Ajker Patrika

১৯ বছর বয়সে ফ্রিল্যান্সিংয়ে বৃষ্টির সাফল্য

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 
স্নিগ্ধা আক্তার বৃষ্টি। ছবি: সংগৃহীত
স্নিগ্ধা আক্তার বৃষ্টি। ছবি: সংগৃহীত

ফ্রিল্যান্সিং করে শুধু ছেলেরা নন, অনেকটা এগিয়েছেন মেয়েরাও। তাঁদের একজন ১৯ বছর বয়সী দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী স্নিগ্ধা আক্তার বৃষ্টি। পড়াশোনার পাশাপাশি সংসার সামলে ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে তাঁর আয় প্রায় লাখ টাকা। দুটি প্রতিষ্ঠানের সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার তিনি এবং বিব্র্যান্ড নামে একটি এজেন্সির কর্ণধার। স্বামী এবং এক সন্তান নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা গ্রামে থাকেন তিনি।

শুরু যেভাবে

বৃষ্টি সব সময় চাইতেন নিজে কিছু করবেন, যেখানে কাজের স্বাধীনতা থাকবে এবং আয় করা যাবে। ২০২২ সালের শেষের দিকে তিনি স্বামীর কাছ থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারেন। তখন তাঁর ভাবনার সঙ্গে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজগুলো অনেকটাই মিলে যায়। এরপর গুগল ও ইউটিউব থেকে সে বিষয়ে আরও অনেক কিছু জানতে পারেন তিনি। ফেসবুকে ‘কিছু করতে চাই’ নামে একটি গ্রুপ বৃষ্টির জীবনে আশার আলো হয়ে ধরা দেয়। সে জন্য গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সিনথিয়া আক্তার লিজার প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। হাতে ধরে ফ্রিল্যান্সিংয়ের নানা দিক তাঁকে শিখিয়ে দেন লিজা। আবার কোনো সমস্যায় পড়লে সাহায্যও করেন। লিজার কাছে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ওপর তিন মাসের কোর্স করেন বৃষ্টি। কোর্স চলাকালীন লিংকডিন থেকে প্রথম এক পাকিস্তানি ব্যবসায়ীর কাজ পান তিনি। এরপর ধীরে ধীরে এগিয়ে যান এই তরুণী।

হার না মেনে এগিয়েছেন

ফ্রিল্যান্সিংয়ে অ্যাকাউন্ট হারানো খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু একদম নতুন একজন ফ্রিল্যান্সারের আপ ওয়ার্ক অথবা ফাইভারে অ্যাকাউন্ট হারানো অনেক কষ্টের ব্যাপার। এ ব্যাপারটি তিনবার ঘটেছে বৃষ্টির বেলায়। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে ফাইভারে লেভেল ওয়ান পান তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁর আইডি ডিজেবল করে দেয় ফাইভার কর্তৃপক্ষ। এরপর আরও দুটি আইডি খোলেন। একটিও বেশি দিন টেকে থাকেনি। এ রকম অবস্থায় অধিকাংশ নতুন ফ্রিল্যান্সার মুষড়ে পড়েন। কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তবে বৃষ্টি হাল ছাড়ার মানুষ নন। এবার আগের চেয়ে আরও বেশি মনোযোগী হন তিনি। আউট অব মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করেন। ফলে সাফল্য আসতে থাকে বেশ দ্রুত। ফ্রিল্যান্সিংয়ে তাঁর প্রথম আয় ছিল মাত্র ১৮০ টাকা। বর্তমানে তাঁর মাসিক আয় প্রায় লাখ টাকা।

পরিবারের সহযোগিতা

ফ্রিল্যান্সিং নারীর জন্য চমৎকার এক পেশা। ঘরে বসেই সংসারের সবকিছু দেখভাল করে ডলার আয় করা যায়। তবে স্বামী এবং পরিবারের অন্যদের সহযোগিতা না থাকলে সামনে এগোনো কঠিন। এ বিষয়ে বৃষ্টি ভাগ্যবতী বলা চলে। তাঁর স্বামী ঘরের কাজের পাশাপাশি সন্তানের দেখাশোনাও করেন। বৃষ্টি ও তাঁর স্বামী দুজনে সংসারের কাজ ভাগ করে নেন। ফলে পারিবারিক জীবনে তাঁদের কোনো সমস্যা হয় না বলে জানান তিনি। আবার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও সব সময় বৃষ্টির নানা কাজে সহায়তা করেন।

আগামীর ভাবনা

নিজের ক্যারিয়ারে উন্নতির পাশাপাশি বৃষ্টির ইচ্ছা হাওর অঞ্চলের নারীদের পাশে দাঁড়ানোর। তাঁদের ডিজিটাল মার্কেটিং শেখানো। যেন তাঁরা স্বাবলম্বী হয়ে পরিবারের সচ্ছলতায় ভূমিকা রাখতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত