Ajker Patrika

বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করতে চায় স্টারলিংক, অনুমোদন চেয়ে চিঠি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে ব্যান্ডউইথ সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এর অনুমোদন চেয়েছে।

সম্প্রতি পাঠানো একটি চিঠিতে, প্রতিষ্ঠানটি আইপিএলসি (আইপিএলসি) এবং আনফিল্টার্ড আইপি ব্যবহার করে বাংলাদেশের বাইরে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে।

আইপিএলসি হলো দুটি দেশকে সংযুক্ত করার জন্য একটি ডেডিকেটেড যোগাযোগ লাইন, যা নিরাপদ ও উচ্চ-ক্ষমতার ডেটা স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, আনফিল্টার্ড আইপি সরাসরি এবং অবাধ ইন্টারনেট রুট সরবরাহ করে, যা জাতীয় ফিল্টারিং বা পর্যবেক্ষণের বাইরে থাকে।

বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং ও অপারেশনস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিউল আজম পারভেজ এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা স্টারলিংকের কাছ থেকে এ বিষয়ে চিঠি পেয়েছি। আমরা এটি পর্যালোচনা করছি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘সরকার যদি সবুজ সংকেত দেয়, তবেই এ ধরনের পরিষেবা দেওয়ার জন্য স্টারলিংককে অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

স্টারলিংক সার্ভিসেস বাংলাদেশ লিমিটেড ইতিমধ্যে দেশের চারটি স্থানে তাদের স্থানীয় গেটওয়ে স্থাপন সম্পন্ন করেছে। বিটিআরসি-এর সাম্প্রতিক পরিদর্শন অনুযায়ী, দুটি গেটওয়ে গাজীপুরের হাই-টেক পার্কে এবং বাকি দুটি যথাক্রমে রাজশাহী ও যশোরে স্থাপন করা হয়েছে। যদিও সাইট পরিদর্শনের সময় স্টারলিংক-এর কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকায় নিয়ন্ত্রকেরা গেটওয়েগুলোর কার্যকারিতা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে স্থানীয় অংশীদাররা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, বাণিজ্যিক ট্র্যাফিক ৯ আগস্ট থেকে কালিয়াকৈর গেটওয়ে এবং ২০ আগস্ট থেকে রাজশাহী ও যশোরের গেটওয়ে দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।

স্টারলিংক তার কালিয়াকৈর গেটওয়েতে ৮০ জিবিপিএস, যশোরে ৪০০ জিবিপিএস এবং রাজশাহীতে আরও ৪০০ জিবিপিএস ক্ষমতা তৈরি করেছে।

শিল্প-সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, স্টারলিংকের এই পদক্ষেপটি বাংলাদেশ থেকে ভারত, নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারের মতো দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে নিজেদের একটি আঞ্চলিক পরিষেবা প্রদানকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা।

চলতি বছরের এপ্রিলে স্টারলিংক বাংলাদেশে অপারেটিং লাইসেন্স পায় এবং মে মাসে কার্যক্রম শুরু করে। কোম্পানিটি ভারতের ইউনিফায়েড লাইসেন্স এবং স্পেস রেগুলেটরের ছাড়পত্রও পেয়েছে এবং স্পেকট্রাম ও অবকাঠামো স্থাপনের পর সেখানেও কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। নেপালে তারা ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরুর জন্য প্রস্তাব জমা দিয়েছে, আর ভুটানে গত ফেব্রুয়ারি স্টারলিংক চালু হয়েছে। মিয়ানমারে স্টারলিংক এখনো নিষিদ্ধ। তবে ব্ল্যাকআউট অঞ্চলগুলোতে ব্যাপকভাবেই গোপনে এটি ব্যবহার করা হয়।

বর্তমানে, বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথ ব্যবহার ৮ হাজার ৫০০ জিবিপিএস, যার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার জিবিপিএস বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি পিএলসি সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে সরবরাহ করে। আর বাকিটা ভারত থেকে স্থল সংযোগের মাধ্যমে আসে। বর্তমানে, সাবমেরিন কেবল কোম্পানি আরেকটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতে ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত