Ajker Patrika

এশিয়া কাপ দেখার চেয়ে বুলবুলের অগ্রাধিকারে দুটি কোচিং কোর্স

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ছবি: বিসিবি
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ছবি: বিসিবি

এশিয়া কাপ খেলতে বাংলাদেশ দল রওনা দিচ্ছে আগামীকাল। বাংলাদেশের আপাতত গন্তব্য আবুধাবি। দেশের বাইরে বাংলাদেশ একটা দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেললেও অতীতে বিসিবির সভাপতিরা লটবহর নিয়ে খেলা দেখতে গেছেন। এশিয়া কাপ কিংবা আইসিসির টুর্নামেন্ট হলে তো কথা নেই। বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাছে অবশ্য মাঠে বসে এশিয়া কাপ দেখার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে দুটি বিশেষ কাজ।

সেই বিশেষ কাজ দুটি কী? আজকের পত্রিকাকে কাল বিসিবির সভাপতি বলেছেন, ‘ওখানে খেলা দেখা ছাড়া তো কাজ নেই। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। দেশের ক্রিকেটে অনেক কিছু প্রথম হচ্ছে, এর মধ্যে এই মাসে হবে দুটি প্রোগ্রাম। প্রথমটা হবে ১০, ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বরে। স্থানীয় বিশেষজ্ঞ কোচ নেই আমাদের। ১২ থেকে ১৮ জন বিশেষজ্ঞ কোচ তৈরি করব। দুজন অস্ট্রেলিয়ান এডুকেটর আসছেন। আমিও প্রেজেন্টেশন দেব। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে লেভেল থ্রি কোর্স শুরু। ওটাতেও আমি একজন প্রেজেন্টার। রস টার্নার, নাতাশা ক্যাম্পবেল, জিওফ লসন, অ্যালেন ক্যাম্পবেলরা আসছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় কোর্স কখনো স্থানীয় কোচদের জন্য হয়নি।’

এই দুই প্রোগ্রামে যুক্ত থাকা বুলবুলের কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে, ‘এই যে প্রেজেন্টেশন দিই, প্রোগ্রাম ডিজাইন করি, কারিকুলাম করে দিচ্ছি, এসব করতে অনেক ক্রিকেট বোর্ড অনেক টাকা ব্যয় করে। আমি দেশের ক্রিকেট এগিয়ে নিতে নিজ থেকে করে দিচ্ছি।’

বুলবুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গানম্যান চেয়ে চিঠি দেওয়ার খবরে বেশি আলোচনা হচ্ছে ক্রিকেটাঙ্গনে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী গত পরশু জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের কাছে বুলবুলের নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। ২০২৫ সালের অক্টোবরে বিসিবি পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন ঘিরে সভাপতির নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বোর্ডের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে তিনি ঢাকাসহ দেশের নানা জায়গায় নিয়মিত যাতায়াত করেন। সম্ভাব্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তাঁর জন্য সশস্ত্র নিরাপত্তা প্রয়োজন বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে বিসিবি সভাপতির প্রটোকলে অবসরপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকলেও তাঁরা নিরস্ত্র।

অক্টোবরে প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে বিসিবি সভাপতি বুলবুল ইতিমধ্যে পরিচালক পদে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরিচালক হয়ে সভাপতি পদে নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালও। নির্বাচনের আগে সভাপতি বুলবুলকে সরে দাঁড়ানোর ‘হুমকি’র যে বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে, সেটি নিন্দনীয় বলে আখ্যায়িত করেছেন শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের কর্ণধার ও পরিচালক পদপ্রার্থী আসিফ রাব্বানি। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে এ ধরনের কাজ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। আমার মনে হয়, এখানে সরকারের ভূমিকা রাখা উচিত। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনের দায়িত্ব সরকারের। যেখানে নিরপেক্ষ ও সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।’

বিসিবির নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) কাজী শামীম ফরহাদ বলেন, ‘বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। সিইও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে গানম্যান চেয়েছেন। এটা পাওয়া গেলে তাঁর নিরাপত্তা প্রটোকলে বাড়তি মাত্রা যোগ হবে। আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা বিভাগের কয়েকজন লোক সব সময় সভাপতির চলাফেরায় প্রটোকলে থাকে। নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে, তাদের চাহিদা মোতাবেক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও মোতায়েন থাকবে।’

ঢাকা ক্রিকেট ক্লাব অর্গানাইজার্স অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও বিসিবির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আসলে এটা বিসিবি সভাপতির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চাহিদা। আগের বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদও চলাফেরায় কয়েকজন বাড়তি নিরাপত্তার লোক রাখতেন। এখন তিনিও চাইছেন। এটা পুরোপুরি তাঁদের নিজস্ব ব্যাপার।’

তবে বুলবুল মনে করেন, নির্বাচন যত সামনে আসবে, অনেক কিছু ঘটতে পারে। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে মানসিকভাবে শক্ত থাকা শ্রেয় মনে হচ্ছে তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ