Ajker Patrika

সুরিনামই তো বাংলাদেশ ফুটবলের প্রেরণা

ক্রীড়া ডেস্ক    
বিশ্বকাপ খেলার কাছাকাছি সুরিনাম। ছবি: এএফপি
বিশ্বকাপ খেলার কাছাকাছি সুরিনাম। ছবি: এএফপি

ঘুমিয়ে পড়া বাংলাদেশ ফুটবল জেগে ওঠার স্বপ্ন দেখছে প্রবাসী ফুটবলারদের ঘিরে। ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে শুরুর একাদশে ৫ জনই ছিলেন প্রবাসী। যদিও ম্যাচটি জিততে পারেনি বাংলাদেশ, হেরেছে ২-১ গোলে। শুরুতে ধাক্কা খেলেও সফলতার খোঁজে বাংলাদেশ চোখ রাখতে পারে সুরিনামের দিকে।

একসময় নেদারল্যান্ডসের উপনিবেশ থাকা সুরিনাম ফুটবলে অতটা পরিচিত মুখ নয়। তবে সাড়ে ৬ লাখেরও কম জনসংখ্যার দেশটি প্রথমবারের মতো স্বপ্ন দেখছে বিশ্বকাপ খেলার। কনক্যাকাফ অঞ্চলে দ্বিতীয় রাউন্ড পেরিয়ে বাছাইপর্বে তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছে র‍্যাঙ্কিংয়ের ১৩৭-এ থাকা দলটি। যেখানে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলেই নাম লিখিয়ে ফেলবে ইতিহাসে। এই স্বপ্ন সুরিনাম দেখছে প্রবাসী ফুটবলারদের কাঁধে চড়ে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে নেদারল্যান্ডসে জন্ম নেওয়া ফুটবলারদের নিয়ে।

সুরিনামের ২৬ জনের স্কোয়াডে ৩ জন বাদে সবাই বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়। ঠিক বিপরীত দিকে ঘাঁটলেও দেখা যাবে ডাচ ফুটবলে কতটা প্রভাব রেখেছে তারা। ১৯৮২ ও ১৯৮৬ বিশ্বকাপে খেলতে না পারার হতাশা যখন পুড়ে খাচ্ছিল নেদারল্যান্ডসকে, তখন হাল ধরেন রুড গুলিত, ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড, ক্লারেন্স সিডর্ফ। ডাচদের এনে দেন ১৯৮৮-এর ইউরো শিরোপা। সেবার কিছুটা হলেও আনন্দ ছেয়ে গিয়েছিল সুরিনামে। কারণ, এই তিন খেলোয়াড়ের শিকড় যে সুরিনামে গাঁথা।

গুলিত-রাইকার্ডদের পথ ধরে অনেকে ডাচদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বর্তমানে খেলা অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক, জাভি সিমন্স, জর্জ ভাইনালডুম, ডেনজের ডামফ্রিজদের বাবা-মায়েরা সুরিনামের বংশোদ্ভূত। তাই এই নিয়ে কিছুটা আফসোসও হচ্ছিল তাঁদের। ক্যারিবিয়ান দেশটির সেই আক্ষেপ উবে যায় ছয় বছর আগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায়। প্রবাসী ফুটবলারদের জাতীয় দলের হয়ে খেলার অনুমতি পাওয়ার পর মেলা বসে যায় দলটিতে।

দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের দেশ হলেও সুরিনাম ফুটবলে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করেছে কনক্যাকাফ অঞ্চলে। ২০২৬ বিশ্বকাপের আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো কনক্যাকাফের হওয়ায় সুরিনামের পথটা আরও সহজ করে দিয়েছে। কারণ কনক্যাকাফ অঞ্চল থেকে মূল পর্বের টিকিট কাটতে পারবে আরও ৫টি দল।

সুরিনাম ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি সুরিন মাতুরা, ‘পুরো জাতির স্বপ্ন (বিশ্বকাপে খেলা) এবং আশা করি, আমরা সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারব। আমরা প্রচুর উন্নতি করেছি। ৪১ দেশের মধ্যে সেরা ১৪ তে জায়গা করে নিয়েছি।’

এবারই প্রথম বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে ৪৮ দল। সে কারণেই সুরিনামের কোচ রোবেরতো হুড়েকেনের কাছে পথটা সহজ মনে হচ্ছে। দ্বিতীয় রাউন্ডে তাঁর দল ৪ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পা রেখেছে পরের রাউন্ডে। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই ভালো সুযোগ আছে, বিশ্বকাপে খেলার। সুরিনামের ফুটবলকে উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রবাসী ফুটবলারেরা কৃতিত্ব পাবে। বিশ্বকাপে উঠলে সুরিনামের পরিচিতি বিশ্ব মানচিত্রে ফুটে উঠব’

সুরিনামের মতো অত বড় পরিসরে স্বপ্ন দেখছে না বাংলাদেশ। তবে হামজা-শমিতদের নিয়ে আপাতত এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্ন তো দেখাই যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত