Ajker Patrika

আপিল আদালতে হার, যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার মুখে টিকটক

এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এবং টিকটক বিরোধী পক্ষের জন্য একটি বড় বিজয়। ছবি: পায়মিন্টস ডট কম
এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এবং টিকটক বিরোধী পক্ষের জন্য একটি বড় বিজয়। ছবি: পায়মিন্টস ডট কম

যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার মুখে আরও এক ধাপ এগোল টিকটক। নিষেধাজ্ঞা আইনের বিরুদ্ধে কোম্পানিটির আপিল খারিজ করেছে দেশটির ফেডারেল আপিল আদালত। ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সাত মাস পরে এই সিদ্ধান্ত আসে। আইন অনুযায়ী, আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সামাজিক নেটওয়ার্কটি চীনা মালিকানা বাইটড্যান্স থেকে নিজেকে সরিয়ে না দিলে টিকটিককে নিষিদ্ধ করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এবং টিকটক বিরোধী পক্ষের জন্য একটি বড় বিজয়। তবে টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের জন্য একটি বড় আঘাত। এর মাধ্যমে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপটি নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে গেল। যুক্তরাষ্ট্রে ১৭০ মিলিয়ন আমেরিকান এই অ্যাপটি ব্যবহার করে।

এই রায়টি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার পরিকল্পনা করছে টিকটক। আদালত তাদের রায়ে উল্লেখ করেছে যে, এটি রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটদের যৌথ প্রচেষ্টার ফল এবং দুটি প্রেসিডেন্টের অংশগ্রহণে তৈরি, যা ‘পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না (পিআরসি) ’ থেকে আসা জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির বিরুদ্ধে একটি ব্যাপক পদক্ষেপ।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ব্যাপক ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে চীনা মালিকানাধীন টিকটক এবং চীন সরকার এটি গোপনে ব্যবহারের মাধ্যমে দেশটির নাগরিকদের তথ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। রায়টিকে ‘টিকটককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করার চীনা সরকারের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড।

তবে চীনের ওয়াশিংটন দূতাবাস এই আইনকে ‘স্পষ্টভাবে বাণিজ্যিক লুণ্ঠন’ বলে অভিহিত করেছে। সেই সঙ্গে সতর্ক করে বলে, যুক্তরাষ্ট্রকে ‘এই মামলাটি সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করা উচিত যাতে দুই দেশের পারস্পরিক আস্থা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যিক যুদ্ধের মধ্যে এই রায়টি দেওয়া হলো। বাইডেন প্রশাসন চীনের চিপ শিল্পে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং চীন এর জবাব হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যালিয়াম, জারনেনিয়াম এবং অ্যান্টিমোনি রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে।

টিকটক এবং ব্যবহারকারীদের আইনি চ্যালেঞ্জ প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত এবং বাইটড্যান্সকে ১৯ জানুয়ারি এর মধ্যে টিকটকের মার্কিন শেয়ার বিক্রি করতে নির্দেশ দিয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে শেয়ার বিক্রি না করলে দেশটিতে টিকটক নিষিদ্ধ করা হবে।

এদিকে, এক ইমেইলের মাধ্যমে টিকটকের সিইও শো জি চেউ তার কর্মীদের জানিয়েছেন, ‘আজকের সংবাদ হতাশাজনক হলেও আমাদের প্ল্যাটফর্মে স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ বজায় রাখতে সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’

অন্যদিকে, স্বাধীনতা-পন্থী সংগঠন আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) এই রায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছে। তারা বলে, এটি ‘মিলিয়ন মিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রথম সংশোধনী অধিকারকে স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করে, যারা নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে এবং বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এই অ্যাপটি ব্যবহার করে।

এই রায়টি যদি সুপ্রিম কোর্টে অপরিবর্তিত থাকে, তবে এটি টিকটকের ভবিষ্যৎকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের হাতে তুলে দেবে। তিনি ১৯ তারিখের সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন। তারপর টিকটকের ভাগ্য নির্ধারণ করবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় টিকটকে নিষিদ্ধের প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছেন ট্রাম্প। তবে গত নভেম্বরে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি টিকটক নিষিদ্ধ করতে দেবেন না।

টিকটকের নতুন শপিং ফিচার ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেলে ১০ কোটি ডলার আয় করেছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। ইমার্কেটার পূর্বাভাস দিয়েছে যে, আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের টিকটকের বিজ্ঞাপন আয় ১৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে, যা দেশের মোট ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ব্যয়ের ৪ দশমিক ৫ শতাংশের সমান হবে।

টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা মেটা, ইউটিউব এবং স্ন্যাপচ্যাটের জন্য লাভজনক হবে। তবে প্ল্যাটফর্মটির নির্ভরশীল কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং ছোট ব্যবসাগুলোর জন্য ক্ষতিকর হবে।

এ ছাড়া, এই রায়টি মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে অন্যান্য বিদেশি মালিকানাধীন অ্যাপগুলোর ওপর নজরদারি বৃদ্ধি করতে পারে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন এআই ফিচারে কম রেজল্যুশনের ভিডিও আরও স্পষ্ট দেখাবে ইউটিউব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ৪৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওর মান উন্নত করতে এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার শুরু করেছে ইউটিউব। বুধবার (২৯ অক্টোবর) প্রকাশিত এক ব্লগপোস্টে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নতুন এই এআই-চালিত ফিচারের মাধ্যমে কম রেজ্যুলেশনের ভিডিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চ রেজ্যুলেশনে রূপান্তর করা যাবে।

ইউটিউব জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ১০৮০ পিক্সেল-এর নিচে আপলোড করা ভিডিওগুলোর মান উন্নত করা হবে। অর্থাৎ স্ট্যান্ডার্ড ডেফিনেশন (এসডি) ভিডিওগুলোকে হাই ডেফিনেশনে (এইচডি) রূপান্তর করা হবে। ভবিষ্যতে এই সুবিধা ফোর-কে রেজ্যুলেশন পর্যন্ত বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

ব্লগপোস্টে বলা হয়েছে, ‘নির্মাতারা তাঁদের মূল ফাইল এবং মূল রেজ্যুলেশন আগের মতোই সংরক্ষণ করতে পারবেন। চাইলে তাঁরা এই এআই উন্নত রেজ্যুলেশন থেকে সম্পূর্ণভাবে ‘অপ্ট-আউট’ বা ফিচারটি বন্ধ করে দিতে পারবেন।’ অর্থাৎ, ইউটিউব ভিডিওর গুণমান বাড়ালেও কনটেন্টের ওপর নির্মাতাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

দর্শকেরাও চাইলে মূল রেজ্যুলেশনেই ভিডিও দেখতে পারবেন। উন্নত রেজ্যুলেশন ভিডিওগুলোর পাশে স্পষ্টভাবে লেবেল থাকবে, যাতে দর্শক নিজের পছন্দমতো সেটিং বেছে নিতে পারেন।

এ ছাড়া ইউটিউব থাম্বনেইলের ফাইল সাইজ সীমা ২ মেগাবাইট থেকে বাড়িয়ে ৫০ মেগাবাইট করছে। এতে করে নির্মাতারা এখন তাঁদের ভিডিওর জন্য ফোর-কে মানের থাম্বনেইল ব্যবহার করতে পারবেন।

কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, নির্বাচিত কিছু নির্মাতার সঙ্গে তারা বড় আকারের ভিডিও আপলোডের পরীক্ষাও শুরু করেছে, যাতে ভবিষ্যতে আরও উন্নতমানের ভিডিও আপলোড করা সম্ভব হয়।

ইউটিউবের মতে, নতুন এই এআই আপস্কেলিং ফিচার টেলিভিশনে প্রিমিয়ার অভিজ্ঞতা গড়ে তোলার প্রচেষ্টার অংশ। এর পাশাপাশি আসছে নতুন শপিং ফিচার, আরও ইমারসিভ সেটিং এবং টেলিভিশনের জন্য উন্নত সার্চ অভিজ্ঞতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অ্যাপল-মাইক্রোসফটকে পেছনে ফেলে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের ঘরে এনভিডিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৪৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মাইক্রোসফট কর্পোরেশন ও অ্যাপল ইনকর্পোরেটেডকে পেছনে ফেলে বিশ্বের প্রথম কোম্পানি হিসেবে ৫ ট্রিলিয়ন বাজারমূল্যের ঘরে পা রাখল মার্কিন চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া কর্পোরেশন। গতকাল বুধবার এ কথা জানিয়েছেন কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেনসেন হুয়াং। মাত্র চার মাস আগেই কোম্পানিটি ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের সীমা ছুঁয়েছিল।

নিউইয়র্ক সময় গতকাল সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে প্রতি শেয়ার ২১১.৪৭ ডলারে পৌঁছায়, যা এনভিডিয়াকে এই মাইলফলক অতিক্রম করতে সহায়তা করে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উন্মাদনাকে নতুন উচ্চতায় নিতে একের পর এক চুক্তি করেছে কোম্পানিটি। আর এর ফলস্বরূপ এই সাফল্য। নকিয়া ওওয়াইজে, স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স কো. এবং হুন্দাই মোটর গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চিপ সরবরাহের চুক্তি করেছেন সিইও হুয়াং।

তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারে এনভিডিয়া নিজস্ব ধারায় এগিয়ে এই শীর্ষ অবস্থান দখল করে আছে। গত মঙ্গলবার বাজার বন্ধ হওয়া পর্যন্ত এই বছরে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ। ২০২৫ সালে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের ১৭ শতাংশ উত্থানের প্রায় পাঁচভাগের একভাগের পেছনে কারণ হিসেবে রয়েছে এই শেয়ারের দাম বৃদ্ধি।

ট্রুইস্ট অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার ও প্রধান বাজার কৌশলবিদ কিথ লার্নার বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও ৫ ট্রিলিয়ন ডলার বাজারমূল্য ছিল অকল্পনীয়। এআই যে বিশ্বজুড়ে রূপান্তরমূলক ভূমিকা রাখবে, বাজার স্পষ্টভাবে সেই ধারণার ওপর প্রচুর আস্থা রাখছে।’

গত মঙ্গলবার এনভিডিয়ার ব্ল্যাকওয়েল চিপ নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলার আশা প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই বেড়ে যায় এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম। ট্রাম্প কয়েক মাস আগে বলেছিলেন, এনভিডিয়ার ব্ল্যাকওয়েল প্রসেসরের একটি ডাউনগ্রেডেড সংস্করণ চীনে রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন তিনি। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশা করছেন এ বিষয়ে একটা চুক্তির আলোচনা দুই প্রেসিডেন্টের সাক্ষাতে হতে পারে।

একের পর এক নতুন অংশীদারত্ব ঘোষণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ‘বুদবুদ’ (এআই বাবল) তৈরি হচ্ছে এমন উদ্বেগ উড়িয়ে এনভিডিয়ার সিইও হুয়াং বলছেন, সর্বশেষ চিপগুলো থেকে অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলার আয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কোয়ান্টাম কম্পিউটারকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিপের সঙ্গে সংযুক্ত করতে কোম্পানিটি আরও একটি নতুন সিস্টেম উন্মোচন করেছে।

ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্লেষকেরা এনভিডিয়ার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী। ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটিকে নিয়ে কাজ করা ৮০ জন বিশ্লেষকের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি এনভিডিয়ার শেয়ারকে ‘বাই’ বা তার সমতুল্য রেটিং দিয়েছেন। শুধুমাত্র সিপোর্ট গ্লোবাল সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক জে গোল্ডবার্গ এটিকে ‘সেল’ রেটিং দিয়েছেন। শেয়ারের গড় মূল্য লক্ষ্য (average price target) নির্ধারণ করা হয়েছে ২২৫.৪৮ ডলার, যা প্রায় ৭ শতাংশ উর্ধ্বগতির ইঙ্গিত দেয়।

বর্তমানে এনভিডিয়ার শেয়ার অনুমানকৃত আয়ের তুলনায় ৩৪ গুণেরও কম দামে লেনদেন হচ্ছে, যা গত পাঁচ বছরের গড় (প্রায় ৩৯ গুণ) থেকে নিচে এবং ফিলাডেলফিয়া স্টক এক্সচেঞ্জ সেমিকন্ডাক্টর সূচকের ২৯ গুণের কাছাকাছি।

তবুও সাম্প্রতিক নাটকীয় উত্থানের প্রেক্ষিতে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম বাড়তে থাকবে কি না এ নিয়ে প্রচুর সংশয় রয়েছে। ২০২২ সালের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত শেয়ারটির দাম ইতিমধ্যেই ১৩০০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। ফোর্ট পিট ক্যাপিটাল গ্রুপের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা ড্যান আই বলেন, এনভিডিয়া সম্ভবত কিছু বাজার-শেয়ার হারাবে অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস ইনক. এবং ব্রডকম ইনক.-এর মতো প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানির কাছে।

তিনি বলেন, ‘যদি এআই নিয়ে সবার প্রত্যাশা বাস্তবে রূপ নেয় তাহলে বর্তমান মূল্যায়ন হয়তো যথার্থ বলা যেতে পারে। কিন্তু এর কিছু অংশ বাস্তবে অর্জন করা কঠিনও হতে পারে। এনভিডিয়ার শেয়ার না রাখা কঠিন হয়েছে, কিন্তু এটি এখন এমন দামে লেনদেন হচ্ছে যা অত্যন্ত উচ্চ প্রত্যাশার প্রতিফলন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাড়ির সব কাজ করে দেবে ২০ হাজার ডলারের রোবট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ওয়ান-এক্স টেকনোলজির তৈরি হিউম্যানয়েড রোবট ‘নিও’। ছবি: এক্স
ওয়ান-এক্স টেকনোলজির তৈরি হিউম্যানয়েড রোবট ‘নিও’। ছবি: এক্স

আপনি কি বাড়ির কাজ করতে করতে ক্লান্ত? কিংবা মুদিদোকান থেকে ভারী বাজার নিয়ে বাসায় ফিরতে পারছেন না, অতিরিক্ত ১০০ টাকা খরচ করে রিকশাভাড়া করতে হচ্ছে? তাহলে আপনার জন্যই ওয়ান-এক্স টেকনোলজিস নিয়ে এসেছে হিউম্যানয়েড রোবট ‘নিও’। আপনার বাড়ির সব কাজ করে দিতে পারবে এই হিউম্যানয়েড রোবট।

২০ হাজার ডলারের এ রোবট চাইলে আপনি মাসিক ৪৯৯ ডলার সাবস্ক্রিপশন করেও নিতে পারবেন। ওয়ান-এক্স টেকনোলজিস জানিয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে বাজারে আসবে নিও।

৩০ কেজি ওজনের নিও ৬৮ কেজি পর্যন্ত ওজন তুলতে পারে এবং ২৫ কেজি পর্যন্ত বহন করতে সক্ষম। রোবটটির ডিজাইনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গৃহস্থালি পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ওপর। নরম পলিমার বডি, নিউট্রাল রং (ধূসর, বাদামি) ও বেশ শান্ত স্বভাবের (মাত্র ২২ ডেসিবেল শব্দের) নিওকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, মনে হবে সে আপনার ঘরেরই কেউ।

তবে নিও শুধু একটি সাধারণ রোবট নয়, এর মধ্যে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল, ভিজ্যুয়াল ও অডিও ইন্টেলিজেন্স, কাজের সময়সূচি এবং স্মৃতি সংরক্ষণের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। রোবটটি রান্নাঘরের নানান উপকরণ চিনতে পারে এবং আপনি কী খাবেন, সে পরামর্শও দিতে পারে। ভয়েস বা অ্যাপের মাধ্যমে এটিকে নির্দেশ দেওয়া যায় এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে।

তবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ান-এক্স টেকনোলজিস স্বীকার করেছে, শুরুতেই সব ধরনের গৃহস্থালি কাজ একা করতে পারবে না নিও। কিছু জটিল কাজের জন্য তাকে ‘বিশেষভাবে নির্দেশনা দিতে হবে’।

মার্কিন ব্যবসায়িক সাময়িকী ফাস্ট কোম্পানির তথ্যমতে, ওয়ান-এক্স টেকনোলজিস একসময় হালোডি রোবটিকস নামে পরিচিত ছিল। এখন তাদের লক্ষ্য হিউম্যানয়েড রোবটকে দৈনন্দিন জীবনের অংশে পরিণত করা। এই লক্ষ্যে তারা ওপেনএআই স্টার্টআপ ফান্ডসহ শত শত মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে।

নিও সফল হলে এটি ‘হোম অটোমেশন’-এর ধারণাকে পাল্টে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাধারণ লাইট জ্বালানো থেকে শুরু করে কাপড় ভাঁজ করা এবং মুদিদোকানের জিনিস বহন করা—সবকিছুই করে দেবে এই রোবট। এর ফলে মানুষের সময় বাঁচবে, যা তারা আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যয় করতে পারবে।

তবে নিওর সাফল্য নির্ভর করবে কতটা নির্ভরযোগ্যভাবে এটি কাজ করতে পারবে, তার ওপর। সে সঙ্গে সফ্টওয়্যার আপডেট কত দ্রুত এর ক্ষমতা বাড়াতে পারে এবং ভোক্তাদের জন্য খরচ ও সুবিধার সমীকরণ কতটা অনুকূলে থাকে, তার ওপর। যদি নিও সফল হয়, তাহলে আমরা হয়তো রোবটকে সায়েন্স ফিকশন থেকে বাস্তব জীবনে দেখব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উদ্ভাবন নাকি অশনিসংকেত—ওপেনএআইয়ের ‘সোরা ২’ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর ভিডিও তৈরির নতুন টুল ‘সোরা ২’ প্রকাশের পর থেকেই প্রযুক্তি জগতে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি করেছে। মাত্র কয়েকটি লাইনের টেক্সট লিখেই বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম এই অ্যাপটি দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে এর পাশাপাশি বাড়ছে সমালোচনার ঝড়—বিশেষ করে, কপিরাইট লঙ্ঘন, ভুয়া ভিডিও ছড়ানো ও নৈতিকতার প্রশ্নে ওপেনএআইকে এখন কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে এই টুল।

২০২৪ সালের সীমিত সংস্করণের পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ‘সোরা ২’ উন্মোচন করে ওপেনএআই। নতুন সংস্করণে ব্যবহারকারীরা নিজেদের মুখের ছবি ও কণ্ঠের রেকর্ড আপলোড করে পছন্দের যে কোনো দৃশ্যে নিজেদের উপস্থিত করতে পারেন। প্রযুক্তির এই সহজলভ্যতা যেমন সাধারণ মানুষের কাছে আকর্ষণীয়, তেমনি এটি অপব্যবহারের আশঙ্কাও বাড়িয়েছে।

অল্প সময়েই দেখা গেছে, ‘সোরা ২’ ব্যবহার করে কেউ কেউ ড. মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে নিয়ে বর্ণবাদী ও আক্রমণাত্মক ভিডিও তৈরি করেছে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাঁর পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নিতে ওপেনএআইয়ের কাছে দাবি জানায়। একইভাবে, ‘ব্রেকিং ব্যাড’-এর অভিনেতা ব্রায়ান ক্র্যানস্টন অভিযোগ করেছেন, তাঁর মুখ ও কণ্ঠ ব্যবহার করে অনুমতি ছাড়াই ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।

বিতর্ক বাড়তে থাকায় ওপেনএআই দ্রুত নীতি পরিবর্তন করে। শুরুতে সংস্থাটি কপিরাইটকৃত কনটেন্ট ব্যবহার করতে দিত, যদি কপিরাইটধারীরা আপত্তি না জানায়। কিন্তু সমালোচনার মুখে এখন সেই নীতি বদলে দিয়ে বলা হয়েছে—কোনো কনটেন্ট ব্যবহারের আগে অবশ্যই কপিরাইটধারীর ‘অপ্ট-ইন’ অনুমতি লাগবে। কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, ভবিষ্যতে তারা আরও সূক্ষ্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যোগ করবেন যাতে ব্যক্তির চেহারা বা কণ্ঠ ব্যবহার নিয়ে কারও অধিকার লঙ্ঘিত না হয়।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক এলিসা রেডমাইলস বলেছেন, ‘এই প্রযুক্তি এখনো অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এটি সহজেই ডিপফেক তৈরি করতে সক্ষম, যেখানে কাউকে তাঁর অমতে ব্যবহার করা হতে পারে।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘সোরা ২’ এর মতো টুল শিশু ও তরুণীদের প্রতি অপব্যবহারের অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।

আরেক অধ্যাপক সারা বারগাল মনে করেন, এই প্রযুক্তি পূর্বের যে কোনো ফটো এডিটিং সফটওয়্যারের চেয়ে অনেক বেশি প্রভাবশালী ও বিপজ্জনক। তিনি বলেন, ‘আগে ছবি সম্পাদনার জন্য দক্ষতা দরকার হতো, এখন শুধু কয়েকটি বাক্য লিখেই এমন ভিডিও তৈরি করা যায়, যা অভিজ্ঞরাও আসল বলে ভুল করতে পারেন।’

ভবিষ্যতে ভুয়া ভিডিও শনাক্তের প্রযুক্তি উন্নত হবে বলে আশা করা হলেও বারগাল সতর্ক করেছেন—আইন, নৈতিকতা ও সামাজিক সচেতনতা সেই গতিতে এগোচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজ এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে যেখানে ভিডিও আর প্রমাণ হিসেবে ধরা যায় না।’

এদিকে বিতর্কের মধ্যেও ‘সোরা ২’ অ্যাপ স্টোরের শীর্ষে উঠে এসেছে। স্যাম অল্টম্যান এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, ইন্টারনেটে এখন অনেক ভুয়া ভিডিও থাকবে—কিন্তু সমাজকে এই বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’

প্রযুক্তি কি তবে সত্যের সীমা মুছে দিচ্ছে, নাকি আমরা এক নতুন বাস্তবতার দিকে এগোচ্ছি—‘সোরা ২’ সেই প্রশ্নই সামনে এনে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধরে ফেলবে’ চীন, নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ ট্রাম্পের

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত