Ajker Patrika

বিক্রেতা থেকে ফ্রিল্যান্সার, মাসে আয় ১০ লাখ

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 
মো. ফারুক হোসেন
মো. ফারুক হোসেন

মাত্র ২৮ বছর বয়সে ফ্রিল্যান্সিং জগতে শক্ত অবস্থান গড়েছেন মো. ফারুক হোসেন। কোরআনে হাফেজ এই তরুণ বর্তমানে মাসে গড়ে ১০ লাখ টাকা আয় করেন। শুধু তা-ই নয়, প্রায় ৫ হাজার মানুষকে ফ্রিল্যান্সিং শিখিয়েছেন তিনি, যাঁদের মধ্যে ৩ হাজার এরই মধ্যে আয় করছেন। নিজের আয়ে গাড়ি কিনেছেন, ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন।

শুরুর কঠিন পথ

ফারুকের জীবনের শুরুটা ছিল কষ্টের। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়ে বড় হয়েছেন অভাবের মধ্যে। বাবা চাইতেন, ছেলে মাওলানা হোক। তাই তাঁকে হাফেজি পড়তে দেন। ১২ বছর বয়সে কোরআনে হাফেজ হয়ে যান ফারুক। কিন্তু সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে দাখিল পাস করে চাকরি নিতে হয়। মাত্র ৭ হাজার টাকা বেতনে একটি প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যান হিসেবে কাজ শুরু করেন।

এরপর একটি ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেলেও বেশি দিন টেকেনি সেই চাকরি। অভাবে পড়ে একসময় ডিলারের টাকা ব্যবহার করে ফেলেন, যা আর ফেরত দেওয়া হয়নি। শেষমেশ সব ছেড়ে চলে যান মুন্সিগঞ্জে। এর মধ্যে বিয়ে এবং সন্তানের জন্ম তাঁর জীবনে নতুন দায়িত্ব যোগ করে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে হাতেখড়ি

২০২০ সালে ইন্টারনেট ঘেঁটে জানতে পারেন, অনলাইনে কাজ করে আয়ের সুযোগ আছে। প্রথমে ওয়েব ডিজাইনের কোর্স করলেও মন বসে যায় ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে। ইউটিউব দেখে, ফেসবুক ঘেঁটে, টিউটরিয়াল পড়ে রাতদিন শেখা শুরু করেন। সে সময় ধার করে সংসার চালিয়েছেন। এরপর তিনি প্রথম কাজ পান মাত্র ৫ ডলারের, একটি ফেসবুক পেজ খোলার জন্য। সেটিই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ঋণের টাকায় নতুন ল্যাপটপ কেনেন। এরপর থেকে তিনি কাজে আরও মনোযোগী হন। দিনে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেছেন, কখনো কখনো রাতে তিন ঘণ্টার বেশি ঘুম হয়নি ফারুকের।

সাফল্যের গল্প

দুই বছরের মধ্যে, ২০২২ সালে, ফারুক মাসে লাখ টাকা আয় শুরু করেন। একবার একটি গিগ থেকে ১৮ হাজার ডলার আয় করেছেন। ফাইবারে অ্যাকাউন্ট ব্যান হলেও তিনি থেমে থাকেননি। বাইরে থেকে কাজ সংগ্রহ করা শুরু করেন। সাফল্য দেখে শিক্ষার্থীরা তাঁর কাছে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আগ্রহ দেখায়। প্রথম ব্যাচে অনলাইনে ২০ জনকে প্রশিক্ষণ দেন। অনেকে কোর্স চলাকালীন বিদেশি বায়ারের কাজ পান। ধীরে ধীরে কোর্সের জনপ্রিয়তা বাড়ে। তিনি শুধু শেখান না, লাইফটাইম সাপোর্টও দেন। এখন তাঁর নিজস্ব সাপোর্ট টিম ২৪ ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের পাশে থাকে।

53916-[Converted]

নিজের ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান

২০২২ সালের জুলাইয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন এক্সপার্ট আইটি পার্ক। কুমিল্লায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে করেছেন অফিস। বর্তমানে ১৫ জন কর্মী তাঁর প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। অনলাইন ও অফলাইনে প্রশিক্ষণ দেন ফারুক।

এখন তাঁর স্বপ্ন লাখো বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। নিজের সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিতে প্রস্তুত তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বাসায় নিয়ে গায়েব করেন উপদেষ্টা— আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের মেয়রের অভিযোগ

চীনা যুদ্ধবিমান থেকে এলএস-৬ বোমা ফেলে কেন নিজ দেশে ‘হত্যাযজ্ঞ’ চালাল পাকিস্তান

ভবদহের দুঃখ ঘোচাতে আসছে সেনাবাহিনী, খনন করবে ৫ নদ-নদীর ৮১.৫ কিমি

ধর্ষণের শিকার শিশুর স্বজনকে মারতে উদ্যত হওয়া সেই চিকিৎসক বরখাস্ত

তাহসান তো জিহাদিদের মতোই কথা বললেন: তসলিমা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত