ডিপফেক ও ভুয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গত দুই বছরে প্রতারণার শিকার হয়েছে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের ৬ হাজার ব্যক্তি। জর্জিয়ার তিবলিসি শহরে অবস্থিত একটি কল সেন্টারের প্রতারণা চক্রটি একাধিক প্রতারণা কার্যক্রম চালিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৭ মিলিয়ন ইউরো) হাতিয়ে নিয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ছিলেন।
ডিপফেক ভিডিওর ব্যবহার
এই প্রতারণা চক্রের প্রধান কৌশল ছিল ডিপফেক বা ডিজিটালভাবে তৈরি করা ভিডিও। সেলিব্রেটি ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের ভিডিও বা ছবি ব্যবহার করে প্রতারকেরা তাদের অবৈধ ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্মে লগ ইন করতে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করত। এই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ছিল ‘অ্যাডমিরালএসএফএক্স’। এই প্ল্যাটফর্মে সাধারণত বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করা হতো। অনেক ভুক্তভোগী মনে করেছিলেন, তাঁরা সেলিব্রেটিদের মাধ্যমে বৈধ বিনিয়োগ পরামর্শ পাচ্ছেন, তবে আসলে একটি সাজানো প্রতারণার ফাঁদে পড়েন তাঁরা।
বিশিষ্ট ব্রিটিশ টেলিভিশন সেলিব্রিটি বেন ফোগল নিজেই ইনস্টাগ্রামে এই প্রতারণার ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেন, যখন তিনি লক্ষ করেন তাঁর নাম ও চেহারা ব্যবহার করে ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। তবে এতে কোনো লাভ হয়নি এবং সেই সময়েই তিবলিসির কল সেন্টারের অপারেশন চালু ছিল, যেখানে তাদের লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষকে সহজে ঠকানো।
প্রতারকেরা যেভাবে কাজ করছিল
প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে দিত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটাররা। এই বিজ্ঞাপনগুলোতে জনপ্রিয় সেলিব্রেটি ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের প্রলোভন দেখানো হতো। যাঁরা এই বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহী হতেন, তাঁদের জন্য কল সেন্টার থেকে কল দেওয়া হতো। প্রাথমিকভাবে তাঁরা মাত্র ২৫০ পাউন্ড থেকে ৫০০ পাউন্ড বিনিয়োগের প্রস্তাব পেতেন।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা ‘ভালো লাভ’ এবং ‘দ্রুত আয়ের’ প্রতিশ্রুতি পেতেন। একে একে তাঁরা আরও বড় পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ শুরু করতেন। ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন ধাপে তাঁদের অ্যাকাউন্টের মধ্যে জমে থাকা ‘লাভ’ দেখতেন, যা আসলে শুধু প্রতারকদের তৈরি করা ভুয়া তথ্য ছিল।
যত বেশি টাকা তাঁরা জমা দিতেন, ততই বড় পরিমাণ লাভ দেখানো হতো। তবে, যখন কেউ তাঁদের ‘লাভ’ তুলে নিতে চাইতেন, তখন প্রতারকেরা বিভিন্ন অজুহাতে পেমেন্টের জন্য ফি বা অন্যান্য চার্জ দাবি করতে থাকত।
ফাঁদে পড়েন ৬ হাজার মানুষ
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের মতে, ২০২২ সালের মে থেকে অন্তত ৬ হাজার ১৭৯ জন প্রতারিত হয়েছেন এই প্রতারণা চক্রের মাধ্যমে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের সঞ্চিত অর্থের সবকিছু হারিয়েছেন। ৬৪ বছর বয়সী ক্যান, যিনি একটি স্নায়বিক রোগে ভুগছেন, তাঁদের কাছে প্রায় ৫০ হাজার পাউন্ড হারিয়েছেন। ৭৪ বছর বয়সী থেরেসা নিঃসঙ্গভাবে বৃদ্ধাশ্রমে থাকছিলেন, তিনিও প্রায় একই অর্থ হারিয়েছেন।
সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে এক লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক কর্মচারী ডেরেকের, যিনি প্রায় ১ লাখ ৬২ হাজার পাউন্ড হারিয়েছেন। তাঁর মতো অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের জীবনব্যাপী সঞ্চয়, পেনশন এবং অন্যান্য জরুরি অর্থ হারিয়ে বিপদে পড়েছেন।
অপরাধী চক্রের কর্মকাণ্ড এবং আন্তর্জাতিক নজরদারি
তিবলিসি থেকে পরিচালিত এই প্রতারণা চক্র শুধু যুক্তরাজ্যেই নয়, কানাডা, জার্মানি, স্পেনসহ আরব দেশের বিভিন্ন অংশেও সক্রিয় ছিল। বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট ক্ষতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ (প্রায় ৯ মিলিয়ন পাউন্ড) শুধু ব্রিটেন থেকে আসে।
এই প্রতারণা চক্রের সদস্যরা গোপন সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের ফোন বা কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিত। এভাবে তারা ভুক্তভোগীদের তথ্য চুরি করত এবং তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিত। এই প্রতারণা চক্রের সদস্যরা তাদের সফল কর্মীদের জন্য দামি রোলেক্স ঘড়ি এবং বিরাট বোনাস দিত, যা তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং প্রলোভন সৃষ্টি করত।
এসব প্রতারণার পেছনে একটি দুর্নীতিপূর্ণ জর্জিয়ার টেলিমার্কেটিং কোম্পানি ‘একে গ্রুপ’-এর নামও উঠে এসেছে, যার মালিক হচ্ছেন মেরি শোটাডজে এবং তার সহকর্মী আকাশি কেভখিশভিলি।
এপি গ্রুপ নামক এই কোম্পানি ছিল প্রতারকদের টেলিমার্কেটিং কার্যক্রমের মূল কেন্দ্র। মেরি শোটাডজে এবং তার সহকর্মী কেভখিশভিলির মাধ্যমে ক্রিপ্টো প্রতারণা কার্যক্রম চালাতেন, যেখানে তারা বিভিন্ন ভুয়া প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের নামে মানুষকে প্রতারিত করেছিল। এই কোম্পানির নাম এবং পরিচয় একাধিকবার প্রতারণা অপারেশন এবং ভুয়া দালালি সেবা প্রদানকারী সাইটগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত হয়েছে, যেমন: অ্যাডমিরালসএফএক্স এবং গোল্ডের কারেন্সিস।
এ ছাড়া, মেরি শোটাডজে ও কেভখিশভিলি ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন, যা তাদের প্রতারণামূলক কার্যক্রমের স্বীকৃতি হিসেবে দেখা যায়।
গোপন কৌশল এবং মুদ্রা পাচারের চক্র
প্রতারকেরা শুধু টাকা নেয়নি, তারা মুদ্রা পাচারের জন্যও গোপন কৌশল ব্যবহার করেছিল। এদের কাছে থাকা ডেটায় অন্তত ১ মিলিয়ন কল রেকর্ড ছিল, যা তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আরও অনেক তথ্য তুলে ধরেছে। ভুক্তভোগীরা যখন তাঁদের লাভ উত্তোলন করতে চাইতেন, তখন তাঁদের কাছে বিভিন্ন অজুহাতে ফি ও কমিশন দাবি করা হতো এবং এর মাধ্যমে তাঁদের সম্পূর্ণ সঞ্চয় হারিয়ে ফেলতেন।
আইনি ব্যবস্থা ও প্রতিকার
এই বিশাল প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, বিশেষ করে জর্জিয়া থেকে এর মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গার্ডিয়ান ও সুইডিশ টেলিভিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, জর্জিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। যদিও ব্রিটেনের মন্ত্রীরা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ তদন্তকারী সংস্থাগুলো বিষয়টি নিয়ে জরুরি পদক্ষেপের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
এদিকে রেভোলুট, ক্রু ও চেজ ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের প্রতারণা রোধ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা প্রতারণার অভিযোগ সঠিকভাবে রিপোর্ট করার জন্য নতুন প্রোগ্রাম শুরু করেছে।
প্রতারণা সত্ত্বেও, একাধিক প্রশাসনিক সিস্টেম এগুলো ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে, যার কারণে প্রতারণাটি এখনো চালু রয়েছে। কিন্তু তথ্য ফাঁসের পর এই অপরাধের তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
ডিপফেক ও ভুয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গত দুই বছরে প্রতারণার শিকার হয়েছে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের ৬ হাজার ব্যক্তি। জর্জিয়ার তিবলিসি শহরে অবস্থিত একটি কল সেন্টারের প্রতারণা চক্রটি একাধিক প্রতারণা কার্যক্রম চালিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৭ মিলিয়ন ইউরো) হাতিয়ে নিয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ছিলেন।
ডিপফেক ভিডিওর ব্যবহার
এই প্রতারণা চক্রের প্রধান কৌশল ছিল ডিপফেক বা ডিজিটালভাবে তৈরি করা ভিডিও। সেলিব্রেটি ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের ভিডিও বা ছবি ব্যবহার করে প্রতারকেরা তাদের অবৈধ ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্মে লগ ইন করতে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করত। এই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ছিল ‘অ্যাডমিরালএসএফএক্স’। এই প্ল্যাটফর্মে সাধারণত বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করা হতো। অনেক ভুক্তভোগী মনে করেছিলেন, তাঁরা সেলিব্রেটিদের মাধ্যমে বৈধ বিনিয়োগ পরামর্শ পাচ্ছেন, তবে আসলে একটি সাজানো প্রতারণার ফাঁদে পড়েন তাঁরা।
বিশিষ্ট ব্রিটিশ টেলিভিশন সেলিব্রিটি বেন ফোগল নিজেই ইনস্টাগ্রামে এই প্রতারণার ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেন, যখন তিনি লক্ষ করেন তাঁর নাম ও চেহারা ব্যবহার করে ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। তবে এতে কোনো লাভ হয়নি এবং সেই সময়েই তিবলিসির কল সেন্টারের অপারেশন চালু ছিল, যেখানে তাদের লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষকে সহজে ঠকানো।
প্রতারকেরা যেভাবে কাজ করছিল
প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে দিত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটাররা। এই বিজ্ঞাপনগুলোতে জনপ্রিয় সেলিব্রেটি ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের প্রলোভন দেখানো হতো। যাঁরা এই বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহী হতেন, তাঁদের জন্য কল সেন্টার থেকে কল দেওয়া হতো। প্রাথমিকভাবে তাঁরা মাত্র ২৫০ পাউন্ড থেকে ৫০০ পাউন্ড বিনিয়োগের প্রস্তাব পেতেন।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা ‘ভালো লাভ’ এবং ‘দ্রুত আয়ের’ প্রতিশ্রুতি পেতেন। একে একে তাঁরা আরও বড় পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ শুরু করতেন। ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন ধাপে তাঁদের অ্যাকাউন্টের মধ্যে জমে থাকা ‘লাভ’ দেখতেন, যা আসলে শুধু প্রতারকদের তৈরি করা ভুয়া তথ্য ছিল।
যত বেশি টাকা তাঁরা জমা দিতেন, ততই বড় পরিমাণ লাভ দেখানো হতো। তবে, যখন কেউ তাঁদের ‘লাভ’ তুলে নিতে চাইতেন, তখন প্রতারকেরা বিভিন্ন অজুহাতে পেমেন্টের জন্য ফি বা অন্যান্য চার্জ দাবি করতে থাকত।
ফাঁদে পড়েন ৬ হাজার মানুষ
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের মতে, ২০২২ সালের মে থেকে অন্তত ৬ হাজার ১৭৯ জন প্রতারিত হয়েছেন এই প্রতারণা চক্রের মাধ্যমে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের সঞ্চিত অর্থের সবকিছু হারিয়েছেন। ৬৪ বছর বয়সী ক্যান, যিনি একটি স্নায়বিক রোগে ভুগছেন, তাঁদের কাছে প্রায় ৫০ হাজার পাউন্ড হারিয়েছেন। ৭৪ বছর বয়সী থেরেসা নিঃসঙ্গভাবে বৃদ্ধাশ্রমে থাকছিলেন, তিনিও প্রায় একই অর্থ হারিয়েছেন।
সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে এক লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক কর্মচারী ডেরেকের, যিনি প্রায় ১ লাখ ৬২ হাজার পাউন্ড হারিয়েছেন। তাঁর মতো অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের জীবনব্যাপী সঞ্চয়, পেনশন এবং অন্যান্য জরুরি অর্থ হারিয়ে বিপদে পড়েছেন।
অপরাধী চক্রের কর্মকাণ্ড এবং আন্তর্জাতিক নজরদারি
তিবলিসি থেকে পরিচালিত এই প্রতারণা চক্র শুধু যুক্তরাজ্যেই নয়, কানাডা, জার্মানি, স্পেনসহ আরব দেশের বিভিন্ন অংশেও সক্রিয় ছিল। বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট ক্ষতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ (প্রায় ৯ মিলিয়ন পাউন্ড) শুধু ব্রিটেন থেকে আসে।
এই প্রতারণা চক্রের সদস্যরা গোপন সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের ফোন বা কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিত। এভাবে তারা ভুক্তভোগীদের তথ্য চুরি করত এবং তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিত। এই প্রতারণা চক্রের সদস্যরা তাদের সফল কর্মীদের জন্য দামি রোলেক্স ঘড়ি এবং বিরাট বোনাস দিত, যা তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং প্রলোভন সৃষ্টি করত।
এসব প্রতারণার পেছনে একটি দুর্নীতিপূর্ণ জর্জিয়ার টেলিমার্কেটিং কোম্পানি ‘একে গ্রুপ’-এর নামও উঠে এসেছে, যার মালিক হচ্ছেন মেরি শোটাডজে এবং তার সহকর্মী আকাশি কেভখিশভিলি।
এপি গ্রুপ নামক এই কোম্পানি ছিল প্রতারকদের টেলিমার্কেটিং কার্যক্রমের মূল কেন্দ্র। মেরি শোটাডজে এবং তার সহকর্মী কেভখিশভিলির মাধ্যমে ক্রিপ্টো প্রতারণা কার্যক্রম চালাতেন, যেখানে তারা বিভিন্ন ভুয়া প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের নামে মানুষকে প্রতারিত করেছিল। এই কোম্পানির নাম এবং পরিচয় একাধিকবার প্রতারণা অপারেশন এবং ভুয়া দালালি সেবা প্রদানকারী সাইটগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত হয়েছে, যেমন: অ্যাডমিরালসএফএক্স এবং গোল্ডের কারেন্সিস।
এ ছাড়া, মেরি শোটাডজে ও কেভখিশভিলি ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন, যা তাদের প্রতারণামূলক কার্যক্রমের স্বীকৃতি হিসেবে দেখা যায়।
গোপন কৌশল এবং মুদ্রা পাচারের চক্র
প্রতারকেরা শুধু টাকা নেয়নি, তারা মুদ্রা পাচারের জন্যও গোপন কৌশল ব্যবহার করেছিল। এদের কাছে থাকা ডেটায় অন্তত ১ মিলিয়ন কল রেকর্ড ছিল, যা তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আরও অনেক তথ্য তুলে ধরেছে। ভুক্তভোগীরা যখন তাঁদের লাভ উত্তোলন করতে চাইতেন, তখন তাঁদের কাছে বিভিন্ন অজুহাতে ফি ও কমিশন দাবি করা হতো এবং এর মাধ্যমে তাঁদের সম্পূর্ণ সঞ্চয় হারিয়ে ফেলতেন।
আইনি ব্যবস্থা ও প্রতিকার
এই বিশাল প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, বিশেষ করে জর্জিয়া থেকে এর মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গার্ডিয়ান ও সুইডিশ টেলিভিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, জর্জিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। যদিও ব্রিটেনের মন্ত্রীরা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ তদন্তকারী সংস্থাগুলো বিষয়টি নিয়ে জরুরি পদক্ষেপের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
এদিকে রেভোলুট, ক্রু ও চেজ ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের প্রতারণা রোধ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা প্রতারণার অভিযোগ সঠিকভাবে রিপোর্ট করার জন্য নতুন প্রোগ্রাম শুরু করেছে।
প্রতারণা সত্ত্বেও, একাধিক প্রশাসনিক সিস্টেম এগুলো ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে, যার কারণে প্রতারণাটি এখনো চালু রয়েছে। কিন্তু তথ্য ফাঁসের পর এই অপরাধের তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
নতুন যুগের ইন্টারনেট সেবা নিয়ে হাজির ইলন মাস্কের স্টারলিংক। তাদের সেবার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক না থাকার ভোগান্তি দূর হয়েছে। কোম্পানিটির ডাইরেক্ট-টু-সেল (ডি২সি) প্রযুক্তির মাধ্যমে চলন্ত অবস্থায় কিংবা একেবারে দুর্গম এলাকায় মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে। এ জন্য কোনো রাউটার বা ওয়াইফাইয়ের
৯ ঘণ্টা আগেচীনে চিপ বিক্রির মোট রাজস্বের ১৫ শতাংশ মার্কিন সরকারকে দিতে সম্মত হয়েছে বিশ্বের শীর্ষ দুই সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া ও এএমডি। এই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠান দুটি চীনা বাজারে চিপ বিক্রির লাইসেন্স পাবে। এক সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
১৩ ঘণ্টা আগেবর্তমান যুগের বেশির ভাগ ইলেকট্রনিক ডিভাইসেই লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। আইফোনসহ স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ, ল্যাপটপ—এমনকি বৈদ্যুতিক গাড়িতেও এই ব্যাটারিই ব্যবহার হয়। তবে এই প্রযুক্তি যতটা উন্নত, ততটাই জটিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যাটারির কর্মক্ষমতা কমে যায়।
১৬ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার তৈরি এইচ২০ (H20) চিপের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম-সংশ্লিষ্ট একটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট। রোববার উইচ্যাটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, এই চিপগুলোতে ‘ব্যাক ডোর’ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই...
১৭ ঘণ্টা আগে