রজত কান্তি রায়

হাসিটা তখনই কানে এল।
মানুষহীন শহরে রাস্তাগুলো একেবারে ফাঁকা। চলছে লকডাউন। সন্ধ্যাবেলাতেই চারদিক সুনসান। হলুদ–কালোয় মেশানো ভৌতিক আবহ। এক সহকর্মীর বাইকের পেছনে উঠে পাড়ি দিতে শুরু করলাম সুনসান এক নীরব শহরের জনশূন্য পথ। এগুলোকে রাজপথই বলা হয়। যখন মিছিলের যুগ ছিল, তখন এসব রাজপথ ছেড়ে না যাওয়ার একটি গল্প ছিল। এখন নীরব।
অফিস থেকে বেরিয়ে একটা ইউ টার্ন নিয়ে বাইক পৌঁছে গেল হাতিরঝিলের কোনায়। সেখানে একটা পুলিশ চেকপোস্ট। কায়দা করে সেটা পেরিয়ে যাওয়ার পর ফাঁকা সুদৃশ্য রাস্তা। দুদিকে গাছের সারি। রাত নটা। এ সময় এখানে মানুষ গিজগিজ করার কথা। এখন পিনপতন নীরবতা। একটা মেটে রঙের কুকুর হেলতে দুলতে পার হলো রাস্তাটা। মনে কু ডেকে গেল। কুকুর–বেড়ালকে বিশ্বাস নেই। এরা ডান দিক থেকে আড়াআড়ি বাম দিকে গেলে অমঙ্গল হয়। মেটে রঙের কুকুরটা তাই গেল। আমি ভেতরে-ভেতরে ভীষণ চমকে উঠলাম। পুরো রাস্তায় আমরা দুজন বাইক যাত্রী ছাড়া আর কেউ নেই। গাছের ফাঁকে ফাঁকে নিয়ন বাতির পোস্ট। শ্রাবণের কালো মেঘের প্রেক্ষাপটে ফাঁকা রাস্তায় হলুদ নিয়ন আলো যথেষ্ট ভৌতিক। সামনে একটা ব্রিজ। ব্রিজের আগে বেশ কিছু গাছ, কালো হয়ে আছে জায়গাটা। এখানে আসতেই হাসিটা কানে ঢুকল।
খ্যাক খ্যাক খিক খিক বা হা হা করে অট্ট হাসি নয়। বুঝলাম আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার আশপাশেই আছেন। ব্রিজটা পার হতেই একটা হলুদ আলোর ল্যাম্পপোস্ট। হাসিটা আর শুনতে পেলাম না। ল্যাম্পপোস্টটা পেরোতেই সামনে আর আলো নেই। সম্ভবত এখানকার বাতিগুলো খারাপ হয়ে গেছে। এই অন্ধকার জায়গাটাতে আবার হাসির শব্দ পেলাম। আমার সহকর্মী কি শুনতে পাচ্ছেন হাসির শব্দ? শুনলে বিতিকিচ্ছিরি একটা ব্যাপার হয়ে যাবে। আমি ওপরের দিকে চাইলাম। হ্যাঁ, যা ভেবেছি তাই। আমার মাথার ওপর দিয়ে শূন্যে ভেসে চলেছেন আমার পূর্বপুরুষ।
সহকর্মীর বাইকটাও চলছে ধীরে। পুরোনো বাইক। তার ওপর আমার আবার বদনাম আছে ওভার ওয়েটের জন্য। যদিও আমার ওজন নিয়ে আমার কোনো কমপ্লেইন নেই। তারপরেও কেন যে লোকজন আমার ওজন নিয়ে ভাবে, আমি জানি না। যা হোক, আমার সহকর্মীর বাইকটা চলছে বেশ ধীরে। আমার মাথার ওপর আমার পূর্বপুরুষের ভূত শূন্যে ভেসে চলেছেন ঠিক শরতের স্বচ্ছ আকাশে পেঁজা তুলো মেঘের মতো। বুঝলাম আজ রাতের বড় একটা সময় ফালতু যেতে বসেছে।
সাত রাস্তা ধরে বিজয় সরণির দিকে চলেছি। সেই নিস্তব্ধ নিঝুম রাজপথ। মাঝে মাঝে এক আধটা বাইক বা গাড়ি হুসহাস করে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার মাথার ওপর বসে তালি দিয়ে উঠছেন। আমি একবার তাঁর দিকে, আরেকবার বাইক চালক আমার সহকর্মীর দিকে তাকাচ্ছি।
‘শাওন মাসের এইরাম একটা দিনে আমি প্রেমে পড়ছিলাম।’
‘আচ্ছা। তারপর?’
‘কী যে সুন্দরী আছিল। আহা!’
‘আরে রাখেন। আমি শুনছি তিনি ছিলেন কালো কুচকুচে। চোখ দুইটা বড় বড়।’
‘মোর চোউখ দুইটা যদি তোর চউখে বসায় দিতে পাত্তাম, তাইলে বুঝতি সোন্দর কারে কয়।’
‘আরে রাখেন…’
কথা শেষ হওয়ার আগেই হার্ড ব্রেক কষে থেমে গেলেন আমার সহকর্মী।
‘ভাই, এটা তো চন্দ্রিমা উদ্যান। বাগান। এখানে নামবেন ক্যান।’
‘সেটা তো আমারও প্রশ্ন। এখানে দাঁড়ালেন ক্যান?’
‘আপনি তো রাখতে বললেন ভাই!’
আমার সহকর্মীর চোখে বিস্ময়। আমি তার বিস্ময় আরও বাড়িয়ে তুলে বললাম, ‘নাহ, আপনারে বলি নাই। বলছি আমার পূর্বপুরুষরে। তার নাম পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া। আর খাচুয়া মানে খচ্চর।’
বাইক স্টার্ট দিতে দিতে আমার সহকর্মী আগের চেয়ে বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘মানুষের টাইটেল খাচুয়া, মানে খচ্চর!’
‘ক্যান ভাই, খচ্চর টাইটেল হইতে পারে না?’
‘ক্যামনে কমু ভাই!’
বাইকটা আবার চলতে শুরু করে। ওপরে চলতে শুরু করেন আমার পূর্বপুরুষ। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার। দুই প্রজন্মের দুই মানুষ চলেছি সমান্তরাল—ওপরে আর নিচে।
‘নিলোর ডাঙার নাম মনে আছে না?’ প্রশ্নটা ধেয়ে এল আমার দিকে।
‘হুম। এখন সেখানে স্কুল।’
‘ওইখানেই ছিল নিলোর বাড়ি। আহা!’
‘আপনার চরিত্র যে খুব ভালো ছিল না, ও আমি জানি।’
‘ভাই, আপনি কার লগে কথা কন!’ সহকর্মী বিস্মিত কণ্ঠে জানতে চান।
‘কইলাম না ভাই, আমার পূর্বপুরুষের লগে।’
‘ভূত!’
‘মনে হয়।’
‘বলেন কী! আপনি ভূত দেখতে পান?’ দ্বিধা আর শঙ্কা মিশ্রিত কণ্ঠে জানতে চান আমার সহকর্মী।
‘না। ভূত দেখতে পাই না।’
‘তাইলে কথা কন কার লগে!’
‘আপনে গাড়ি চালান মিয়া।’
বাইক ব্রেক কষে থেমে যায়। সহকর্মী বলেন, ‘আমি আপনারে নিতে পারব না। কাছাকাছি আসছি। আপনি যানগা। নামেন ভাই।’
আমি আমতা-আমতা করতে করতে বলি, ‘মানে?’
‘মানে কিছু না। আপনি ভূত পোষেন। যানগা। আমি আপনার লগে যামু না।’
ভদ্র মানুষের এক কথা। আমি নেমে দাঁড়ালাম এক জনশূন্য রাজধানীর রাজপথে। স্বাভাবিক সময়ের ভীষণ জ্যামের এ রাজপথকে এখন মনে হচ্ছে রাক্ষসের জাদুতে আচ্ছন্ন ঘুমন্তপুরীতে যাওয়ার পথ। এ পথে দাঁড়িয়ে আমি একা এক রাজকুমার। সুনসান নীরব এ ঘুমন্তপুরীর কোনো এক রাজপ্রাসাদে বন্দী রাজকন্যার ঘুম ভাঙাতে চলেছি। হাতে আমার জিয়নকাঠি। ডান হাতে সোনার, আর বাম হাতে রুপার কাঠি। কিন্তু ভুলে গেছি কোন কাঠির ছোঁয়ায় রাজকন্যার ঘুম ভাঙবে। এদিকে মাথার ওপর পূর্বপুরুষের ভূত। বাসায় বউ। মোবাইলে সিনড্রেলা বেল বেজেই যাচ্ছে।
দুই হাতে দুই জিয়ন কাঠি নিয়ে এগিয়ে চলেছে রাজকুমার। একটু ওজন বেশি তার। হঠাৎ একটা পঙ্খীরাজ ঘোড়া উড়ে এল কোত্থেকে যেন। বলল, উঠে পড়েন পিঠে।
রাজকুমার উঠে পড়ল। পঙ্খীরাজ উড়তে শুরু করল। চোখের নিমিশেই সে হাজির হলো ঘুমন্তপুরীর সিংহ দরজায়। ঘোড়া বলল, নামেন ভাই। আইসা গেছি।
হেলমেট খুলতে খুলতে বললাম, ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন

হাসিটা তখনই কানে এল।
মানুষহীন শহরে রাস্তাগুলো একেবারে ফাঁকা। চলছে লকডাউন। সন্ধ্যাবেলাতেই চারদিক সুনসান। হলুদ–কালোয় মেশানো ভৌতিক আবহ। এক সহকর্মীর বাইকের পেছনে উঠে পাড়ি দিতে শুরু করলাম সুনসান এক নীরব শহরের জনশূন্য পথ। এগুলোকে রাজপথই বলা হয়। যখন মিছিলের যুগ ছিল, তখন এসব রাজপথ ছেড়ে না যাওয়ার একটি গল্প ছিল। এখন নীরব।
অফিস থেকে বেরিয়ে একটা ইউ টার্ন নিয়ে বাইক পৌঁছে গেল হাতিরঝিলের কোনায়। সেখানে একটা পুলিশ চেকপোস্ট। কায়দা করে সেটা পেরিয়ে যাওয়ার পর ফাঁকা সুদৃশ্য রাস্তা। দুদিকে গাছের সারি। রাত নটা। এ সময় এখানে মানুষ গিজগিজ করার কথা। এখন পিনপতন নীরবতা। একটা মেটে রঙের কুকুর হেলতে দুলতে পার হলো রাস্তাটা। মনে কু ডেকে গেল। কুকুর–বেড়ালকে বিশ্বাস নেই। এরা ডান দিক থেকে আড়াআড়ি বাম দিকে গেলে অমঙ্গল হয়। মেটে রঙের কুকুরটা তাই গেল। আমি ভেতরে-ভেতরে ভীষণ চমকে উঠলাম। পুরো রাস্তায় আমরা দুজন বাইক যাত্রী ছাড়া আর কেউ নেই। গাছের ফাঁকে ফাঁকে নিয়ন বাতির পোস্ট। শ্রাবণের কালো মেঘের প্রেক্ষাপটে ফাঁকা রাস্তায় হলুদ নিয়ন আলো যথেষ্ট ভৌতিক। সামনে একটা ব্রিজ। ব্রিজের আগে বেশ কিছু গাছ, কালো হয়ে আছে জায়গাটা। এখানে আসতেই হাসিটা কানে ঢুকল।
খ্যাক খ্যাক খিক খিক বা হা হা করে অট্ট হাসি নয়। বুঝলাম আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার আশপাশেই আছেন। ব্রিজটা পার হতেই একটা হলুদ আলোর ল্যাম্পপোস্ট। হাসিটা আর শুনতে পেলাম না। ল্যাম্পপোস্টটা পেরোতেই সামনে আর আলো নেই। সম্ভবত এখানকার বাতিগুলো খারাপ হয়ে গেছে। এই অন্ধকার জায়গাটাতে আবার হাসির শব্দ পেলাম। আমার সহকর্মী কি শুনতে পাচ্ছেন হাসির শব্দ? শুনলে বিতিকিচ্ছিরি একটা ব্যাপার হয়ে যাবে। আমি ওপরের দিকে চাইলাম। হ্যাঁ, যা ভেবেছি তাই। আমার মাথার ওপর দিয়ে শূন্যে ভেসে চলেছেন আমার পূর্বপুরুষ।
সহকর্মীর বাইকটাও চলছে ধীরে। পুরোনো বাইক। তার ওপর আমার আবার বদনাম আছে ওভার ওয়েটের জন্য। যদিও আমার ওজন নিয়ে আমার কোনো কমপ্লেইন নেই। তারপরেও কেন যে লোকজন আমার ওজন নিয়ে ভাবে, আমি জানি না। যা হোক, আমার সহকর্মীর বাইকটা চলছে বেশ ধীরে। আমার মাথার ওপর আমার পূর্বপুরুষের ভূত শূন্যে ভেসে চলেছেন ঠিক শরতের স্বচ্ছ আকাশে পেঁজা তুলো মেঘের মতো। বুঝলাম আজ রাতের বড় একটা সময় ফালতু যেতে বসেছে।
সাত রাস্তা ধরে বিজয় সরণির দিকে চলেছি। সেই নিস্তব্ধ নিঝুম রাজপথ। মাঝে মাঝে এক আধটা বাইক বা গাড়ি হুসহাস করে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার মাথার ওপর বসে তালি দিয়ে উঠছেন। আমি একবার তাঁর দিকে, আরেকবার বাইক চালক আমার সহকর্মীর দিকে তাকাচ্ছি।
‘শাওন মাসের এইরাম একটা দিনে আমি প্রেমে পড়ছিলাম।’
‘আচ্ছা। তারপর?’
‘কী যে সুন্দরী আছিল। আহা!’
‘আরে রাখেন। আমি শুনছি তিনি ছিলেন কালো কুচকুচে। চোখ দুইটা বড় বড়।’
‘মোর চোউখ দুইটা যদি তোর চউখে বসায় দিতে পাত্তাম, তাইলে বুঝতি সোন্দর কারে কয়।’
‘আরে রাখেন…’
কথা শেষ হওয়ার আগেই হার্ড ব্রেক কষে থেমে গেলেন আমার সহকর্মী।
‘ভাই, এটা তো চন্দ্রিমা উদ্যান। বাগান। এখানে নামবেন ক্যান।’
‘সেটা তো আমারও প্রশ্ন। এখানে দাঁড়ালেন ক্যান?’
‘আপনি তো রাখতে বললেন ভাই!’
আমার সহকর্মীর চোখে বিস্ময়। আমি তার বিস্ময় আরও বাড়িয়ে তুলে বললাম, ‘নাহ, আপনারে বলি নাই। বলছি আমার পূর্বপুরুষরে। তার নাম পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া। আর খাচুয়া মানে খচ্চর।’
বাইক স্টার্ট দিতে দিতে আমার সহকর্মী আগের চেয়ে বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘মানুষের টাইটেল খাচুয়া, মানে খচ্চর!’
‘ক্যান ভাই, খচ্চর টাইটেল হইতে পারে না?’
‘ক্যামনে কমু ভাই!’
বাইকটা আবার চলতে শুরু করে। ওপরে চলতে শুরু করেন আমার পূর্বপুরুষ। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার। দুই প্রজন্মের দুই মানুষ চলেছি সমান্তরাল—ওপরে আর নিচে।
‘নিলোর ডাঙার নাম মনে আছে না?’ প্রশ্নটা ধেয়ে এল আমার দিকে।
‘হুম। এখন সেখানে স্কুল।’
‘ওইখানেই ছিল নিলোর বাড়ি। আহা!’
‘আপনার চরিত্র যে খুব ভালো ছিল না, ও আমি জানি।’
‘ভাই, আপনি কার লগে কথা কন!’ সহকর্মী বিস্মিত কণ্ঠে জানতে চান।
‘কইলাম না ভাই, আমার পূর্বপুরুষের লগে।’
‘ভূত!’
‘মনে হয়।’
‘বলেন কী! আপনি ভূত দেখতে পান?’ দ্বিধা আর শঙ্কা মিশ্রিত কণ্ঠে জানতে চান আমার সহকর্মী।
‘না। ভূত দেখতে পাই না।’
‘তাইলে কথা কন কার লগে!’
‘আপনে গাড়ি চালান মিয়া।’
বাইক ব্রেক কষে থেমে যায়। সহকর্মী বলেন, ‘আমি আপনারে নিতে পারব না। কাছাকাছি আসছি। আপনি যানগা। নামেন ভাই।’
আমি আমতা-আমতা করতে করতে বলি, ‘মানে?’
‘মানে কিছু না। আপনি ভূত পোষেন। যানগা। আমি আপনার লগে যামু না।’
ভদ্র মানুষের এক কথা। আমি নেমে দাঁড়ালাম এক জনশূন্য রাজধানীর রাজপথে। স্বাভাবিক সময়ের ভীষণ জ্যামের এ রাজপথকে এখন মনে হচ্ছে রাক্ষসের জাদুতে আচ্ছন্ন ঘুমন্তপুরীতে যাওয়ার পথ। এ পথে দাঁড়িয়ে আমি একা এক রাজকুমার। সুনসান নীরব এ ঘুমন্তপুরীর কোনো এক রাজপ্রাসাদে বন্দী রাজকন্যার ঘুম ভাঙাতে চলেছি। হাতে আমার জিয়নকাঠি। ডান হাতে সোনার, আর বাম হাতে রুপার কাঠি। কিন্তু ভুলে গেছি কোন কাঠির ছোঁয়ায় রাজকন্যার ঘুম ভাঙবে। এদিকে মাথার ওপর পূর্বপুরুষের ভূত। বাসায় বউ। মোবাইলে সিনড্রেলা বেল বেজেই যাচ্ছে।
দুই হাতে দুই জিয়ন কাঠি নিয়ে এগিয়ে চলেছে রাজকুমার। একটু ওজন বেশি তার। হঠাৎ একটা পঙ্খীরাজ ঘোড়া উড়ে এল কোত্থেকে যেন। বলল, উঠে পড়েন পিঠে।
রাজকুমার উঠে পড়ল। পঙ্খীরাজ উড়তে শুরু করল। চোখের নিমিশেই সে হাজির হলো ঘুমন্তপুরীর সিংহ দরজায়। ঘোড়া বলল, নামেন ভাই। আইসা গেছি।
হেলমেট খুলতে খুলতে বললাম, ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন
রজত কান্তি রায়

হাসিটা তখনই কানে এল।
মানুষহীন শহরে রাস্তাগুলো একেবারে ফাঁকা। চলছে লকডাউন। সন্ধ্যাবেলাতেই চারদিক সুনসান। হলুদ–কালোয় মেশানো ভৌতিক আবহ। এক সহকর্মীর বাইকের পেছনে উঠে পাড়ি দিতে শুরু করলাম সুনসান এক নীরব শহরের জনশূন্য পথ। এগুলোকে রাজপথই বলা হয়। যখন মিছিলের যুগ ছিল, তখন এসব রাজপথ ছেড়ে না যাওয়ার একটি গল্প ছিল। এখন নীরব।
অফিস থেকে বেরিয়ে একটা ইউ টার্ন নিয়ে বাইক পৌঁছে গেল হাতিরঝিলের কোনায়। সেখানে একটা পুলিশ চেকপোস্ট। কায়দা করে সেটা পেরিয়ে যাওয়ার পর ফাঁকা সুদৃশ্য রাস্তা। দুদিকে গাছের সারি। রাত নটা। এ সময় এখানে মানুষ গিজগিজ করার কথা। এখন পিনপতন নীরবতা। একটা মেটে রঙের কুকুর হেলতে দুলতে পার হলো রাস্তাটা। মনে কু ডেকে গেল। কুকুর–বেড়ালকে বিশ্বাস নেই। এরা ডান দিক থেকে আড়াআড়ি বাম দিকে গেলে অমঙ্গল হয়। মেটে রঙের কুকুরটা তাই গেল। আমি ভেতরে-ভেতরে ভীষণ চমকে উঠলাম। পুরো রাস্তায় আমরা দুজন বাইক যাত্রী ছাড়া আর কেউ নেই। গাছের ফাঁকে ফাঁকে নিয়ন বাতির পোস্ট। শ্রাবণের কালো মেঘের প্রেক্ষাপটে ফাঁকা রাস্তায় হলুদ নিয়ন আলো যথেষ্ট ভৌতিক। সামনে একটা ব্রিজ। ব্রিজের আগে বেশ কিছু গাছ, কালো হয়ে আছে জায়গাটা। এখানে আসতেই হাসিটা কানে ঢুকল।
খ্যাক খ্যাক খিক খিক বা হা হা করে অট্ট হাসি নয়। বুঝলাম আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার আশপাশেই আছেন। ব্রিজটা পার হতেই একটা হলুদ আলোর ল্যাম্পপোস্ট। হাসিটা আর শুনতে পেলাম না। ল্যাম্পপোস্টটা পেরোতেই সামনে আর আলো নেই। সম্ভবত এখানকার বাতিগুলো খারাপ হয়ে গেছে। এই অন্ধকার জায়গাটাতে আবার হাসির শব্দ পেলাম। আমার সহকর্মী কি শুনতে পাচ্ছেন হাসির শব্দ? শুনলে বিতিকিচ্ছিরি একটা ব্যাপার হয়ে যাবে। আমি ওপরের দিকে চাইলাম। হ্যাঁ, যা ভেবেছি তাই। আমার মাথার ওপর দিয়ে শূন্যে ভেসে চলেছেন আমার পূর্বপুরুষ।
সহকর্মীর বাইকটাও চলছে ধীরে। পুরোনো বাইক। তার ওপর আমার আবার বদনাম আছে ওভার ওয়েটের জন্য। যদিও আমার ওজন নিয়ে আমার কোনো কমপ্লেইন নেই। তারপরেও কেন যে লোকজন আমার ওজন নিয়ে ভাবে, আমি জানি না। যা হোক, আমার সহকর্মীর বাইকটা চলছে বেশ ধীরে। আমার মাথার ওপর আমার পূর্বপুরুষের ভূত শূন্যে ভেসে চলেছেন ঠিক শরতের স্বচ্ছ আকাশে পেঁজা তুলো মেঘের মতো। বুঝলাম আজ রাতের বড় একটা সময় ফালতু যেতে বসেছে।
সাত রাস্তা ধরে বিজয় সরণির দিকে চলেছি। সেই নিস্তব্ধ নিঝুম রাজপথ। মাঝে মাঝে এক আধটা বাইক বা গাড়ি হুসহাস করে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার মাথার ওপর বসে তালি দিয়ে উঠছেন। আমি একবার তাঁর দিকে, আরেকবার বাইক চালক আমার সহকর্মীর দিকে তাকাচ্ছি।
‘শাওন মাসের এইরাম একটা দিনে আমি প্রেমে পড়ছিলাম।’
‘আচ্ছা। তারপর?’
‘কী যে সুন্দরী আছিল। আহা!’
‘আরে রাখেন। আমি শুনছি তিনি ছিলেন কালো কুচকুচে। চোখ দুইটা বড় বড়।’
‘মোর চোউখ দুইটা যদি তোর চউখে বসায় দিতে পাত্তাম, তাইলে বুঝতি সোন্দর কারে কয়।’
‘আরে রাখেন…’
কথা শেষ হওয়ার আগেই হার্ড ব্রেক কষে থেমে গেলেন আমার সহকর্মী।
‘ভাই, এটা তো চন্দ্রিমা উদ্যান। বাগান। এখানে নামবেন ক্যান।’
‘সেটা তো আমারও প্রশ্ন। এখানে দাঁড়ালেন ক্যান?’
‘আপনি তো রাখতে বললেন ভাই!’
আমার সহকর্মীর চোখে বিস্ময়। আমি তার বিস্ময় আরও বাড়িয়ে তুলে বললাম, ‘নাহ, আপনারে বলি নাই। বলছি আমার পূর্বপুরুষরে। তার নাম পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া। আর খাচুয়া মানে খচ্চর।’
বাইক স্টার্ট দিতে দিতে আমার সহকর্মী আগের চেয়ে বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘মানুষের টাইটেল খাচুয়া, মানে খচ্চর!’
‘ক্যান ভাই, খচ্চর টাইটেল হইতে পারে না?’
‘ক্যামনে কমু ভাই!’
বাইকটা আবার চলতে শুরু করে। ওপরে চলতে শুরু করেন আমার পূর্বপুরুষ। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার। দুই প্রজন্মের দুই মানুষ চলেছি সমান্তরাল—ওপরে আর নিচে।
‘নিলোর ডাঙার নাম মনে আছে না?’ প্রশ্নটা ধেয়ে এল আমার দিকে।
‘হুম। এখন সেখানে স্কুল।’
‘ওইখানেই ছিল নিলোর বাড়ি। আহা!’
‘আপনার চরিত্র যে খুব ভালো ছিল না, ও আমি জানি।’
‘ভাই, আপনি কার লগে কথা কন!’ সহকর্মী বিস্মিত কণ্ঠে জানতে চান।
‘কইলাম না ভাই, আমার পূর্বপুরুষের লগে।’
‘ভূত!’
‘মনে হয়।’
‘বলেন কী! আপনি ভূত দেখতে পান?’ দ্বিধা আর শঙ্কা মিশ্রিত কণ্ঠে জানতে চান আমার সহকর্মী।
‘না। ভূত দেখতে পাই না।’
‘তাইলে কথা কন কার লগে!’
‘আপনে গাড়ি চালান মিয়া।’
বাইক ব্রেক কষে থেমে যায়। সহকর্মী বলেন, ‘আমি আপনারে নিতে পারব না। কাছাকাছি আসছি। আপনি যানগা। নামেন ভাই।’
আমি আমতা-আমতা করতে করতে বলি, ‘মানে?’
‘মানে কিছু না। আপনি ভূত পোষেন। যানগা। আমি আপনার লগে যামু না।’
ভদ্র মানুষের এক কথা। আমি নেমে দাঁড়ালাম এক জনশূন্য রাজধানীর রাজপথে। স্বাভাবিক সময়ের ভীষণ জ্যামের এ রাজপথকে এখন মনে হচ্ছে রাক্ষসের জাদুতে আচ্ছন্ন ঘুমন্তপুরীতে যাওয়ার পথ। এ পথে দাঁড়িয়ে আমি একা এক রাজকুমার। সুনসান নীরব এ ঘুমন্তপুরীর কোনো এক রাজপ্রাসাদে বন্দী রাজকন্যার ঘুম ভাঙাতে চলেছি। হাতে আমার জিয়নকাঠি। ডান হাতে সোনার, আর বাম হাতে রুপার কাঠি। কিন্তু ভুলে গেছি কোন কাঠির ছোঁয়ায় রাজকন্যার ঘুম ভাঙবে। এদিকে মাথার ওপর পূর্বপুরুষের ভূত। বাসায় বউ। মোবাইলে সিনড্রেলা বেল বেজেই যাচ্ছে।
দুই হাতে দুই জিয়ন কাঠি নিয়ে এগিয়ে চলেছে রাজকুমার। একটু ওজন বেশি তার। হঠাৎ একটা পঙ্খীরাজ ঘোড়া উড়ে এল কোত্থেকে যেন। বলল, উঠে পড়েন পিঠে।
রাজকুমার উঠে পড়ল। পঙ্খীরাজ উড়তে শুরু করল। চোখের নিমিশেই সে হাজির হলো ঘুমন্তপুরীর সিংহ দরজায়। ঘোড়া বলল, নামেন ভাই। আইসা গেছি।
হেলমেট খুলতে খুলতে বললাম, ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন

হাসিটা তখনই কানে এল।
মানুষহীন শহরে রাস্তাগুলো একেবারে ফাঁকা। চলছে লকডাউন। সন্ধ্যাবেলাতেই চারদিক সুনসান। হলুদ–কালোয় মেশানো ভৌতিক আবহ। এক সহকর্মীর বাইকের পেছনে উঠে পাড়ি দিতে শুরু করলাম সুনসান এক নীরব শহরের জনশূন্য পথ। এগুলোকে রাজপথই বলা হয়। যখন মিছিলের যুগ ছিল, তখন এসব রাজপথ ছেড়ে না যাওয়ার একটি গল্প ছিল। এখন নীরব।
অফিস থেকে বেরিয়ে একটা ইউ টার্ন নিয়ে বাইক পৌঁছে গেল হাতিরঝিলের কোনায়। সেখানে একটা পুলিশ চেকপোস্ট। কায়দা করে সেটা পেরিয়ে যাওয়ার পর ফাঁকা সুদৃশ্য রাস্তা। দুদিকে গাছের সারি। রাত নটা। এ সময় এখানে মানুষ গিজগিজ করার কথা। এখন পিনপতন নীরবতা। একটা মেটে রঙের কুকুর হেলতে দুলতে পার হলো রাস্তাটা। মনে কু ডেকে গেল। কুকুর–বেড়ালকে বিশ্বাস নেই। এরা ডান দিক থেকে আড়াআড়ি বাম দিকে গেলে অমঙ্গল হয়। মেটে রঙের কুকুরটা তাই গেল। আমি ভেতরে-ভেতরে ভীষণ চমকে উঠলাম। পুরো রাস্তায় আমরা দুজন বাইক যাত্রী ছাড়া আর কেউ নেই। গাছের ফাঁকে ফাঁকে নিয়ন বাতির পোস্ট। শ্রাবণের কালো মেঘের প্রেক্ষাপটে ফাঁকা রাস্তায় হলুদ নিয়ন আলো যথেষ্ট ভৌতিক। সামনে একটা ব্রিজ। ব্রিজের আগে বেশ কিছু গাছ, কালো হয়ে আছে জায়গাটা। এখানে আসতেই হাসিটা কানে ঢুকল।
খ্যাক খ্যাক খিক খিক বা হা হা করে অট্ট হাসি নয়। বুঝলাম আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার আশপাশেই আছেন। ব্রিজটা পার হতেই একটা হলুদ আলোর ল্যাম্পপোস্ট। হাসিটা আর শুনতে পেলাম না। ল্যাম্পপোস্টটা পেরোতেই সামনে আর আলো নেই। সম্ভবত এখানকার বাতিগুলো খারাপ হয়ে গেছে। এই অন্ধকার জায়গাটাতে আবার হাসির শব্দ পেলাম। আমার সহকর্মী কি শুনতে পাচ্ছেন হাসির শব্দ? শুনলে বিতিকিচ্ছিরি একটা ব্যাপার হয়ে যাবে। আমি ওপরের দিকে চাইলাম। হ্যাঁ, যা ভেবেছি তাই। আমার মাথার ওপর দিয়ে শূন্যে ভেসে চলেছেন আমার পূর্বপুরুষ।
সহকর্মীর বাইকটাও চলছে ধীরে। পুরোনো বাইক। তার ওপর আমার আবার বদনাম আছে ওভার ওয়েটের জন্য। যদিও আমার ওজন নিয়ে আমার কোনো কমপ্লেইন নেই। তারপরেও কেন যে লোকজন আমার ওজন নিয়ে ভাবে, আমি জানি না। যা হোক, আমার সহকর্মীর বাইকটা চলছে বেশ ধীরে। আমার মাথার ওপর আমার পূর্বপুরুষের ভূত শূন্যে ভেসে চলেছেন ঠিক শরতের স্বচ্ছ আকাশে পেঁজা তুলো মেঘের মতো। বুঝলাম আজ রাতের বড় একটা সময় ফালতু যেতে বসেছে।
সাত রাস্তা ধরে বিজয় সরণির দিকে চলেছি। সেই নিস্তব্ধ নিঝুম রাজপথ। মাঝে মাঝে এক আধটা বাইক বা গাড়ি হুসহাস করে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার মাথার ওপর বসে তালি দিয়ে উঠছেন। আমি একবার তাঁর দিকে, আরেকবার বাইক চালক আমার সহকর্মীর দিকে তাকাচ্ছি।
‘শাওন মাসের এইরাম একটা দিনে আমি প্রেমে পড়ছিলাম।’
‘আচ্ছা। তারপর?’
‘কী যে সুন্দরী আছিল। আহা!’
‘আরে রাখেন। আমি শুনছি তিনি ছিলেন কালো কুচকুচে। চোখ দুইটা বড় বড়।’
‘মোর চোউখ দুইটা যদি তোর চউখে বসায় দিতে পাত্তাম, তাইলে বুঝতি সোন্দর কারে কয়।’
‘আরে রাখেন…’
কথা শেষ হওয়ার আগেই হার্ড ব্রেক কষে থেমে গেলেন আমার সহকর্মী।
‘ভাই, এটা তো চন্দ্রিমা উদ্যান। বাগান। এখানে নামবেন ক্যান।’
‘সেটা তো আমারও প্রশ্ন। এখানে দাঁড়ালেন ক্যান?’
‘আপনি তো রাখতে বললেন ভাই!’
আমার সহকর্মীর চোখে বিস্ময়। আমি তার বিস্ময় আরও বাড়িয়ে তুলে বললাম, ‘নাহ, আপনারে বলি নাই। বলছি আমার পূর্বপুরুষরে। তার নাম পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া। আর খাচুয়া মানে খচ্চর।’
বাইক স্টার্ট দিতে দিতে আমার সহকর্মী আগের চেয়ে বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘মানুষের টাইটেল খাচুয়া, মানে খচ্চর!’
‘ক্যান ভাই, খচ্চর টাইটেল হইতে পারে না?’
‘ক্যামনে কমু ভাই!’
বাইকটা আবার চলতে শুরু করে। ওপরে চলতে শুরু করেন আমার পূর্বপুরুষ। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার। দুই প্রজন্মের দুই মানুষ চলেছি সমান্তরাল—ওপরে আর নিচে।
‘নিলোর ডাঙার নাম মনে আছে না?’ প্রশ্নটা ধেয়ে এল আমার দিকে।
‘হুম। এখন সেখানে স্কুল।’
‘ওইখানেই ছিল নিলোর বাড়ি। আহা!’
‘আপনার চরিত্র যে খুব ভালো ছিল না, ও আমি জানি।’
‘ভাই, আপনি কার লগে কথা কন!’ সহকর্মী বিস্মিত কণ্ঠে জানতে চান।
‘কইলাম না ভাই, আমার পূর্বপুরুষের লগে।’
‘ভূত!’
‘মনে হয়।’
‘বলেন কী! আপনি ভূত দেখতে পান?’ দ্বিধা আর শঙ্কা মিশ্রিত কণ্ঠে জানতে চান আমার সহকর্মী।
‘না। ভূত দেখতে পাই না।’
‘তাইলে কথা কন কার লগে!’
‘আপনে গাড়ি চালান মিয়া।’
বাইক ব্রেক কষে থেমে যায়। সহকর্মী বলেন, ‘আমি আপনারে নিতে পারব না। কাছাকাছি আসছি। আপনি যানগা। নামেন ভাই।’
আমি আমতা-আমতা করতে করতে বলি, ‘মানে?’
‘মানে কিছু না। আপনি ভূত পোষেন। যানগা। আমি আপনার লগে যামু না।’
ভদ্র মানুষের এক কথা। আমি নেমে দাঁড়ালাম এক জনশূন্য রাজধানীর রাজপথে। স্বাভাবিক সময়ের ভীষণ জ্যামের এ রাজপথকে এখন মনে হচ্ছে রাক্ষসের জাদুতে আচ্ছন্ন ঘুমন্তপুরীতে যাওয়ার পথ। এ পথে দাঁড়িয়ে আমি একা এক রাজকুমার। সুনসান নীরব এ ঘুমন্তপুরীর কোনো এক রাজপ্রাসাদে বন্দী রাজকন্যার ঘুম ভাঙাতে চলেছি। হাতে আমার জিয়নকাঠি। ডান হাতে সোনার, আর বাম হাতে রুপার কাঠি। কিন্তু ভুলে গেছি কোন কাঠির ছোঁয়ায় রাজকন্যার ঘুম ভাঙবে। এদিকে মাথার ওপর পূর্বপুরুষের ভূত। বাসায় বউ। মোবাইলে সিনড্রেলা বেল বেজেই যাচ্ছে।
দুই হাতে দুই জিয়ন কাঠি নিয়ে এগিয়ে চলেছে রাজকুমার। একটু ওজন বেশি তার। হঠাৎ একটা পঙ্খীরাজ ঘোড়া উড়ে এল কোত্থেকে যেন। বলল, উঠে পড়েন পিঠে।
রাজকুমার উঠে পড়ল। পঙ্খীরাজ উড়তে শুরু করল। চোখের নিমিশেই সে হাজির হলো ঘুমন্তপুরীর সিংহ দরজায়। ঘোড়া বলল, নামেন ভাই। আইসা গেছি।
হেলমেট খুলতে খুলতে বললাম, ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন

১৯৪২ সালে বিয়ে। একসঙ্গে ৮৩ বছর পার করলেন যুক্তরাষ্ট্রে শতবর্ষী দম্পতি এলিনর ও লাইল গিটেনস। এই দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের মধ্য দিয়ে গড়লেন বিশ্বরেকর্ডও। বিশ্বের দীর্ঘতম বিবাহিত জুটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ১০৭ বছর বয়সী এলিনর ও ১০৮ বছর বয়সী লাইল গিটেনস।
২ দিন আগে
শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে।
৯ দিন আগে
২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
১০ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
১৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

১৯৪২ সালে বিয়ে। একসঙ্গে ৮৩ বছর পার করলেন যুক্তরাষ্ট্রে শতবর্ষী দম্পতি এলিনর ও লাইল গিটেনস। এই দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের মধ্য দিয়ে গড়লেন বিশ্বরেকর্ডও। বিশ্বের দীর্ঘতম বিবাহিত জুটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ১০৭ বছর বয়সী এলিনর ও ১০৮ বছর বয়সী লাইল গিটেনস।
যেখানে বিশ্বজুড়ে বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদের হার সেখানে দীর্ঘ এই দাম্পত্য জীবনের পথচলা বিস্ময়েরই। তবে এই দম্পতি বলেন, তাঁদের এই দীর্ঘ পথচলায় রয়েছে শুধু একে অপরের প্রতি ভালোবাসা।
১০০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের তথ্য সংরক্ষণ করে এমন একটি সংস্থা লংজেভিকোয়েস্ট ওয়েবসাইট এলিনর-লাইল দম্পতির বিয়ের শংসাপত্র, মার্কিন আদমশুমারি নথি ও অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করেছে।
এর আগে এই রেকর্ড ছিল ৮৫ বছরের দাম্পত্য জীবনের অধিকারী ব্রাজিলের ম্যানোয়েল অ্যাঞ্জেলিম দিনো (১০৬) এবং তাঁর স্ত্রী মারিয়া দে সোসা দিনো (১০২)-এর দখলে। তাঁদের মৃত্যুর পর গিটেনস দম্পতি এই খেতাব পান।
এলিনর ও লাইলের প্রথম দেখা ১৯৪১ সালে একটি কলেজ বাস্কেটবল ম্যাচে। লাইল ক্লার্ক আটলান্টা ইউনিভার্সিটির পক্ষে খেলছিলেন। আর এলিনর ছিলেন দর্শকের সারিতে।
এই পরিচয় ১৯৪২ সালের ৪ জুন পরিণয়ে গড়াল। জর্জিয়ার সেনা প্রশিক্ষণ থেকে মাত্র তিন দিন ছুটি পেয়ে লাইল বিয়ে করেন এলিনরকে। লাইল যখন ইউএস আর্মির ৯২ তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনে ইতালিতে দায়িত্বরত, এলিনর ভাবছিলেন আর কি হবে দেখা!
প্রথম সন্তানকে গর্ভে। এ সময় এলিনর চলে যান নিউইয়র্ক সিটিতে। সেখানে লাইলের পরিবারের সঙ্গে পরিচিত হন। কাজের পাশাপাশি চিঠির মাধ্যমে লাইলের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখছিলেন এলিনর। স্মৃতিচারণ করে এলিনর জানান, প্রত্যেকটা চিঠি সেনাবাহিনী পরীক্ষা করত। তাই সব কথা বলাও যেত না।
যুদ্ধের পর নিউইয়র্কের স্থায়ী বাসিন্দা হন গিটেনস দম্পতি। একসঙ্গে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন।
৬৯ বছর বয়সে ফোর্ডহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবান এডুকেশনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন এলিনর। এরপর তারা ক্লার্ক আটলান্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কয়েক দশক কাটান। পরে তিন সন্তানের একজন অ্যাঞ্জেলার কাছাকাছি থাকতে মিয়ামিতে চলে যান।
লাইল জানান, তিনি এলিনরের সঙ্গে সময় কাটানো ভালোবাসেন। তাঁর সঙ্গে থাকতে পেরে খুশি। তাঁদের দুজনই একসঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন এবং জীবনে একসঙ্গে অনেক কিছু করেছেন।
লংজেভিকোয়েস্ট সংস্থা জানায়, গিটেনস দম্পতির সম্মিলিত বয়স ২১৮ বছরেরও বেশি। তাঁরা বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে বয়স্ক বিবাহিত দম্পতিও।

১৯৪২ সালে বিয়ে। একসঙ্গে ৮৩ বছর পার করলেন যুক্তরাষ্ট্রে শতবর্ষী দম্পতি এলিনর ও লাইল গিটেনস। এই দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের মধ্য দিয়ে গড়লেন বিশ্বরেকর্ডও। বিশ্বের দীর্ঘতম বিবাহিত জুটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ১০৭ বছর বয়সী এলিনর ও ১০৮ বছর বয়সী লাইল গিটেনস।
যেখানে বিশ্বজুড়ে বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদের হার সেখানে দীর্ঘ এই দাম্পত্য জীবনের পথচলা বিস্ময়েরই। তবে এই দম্পতি বলেন, তাঁদের এই দীর্ঘ পথচলায় রয়েছে শুধু একে অপরের প্রতি ভালোবাসা।
১০০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের তথ্য সংরক্ষণ করে এমন একটি সংস্থা লংজেভিকোয়েস্ট ওয়েবসাইট এলিনর-লাইল দম্পতির বিয়ের শংসাপত্র, মার্কিন আদমশুমারি নথি ও অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করেছে।
এর আগে এই রেকর্ড ছিল ৮৫ বছরের দাম্পত্য জীবনের অধিকারী ব্রাজিলের ম্যানোয়েল অ্যাঞ্জেলিম দিনো (১০৬) এবং তাঁর স্ত্রী মারিয়া দে সোসা দিনো (১০২)-এর দখলে। তাঁদের মৃত্যুর পর গিটেনস দম্পতি এই খেতাব পান।
এলিনর ও লাইলের প্রথম দেখা ১৯৪১ সালে একটি কলেজ বাস্কেটবল ম্যাচে। লাইল ক্লার্ক আটলান্টা ইউনিভার্সিটির পক্ষে খেলছিলেন। আর এলিনর ছিলেন দর্শকের সারিতে।
এই পরিচয় ১৯৪২ সালের ৪ জুন পরিণয়ে গড়াল। জর্জিয়ার সেনা প্রশিক্ষণ থেকে মাত্র তিন দিন ছুটি পেয়ে লাইল বিয়ে করেন এলিনরকে। লাইল যখন ইউএস আর্মির ৯২ তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনে ইতালিতে দায়িত্বরত, এলিনর ভাবছিলেন আর কি হবে দেখা!
প্রথম সন্তানকে গর্ভে। এ সময় এলিনর চলে যান নিউইয়র্ক সিটিতে। সেখানে লাইলের পরিবারের সঙ্গে পরিচিত হন। কাজের পাশাপাশি চিঠির মাধ্যমে লাইলের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখছিলেন এলিনর। স্মৃতিচারণ করে এলিনর জানান, প্রত্যেকটা চিঠি সেনাবাহিনী পরীক্ষা করত। তাই সব কথা বলাও যেত না।
যুদ্ধের পর নিউইয়র্কের স্থায়ী বাসিন্দা হন গিটেনস দম্পতি। একসঙ্গে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন।
৬৯ বছর বয়সে ফোর্ডহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবান এডুকেশনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন এলিনর। এরপর তারা ক্লার্ক আটলান্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কয়েক দশক কাটান। পরে তিন সন্তানের একজন অ্যাঞ্জেলার কাছাকাছি থাকতে মিয়ামিতে চলে যান।
লাইল জানান, তিনি এলিনরের সঙ্গে সময় কাটানো ভালোবাসেন। তাঁর সঙ্গে থাকতে পেরে খুশি। তাঁদের দুজনই একসঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন এবং জীবনে একসঙ্গে অনেক কিছু করেছেন।
লংজেভিকোয়েস্ট সংস্থা জানায়, গিটেনস দম্পতির সম্মিলিত বয়স ২১৮ বছরেরও বেশি। তাঁরা বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে বয়স্ক বিবাহিত দম্পতিও।

মানুষহীন শহরে রাস্তাগুলো একেবারে ফাঁকা। চলছে লকডাউন। সন্ধ্যাবেলাতেই চারদিক সুনসান। হলুদ–কালোয় মেশানো ভৌতিক আবহ। এক সহকর্মীর বাইকের পেছনে উঠে পাড়ি দিতে শুরু করলাম সুনসান এক নীরব শহরের জনশূন্য পথ।
২৫ জুলাই ২০২১
শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে।
৯ দিন আগে
২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
১০ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
১৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে। এদিকে চীনের ১১ বছর বয়সী এক শিশু গিলে ফেলেছে সোনার দানা (গোল্ড বিন)। যার বাজারমূল্য ১০ হাজার ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার ২৫ টাকা)।
দক্ষিণ-পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের কুনশানের বাসিন্দা জি গত ১৭ অক্টোবর ১০ গ্রামের একটি সোনার দানা কেনেন। কয়েক দিন পর ২২ অক্টোবর তাঁর ছেলে সোনার দানাটি হাতে পেয়ে খেলতে খেলতে হঠাৎ গিলে ফেলে।
এ সময় জি বারান্দায় কাপড় ধুচ্ছিলেন। তাঁর ছেলে আতঙ্কিত হয়ে ছুটে এসে জানায়, সে গোল্ড বিনটি গিলে ফেলেছে। তার ভয় হচ্ছে সে কি এখন মারা যাবে!
জিকে তাঁর ছেলে আরও জানায়, জিব দিয়ে স্বাদ পরীক্ষা করার সময় সে সোনার দানাটি গিলে ফেলেছে।
প্রথমে জি ভেবেছিলেন, ছেলে মজা করছে। পরে দেখেন সোনার দানাটি নেই। তখন তিনি চিন্তায় পড়ে যান।
জির তখন মনে পড়ে, তাঁর ভাগনিও একবার একটি কয়েন গিলে ফেলেছিল। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেছিলেন, এটি গুরুতর কিছু নয়। মলের সঙ্গে বের হয়ে যাবে।
জি মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে থাকেন কী করা যায়। ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে তিনি দেখেন, সোনার জিনিসও একইভাবে মলের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে।
এরপর জি ছেলেকে চোখে চোখে রাখতে থাকেন হারানো এই মূল্যবান সম্পদ উদ্ধারের আশায়। ছেলেকে সতর্ক করতে থাকেন বাইরে মলত্যাগ না করে ঘরে নির্ধারিত স্থানে করতে। কারণ, মলের সঙ্গে সোনার দানাটি বের হয়ে আসবে। তা সত্ত্বেও টানা পাঁচ দিন ধরে দিনে দুবার পরীক্ষা করেও সোনাটি পাওয়া যায়নি।
পরে গত ২৬ অক্টোবর ছেলেকে কুনশান ফিফথ পিপলস হাসপাতালে নিয়ে যান জি। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা দেখেন, শিশুটির পেটে একটি বস্তু রয়েছে। তবে শিশুটির কোনো ব্যথা বা বমির লক্ষণ ছিল না।
পরে সেদিন সন্ধ্যায় সোনার দানাটি নিরাপদে বের হয়। তবে এটি কি স্বাভাবিকভাবে বের হয়েছে নাকি চিকিৎসার মাধ্যমে বের করা হয়েছে, তা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে। এদিকে চীনের ১১ বছর বয়সী এক শিশু গিলে ফেলেছে সোনার দানা (গোল্ড বিন)। যার বাজারমূল্য ১০ হাজার ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার ২৫ টাকা)।
দক্ষিণ-পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের কুনশানের বাসিন্দা জি গত ১৭ অক্টোবর ১০ গ্রামের একটি সোনার দানা কেনেন। কয়েক দিন পর ২২ অক্টোবর তাঁর ছেলে সোনার দানাটি হাতে পেয়ে খেলতে খেলতে হঠাৎ গিলে ফেলে।
এ সময় জি বারান্দায় কাপড় ধুচ্ছিলেন। তাঁর ছেলে আতঙ্কিত হয়ে ছুটে এসে জানায়, সে গোল্ড বিনটি গিলে ফেলেছে। তার ভয় হচ্ছে সে কি এখন মারা যাবে!
জিকে তাঁর ছেলে আরও জানায়, জিব দিয়ে স্বাদ পরীক্ষা করার সময় সে সোনার দানাটি গিলে ফেলেছে।
প্রথমে জি ভেবেছিলেন, ছেলে মজা করছে। পরে দেখেন সোনার দানাটি নেই। তখন তিনি চিন্তায় পড়ে যান।
জির তখন মনে পড়ে, তাঁর ভাগনিও একবার একটি কয়েন গিলে ফেলেছিল। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেছিলেন, এটি গুরুতর কিছু নয়। মলের সঙ্গে বের হয়ে যাবে।
জি মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে থাকেন কী করা যায়। ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে তিনি দেখেন, সোনার জিনিসও একইভাবে মলের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে।
এরপর জি ছেলেকে চোখে চোখে রাখতে থাকেন হারানো এই মূল্যবান সম্পদ উদ্ধারের আশায়। ছেলেকে সতর্ক করতে থাকেন বাইরে মলত্যাগ না করে ঘরে নির্ধারিত স্থানে করতে। কারণ, মলের সঙ্গে সোনার দানাটি বের হয়ে আসবে। তা সত্ত্বেও টানা পাঁচ দিন ধরে দিনে দুবার পরীক্ষা করেও সোনাটি পাওয়া যায়নি।
পরে গত ২৬ অক্টোবর ছেলেকে কুনশান ফিফথ পিপলস হাসপাতালে নিয়ে যান জি। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা দেখেন, শিশুটির পেটে একটি বস্তু রয়েছে। তবে শিশুটির কোনো ব্যথা বা বমির লক্ষণ ছিল না।
পরে সেদিন সন্ধ্যায় সোনার দানাটি নিরাপদে বের হয়। তবে এটি কি স্বাভাবিকভাবে বের হয়েছে নাকি চিকিৎসার মাধ্যমে বের করা হয়েছে, তা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

মানুষহীন শহরে রাস্তাগুলো একেবারে ফাঁকা। চলছে লকডাউন। সন্ধ্যাবেলাতেই চারদিক সুনসান। হলুদ–কালোয় মেশানো ভৌতিক আবহ। এক সহকর্মীর বাইকের পেছনে উঠে পাড়ি দিতে শুরু করলাম সুনসান এক নীরব শহরের জনশূন্য পথ।
২৫ জুলাই ২০২১
১৯৪২ সালে বিয়ে। একসঙ্গে ৮৩ বছর পার করলেন যুক্তরাষ্ট্রে শতবর্ষী দম্পতি এলিনর ও লাইল গিটেনস। এই দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের মধ্য দিয়ে গড়লেন বিশ্বরেকর্ডও। বিশ্বের দীর্ঘতম বিবাহিত জুটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ১০৭ বছর বয়সী এলিনর ও ১০৮ বছর বয়সী লাইল গিটেনস।
২ দিন আগে
২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
১০ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
১৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। আর হ্যালোইনের বিশেষ পোশাক হিসেবে টেইলরের কাছে সেদিন বিকল্প ছিল মাত্র দুটো—তাঁকে হয় যিশুখ্রিষ্ট সাজতে হবে, নয়তো অ্যামাজন প্রাইম সিরিজ দ্য বয়েজ-এর কুখ্যাত সুপারহিরো ‘হোমল্যান্ডার’। কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে শেষ পর্যন্ত সুপারহিরোর পোশাকটিই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য গার্ডিয়ানে টেইলর লিখেছেন, সেদিন অন্য এক চরিত্র ‘স্টারলাইট’ সেজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রী চেলসি। তাঁদের দুই সন্তানও ছিল গাড়িতে—তাদের একজন সেজেছিল ‘আয়রন ম্যান’ আর অন্যজন ‘ড্রাগন’।
যাত্রাপথে হঠাৎ তাঁরা দেখতে পান একটি বাড়ি থেকে আগুনের শিখা বের হচ্ছে। টেইলর তখনই তাঁর স্ত্রী চেলসিকে বলেন, ‘গাড়ি থামাও, আর ৯১১-এ ফোন দাও।’ তিনি দৌড়ে চলে যান জ্বলন্ত বাড়ির দিকে।
বাড়িটির সামনে কয়েকজন মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু তাঁরা শুধু আগুনের ধ্বংসযজ্ঞ দেখেই যাচ্ছিলেন, যেন কারওরই কিছু করার নেই। টেইলর তাঁদের কাছে জানতে চান—ভেতরে কেউ আছে কি না। উত্তর আসে, ‘জানি না।’
টেইলর অবশ্য দৌড়ে বাড়িটির আরও কাছে এগিয়ে যান এবং দরজা খুলে ডাক দেন, ‘কেউ আছেন?’ ভেতর থেকে ক্ষীণ একটি আওয়াজও ভেসে আসে। দেরি না করে তখনই দৌড়ে আগুনের ভেতরে ঢুকে পড়েন তিনি।
ভেতরে প্রবল ধোঁয়া ও তাপ সহ্য করেই সিঁড়ি বেয়ে ওপরে গিয়ে টেইলর দেখতে পান এক ব্যক্তি অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। সময় নষ্ট না করে তিনি প্রায় ছয় লম্বা ওই লোকটিকে বহন করে রাস্তায় নিয়ে আসেন।
লোকটির জ্ঞান ফিরে আসার পর অবশ্য পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসও আসে। কিন্তু টেইলর তখন নিজের অদ্ভুত বেশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কোনো রকমে পালিয়ে আসেন।
তবে টেইলরের এই জীবন বাঁচানোর খবরটি আর চাপা থাকে না। এই ঘটনার পর সবাই তাঁকে ‘সুপারহিরো’ বলে সবাই ডাকতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে ‘কার্নেগি মেডেল ফর হিরোইজম’ পান তিনি এবং ওহাইও ফায়ার সার্ভিস হল অব ফেমে তাঁর নাম ওঠে। পাঁচ বছর পরও তাঁর সন্তানেরা গর্ব করে বলে—‘আমার বাবা সত্যিকারের সুপারহিরো।’
এমনকি দ্য বয়েজ সিরিজে হোমল্যান্ডারের চরিত্রে অভিনয় করা অ্যান্টনি স্টার তাঁর গল্পটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে লিখেছিলেন, ‘এর চেয়ে গর্বিত মুহূর্ত আর হতে পারে না।’

২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। আর হ্যালোইনের বিশেষ পোশাক হিসেবে টেইলরের কাছে সেদিন বিকল্প ছিল মাত্র দুটো—তাঁকে হয় যিশুখ্রিষ্ট সাজতে হবে, নয়তো অ্যামাজন প্রাইম সিরিজ দ্য বয়েজ-এর কুখ্যাত সুপারহিরো ‘হোমল্যান্ডার’। কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে শেষ পর্যন্ত সুপারহিরোর পোশাকটিই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য গার্ডিয়ানে টেইলর লিখেছেন, সেদিন অন্য এক চরিত্র ‘স্টারলাইট’ সেজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রী চেলসি। তাঁদের দুই সন্তানও ছিল গাড়িতে—তাদের একজন সেজেছিল ‘আয়রন ম্যান’ আর অন্যজন ‘ড্রাগন’।
যাত্রাপথে হঠাৎ তাঁরা দেখতে পান একটি বাড়ি থেকে আগুনের শিখা বের হচ্ছে। টেইলর তখনই তাঁর স্ত্রী চেলসিকে বলেন, ‘গাড়ি থামাও, আর ৯১১-এ ফোন দাও।’ তিনি দৌড়ে চলে যান জ্বলন্ত বাড়ির দিকে।
বাড়িটির সামনে কয়েকজন মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু তাঁরা শুধু আগুনের ধ্বংসযজ্ঞ দেখেই যাচ্ছিলেন, যেন কারওরই কিছু করার নেই। টেইলর তাঁদের কাছে জানতে চান—ভেতরে কেউ আছে কি না। উত্তর আসে, ‘জানি না।’
টেইলর অবশ্য দৌড়ে বাড়িটির আরও কাছে এগিয়ে যান এবং দরজা খুলে ডাক দেন, ‘কেউ আছেন?’ ভেতর থেকে ক্ষীণ একটি আওয়াজও ভেসে আসে। দেরি না করে তখনই দৌড়ে আগুনের ভেতরে ঢুকে পড়েন তিনি।
ভেতরে প্রবল ধোঁয়া ও তাপ সহ্য করেই সিঁড়ি বেয়ে ওপরে গিয়ে টেইলর দেখতে পান এক ব্যক্তি অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। সময় নষ্ট না করে তিনি প্রায় ছয় লম্বা ওই লোকটিকে বহন করে রাস্তায় নিয়ে আসেন।
লোকটির জ্ঞান ফিরে আসার পর অবশ্য পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসও আসে। কিন্তু টেইলর তখন নিজের অদ্ভুত বেশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কোনো রকমে পালিয়ে আসেন।
তবে টেইলরের এই জীবন বাঁচানোর খবরটি আর চাপা থাকে না। এই ঘটনার পর সবাই তাঁকে ‘সুপারহিরো’ বলে সবাই ডাকতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে ‘কার্নেগি মেডেল ফর হিরোইজম’ পান তিনি এবং ওহাইও ফায়ার সার্ভিস হল অব ফেমে তাঁর নাম ওঠে। পাঁচ বছর পরও তাঁর সন্তানেরা গর্ব করে বলে—‘আমার বাবা সত্যিকারের সুপারহিরো।’
এমনকি দ্য বয়েজ সিরিজে হোমল্যান্ডারের চরিত্রে অভিনয় করা অ্যান্টনি স্টার তাঁর গল্পটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে লিখেছিলেন, ‘এর চেয়ে গর্বিত মুহূর্ত আর হতে পারে না।’

মানুষহীন শহরে রাস্তাগুলো একেবারে ফাঁকা। চলছে লকডাউন। সন্ধ্যাবেলাতেই চারদিক সুনসান। হলুদ–কালোয় মেশানো ভৌতিক আবহ। এক সহকর্মীর বাইকের পেছনে উঠে পাড়ি দিতে শুরু করলাম সুনসান এক নীরব শহরের জনশূন্য পথ।
২৫ জুলাই ২০২১
১৯৪২ সালে বিয়ে। একসঙ্গে ৮৩ বছর পার করলেন যুক্তরাষ্ট্রে শতবর্ষী দম্পতি এলিনর ও লাইল গিটেনস। এই দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের মধ্য দিয়ে গড়লেন বিশ্বরেকর্ডও। বিশ্বের দীর্ঘতম বিবাহিত জুটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ১০৭ বছর বয়সী এলিনর ও ১০৮ বছর বয়সী লাইল গিটেনস।
২ দিন আগে
শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে।
৯ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
১৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
গত শনিবার কেয়ার্নস শহর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বা ১৫৫ মাইল উত্তরে অবস্থিত লিজার্ড আইল্যান্ডে হাইক করতে গিয়েছিলেন ওই নারী। কোরাল অ্যাডভেঞ্চারার নামের একটি ক্রুজ জাহাজে চড়ে আরও অনেকের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। ওই নারী পর্যটক হাইক করার সময় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে গিয়ে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূর্যাস্তের সময় জাহাজটি দ্বীপ ছেড়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর ক্রুরা বুঝতে পারেন, ওই নারী জাহাজে নেই। পরে জাহাজটি দ্বীপে ফিরে যায়। ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়।
পরদিন রোববার সকালে অনুসন্ধানকারীরা দ্বীপ থেকে ওই নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম সেফটি অথরিটি (এএমএসএ) জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জাহাজটি ডারউইনে পৌঁছালে ক্রু সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।
এএমএসএর এক মুখপাত্র জানান, গত শনিবার স্থানীয় সময় রাত প্রায় ৯টার দিকে (জিএমটি অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৫ টা) জাহাজের ক্যাপ্টেন প্রথমবারের মতো ওই নারীর নিখোঁজ হওয়ার খবর দেন।
সংস্থাটি বলেছে, তারা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে ঘটনাটি তদন্ত করবে এবং তারা বাণিজ্যিক জাহাজে যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।
কোরাল এক্সপেডিশনস-এর প্রধান নির্বাহী মার্ক ফাইফিল্ড জানিয়েছেন, সংস্থার কর্মীরা ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই ‘দুঃখজনক মৃত্যু’-র ঘটনায় পরিবারকে সহায়তা দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত এখনো চলছে, তবে যা ঘটেছে তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত এবং ওই নারীর পরিবারকে সর্বোচ্চ সহায়তা দিচ্ছি।’
কুইন্সল্যান্ড পুলিশ জানিয়েছে, নারীর এই ‘হঠাৎ এবং সন্দেহাতীত’ মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শেষে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
কুরিয়ার মেল পত্রিকার প্রতিবেদনে জানা যায়, ওই প্রবীণ নারী দ্বীপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কুকস লুক-এ ওঠার জন্য দলের সঙ্গে হাইকিংয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরে তিনি বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
৬০ দিনের ক্রুজে গিয়েছিলেন ওই নারী, যার টিকিটের দাম কয়েক হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার। কোম্পানির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, কোরাল অ্যাডভেঞ্চারার জাহাজে সর্বোচ্চ ১২০ জন যাত্রী ও ৪৬ জন ক্রু সদস্য থাকতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের দুর্গম এলাকাগুলোতে যাওয়ার জন্য এটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এই জাহাজে ছোট নৌকা বা ‘টেন্ডার’ রয়েছে যেগুলো দিয়ে দিনের বেলা যাত্রীদের ভ্রমণে ব্যবহার করা হয়।

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
গত শনিবার কেয়ার্নস শহর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বা ১৫৫ মাইল উত্তরে অবস্থিত লিজার্ড আইল্যান্ডে হাইক করতে গিয়েছিলেন ওই নারী। কোরাল অ্যাডভেঞ্চারার নামের একটি ক্রুজ জাহাজে চড়ে আরও অনেকের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। ওই নারী পর্যটক হাইক করার সময় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে গিয়ে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূর্যাস্তের সময় জাহাজটি দ্বীপ ছেড়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর ক্রুরা বুঝতে পারেন, ওই নারী জাহাজে নেই। পরে জাহাজটি দ্বীপে ফিরে যায়। ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়।
পরদিন রোববার সকালে অনুসন্ধানকারীরা দ্বীপ থেকে ওই নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম সেফটি অথরিটি (এএমএসএ) জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জাহাজটি ডারউইনে পৌঁছালে ক্রু সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।
এএমএসএর এক মুখপাত্র জানান, গত শনিবার স্থানীয় সময় রাত প্রায় ৯টার দিকে (জিএমটি অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৫ টা) জাহাজের ক্যাপ্টেন প্রথমবারের মতো ওই নারীর নিখোঁজ হওয়ার খবর দেন।
সংস্থাটি বলেছে, তারা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে ঘটনাটি তদন্ত করবে এবং তারা বাণিজ্যিক জাহাজে যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।
কোরাল এক্সপেডিশনস-এর প্রধান নির্বাহী মার্ক ফাইফিল্ড জানিয়েছেন, সংস্থার কর্মীরা ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই ‘দুঃখজনক মৃত্যু’-র ঘটনায় পরিবারকে সহায়তা দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত এখনো চলছে, তবে যা ঘটেছে তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত এবং ওই নারীর পরিবারকে সর্বোচ্চ সহায়তা দিচ্ছি।’
কুইন্সল্যান্ড পুলিশ জানিয়েছে, নারীর এই ‘হঠাৎ এবং সন্দেহাতীত’ মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শেষে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
কুরিয়ার মেল পত্রিকার প্রতিবেদনে জানা যায়, ওই প্রবীণ নারী দ্বীপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কুকস লুক-এ ওঠার জন্য দলের সঙ্গে হাইকিংয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরে তিনি বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
৬০ দিনের ক্রুজে গিয়েছিলেন ওই নারী, যার টিকিটের দাম কয়েক হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার। কোম্পানির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, কোরাল অ্যাডভেঞ্চারার জাহাজে সর্বোচ্চ ১২০ জন যাত্রী ও ৪৬ জন ক্রু সদস্য থাকতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের দুর্গম এলাকাগুলোতে যাওয়ার জন্য এটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এই জাহাজে ছোট নৌকা বা ‘টেন্ডার’ রয়েছে যেগুলো দিয়ে দিনের বেলা যাত্রীদের ভ্রমণে ব্যবহার করা হয়।

মানুষহীন শহরে রাস্তাগুলো একেবারে ফাঁকা। চলছে লকডাউন। সন্ধ্যাবেলাতেই চারদিক সুনসান। হলুদ–কালোয় মেশানো ভৌতিক আবহ। এক সহকর্মীর বাইকের পেছনে উঠে পাড়ি দিতে শুরু করলাম সুনসান এক নীরব শহরের জনশূন্য পথ।
২৫ জুলাই ২০২১
১৯৪২ সালে বিয়ে। একসঙ্গে ৮৩ বছর পার করলেন যুক্তরাষ্ট্রে শতবর্ষী দম্পতি এলিনর ও লাইল গিটেনস। এই দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের মধ্য দিয়ে গড়লেন বিশ্বরেকর্ডও। বিশ্বের দীর্ঘতম বিবাহিত জুটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ১০৭ বছর বয়সী এলিনর ও ১০৮ বছর বয়সী লাইল গিটেনস।
২ দিন আগে
শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে।
৯ দিন আগে
২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
১০ দিন আগে