Ajker Patrika

তাদের ‘এ লড়াই জিততে হবে’

উপল বড়ুয়া, ঢাকা
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ১০: ০৯
তাদের ‘এ লড়াই জিততে হবে’

বছরখানেক আগেও ওয়ানডে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে কম কথা হয়নি। টি-টোয়েন্টির সর্বগ্রাসিতার যুগে এক দিনের ক্রিকেটকে নিয়ে শঙ্কা জাগবে, সেটিই স্বাভাবিক। কিন্তু ঐতিহ্য ও ইতিহাসের বইয়ে ধুলো জমলেও যে তা কালের সাক্ষী! এত আলোচনা ও ব্যস্ত সূচির ফাঁকে গত কয়েক বছরে ক্রিকেট নবরূপেও হাজির হয়নি? দুনিয়াজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের আধিপত্যের মধ্যেও ফুরিয়ে যায়নি টেস্ট ও ওয়ানডের আবেদন। আর কে না জানে, ক্রিকেটের আসল বিশ্বকাপটি ৫০ ওভারের। 

চার বছরের অপেক্ষা শেষে ভারতের ১০ ভেন্যুতে ১০ দল নিয়ে আজ শুরু এই আসল বিশ্বকাপ। গত বিশ্বকাপে লর্ডসের ফাইনালে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের ম্যাচটি যেখানে শেষ হয়েছিল, শুরুটাও হচ্ছে সেখান থেকে। তবে আহমেদাবাদে উদ্বোধনী ম্যাচে কিউইরা পাচ্ছে না কেন উইলিয়ামসনকে। পুরোপুরি সুস্থ না হলেও অধিনায়ককে দলে রেখেছে নিউজিল্যান্ড। অভিজ্ঞতার মূল্যটা দিতে জানে তারা। চোটে থাকলেও কেনের সমান সর্বোচ্চ চার বিশ্বকাপ খেলা পেসার টিম সাউদিকেও রেখেছে স্কোয়াডে। 

তবে এবার মুছবে তো কিউইদের চোখের জল? ক্রিকেটে কুলীন হলেও গত দুই বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেও শিরোপার স্বাদ পাওয়া হয়নি তাদের। তাদের চেয়ে আর এতবার হৃদয় ভেঙেছেই-বা কাদের? ক্রিকেটের সবচেয়ে দুঃখী দলের তালিকা করলে কিউইদের পাশে থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকাও। ফাইনাল কখনো খেলেনি ঠিক, তবে পরাক্রমশালী দল হলেও ‘চোকার’ নামের প্রমাণ দিতে যেন বড় মঞ্চে উঠেপড়ে লাগে প্রোটিয়ারা। জ্যাক ক্যালিস, এবি ডি ভিলিয়ার্সের মতো কিংবদিন্তরা ক্রিকেটকেই বিদায় জানিয়েছিলেন ফাইনালে খেলতে না পারার দুঃখ নিয়ে। 

তবে নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা ধৈর্যের শিক্ষা নিতে পারে ইংলিশদের কাছ থেকে। ‘ক্রিকেটের জনক’দের বিশ্বকাপ জিততেই যে লাগল ৪৪ বছর! তার আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংলিশদের সামনে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার মতো বিশ্বকাপে ‘লাঠি-লজেন্স দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে লস্করবাড়ির ছেলেরা’। সেই ‘লস্কর’ আর কেউ নয়, অস্ট্রেলিয়া। একসময় নির্বাসিত ডাকু-আসামিদের বসতি হয়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল দল। এবার কি ফুটবলে ব্রাজিলের মতো এই চিরহলুদেরও ‘হেক্সা’ মিশন ইম্পসিবল থেকে যাবে, নাকি প্যাট কামিন্সরা ভারত মহাসাগর পাড়ি দেবেন হাসতে হাসতে? 

এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে প্রায় দেড় মাসের যুদ্ধ শেষে। বিশ্বকাপে আসলে ফেবারিট বেছে নেওয়া মুশকিল। তার পরও সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকারেরা এমন জ্যোতিষচর্চাই করেন—অমুক অমুক ফাইনাল খেলবে। চ্যাম্পিয়ন হবে অমুক দল। সম্ভাব্য ফাইনালিস্ট হিসেবে সবচেয়ে বেশি শোনা গেছে স্বাগতিক ভারত ও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের নাম। আর সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান। 

তবে অঘটন ঘটতেই-বা কতক্ষণ! বিশ্বকাপ বলেই সেটি আরও বেশি করে ভাবাচ্ছে। সরাসরি বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান যে কারও মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে। তেমনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দুবারের চ্যাম্পিয়নদের দর্শক বানিয়ে ১২ বছর পর বিশ্বকাপ খেলতে আসা নেদারল্যান্ডসও চমকে দিতে পারে নিজেদের দিনে। টানা দুই এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কা যতই সোনালি সময় হারিয়ে ধুঁকতে থাকুক না কেন, কোনো সময় ফেবারিটের তালিকায় না থাকলেও বিশ্বকাপে এলে পুরোপুরি পাল্টে যায় তারা। 

এশীয়ই হোক কিংবা অএশীয়—ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল চান না এমন ক্রিকেটপ্রেমী নেই বললেই চলে। শুরুতে না যাওয়ার হুমকি-ধমকির পর ভিসা জটিলতা কাটিয়ে প্রায় সাত বছর পর পাশের দেশে আতিথেয়তা নিচ্ছেন পাকিস্তানিরা। তবে ভারতের মাটিতে ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাবর আজমদের কারও। ঘরের মাটিতে ভারত সব সময় শক্তিশালী। মাহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ২০১১ সালে ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপ জিতে সেটি আরেকবার প্রমাণ করেছিল তাঁরা। এবার রোহিত শর্মা কি পারবেন ভারতের এক দশক ধরে কোনো আইসিসি শিরোপা না জেতার দুঃখ গোছাতে। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ রাঙাতে পারবেন তো আধুনিক ক্রিকেটের দুই বরপুত্র বিরাট কোহলি ও সাকিব আল হাসান? শিরোপার সঙ্গে সর্বোচ্চ রানে একজন আরেকজনকে টপকে যাওয়ার যুদ্ধটাও যে হবে তাঁদের মধ্যে। 

এই লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন যে-ই হোক, সত্যিকারে জয়ী হতে হবে ওয়ানডে ক্রিকেটের! ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টির আমলে ওয়ানডের অস্তিস্ত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে দারুণ একটা টুর্নামেন্ট হওয়া চাই-ই চাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হামজাকে পেয়ে নেপালও রোমাঞ্চিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের আগে অনুশীলনে নেপাল ফুটবল দল। ছবি: বাফুফে
বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের আগে অনুশীলনে নেপাল ফুটবল দল। ছবি: বাফুফে

হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের ফুটবলের সমর্থকদের জন্য আবেগের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়াতেও। গত সেপ্টেম্বরে প্রীতি ম্যাচ খেলতে নেপালে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেখানে হামজাকে দেখতে মুখিয়ে ছিলেন নেপালিরা। যদিও চোটের কারণে সেই সফরে যাননি হামজা।

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারত ম্যাচের আগে কাল ঘরের মাঠে নেপালের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। নেপাল অধিনায়ক কিরণ লিম্বুরও হামজার সঙ্গে মাঠ ভাগাভাগি করে নেওয়ার ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে।

আজ ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে কিরণ বলেন, ‘হ্যাঁ। আমার নিজেও চেয়েছিলাম যে সে নেপালে সেই ম্যাচে খেলুক, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সে খেলতে পারেনি।এখন আমরা তাকে এখানে দেখছি, আর আমরা ঢাকায় আছি। আমি এবং আমার পুরো দল তার সঙ্গে খেলতে রোমাঞ্চিত। সমস্ত নেপালিরা সেই খবর এবং হামজা সম্পর্কে সবকিছু অনুসরণ করছে। সমস্ত নেপালি ফুটবল ভক্তরা সত্যিই তাকে আগামীকালের ম্যাচে দেখার জন্য খুব রোমাঞ্চিত। আমি বিশ্বাস করি যে এটি একটি মজাদার এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ হতে চলেছে। অবশ্যই, ও এই সুন্দর খেলাটি এত বড় নামের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পেরে আমিও খুশি।’

হামজা থাকলেও ভয় পাচ্ছেন না নেপাল কোচ হরি খড়কা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ সব সময় চ্যালেঞ্জিং। এখন হামজা ও অন্যান্য খেলোয়াড় যোগ হয়েছে, তো বাংলাদেশ পূর্ণাঙ্গ একটা দল। তবে আমরা তাদের নিয়ে ভীত নই। কেননা, ফুটবল একটা দলীয় খেলা। এখানে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের মূল্য আছে, কিন্তু দিন শেষে এটা দলীয় খেলা। আমরা আগামীকালের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কোচের যোগ্যতা নিয়ে উত্তর দিতে হচ্ছে অধিনায়ক জামালকে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সমালোচনার মুখে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা, পাশে বসা অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
সমালোচনার মুখে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা, পাশে বসা অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ দলে এখন আছেন হামজা চৌধুরীর মতো খেলোয়াড়। শমিত শোম, ফাহামিদুল ইসলাম, জায়ান আহমেদ, কাজেম শাহদের বাংলাদেশ দল এখন প্রবাসীদের ছোটখাটো এক মেলা। তবু কোচ হাভিয়ের কাবরেরা বড় দলের বিপক্ষে তাঁর রণকৌশলে জয়ের ছক আঁকতে পারছেন না। নিজের যোগ্যতাকে তাই প্রশ্নবিদ্ধ করছেন তিনি।

সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলো অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে। বাংলাদেশ দলে প্রবাসীদের এই দুয়ার যে তিনিই প্রথম খুলে দেন। অধিনায়ক হলেও তাঁর সুযোগ মেলে না শুরুর একাদশে। তা নিয়ে হতাশার অবশ্য শেষ নেই। তবু মেনে নেন কোচের সিদ্ধান্ত। জামাল নিজেও এএফসি ডিপ্লোমা এ লাইসেন্সধারী কোচ। তাঁর চোখে কাবরেরা কেমন যোগ্য হামজা-শমিতদের সামলানোর জন্য। সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের উত্তর খানিকটা এড়িয়েই যেতে চাইলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে জামাল বলেন, ​‘আসলে এটা আমার সিদ্ধান্ত না। এটা ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত, যারা বাফুফেতে চালায় তাদের সিদ্ধান্ত। আমি খেলোয়াড়, খেলোয়াড়ের মতো থাকব।’

কাবরেরা বরাবরই সমালোচিত সমর্থকদের কাছে। কেউ কেউ তাঁর অধীনে বাংলাদেশের ম্যাচ বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেন। কাবরেরার জবাব, ‘আমি শুনেছি ৪ মিনিটেই ভারত ম্যাচের টিকিট বিক্রি হয়েছে (হাসি)। সমালোচনা থাকা স্বাভাবিক, আমি তা মেনে নিচ্ছি—এটাই আমার অবস্থান। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, সবাই দলটার পাশে আছে। কালকের ম্যাচ আমাদের সুযোগ, যাতে সবাই আবার বিশ্বাস পায় যে ভারতকে হারানো সম্ভব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বল ছুড়ে মারায় নাহিদ রানাকে আইসিসির শাস্তি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৩
অযথাই বল ছুড়ে মেরে আইসিসির শাস্ত পেলেন নাহিদ রানা। ছবি: বিসিবি
অযথাই বল ছুড়ে মেরে আইসিসির শাস্ত পেলেন নাহিদ রানা। ছবি: বিসিবি

আইরিশ ক্রিকেটার ক্যাড কারমাইকেলের দিকে অযথাই বল ছুড়ে মেরেছিলেন। সিলেটের টেস্টের প্রথম দিনের এই ঘটনার জন্য আইসিসির শাস্তি পেতে হলো নাহিদ রানাকে। তাঁর ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। নামের পাশে যোগ হয়েছে একটি ডিমেরিট পয়েন্টও।

আইসিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আচরণবিধির লেভেল–১ এর আচরণবিধির ২.৯ ধারা লঙ্ঘন করেছেন নাহিদ রানা। যে নিয়মে বলা হয়েছে, ম্যাচ চলাকালে কোনো খেলোয়াড় প্রতিপক্ষ কারও দিকে বা কাছাকাছি বল ছুড়ে মারতে পারবেন না অথবা তাঁর দিকে কোনো ক্রিকেটসামগ্রী বিপজ্জনকভাবে ফেলতে পারবেন না। এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ জরিমানা ও ২টি ডিমেরিট পয়েন্ট।

সিলেট টেস্টের প্রথম দিনে ঘটে ঘটনাটি। আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের ২৭তম ওভারে। বল ধরার পর ফলো থ্রুর সময় নাহিদ অযথাই বল ছুড়ে মারেন কারমাইকেলের দিকে। বল ব্যাটারের প্যাডে লাগে। তখন তিনি ক্রিজের ভেতরেই ছিলেন।

এ ঘটনায় মাঠের দুই আম্পায়ার স্যাম নোগাইস্কি ও এহসান রাজা, টিভি আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ ও চতুর্থ আম্পায়ার তানভীর আহমেদ ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের কাছে নাহিদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন। ম্যাচ রেফারি অভিযোগ আমলে নিয়ে ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ কর্তন ও একটি ডিমেরিট পয়েন্টের শাস্তি দেন।

নাহিদ রানা নিজের দোষ স্বীকার করায় আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেই শোকাবহ দিনে কি ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করবে ফ্রান্স

ক্রীড়া ডেস্ক    
ইউক্রেনের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে প্যারিসে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছে ফ্রান্স ফুটবল দলের তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে প্যারিসে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছে ফ্রান্স ফুটবল দলের তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। ছবি: এএফপি

আগামীকাল ১৩ নভেম্বর। প্যারিসে সন্ত্রাসী সিরিজ হামলার ১০ বছর পূর্তির দিন। ২০১৫ সালের ঠিক এই দিনেই মাঠে যখন ফ্রান্স-জার্মানির প্রীতি ম্যাচ চলছিল, তখনই প্যারিস ও স্তাদ দ্য ফ্রান্সে ঘটে এই সন্ত্রাসী হামলা। যে হামলা প্রাণ কেড়ে নেয় ১৩০ জনের।

যার অধিকাংশই নিহত হয়েছিল প্যারিসের কাতাকলাঁ কনসার্ট হলে, যেখানে পারফর্ম করছিল যুক্তরাষ্ট্রের ঈগলস অব ডেথ মেটাল ব্র্যান্ড। আরেকজন মারা যান স্তাদ দ্য ফ্রান্সের কাছে, যেখানে আত্মঘাতী হামলাকারীরা প্রবেশের চেষ্টা করছিল। ৮০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার সেই মাঠ ছিল দর্শকে টইটুম্বুর। মাঠে ছিলেন সে সময়ে ফরাসি প্রেসিডেন্টও। হামলার মাঝেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি চালিয়ে নেওয়া হয় এবং ফ্রান্স জেতে ২-০ গোলে।

দলের জয় ছাপিয়ে সেদিন বড় হয়ে উঠে ১৩০ জনকে হারানোর হাহাকার। ১৩ নভেম্বর আসলেই সেই দুঃস্মৃতি ভেসে উঠে প্যারিসের মানুষের মনে। সেই মানুষদের বাইরে নন দিদিয়ের দেশমও। সেদিন সেই ম্যাচে স্বাগতিক দলের ডাগআউটে ছিলেন তিনি। সেই দুঃসহ হামলার বর্ষপূর্তিতে আগামীকাল আবার মাঠে তিনি থাকবেন ফ্রান্সের ডাগআউটে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এদিন তাদের প্রতিপক্ষ ইউক্রেন। ম্যাচের আগে ১০ বছর আগে নিহতদের স্মরণে এক মিনিটের নিরবতা পালন করা হবে।

এমন একটি দিনে সুযোগ থাকলে মাঠেই নামতেন না দেশম। বললেন, ‘আমি মনে করি ১৩ নভেম্বর খেলা এড়িয়ে যতে পারলে ভালো হতো। যা ঘটেছিল তা স্মরণ করা আমাদের দায়িত্ব, কিন্তু একই সঙ্গে ম্যাচও খেলতে হবে।’

তবে শোকের এই দিনটিতেই বিশ্বকাপে যাওয়ার উচ্ছ্বাসে মেতে উঠার সুযোগ ফরাসিদের। ইউক্রেনের বিপক্ষে জিতলেই ‘ডি’ গ্রুপ থেকে ২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপ নিশ্চিত হবে তাদের।

এই গ্রুপে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইউক্রেনের চেয়ে ফ্রান্স তিন পয়েন্টে এগিয়ে থাকায় আগামীকাল ম্যাচ ফ্রান্স হারলেও রোববার আজারবাইজানের বিপক্ষে জিতে গ্রুপের শীর্ষস্থান ধরে রাখার সুযোগ থাকবে। আর জিতলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতবে তারা।

প্লে-অফের রাউন্ডের আগে বিশ্বকাপের ইউরোপীয় বাছাইয়ের এটাই শেষ রাউন্ড। শুধু ফ্রান্সই নয়, আগামীকাল জিতলে বিশ্বকাপ নিশ্চিত হবে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের পর্তুগালেরও। ‘এফ’ গ্রুপের আরেক ম্যাচে হাঙ্গেরি যদি আর্মেনিয়াকে হারাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ইউক্রেনের সঙ্গে ড্র করলেও পর্তুগাল বিশ্বকাপ নিশ্চিত করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত