Ajker Patrika

ছেলে-মেয়েকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করতে ৮০০ কিলোমিটার হাঁটালেন বাবা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হাঁটছে উ-এর দুই ছেলে-মেয়ে। ছবি: সংগৃহীত
হাঁটছে উ-এর দুই ছেলে-মেয়ে। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ চীনের এক ব্যক্তি তাঁর ১০ বছরের মেয়ে ও ৮ বছরের ছেলেকে ৮০০ কিলোমিটার হাঁটিয়েছেন। দীর্ঘ এই হণ্ঠন যাত্রার উদ্দেশ্য ছিল সন্তানদের মানসিকভাবে শক্ত করা। তাঁদের এই অভিযানের প্রশংসা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

উ–পদবিধারী ওই ব্যক্তি ও তাঁর দুই সন্তান গত ১৭ জুলাই দক্ষিণ চীনের শেনজেন শহরের বাওআন জেলা থেকে যাত্রা শুরু করেন। এক মাসের পথ পাড়ি দিয়ে তাঁরা ১৭ আগস্ট গিয়ে পৌঁছান হুনান প্রদেশের রাজধানী চাংশায়। উ বলেন, ‘আমি আশা করিনি যে, ওরা শেষ পর্যন্ত পারবে। এখন খুব স্বস্তি লাগছে আর ওদের জন্য গর্ব হচ্ছে।’

উ জানান, শেনজেনে তাঁর ড্রাইভিং স্কুল ব্যবসা আছে। আর এই ব্যবসার কারণে সাধারণত সন্তানদের সঙ্গে খুব বেশি সময় কাটানো হয় না। দুই বছর আগে তাঁর মাথায় আসে, পায়ে হেঁটে সন্তানদের নিয়ে হুনানে নিজের গ্রামে ফেরার পরিকল্পনা। কিন্তু সেসময় সন্তানরা ছোট হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।

দুই সন্তানের এই পিতা বলেন, ‘এই হাঁটার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ওদের মানসিকভাবে শক্ত করতে চেয়েছিলাম। আমার বাচ্চারা সহজে হাল ছেড়ে দেয়, চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে চলে। তাই, আমি চাইছিলাম—ওরা যেন স্থির থাকে এবং শুরু করা কাজ শেষ করার অভ্যাস গড়ে তোলে।’

পুরো ভ্রমণজুড়ে উ নিজে ১০ কেজির ব্যাগ বহন করেছেন। দুই সন্তানের প্রত্যেকে পাঁচ কেজি করে ব্যাগ বহন করেছে। প্রতিদিন অন্তত ২৩ কিলোমিটার করে হেঁটেছে তাঁরা।

উ জানান, সন্তানদের উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। তাঁর ভাষায়, ‘ওরা ক্লান্ত হয়ে পড়লে আমি বলতাম, তোমরা তোমাদের বাবার থেকেও শক্তিশালী। যত বেশি পথ হাঁটত, ওদের তত বেশি অর্জনের অনুভূতি হতো।’

এই যাত্রায় সন্তানদের কারও পায়ে ফোসকা না হলেও তাঁর নিজের হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিনের খরচের সীমা ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত খরচের চেয়ে বেশি হলে বাড়তি অর্থ সন্তানদের নিজেদের পকেট খরচ থেকে দিতে হতো।

সর্বশেষ ১৭ আগস্ট রাত দেড়টার দিকে তাঁরা চাংশা দক্ষিণ রেলস্টেশনে পৌঁছান। সেখানেই অপেক্ষা করছিলেন উ–এর স্ত্রী ওয়াং। তিনি বলেন, ‘শুরুতে আমি এই হাঁটার পরিকল্পনায় রাজি হইনি। গরম প্রচণ্ড ছিল, আবার নিরাপত্তার ঝুঁকিও ছিল। কিন্তু ওরা তিনজনই রাজি হয়ে যায়, তাই না বলতে পারিনি। প্রতিদিন দুশ্চিন্তায় ছিলাম।’

ওয়াং আরও বলেন, ‘এই ভ্রমণটা ওদের বদলে দিয়েছে। মেয়ে এখন আর আগের মতো খুঁতখুঁতে নয়, ছেলে অনেকটা স্বাধীন হয়ে উঠেছে। আশা করি এই যাত্রা ওদের বেড়ে ওঠায় কাজে আসবে।’

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর একজন অনলাইনে মন্তব্য করেছেন, ‘দুই শিশুই অসাধারণ! বাবা পুরো যাত্রায় দারুণভাবে যত্ন নিয়েছেন।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘কি অসাধারণ বাবা! টাকাপয়সা রোজগারের সাফল্যের চেয়ে, জীবনের শিক্ষায় সফল হওয়াই আসল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‎ডিভোর্সের পরও জোর করে রাতযাপন, বর্তমান স্বামীকে নিয়ে প্রাক্তন স্বামীকে হত্যা ‎

৯ পুলিশ পরিদর্শক বাধ্যতামূলক অবসরে

গণবিক্ষোভ আতঙ্কে মোদি সরকার, ১৯৭৪-পরবর্তী সব আন্দোলন নিয়ে গবেষণার নির্দেশ

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ‘সন্ত্রাসী খেল’ ফাঁস করে দিলেন জঙ্গিগোষ্ঠী জইশের সদস্য

নিজের বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি কলেজশিক্ষকের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত