Ajker Patrika

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের সিগারেটের মতো সতর্কবার্তা দেখানোর আইন করছে ক্যালিফোর্নিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সতর্কবার্তাটি অ্যাপে লগইনের সময় ১০ সেকেন্ড দেখানো হবে। ছবি: সংগৃহীত
সতর্কবার্তাটি অ্যাপে লগইনের সময় ১০ সেকেন্ড দেখানো হবে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় শিশু-কিশোরদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তামাকজাত পণ্য বা সিগারেটের মতো সতর্কবার্তা যুক্ত করার একটি বিল পাস হয়েছে। এই উদ্যোগটি তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে বাড়তে থাকা উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে।

এই বিল ‘এবি ৫৬’ (AB 56) নামে পরিচিত। বিল অনুযায়ী, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোতে যখন কিশোর-কিশোরীরা লগইন করবে, তখন তাদের সামনে ২০২৩ সালের যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেলের একটি সতর্কতামূলক বার্তা প্রদর্শন করতে হবে।

সেই বার্তায় বলা হয়েছে, ‘সোশ্যাল মিডিয়া শিশু ও কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য ও মঙ্গলবোধের ওপর গভীর ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।’

সতর্কবার্তাটি অ্যাপে লগইনের সময় ১০ সেকেন্ড দেখানো হবে এবং কেউ যদি তিন ঘণ্টার বেশি সময় অ্যাপ ব্যবহার করে, তবে পুনরায় ৩০ সেকেন্ডের জন্য তা দেখানো হবে।

গভর্নরের সিদ্ধান্ত বাকি

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম আগামী ১৩ অক্টোবরের মধ্যে আইনটি কার্যকর করবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত নেবেন।

দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, নিউসামের অফিসে মন্তব্য চাওয়া হলেও এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এই বিলটি প্রস্তাব করেন ডেমোক্রেটিক পার্টির সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়ার অ্যাসেম্বলি সদস্য রেবেকা বাউয়ার-কাহান এবং ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বোন্টা।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাউয়ার-কাহান বলেন, ‘আমরা একটি বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকট বাস্তব, জরুরি এবং দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।’

অন্য রাজ্যগুলো কী করছে

এর আগে মিনেসোটা জুলাইয়ে এই ধরনের আইন পাস করে, যেখানে সব বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সতর্কবার্তা বাধ্যতামূলক করা হয়। নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুলও এমন একটি আইন বিবেচনা করছেন।

২০২৩ সালে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রভাবশালী মতামত লেখায় সাবেক সার্জন জেনারেল বিবেক মার্থি সোশ্যাল মিডিয়াকে তামাক, ভেজাল খাদ্য বা ত্রুটিপূর্ণ উড়োজাহাজের মতো জরুরি স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা হুমকির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

তিনি লেখেন, ‘আমরা যখন বিপজ্জনক গাড়ি, উড়োজাহাজ বা খাদ্যের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারি, তখন সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতির বিরুদ্ধে আমরা এতটা প্রতিক্রিয়াশীল নই কেন?’

‘এই ক্ষতিগুলো কোনো অভিভাবকের ব্যর্থতা নয়, বরং নিরাপত্তাব্যবস্থা ও জবাবদিহি ছাড়া শক্তিশালী প্রযুক্তি উন্মোচনের ফল।’ এই লেখার পরপরই ৪২টি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা এই ধরনের সতর্কবার্তার পক্ষে অবস্থান নেন।

পক্ষ-বিপক্ষের মতামত

এই উদ্যোগের পক্ষে থাকা অনেকেই বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সঙ্গে উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও নেতিবাচক দেহচিন্তার মতো সমস্যা বাড়ছে, যা মোকাবিলায় সরাসরি সতর্কতা জরুরি।

বিলটির সহপ্রণেতা রব বোন্টা বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো এই মানসিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় অনীহা দেখিয়েছে। বরং তারা আসক্তি তৈরির বৈশিষ্ট্য ও ক্ষতিকর কনটেন্ট চালু রেখেছে, শুধুমাত্র মুনাফার জন্য।’

তবে তিনি স্বীকার করেন, ‘শুধু সতর্কবার্তা সমস্যার পুরো সমাধান নয়। এটি হচ্ছে আমাদের “টুলবক্স”-এর আরেকটি উপায়, যাতে আমরা এই সংকট মোকাবিলা করতে পারি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারি।’ ’

ক্যালিফোর্নিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর রাজনৈতিক প্রভাব বরাবরই শক্তিশালী। ফলে এই বিল কার্যকর হলে কোম্পানিগুলো তা চ্যালেঞ্জ করতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট ডট ইউকে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরেকটি প্রক্সি মওদুদীবাদী দলের দরকার নেই’, কাদের ইঙ্গিত করলেন উপদেষ্টা মাহফুজ

ঢাবির শিক্ষার্থীরা এমন সিদ্ধান্ত নেবে ভাবতেই পারিনি

১১-১৪ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে স্কুল-কলেজ

একই আসনে মনোনয়ন চান চেয়ারপারসনের ২ উপদেষ্টা

স্ত্রী-সন্তানদের হত্যার পর আত্মহত্যা: ধারদেনা করে চল্লিশা করল পরিবার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত