Ajker Patrika

বাবার মৃত্যু, দুই ভাইয়ের ত্যাগ, আবেগতাড়িত ক্রিকেটার রবিউল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১২: ৪৪
বাবার মৃত্যু, দুই ভাইয়ের ত্যাগ, আবেগতাড়িত ক্রিকেটার রবিউল

এই একটু আগেও রবিউল হককে দেখে বোঝার উপায় ছিল না, কতটা আবেগতাড়িত হতে যাচ্ছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে কক্ষেই সেই আবেগ ছড়িয়ে পড়ল মুহূর্তে। রংপুর রাইডার্স ও খুলনা টাইগার্স ম্যাচে রংপুরের নায়ক রবিউল। ম্যাচ-সেরা হয়ে এসে রবিউল শোনালেন, বাবার মৃত্যু, তাঁর জীবনে দুই ভাইয়ের ত্যাগ, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তাঁকে কীভাবে জীবনসংগ্রামে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছেন।

রবিউলের ম্যাচ-সেরা হওয়ার গল্পটা আগে বলে নেওয়া যাক। খুলনার ১৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও বেশ হাঁসফাঁসই করে রবিউলের রংপুর। আর খুলনাকে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং-বান্ধব উইকেটেও অল্পতে আটকে দেওয়ার কৃতিত্ব রবিউলের। চতুর্থ উইকেটে আজম খানের সঙ্গে ইয়াসির আলীর একটা জুটি হয়েছিল বটে। দ্রুত উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে ৫৮ রানের জুটিতে বড় রানের স্বপ্নই দেখছিল খুলনা। সেটা হতে দেননি রবিউল। নিজের প্রথম ওভারে রবিউল ১২ রান দেন।

নিজের জীবনের গল্পের মতোই পরের তিন ওভারের স্পেলে ১০ রান দিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। প্রথমে ইয়াসিরকে নাঈমের ক্যাচ বানিয়ে জুটি ভাঙেন। এরপর সাব্বির রহমানকে ১ রানে শামীমের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন। মাঝে খুলনার আশা হয়ে থাকা আজমকে তুলে নেন রাকিবুল। ২৩ বলের ইনিংসে ৪ চার ও ১ ছক্কায় আজম ৩৪ রান করেন। রবিউলের পরের দুই শিকার আমাদ বাট ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

জীবনের প্রথম সংবাদ সম্মেলন, সংবাদকর্মীদের ভিড়—স্বাভাবিকভাবে রবিউল এসবের সঙ্গে খুব একটা পরিচিত নন। কেমন লাগছে? নিজেকে সামলে নিয়ে রবিউল বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। প্রথম ম্যাচ থেকেই চেষ্টা ছিল এই বিপিএল একটা বড় সুযোগ, ভালো কিছু করতে হবে। এমন মানসিকতা, শরীরী ভাষা—সব দিক থেকেই চেষ্টা ছিল। প্রস্তুতিটাও ভালো নিতে পেরেছি, যা পেয়েছি সেটার জন্য আলহামদুলিল্লাহ।’ ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিচিত মুখ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে ভালো করেছেন বিসিএলের চার দিন ও এক দিনের সংস্করণেও। নিজেকে ফিট রেখে ভালো করাই রবিউলের শক্তি।

নিজেকে ফিট রাখতে আর জীবনসংগ্রামে এগিয়ে যেতে রবিউলের অনুপ্রেরণা রোনালদো। গতকাল উইকেট নিয়ে পর্তুগিজ তারকার বিখ্যাত হয়ে যাওয়া সেই উদ্‌যাপনও করতে দেখা গেছে তাঁকে। রোনালদোকে অনুপ্রেরণা মানার কারণ হিসেবে বলছিলেন, ‘উদ্‌যাপনের পেছনে যে আইকনিক মানুষটা (রোনালদো) আছেন, তিনি আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক খেলোয়াড় কাউকে না কাউকে অনুসরণ করে। আমিও একজনকে অনুসরণ করি—তাঁর কাজের ধরন, অনেক কঠোর পরিশ্রমী, অনেক শক্ত মানসিকতা—সবই। খুব খারাপ পরিস্থিতিতেও তিনি দলকে যেকোনোভাবে কামব্যাক করাতে পারেন, বড় মঞ্চেও। এ রকম একটা বিশ্ব মহাতারকার কাছ থেকে কিছুটা হলেও যদি আমি নিজের ভেতরে নিতে পারি... কঠোর পরিশ্রম বলেন, শক্ত মানসিকতা বলেন, যা-ই বলেন, সেটা আমার জন্য অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার হবে।’

রবিউল বাবাকে হারান গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি। ছেলেকে নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন এনামুল হক সরকার। রবিউলের আক্ষেপ, বাবা বেঁচে থাকলে টিভিতে তাঁর খেলা দেখতেন। বাবার পর রবিউলের জীবনে দুই ভাইয়ের অবদানই সবচেয়ে বেশি। দুই ভাইকে নিয়ে বলতে গিয়েই রবিউল আর আবেগ চেপে রাখতে পারলেন না, ‘আমার আসল দুই কোচ হচ্ছেন আমার বড় ভাই ও মেজ ভাই। সব সময় ফোন দিলেই তাঁরা আমাকে এত পরামর্শ দেন...ওরা আসলে...আমার বড় ভাই আমার হিরো। উনি জীবনের সবকিছুই ত্যাগ করেছেন আমার এই ক্রিকেট খেলার জন্য। কী বলব, আবেগী হয়ে যাচ্ছি। বড় ভাই, মেজ ভাই…তাঁরা আমার ক্যারিয়ারের জন্য সবকিছুই করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভিসা ছাড়া পাকিস্তান সফরের চুক্তি হতে পারে শিগগির

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

সাদাপাথর লুট: ৫১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে দুদক

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত