Ajker Patrika

বাংলাদেশকেও গোনার বাইরে রাখা যাবে না

আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪, ১৮: ৩৮
বাংলাদেশকেও গোনার বাইরে রাখা যাবে না

২০২৪ বিপিএল শেষ হলো কাল। এবার ধারাভাষ্য দিতে আসা পাকিস্তান কিংবদন্তি রমিজ রাজার কণ্ঠে বেশ মুগ্ধতা ঝরল বিপিএল নিয়ে। গত বুধবার রাতে মিরপুরে ধারাভাষ্য দেওয়ার ফাঁকে রমিজ কথা বললেন আজকের পত্রিকার সঙ্গে। তাঁর ক্ষুরধার বিশ্লেষণীতে বিপিএল যেমন এল, জুনে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও এসেছে আলাপনে। ক্রিকেট প্রশাসনে সাকিব-মাশরাফির সম্ভাবনা নিয়েও কথা বললেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস। 

প্রশ্ন: সমালোচনা-বিতর্ক পিছু ছাড়ে না বিপিএলকে। গত কিছুদিনে যা দেখেছেন সে আলোকে আপনি কিছু ইতিবাচক দিক বলুন।
রমিজ রাজা: দেখলাম এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। মানুষজনের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আছে বিপিএলের দিকে, এটা দারুণ। অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় দেখেছি। তাওহীদের (হৃদয়) ইনিংস, যেভাবে তামিম ইকবাল দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স। ভালো ফাস্ট বোলিং, বাঁহাতি স্পিনের মানও ভালো। অনেক ইতিবাচক দিক আছে। যদি টুর্নামেন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় আর এই প্রচেষ্টা ধরে রাখেন, বিপিএল বাংলাদেশ ক্রিকেটকে কিছু দিতে পারবে।

প্রশ্ন: বিশ্বে এখন অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। বিপিএলকে স্লট ভাগাভাগি করতে হচ্ছে একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের  সঙ্গে। এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে বিপিএলের কী করা উচিত?
রমিজ: শুধু নিজেদের প্রতিভার ওপর মনোযোগ রাখা। লিগগুলো তৈরিই হয়েছে স্থানীয় প্রতিভার কারণে। আইপিএল যে ভিউয়ারশিপ, সে তো ভারতীয় ট্যালেন্টের কারণে। পিএসএলে যে ভিউয়ারশিপ, সেটা পাকিস্তানি ট্যালেন্টের কারণে। বিদেশি ক্রিকেটার নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। আন্তর্জাতিক লিগ করতে তাদের গুরুত্ব আছে। আবার তাদের ছাড়া হবেই না, বিষয়টি তাও না। সেদিন পিএসএলে মুলতান সুলতান মাত্র দুজন বিদেশি খেলোয়াড় খেলেছে। তারা চেয়েছিল বেঞ্চের খেলোয়াড়দের বেশি সুযোগ দিতে। লাহোর কালান্দার্সকে তারা হারিয়েছে, যাদের কিনা বোলিং আক্রমণ খুবই ভালো। এখানে আইডিয়াটা হচ্ছে, প্রমোট ইয়োর ইয়ুথ। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে যেন সঠিক ট্যালেন্ট বেরিয়ে আসে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে সম্প্রতি বলেছেন, বিপিএলে ক্লাস প্লেয়ারের ঘাটতি আছে। আর খেলোয়াড়দের এক লিগ থেকে আরেক লিগে দৌড়াদৌড়িকে তাঁর চোখে সার্কাস। আপনার কী মত এখানে?
রমিজ: আমার মনে হয় এটা বন্ধ হওয়া উচিত (এক লিগ থেকে আরেক লিগে খেলতে চলে যাওয়া) এখানে আনুগত্যের বিষয়টি চলে আসে, তাই না? এটা ছন্দ আর দলের সমন্বয় নষ্ট করে। কেউ এটা চাইবে না। যদি খেলার প্রতিশ্রুতি থাকে, যেমন ধরুন, আমি এখানে এসেছি বিপিএলকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ায়। এরপর পিএসএলে পুরো টুর্নামেন্টে ধারাভাষ্য দেওয়ারও প্রস্তাব পেলাম। আমি বললাম, না। আমি আগেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে গেছি। খেলোয়াড়দেরও একইভাবে চিন্তা করা উচিত। 

প্রশ্ন: বিপিএলের বাইরের প্রসঙ্গ, বাংলাদেশ যখন ঘরের মাঠে খেলে, বেশিরভাগ সময়ে স্পিনিং উইকেটের সুবিধা নেয়। উপমহাদেশের বাকি দলগুলোও কম-বেশি নেয়। স্পিনিং উইকেট তৈরি করলেই অনেক সমালোচনা হয়। অথচ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড বা ইংল্যান্ডে সিমিং উইকেট নিয়ে খুব বেশি সমালোচনা হয় না। এখানে বিসিবি বা বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে একটা যুক্তি তৈরি থাকে, কোন দেশ হোম কন্ডিশনের সুবিধা নেয় না! এ বিষয়ে আপনার অবস্থান কী?
রমিজ: নিজেদের মাঠে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষকে হারাচ্ছে, এটা দারুণ অর্জন। ভারতীয় দল কী করে ভারতে? এখানে যে বিষয়টি দেখা উচিত, আমরা যেভাবেই হোক জিতব—এটা উপভোগ কিংবা আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। তবে ঘরের মাঠে নিজেদের রেকর্ড নিয়ে বাংলাদেশের গর্ব করা উচিত। তার মানে অর্ধেক কাজ আপনি ঠিকঠাক করেছেন। পাকিস্তানও পারে না যখন তারা ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় খেলে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জয়ের ধারাটা ধরে রাখা। যখন বাংলাদেশ নিজেদের মাঠে খেলবে, এই ধারাটা ধরে রাখতে হবে। সে উইকেট স্পিনিং, সবুজ কিংবা যেটাই হোক। দিনশেষে আপনার দর্শক আপনাকে চ্যাম্পিয়ন, জয়ী হিসেবে দেখতে চায়।

প্রশ্ন: এশিয়ার দলগুলো লম্বা সময় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিততে পারছে না। অথচ বিশ্বের দুটি জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট এ অঞ্চলেরই। ভারতের আইপিএল আছে, অথচ তারা ২০০৭-এর পর আর এই ট্রফিটা নিতে পারল না। এর ব্যাখ্যা কী?
রমিজ: আন্তর্জাতিক ট্রফি জেতা ভিন্ন বল-গেম। আপনাকে ভাগ্যের ছোঁয়া পেতে হবে, সঠিক সময়ে সেরা ছন্দে থাকতে হবে। আমার সারা জীবনের আফসোস থাকবে, অস্ট্রেলিয়ায় আমরা ফাইনালে উঠেছি (২০২২) অথচ জিততে পারিনি। এশিয়া কাপের ফাইনালে (২০২২) উঠলাম, জিততে পারিনি। এখানে আসলে অনেক কিছু জড়িত। আমরা যখন ১৯৯২ বিশ্বকাপ জিতি, আমাদের সেমিফাইনালে উঠতে কাউকে না কাউকে হারতে হতো। আপনাকে লাকিও হতে হবে। সঠিক সময়ে সেরা ছন্দ খুঁজে পাওয়া—এটাই ঘটেছিল আমাদের ক্ষেত্রে।

প্রশ্ন: এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এশিয়ার দলগুলোর কেমন সম্ভাবনা?
রমিজ: আমি বিশ্বাস করি, এশিয়ার কোনো দল ট্রফি পাবে। আমার তো মনে হয়, বিপিএলে যা দেখেছি বাংলাদেশেরও ভালো সম্ভাবনা আছে। অনেক সম্ভাবনা দেখেছি। 

প্রশ্ন: আসলেই?
রমিজ: হান্ড্রেড পার্সেন্ট। অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কী হয়েছিল, মনে নেই? এখন নেদারল্যান্ডস হারিয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। যে কোনো দল দৈত্য বধ করতে পারে। যে কোনো দল চমকে দিতে পারে। সবারই সুযোগ থাকছে। কাজেই বাংলাদেশকেও গোনার বাইরে রাখা যাবে না। এ কারণে আমি মনে করি ভারত, পাকিস্তান এমনকি বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা আছে অন্তত সেমিফাইনালে ওঠার। তারপর দেখতে হবে সেখান থেকে কী করে। 

প্রশ্ন: পিসিবির সভাপতি হওয়ার পর বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছিলেন। সৌরভ গাঙ্গুলীও প্রশংসিত হয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে। আপনার কি মনে হয়, কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এলে বেশি ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব?
রমিজ: শীর্ষ অবস্থানে ক্রিকেটাররা এলে তাদের অনেক কিছু করার সুযোগ থাকে। যদি দীর্ঘ সময় খেলে থাকেন আপনি জানবেন, এখানে কী ঘটে। তখন এটা চালানোও অনেক সহজ হয়। খেলাটা আপনি নিষ্ঠার সঙ্গে দেখেন। খেলাটার জন্য আপনার একটা মন থাকতে হবে, স্পন্দন থাকতে হবে। কোনো খেলোয়াড়ের এটা আছে, কোনো খেলোয়াড়ের আবার নেই। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশের অনেক দর্শক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে বিসিবির সভাপতি হিসেবে দেখতে চান। এই প্রতিবেদককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিবও পরিষ্কার জানিয়েছেন, তিনি বিসিবি সভাপতি হতে চান। আপনার কি মনে হয় মাশরাফি বা সাকিবের মতো বড় মাপের ক্রিকেটাররা ক্রিকেট প্রশাসনে এলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে?
রমিজ: সৌরভ আর আমি বোধহয় দরজাটা খুলে দিয়েছি পরের প্রজন্মের জন্য। যদি তারা খেলাটার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আসে, সেটা দারুণ হবে। ক্রিকেটাররা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্তগুলো অধিক যৌক্তিক হয়ে থাকে। কারণ, আপনি এটার মধ্যে দিয়ে লম্বা সময় ধরে গেছেন। ক্রিকেটার হিসেবে ভালো বুঝবেন ক্রিকেটে কোনটা কাজ করবে, কোনটা করবে না। ক্রিকেটার প্রশাসনে এলে এই একটা সুবিধা। সাকিব-মাশরাফি লম্বা সময় ক্রিকেট খেলছে। এখন দুজনই সংসদ সদস্য। এটা দারুণ ব্যাপার। এখন আপনি যদি রাজনীতিবিদ হতে পারেন, তবে ক্রিকেট প্রশাসক কেন নয়?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্যাম্প ন্যুতে দীর্ঘদিন পর ফিরে মেসির আবেগঘন পোস্ট

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ২৪
দীর্ঘ দিন পর ক্যাম্প ন্যুতে ফিরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ দিন পর ক্যাম্প ন্যুতে ফিরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

লিওনেল মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার পর কেটে গেছে চার বছরেরও বেশি সময়। কিন্তু যে ক্লাবে তিনি প্রায় দুই দশক কাটিয়েছেন, তাঁর ‘মেসি’ হয়ে ওঠা যেখানে, সেই জায়গা কি এত সহজেই স্মৃতি থেকে ‘ডিলিট’ করা সম্ভব! দীর্ঘদিন পর ফিরে মেসি নস্টালজিক হয়ে পড়লেন।

৮৯৪ দিন পর ৭ নভেম্বর ক্যাম্প ন্যুতে ফিরেছে বার্সেলোনা ফুটবল। যে ক্লাবের জার্সিতে মেসি অসংখ্য শিরোপা জিতেছেন, তাঁর অনেক স্মৃতি ক্যাম্প ন্যুতে, সেখানে অনেকটা নিভৃতে ঘুরে গেলেন তিনি। মাঠে কিছু ছবি তুলে নিজের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে সেটা পোস্ট করেন মেসি। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লেখেন, ‘আমি গত রাতে ফিরে গিয়েছিলাম এমন এক জায়গায়, যেটাকে অনেক মিস করি। এই জায়গাটা ছিল আমার মন-প্রাণ। অনেক সুখ ছিল এখানে। আমি যে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ সেটা আপনারা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন।’

২০২১ সালে কান্নাভেজা চোখে ক্যাম্প ন্যু ছেড়ে গিয়েছিলেন মেসি। সেই দৃশ্য ফুটবলভক্তদের স্মৃতিতে এখনো তরতাজা। বার্সায় এরপর তাঁর ফেরার গুঞ্জন শোনা গেলেও সেটা গুঞ্জনই রয়ে গেছে। আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড ফিরতে পারেননি বার্সায়। ইনস্টাগ্রামে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড বলেন, ‘একদিন আবার ফিরতে পারব। খেলোয়াড় হিসেবে বিদায় জানানোর জন্য নয়। বরং এমন কিছুর জন্য যেটা আগে কখনো পারিনি।’

বার্সা ছেড়ে মেসি ২০২১ সালে গিয়েছিলেন প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি)। কিন্তু দুই বছর থাকার পর পিএসজির পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছিল তাঁর কাছে। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড পাড়ি জমান ইন্টার মায়ামি। ঠিক তার এক মাস আগে (২০২৩-এর জুনে) সংস্কারের জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায় ক্যাম্প ন্যুতে। ৮৯৪ দিন পর ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক ক্যাম্প ন্যুতে ফেরার পর অনুশীলন করেছেন রবার্ট লেভানডফস্কি-লামিনে ইয়ামালরা। এদিকে মায়ামির জার্সিতে ২৮ মাসে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলে ৮৫ ম্যাচ খেলেছেন। ৭৬ গোল করেছেন ও অ্যাসিস্ট করেছেন ৩৮ গোলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই মলাটে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ৫০ ম্যাচের ‘টিকিট’, দাম কত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে প্রকাশ করা হয়েছে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’। ছবি: ফেসবুক
বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে প্রকাশ করা হয়েছে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’। ছবি: ফেসবুক

টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের পর ২৫ বছর পূর্ণ করে ফেলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে হাঁটিহাঁটি পায়ে শুরু হয় টেস্টে বাংলাদেশের পথচলা। ২৫ বছরে ঐতিহাসিক কিছু মুহূর্ত নিয়ে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’ নামে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছে। বইটি কেনা যাবে ৮০০ টাকায়।

বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী চলা ক্রিকেট কনফারেন্স শেষ হলো আজ। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে বাংলাদেশের আড়াই দশকের স্মরণীয় মুহূর্ত নিয়ে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’ প্রকাশ করেছে ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহক জুনায়েদ পাইকার। ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে বাছাই করা ৫০টি ঐতিহাসিক ম্যাচ টিকিট নিয়ে সাজানো এই গ্রন্থে ফুটে উঠেছে আড়াই দশকের আবেগ, স্মৃতি ও গৌরব। জুনায়েদ বলেন, ‘এই টিকেট শুধু স্মারক নয়, আমাদের ক্রিকেটের পথচলা ও অগ্রগতির প্রতীক।’ বাংলাদেশ ক্রিকেট জাদুঘর ফেসবুকে বইটির একটি বিজ্ঞাপনও করেছে। দুই মলাটের এই বইয়ের দাম ৮০০ টাকা। বইটি কীভাবে কেনা যাবে, সেটার লিংকও বাংলাদেশ ক্রিকেট জাদুঘর ফেসবুকে দিয়েছে।

‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’ স্মারকগ্রন্থে বাংলাদেশের শততম টেস্ট জয়ও থাকবে বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন জুনায়েদ। ২০১৭ সালে কলম্বোর পি সারা ওভালে সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক সেই ম্যাচসহ বাংলাদেশের স্মরণীয় কিছু সিরিজ জয়ও থাকবে ‘মেমোরেবল ম্যাচ টিকেটস’ স্মারকগ্রন্থে। বইয়ে নিজের শুভেচ্ছা বার্তায় বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘প্রতিটি টিকেটই একটি গল্প-মুহূর্ত, মাইলফলক ও আবেগের গল্প, যা আমাদের ক্রিকেট পরিচয়কে গড়ে তুলেছে।’

টেস্ট অভিষেকের রজতজয়ন্তী নিয়ে যখন ঢাকায় উৎসব, নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল অবস্থান করছে সিলেটে। আগামীকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট মিরপুরে শুরু হবে ১৯ নভেম্বর। এই টেস্ট দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে মুশফিকুর রহিম শততম টেস্ট খেলতে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফুটবল নিয়ে আসিফের ‘অপমানজনক’ মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বাফুফে সভাপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৯
আসিফ আকবরের কুরুচিকর মন্তব্যে খেপেছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। ছবি: ফাইল ছবি
আসিফ আকবরের কুরুচিকর মন্তব্যে খেপেছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। ছবি: ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মধ্যে ‘যুদ্ধ’ লেগে গেছে। যুদ্ধের কারণ আসিফ আকবরের ফুটবল নিয়ে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য। আলোড়ন তোলা এই বক্তব্যের পর খেপেছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল।

টেস্ট অভিষেকে বাংলাদেশের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে গতকাল ক্রিকেট কনফারেন্সের প্রথম দিনে বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর ফুটবল নিয়ে মারপিটের কথা বলেছিলেন। আজ ঢাকার একটি চার তারকা হোটেলে নারী ফুটবলের একটি প্রোগ্রামে তাবিথের কাছে সেই প্রসঙ্গ। উত্তরে সাংবাদিকদের বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘দেখুন আমরা যারা ফুটবল নিয়ে কাজ করি বা ফুটবলটাকে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বাইরে জাগ্রত করার চেষ্টা করছি, যখনই আমরা ফুটবল নিয়ে কোন নেতিবাচক কমেন্ট আমরা শুনি, অবশ্যই আমরা ব্যথিত হই এবং আঘাতপ্রাপ্ত হই। তাও কদিন আগে আমাদের ক্রিকেট কনফারেন্সের সময় আমরা একটা বক্তব্য শুনেছিলাম যেটা ফুটবলের বিরুদ্ধে যায় এবং খেলোয়াড়দের ওপর অপমানজনক একটা মন্তব্য করা হয়েছে। তার প্রসঙ্গে আমি ব্যক্তিগত প্যাডে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বিসিবি সভাপতির কাছে একটা চিঠি পাঠিয়েছি।’

আসিফের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বাফুফে একটা চিঠি এরই মধ্যে পাঠিয়েছে বিসিবির কাছে। চিঠির জবাবে বিসিবি একটা সমাধানের পথ খুঁজে দেবে বলে আশা তাবিথের। ঢাকার একটি চার তারকা হোটেলে নারী ফুটবলের একটি প্রোগ্রামে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘আশা করি, এই চিঠির উত্তরে আমরা অনেক ব্যাপারে স্পষ্ট জানতে পারব। যখন স্পষ্ট কিছু জানতে পারব বা বিসিবির অবস্থান আমরা জানতে পারব, সেখানে সমাধানের একটা পথ খুঁজে নেব। আমরা সবাই খেলোয়াড়। আমরা সবাই ক্রীড়াবিদ। আর আমাদের সকল ফেডারেশনের দায়িত্ব হলো ঐক্যবদ্ধ থাকা। তা আমরা চাইব না কোনো একটা ইস্যুতে বা কোনো কারোর ইস্যুতে সেটা আমাদের আমাদের বিভক্ত করে ফেলে। অতি শীঘ্রই আপনারা দেখবেন যে সকল ক্রীড়া ফেডারেশন এক হয়ে বাংলাদেশের জন্য এবং বাংলাদেশের কল্যাণের জন্য আমরা কাজ করছি।’

দেশের ৬৪ জেলার ক্রিকেট কোচ, সংগঠক ও ক্রীড়া কর্মকর্তাদের নিয়ে গতকাল শুরু হয়েছে বিসিবির দুই দিনব্যাপী ক্রিকেট কনফারেন্স। গতকাল ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে ক্রিকেট কনফারেন্সের প্রথম দিনে বিসিবি পরিচালক ও সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর বলেছিলেন, ‘ফুটবলারদের জন্য (ক্রিকেট) খেলা যাচ্ছে না সারা দেশে। তারা উইকেট ভেঙে ফেলল, উইকেট নষ্ট করে ফেলেছে। আবার ২৪ তারিখ আবাহনী-মোহামেডান ফুটবল খেলা কুমিল্লা স্টেডিয়ামে। এই সমস্যাটা শুধু কুমিল্লার না। প্রতিটা জেলার স্টেডিয়াম দখল করে রেখেছে ফুটবল, প্রতিটা জেলার যেখানে ফুটবলের কাজ নেই, সেখানেও ফুটবল দখল করে রেখেছে এবং ফুটবলারদের ব্যবহার খুব খারাপ।’ তাঁর এমন মন্তব্যের পর নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশের ফুটবল অঙ্গনে। বিসিবির এই পরিচালক ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন ফুটবলাররা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারী ফুটবলার তুলে আনতে ফিফার সঙ্গে মিলে বাফুফের উদ্যোগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফিফা কর্মকর্তাকে (ডানে) জার্সি তুলে দিয়েছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। ছবি: বাফুফে
ফিফা কর্মকর্তাকে (ডানে) জার্সি তুলে দিয়েছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। ছবি: বাফুফে

বিশ্বজুড়ে নারী ফুটবলের প্রসারের লক্ষ্যে ‘এমপাওয়ার হার’ নামে এক বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ফিফা। এশিয়ান অঞ্চলে নারী ফুটবলে উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান সাইমন আন্তোনির উপস্থিতিতে ২০২৫-২৮ চক্রের সেই পরিকল্পনায় যুক্ত হলো বাংলাদেশও। এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য নারী ফুটবলারদের অংশগ্রহণ, বাণিজ্যিক উন্নয়ন বৃদ্ধি ও ভিত্তি তৈরি করা।

নারী কোচের বর্তমান সংখ্যা নিয়ে সাইমন বলেন, ‘আমরা একটা জরিপ করেছি। সেখানে দেখা গেছে নারী-পুরুষ লিগ মিলিয়ে নারী কোচের সংখ্যা মাত্র ২২ শতাংশ। আমরা এই চার বছরে অনেক নারী কোচ বাড়াতে চাই।’ বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ফিফার এই উদ্যোগের সঙ্গে বাফুফে সম্পৃক্ত হতে পেরে বেশ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি এই উদ্যোগের মাধ্যমে নারী ফুটবলে কার্যকর পরিবর্তন আনা সম্ভব বলে মনে করেন, ‘নারী ফুটবলে আমাদের ক্লাব সংখ্যা কম। নারীদের ঘরোয়া লিগ বাড়ানো, তাদের আরও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির চেষ্টা করব। ফিফা আমাদের টেকনিক্যাল ও আর্থিকভাবে সহায়তা করবে।’

বাফুফে ২০২৫-২৮ সালে নারী ফুটবলে কী কী করতে চায় সেই পরিকল্পনা ডিসপ্লেও করেনি কিংবা পুরোপুরি প্রকাশও করেনি। মাঠের খেলা বৃদ্ধির পাশাপাশি নারী ফুটবলারদের সুরক্ষার বিষয়টিও বাফুফে সভাপতি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু নারী ফুটবলারদের খেলার মান উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতেই সীমাবদ্ধ থাকব না। নারী হিসেবে তাদের সমাজের নানা প্রতিবন্ধকতার পাশেও দাঁড়াব। অনেক সময় নারীরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়। আমরা সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেব।’

আজকের অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো সেসা, মরক্কো দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স উপস্থিত ছিলেন। মরক্কো দূতাবাসের কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশের নারী ফুটবলের উন্নয়নে মরক্কো সব সময় পাশে থাকবে।’ আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা সাফল্য আনছে এটা আসলেই বেশ গর্বের বিষয়।’

বাংলাদেশের নারী ফুটবলে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ঢাকা ব্যাংক। আজকের অনুষ্ঠানে ঢাকা ব্যাংকের প্রতিনিধি বলেন, ‘ঢাকা ব্যাংক নারী ফুটবলের সঙ্গে থাকতে পেরে গর্বিত। আগামী দিনেও ঢাকা ব্যাংক নারী ফুটবলারদের সাথে থাকবে।’ বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের তারকা খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা ফিফা কর্মকর্তাকে বাংলাদেশের পক্ষে জার্সি তুলে দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত