Ajker Patrika

বাংলাদেশ কোচের কথা কম কাজ বেশি

রানা আব্বাস, দুবাই থেকে
বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। ছবি: ফাইল ছবি
বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। ছবি: ফাইল ছবি

কথা কম বলেন, বেশির ভাগ সময় গাম্ভীর্যে ভরা অভিব্যক্তি। চলন-বলনে ক্যারিবীয় হলেও ব্রিটিশ সংস্কৃতির প্রভাব যথেষ্ট। চুপচাপ ফিল সিমন্সকে কখনো কখনো শুধু একজন কোচ নন, ক্রিকেট দার্শনিকও মনে হতে পারে। তিনি যেন ‘কথা কম, কাজ বেশি’ দর্শনে বিশ্বাসী।

এসিসির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য হিসেবে এবারের এশিয়া কাপে আসা মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর চোখে ফিল সিমন্স বেশ ‘নরম’ কোচ। আবুধাবিতে একদিন আড্ডায় নান্নু বলছিলেন, চন্ডিকা হাথুরুসিংহে কিংবা ডেভ হোয়াটমোরের মতো অতটা ‘কড়া’ নন সিমন্স। তাঁর মতে, বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে এত নরম কোচের ভালো করা কঠিন, বরং হাথুরুর মতো সবকিছুতে ‘স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড’ কোচের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

হাথুরুকে বরখাস্ত করে গত অক্টোবরে সিমন্সকে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ করে এনেছিলেন তখনকার সভাপতি ফারুক আহমেদ। শুরুর পাঁচ-ছয় মাসে খেলোয়াড়দের ভালোভাবে চিনতে সিমন্সকে বেশি নির্ভর করতে হয়েছে সিনিয়র সহকারী কোচ সালাহ উদ্দীনের ওপর। গত প্রায় এক বছরে ‘সিমো’র সাফল্যের পাল্লাটা যথেষ্ট ভারী বলতে হবে। চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছেন—প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যে দুটি আবার অ্যাওয়ে সিরিজ। এশিয়া কাপে সুপার ফোরের শুরুটা শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে।

ম্যাচে দল যেমন করুক, বেশির ভাগ সময়ে ডাগআউটের পেছনে চুপচাপ বসে থাকেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতার পর সিমন্সের মুখে একচিলতে হাসি। ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাংলাদেশ কোচ বললেন, ‘আমি চেষ্টা করি যতটা সম্ভব নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে। শুধু শ্রীলঙ্কাকে হারাতে আমরা এশিয়া কাপে আসিনি। এখানে টুর্নামেন্ট জিততে এসেছি। ড্রেসিংরুমে সবাই শান্ত রাখতে হবে আমাকে।’

টুর্নামেন্ট জেতার বিষয় আরও পরে; বাংলাদেশের বড় একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে আজ। প্রতিপক্ষ ভারত, যারা এই টুর্নামেন্টে হট ফেবারিট হয়ে খেলছে। দুবাইয়ে যত বাংলাদেশি দর্শকের সঙ্গে কথা হলো গত কদিনে, সবাই ধরে নিয়েছেন দুর্দান্ত ভারতকে হারানো কঠিন। যদিও সিমন্স মনে করেন প্রতিটি দলের সামর্থ্য রয়েছে ভারতকে হারানোর, ‘সবারই সামর্থ্য আছে ভারতকে হারানোর। এটা নির্দিষ্ট একটি ম্যাচ। ভারত আগে হারেনি, বিষয়টি এমন নয়। আমরা সেরা ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করব এবং ভারতকে কীভাবে ভুল করানো যায়, সেদিকে খেয়াল রাখব। এভাবেই আমাদের জিততে হবে।’

ছবি: আজকের পত্রিকা গ্রাফিক্স
ছবি: আজকের পত্রিকা গ্রাফিক্স

ভারত শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হলেও এই দলের সঙ্গে খেললে আলাদা একটা আগ্রহ-উন্মাদনা তৈরি হয় বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে। সিমন্স মনে করেন, তাঁরা দর্শকদের ভালোবাসার আস্থার প্রতিদান দিতে পারবেন, ‘জিততে হলে বিশ্বাস থাকা উচিত। ভারতকে হারাতে পারব, আমাদের সেই সুযোগ আছে। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের পর আমরা বিরতি পেয়েছি। আমাদের সেই বিরতির সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। ভারতের বিপক্ষে আমাদের জয়ের সুযোগ আছে।’

এশিয়া কাপে সাফল্যের সঙ্গে রান তাড়া করতে হলে টস জিতে বোলিং নেওয়া শ্রেয় মনে করছে বেশির ভাগ দল। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস যথেষ্ট সৌভাগ্যবান। তিন ম্যাচে টস জিতে তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রতিটি কাজে লেগেছে। বাংলাদেশ জিতেছে। তবে সিমন্স মনে করেন না দুবাইয়ে টস কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দুবাইয়ের উইকেটে ব্যাটার-বোলার উভয়ের সমান সুযোগ থাকছে।

তবে সিমন্স কিছুটা বিরক্ত বাংলাদেশের সূচি নিয়ে। টানা তিন দিন বিরতির পর দুবাইয়ের মতো তপ্ত কন্ডিশনে পরপর দুটি ম্যাচ পড়েছে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। সুপার ফোরে বি-২ হিসেবে খেলতে হলে যে এ রকম সূচিতে পড়তে হয়, সে তো টুর্নামেন্টের আগে নির্ধারিত। তবু বাংলাদেশ কোচ টানা সূচি নিয়ে তাঁর বিরক্ত লুকাননি ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে, ‘টানা দুটি টি-টোয়েন্টি কিংবা ওয়ানডে খেলা অত্যন্ত কঠিন। এটা ভালো কিছু নয়। কিন্তু আবারও বলছি, আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। আমার মনে হয়, তারা পরপর দুটি ম্যাচ খেলার জন্য যথেষ্ট ফিট। কিন্তু কোনো দলের পক্ষে পরপর দুটি টি-টোয়েন্টি খেলার ব্যাপারটা ভালো দেখায় না। এটি অনেক কঠিন ব্যাপার।’ টুর্নামেন্ট জিততে হলে এই কঠিনেরে জয় করতে হবে বাংলাদেশকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব এহসানুল হক

লন্ডনে ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করে চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছিলেন রোজিনা

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ দম্পতি অভিজিৎ ও দুফলো

তেল আবিবে মহাসমাবেশ: নেতানিয়াহুর নাম বলতেই মার্কিন দূতকে থামিয়ে দুয়োধ্বনি, ট্রাম্পের নামে স্লোগান

গাজায় অবস্থান পুনরুদ্ধার করছে হামাস, ইসরায়েলপন্থীদের দিচ্ছে শাস্তি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত