেন?
টেমস নদী যেখানে উত্তর সাগরে পড়েছে, সেখানে তৈরি করা হয়েছে এই আশ্চর্য কাঠামো অর্থাৎ দুর্গগুলোকে। এগুলো একসময় যুক্তরাজ্যের কেন্ট উপকূলকে রক্ষা করত জার্মান আক্রমণ থেকে। ক্রমেই ক্ষয় বা ধ্বংস হতে থাকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন বলতে পারেন একে।
টেমস এসটুয়ারি ডিফেন্স নেটওয়ার্কের অংশ এই দুর্গগুলো আসলে একধরনের বিমানবিধ্বংসী টাওয়ার বা দুর্গ। এগুলো তৈরি হয় ১৯৪২ সালে। প্রতিটি দুর্গে মাঝখানের একটি নিয়ন্ত্রণকারী টাওয়ার বা স্তম্ভের চারপাশে আছে ছয়টি ছোট দালান। সাগরের পানিতে যেন দাঁড়িয়ে থাকতে পারে সে জন্য লম্বা খুঁটির ওপর বসানো হয় এই দালানগুলো। কংক্রিট ও ইস্পাত দিয়ে বানানো হয় এসব দুর্গ।
যখন এই দুর্গগুলো ব্যবহার করা হতো, তখন একটার থেকে আরেকটা সরু সেতু বা সাঁকোর মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল। প্রথমে মূল ভূখণ্ডে এগুলো বানানো হয়। তারপর নিয়ে আসা হয় জলের রাজ্যে। ব্রিটিশ পুরকৌশল প্রকৌশলী গাই মোনসেল দুর্গগুলোর নকশা করেন। পরবর্তী সময়ে কংক্রিটের সেতুর নকশা করার জন্য আলোচিত হন এই প্রকৌশলী। তাঁর নামে মোনসেল ফোর্ট নামে পরিচিতি পায় দালানগুলো।
যুদ্ধের সময় এই নেভি ফোর্টের পাশাপাশি কয়েকটি আর্মি ফোর্টও কাজ করে কেন্ট উপকূল প্রতিরক্ষায়। এই দুর্গগুলোতে অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গানের সঙ্গে ছিল রাডারও। বলা হয়, যুদ্ধের সময় ২২টি উড়োজাহাজ ও ৩০টি বোমা ভূপাতিত করা হয় এসব দুর্গ থেকে। পাশাপাশি জার্মানির একটি বোটও ডুবিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।
যুদ্ধের সময় নিরাপত্তার খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও কয়েকটি বছর চমৎকার রক্ষণাবেক্ষণ হয় এগুলোর। তবে একপর্যায়ে এই দুর্গগুলোর কোনো কাজ না থাকায় গুরুত্ব হারাতে থাকে। ১৯৫০-এর দশকে পরিত্যক্ত হয় মোনসেল ফোর্ট। তার পর থেকে এগুলো অতীতের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবেই আছে। অবশ্য মাঝেমধ্যে কেউ এদের ব্যবহার করেছেন নানা কারণে।
প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের তিনটি দুর্গ বানানো হয়। এগুলোর মধ্যে দুটি এখনো টিকে আছে, একটি রেডসেন্ডস ফোর্ট ও অন্যটি শিভারিং সেন্ডস ফোর্ট। নর আর্মি ফোর্টটি ঝড়ের কারণে এবং জাহাজের ধাক্কায় খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটাকে ভেঙে সরিয়ে ফেলা হয়। ১৯৬০ ও ৭০-এর দশকে বাকি দুটি দুর্গ পাইরেট (অনুমোদন নেই এমন) রেলস্টেশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
মজার ঘটনা, রাফস টাওয়ার নামের অন্য নকশার একটি নেভি ফোর্ট ব্যবহার করে মাইক্রো নেশন সিল্যান্ড। মাইক্রো নেশনগুলো নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র বা রাজ্য দাবি করলেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই। অর্থাৎ ছোট্ট এই দুর্গটিকেই রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই দুর্গটির নকশাও করেন প্রকৌশলী গাই মোনসেল।
২০০৩ সালে প্রজেক্ট রেডসেন্ডস নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। দুর্গটিকে রক্ষা ও কোনোভাবে পুনর্ব্যবহারের লক্ষ্যে নিয়েই গড়ে ওঠে এটি। শিভারিংয়ের বদলে রেডসেন্ডসকে বেছে নেওয়ার কারণ, এটার অবস্থা তুলনামূলক ভালো ছিল। মজার ঘটনা ২০০৫ সালে দুর্গটিতে স্টিফেন টার্নার নামের এক শিল্পী ৩৬ দিন কাটান। একে একাকী থাকার একটি পরীক্ষা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। এখানকার অভিজ্ঞতা নিয়ে বইও প্রকাশ করেন তিনি। ২০০৮ সালে ব্রিটিশ মিউজিক ব্যান্ড দ্য প্রডিজি রেডসেন্ডসে একটা মিউজিক ভিডিওর শুটিং করে।
কেন্টের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা নিয়ে কাজ করা সংস্থা আন্ডারগ্রাউন্ড কেন্ট সূত্রে জানা যায়, এসব দুর্গে পোস্টিং হওয়া ব্যক্তিদের প্ল্যাটফর্মের গোড়ার একটা প্রবেশ পথ দিয়ে ভেতরে ঢুকতে হতো। যে মইগুলো ব্যবহার করতেন এখানে দায়িত্বে থাকা সৈনিকেরা, সেগুলোর কোনো কোনোটি এখনো আছে। তবে এগুলোর অবস্থা এখন সঙ্গীন। এই দুর্গের দালানগুলোতে ঢোকাটা এখন একই সঙ্গে দুরূহ ও বিপজ্জনক। নৌকা বা অন্য কোনো নৌযান থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে এদের দেখাটাই ভালো। পরিষ্কার দিনে কাছের শোবারিনেস ইস্ট বিচ থেকেও এগুলো দেখতে পাবেন।
অবস্থা তুলনামূলক ভালো থাকায় রেডসেন্ডস দুর্গটি সংস্কারের প্রচেষ্ট এখনো চলমান আছে। দুর্গগুলোর বেশ কাছেই অবস্থান কেন্টের হুইটসেবলের। সেখান থেকে আট মাইল নৌপথ পেরোলেই পৌঁছে যাবেন আশ্চর্য চেহারার কাঠামোগুলোর কাছে। দিনে দিনে লন্ডন শহর থেকেও দেখে যেতে পারবেন সাগরের বুকে দাঁড়িয়ে থাকা আশ্চর্য এই দালানগুলোকে।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, অ্যালুরিং ওয়ার্ল্ড ডট কম, দ্য ট্রাভেল ডট কম
সময়টা ১৮৫৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরের সকাল। এক সুসজ্জিত ব্যক্তি সান ফ্রান্সিসকোর ‘দ্য সান ফ্রান্সিসকো ইভনিং বুলেটিনের’ কার্যালয়ে প্রবেশ করে একটি ঘোষণাপত্র জমা দেন, যেখানে নিজেকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সম্রাট’ বলে ঘোষণা করেন। ওই ব্যক্তি ছিলেন জোশুয়া নর্টন।
৮ দিন আগেআজ ফোর টুয়েন্টি (৪২০) দিবস। সংখ্যাটা পড়েই ভাবছেন প্রতারকদের দিবস আজ? না না। এই ফোর টুয়েন্টি সেই ফোর টুয়েন্টি নয়। পশ্চিমা বিশ্বে এই সংখ্যা গাঁজা সংস্কৃতির কোড ভাষা।
১০ দিন আগেসাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপ ও এশিয়ায় বিপুল পরিমাণে পাচার হচ্ছে বড় আকারের লাখ লাখ পিঁপড়া। ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোতে এসব পিঁপড়া পোষা প্রাণী হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আফ্রিকার দেশ কেনিয়া থেকে সম্প্রতি হাজার হাজার জীবন্ত পিঁপড়া পাচারকালে ৪ চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে।
১৪ দিন আগেগত বছর একটি রাতের অনুষ্ঠানে এক ভ্লগারের ক্যামেরায় অপ্রত্যাশিত এবং অশালীন মন্তব্য করে রাতারাতি ভাইরাল হন হেইলি ওয়েলচ। দ্রুতই ‘হক তুয়াহ’ নামে খ্যাতি পান তিনি। সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন এই তরুণী। তিনি জানিয়েছেন, নিজের নামে চালু করা বিতর্কিত ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করে...
১৬ দিন আগে