Ajker Patrika

১৪ বছর বয়সে মাস্কের স্পেসএক্সে চাকরি, দুবছরের মাথায় ছাড়ল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১১: ৪০
কাইরান কাজী যুক্তরাষ্ট্রের সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি থেকে সবচেয়ে কম বয়সে স্নাতক হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ছবি: পিপল ম্যাগাজিন
কাইরান কাজী যুক্তরাষ্ট্রের সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি থেকে সবচেয়ে কম বয়সে স্নাতক হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ছবি: পিপল ম্যাগাজিন

মাত্র ১৪ বছর বয়সে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করেছিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোর কাইরান কাজী। এবার দুই বছর পর ১৬ বছর বয়সে সে যোগ দিচ্ছে নিউইয়র্কভিত্তিক হাই-ফ্রিকোয়েন্সি ট্রেডিং ফার্ম ‘সিটাডেল সিকিউরিটিজ’-এ।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাইরান বলে, এখন নিজেকে আরও নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত বলে মনে করছে সে। আর এমন একটি পরিবেশ খুঁজছিল যেখানে সে দ্রুত ফলাফল দেখতে পারবে এবং তার দক্ষতা আরও শাণিত করতে পারবে।

স্পেসএক্সের স্টারলিংক বিভাগে যোগ দেওয়ার আগে কাইরান কাজী যুক্তরাষ্ট্রের সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি থেকে সবচেয়ে কম বয়সে স্নাতক হওয়ার গৌরব অর্জন করে। স্টারলিংকে সে এমন সফটওয়্যার উন্নয়নে কাজ করে, যা স্যাটেলাইট বিমকে নির্ভুলভাবে নির্দেশনা দিয়ে বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষের কাছে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সহায়তা করে।

এরপর সে পা রাখে সিটাডেল সিকিউরিটিজে—বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী হাই-ফ্রিকোয়েন্সি ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান। তার এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দেয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণাগার এবং শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি এখন আর্থিক খাতও মেধাবী কম্পিউটার প্রকৌশলীদের দলে টানতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

যে কারণে এআইয়ের বদলে ফাইন্যান্স বেছে নিল কাইরান

শীর্ষস্থানীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা ল্যাব এবং বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি কোম্পানির প্রস্তাব থাকার পরও কাইরান সিটাডেল সিকিউরিটিজ বেছে নেয় বুদ্ধিবৃত্তিক জটিলতা এবং দ্রুত ফলাফলের কারণে। মহাকাশযান ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রকল্পগুলোতে কাজ শেষ হতে সময় লাগে দীর্ঘদিন, তবে সাংখ্যিক অর্থনীতির ইঞ্জিনিয়াররা মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে দৃশ্যমান প্রভাব দেখতে পান। কাইরান বলে, সাংখ্যিক অর্থনীতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতোই বুদ্ধিবৃত্তিক চ্যালেঞ্জ আছে, তবে এখানে ফলাফল অনেক দ্রুত পাওয়া যায়।’

বাবা-মার সঙ্গে কাইরান কাজী। ছবি: সংগৃহীত
বাবা-মার সঙ্গে কাইরান কাজী। ছবি: সংগৃহীত

স্পেসএক্সে কাইরান কাজী কাজ করেছিল এমন কিছু উৎপাদননির্ভর গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থায়, যেগুলো স্টারলিংক স্যাটেলাইট তরঙ্গকে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করত।

অন্যদিকে, সিটাডেল সিকিউরিটিজে সে কাজ করবে বৈশ্বিক ট্রেডিং অবকাঠামো নিয়ে—ইঞ্জিনিয়ার ও সংখ্যাগত সমস্যা সমাধানের সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে।

কাইরান কাজী অনেক আগেই প্রচলিত শিক্ষা ও ক্যারিয়ারের ধারা অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশি-মার্কিন এই বিস্ময়বালক তৃতীয় শ্রেণি থেকে সরাসরি কলেজে পৌঁছে যায় মাত্র ৯ বছর বয়সে। ১০ বছর বয়সেই ইন্টেল ল্যাবসে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করে। ১৪ বছর বয়সে সে স্পেসএক্সে সবচেয়ে কম বয়সী কর্মী হিসেবে যোগ দেয়।

কাইরান কাজীর জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার প্লেজান্টন শহরে। তার বাবা-মা বাংলাদেশি—মুস্তাহিদ কাজী ও জুলিয়া কাজী। তাঁদের পরিবারের আদিবাস বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ। কাইরানের বাবা পেশায় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আর মা ক্যারিয়ার গড়েছেন ওয়াল স্ট্রিটের নির্বাহী হিসেবে।

মাত্র দুই বছর বয়সেই চিকিৎসকেরা কাইরানের অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তি ও আবেগীয় প্রজ্ঞা শনাক্ত করেন। এরপর সে মেনসা ইন্টারন্যাশনালের সদস্য হয় এবং ডেভিডসন ইনস্টিটিউটের ইয়াং স্কলার প্রোগ্রামে যোগ দেয়।

এখন, ১৬ বছর বয়সেই ম্যানহাটনে একা থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে কাইরান। নতুন কর্মস্থল তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে মাত্র ১০ মিনিট হাঁটার পথ। কারণ এর ফলে আর তাকে স্পেসএক্সের রেডমন্ড অফিসে যেতে মায়ের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দাম্পত্য কলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

অবশেষে ইকবালের পরিবারমুক্ত হলো প্রিমিয়ার ব্যাংক

‘হেল্প, হেল্প’ বলে চিৎকার—শিক্ষক এগিয়ে যেতেই গলায় ছুরি চালাল কিশোরী

শিশুদের জন্য বিনা মূল্যে টাইফয়েডের টিকা, যেভাবে রেজিস্ট্রেশন করবেন

‘আপত্তিকর’ ভিডিও: বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠালেন গভর্নর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত