Ajker Patrika

চীনা সিসি ক্যামেরা নিষিদ্ধ করল কানাডা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চীনা নজরদারি ক্যামেরা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিকভিশনকে কানাডা থেকে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে বলেছে দেশটির সরকার। জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান কানাডার শিল্পমন্ত্রী মেলানি জলি।

হিকভিশন, যার পূর্ণ নাম হাংঝৌ হিকভিশন ডিজিটাল টেকনোলজি কোং। দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে কোম্পানিটি। বিশেষ করে চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম ও অন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নজরদারিতে সহায়তা করার কারণে এই প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কের মুখে পড়েছে।

মন্ত্রী জলি বলেন, ‘হিকভিশন কানাডা ইনকরপোরেটেডের চলমান কার্যক্রম কানাডার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর বলে সরকার মনে করেছে।’ তিনি জানান, কানাডার গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে বহুস্তরবিশিষ্ট একটি পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে মন্ত্রীর বিবৃতিতে চীন, জিনজিয়াং বা হিকভিশনের নিরাপত্তা ঝুঁকির বিস্তারিত কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হিকভিশনের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে দ্বিমত পোষণ করি এবং এটিকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি। কারণ, আমরা মনে করি এর কোনো বাস্তব ভিত্তি, ন্যায়সংগত প্রক্রিয়া বা স্বচ্ছতা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘কানাডা সরকার আমাদের প্রযুক্তির সাইবার নিরাপত্তা ভিত্তিতে নয়, বরং কেবল আমাদের প্রতিষ্ঠানের উৎপত্তিস্থল চীন হওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও চীনা কোম্পানিগুলোর প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিফলন।’

হিকভিশনের দাবি, প্রতিষ্ঠানটি ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত পাঁচটি সহায়ক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জিনজিয়াং থেকে চুক্তি প্রত্যাহার করেছে।

তারা আরও জানায়, ‘আমরা কানাডা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, যেন তারা অবস্থান গ্রহণে পক্ষপাতমূলক আচরণ নয়, বরং বাস্তব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সব ব্যবসা ও বিনিয়োগকারীর জন্য ন্যায়সংগত ও স্বচ্ছ পরিবেশ বজায় রাখে।’

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

কানাডা সরকার হিকভিশনের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথমত, সরকারি বিভাগ, সংস্থা ও ক্রাউন করপোরেশনগুলোতে হিকভিশনের কোনো পণ্য কেনা বা ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অর্থাৎ, সরকারি পর্যায়ে হিকভিশনের নতুন টুল ক্রয় করা যাবে না এবং পুরোনো যন্ত্রপাতির ব্যবহারও বন্ধ করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, যেসব সরকারি স্থাপনায় ইতিমধ্যেই হিকভিশনের নজরদারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য একটি পর্যালোচনা ও প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য হলো—ভবিষ্যতে এসব যন্ত্র ব্যবহারে সম্পূর্ণরূপে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা।

তৃতীয়ত, এই আদেশ শুধু হিকভিশনের কানাডাভিত্তিক কার্যক্রম ও অংশীদারত্বের ওপর প্রযোজ্য। হিকভিশনের কানাডার বাইরে থাকা সহায়ক প্রতিষ্ঠান বা শাখাগুলোর কার্যক্রম এই সিদ্ধান্তের আওতাভুক্ত নয়।

সবশেষে, মন্ত্রী মেলানি জলি সাধারণ কানাডিয়ানদেরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তটি বিবেচনায় রেখে নাগরিকদের উচিত নিজেরা জানিয়ে-বুঝে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া।’

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত