বাংলাদেশ সিরিজ হারের পর মুখ খুললেন সাবেক লঙ্কান ক্রিকেটার

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ফিরে পেয়েছে হারানো ছন্দ। নিজেদের সবশেষ চার ম্যাচের চারটিতেই জিতেছে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। যার মধ্যে রয়েছে এ মাসে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে ঐতিহাসিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়। এই সিরিজ হার নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) প্রধান নির্বাচক উপুল থারাঙ্গা।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে ১০ জুলাই সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ হারে ৭ উইকেটে। এই ম্যাচ হারের পরই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন লিটন, শেখ মেহেদী হাসান, তানজিদ হাসান তামিমরা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে দাপটের সঙ্গে জিতেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে ১৩ জুলাই ডাম্বুলায় দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জিতেছে ৮৩ রানের জয়। এই ম্যাচে ৯৪ রানে অলআউট হয়ে লঙ্কার ইতিহাসে ঘরের মাঠে সবচেয়ে কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার বিব্রতকর রেকর্ড গড়ে দলটি।

বাজে হারের পেছনে থারাঙ্গা শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যেখানে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৭৩ রান করার পর শেষ দুই ম্যাচে এক অঙ্কের ঘরে আউট হয়েছেন। ওপেনার পাথুম নিশাংকা ছাড়া আর কোনো ব্যাটার বলার মতো পারফর্ম করতে পারেননি। কদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে এসএলসির প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘আমাদের ব্যাটিংটা সত্যিই খুব খারাপ হচ্ছে। আমরা অনেক রকম ভাবেই চেষ্টা করছি। কিন্তু এখন নতুন ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতে হবে।’

অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের সিরিজে নুয়ানিদু ফার্নান্দো, পবন রত্নায়েকে পাল্লা দিয়ে রান করেছেন। যেখানে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ফার্নান্দো করেছেন দুই সেঞ্চুরি। ফার্নান্দো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। রত্নায়েকের তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই অভিষেক হয়নি। থারাঙ্গার মতে তরুণ ক্রিকেটারদের জাতীয় দলে বেশি সুযোগ দিতে হবে। সাবেক লঙ্কান এই বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘তারা (নুয়ানিদু ফার্নান্দো ও পবন রত্নায়েকে) সুযোগটা দাবি করছে। আমাদের দরকার শক্তি ও ক্ষুধার সমন্বয়। বিশেষ করে মিডল ওভারে।’ আমাদের হাতে বিকল্প আছে। তবে ভারসাম্য রক্ষা করাটা গুরুত্বপূর্ণ। সবাইকে তো বেছে নেওয়া সম্ভব না। আমাদের তাই স্মার্ট হতে হবে এ ব্যাপারে যে কখন কাকে খেলাব।’

২০০৭, ২০০৯, ২০১১, ২০১২—চারবার আইসিসি ইভেন্টের ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গের পর অবশেষে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গেরো খুলে শ্রীলঙ্কা। ১১ বছর আগে লঙ্কানরা যে স্মার্ট ক্রিকেট খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, থারাঙ্গা বর্তমান শ্রীলঙ্কা দলে খুব একটা দেখতে পান না। যেখানে গত বছরের জুলাই থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা পাঁচটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে জিতেছে একটি। হেরেছে তিন সিরিজ। আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গত বছর যে সিরিজ শ্রীলঙ্কা ড্র করেছে, সেটা জিততে পারত লঙ্কানরাই। থারাঙ্গা বলেন, ‘এমনকি ২০১৪ সালে আমরা যখন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম, তখন স্মার্ট ক্রিকেট খেলেছি। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে স্ট্রাইক রোটেট করেছি। গ্যাপ বের করে রান নিয়েছি। সেটা এখন দেখাই যাচ্ছে না। বিশেষ করে মিডল ওভারে।’

বাংলাদেশ সিরিজের পর শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের পরবর্তী প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। ২৯ ও ৩১ আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে খেলবে শ্রীলঙ্কা। এরপর ৩,৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল। সিরিজটি হবে জিম্বাবুয়েতে।