Ajker Patrika

বসন্তের হাওয়ায় চট্টগ্রামে রং ছড়াচ্ছে বিপিএল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ০৩
বসন্তের হাওয়ায় চট্টগ্রামে রং ছড়াচ্ছে বিপিএল

এখন বইছে বসন্তের হাওয়া। বাসন্তী রং মেখে বিবর্ণ বিপিএলও যেন কিছুটা রং ছড়িয়েছে চট্টগ্রামের সাগরিকায়। তামিম ইকবাল-তাওহীদ হৃদয়রা রান করছেন পাল্লা দিয়ে, রানের বন্যার সঙ্গে সঙ্গে এক-আধটু বিতর্কও সঙ্গী হচ্ছে বিপিএলের। 

রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান টিম হোটেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ম্যাথু ফোর্ডের কক্ষে ভুলে উঁকি মারা, অতঃপর বাগ্বিতণ্ডায় জড়ানো কিংবা সিলেট স্ট্রাইকার্সের সামিত প্যাটেল সাক্ষাৎকার দেওয়ার পর সাংবাদিককে ডেকে অডিও মুছে ফেলে অশ্রাব্য শব্দ ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। ৩৯ বছর বয়সী সামিত পরে ক্ষমা চেয়েছেন। মীমাংসা হয়েছে সোহানের ঘটনাও। সব মিলিয়ে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বেই দেখা যাচ্ছে বিপিএলের সাত রং। 

প্রত্যাশিত রানের বন্যা না দেখে কত প্রশ্ন মিরপুর-সিলেটের উইকেট নিয়ে। তবে চট্টগ্রামের চার ম্যাচেই উঠেছে ১৪৪২ রান। ইনিংসে গড়ে দলগুলোর রান ১৮০.২৫। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে যৌথ সর্বোচ্চ ২৩৯ রানের একটি ইনিংসও আছে এবার চট্টগ্রামে। 

সাগরিকায় যাঁরা রানের সাগরে ভাসাচ্ছেন বিপিএলকে, তাঁদের মধ্যেও চলছে ইঁদুর-বিড়াল দৌড়। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় মিরপুরে ফিরতি পর্ব শেষে বাবর আজম (২৫১) ছিলেন শীর্ষে, তাঁর কাছে স্থান হারান ২৪০ রান করা মুশফিকুর রহিম। চট্টগ্রাম পর্বে তাঁদের ছাড়িয়ে হৃদয় এখন ৩৪১ রান নিয়ে শীর্ষে। অনেক পিছিয়ে ছিলেন কুমিল্লার হৃদয়, সেঞ্চুরির পর গত পরশু খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে খেলেছেন ৯১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস, টপকে গেছেন নাইম শেখকে। 

হৃদয়ের আগে ২৭৬ রান নিয়ে শীর্ষে ছিলেন ঢাকার নাইম। এই বাঁহাতি ব্যাটার এখন ২ নম্বরে আছেন। শুধু রানে নয়, ১৪ ছক্কা মারা নাইমকে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ১৯টি ছক্কা মেরেও পেছনে ফেলেছেন হৃদয়। তরুণ নাইম-হৃদয়ের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন অভিজ্ঞ তামিমও। ৩ নম্বরে থাকা ফরচুন বরিশালের অধিনায়কের রান ২৭৩। 

বোলিংয়েও দাপট স্থানীয় খেলোয়াড়দের। দুর্দান্ত ঢাকার দুঃসময় কাটছেই না। তবে আলো ছড়াচ্ছেন দলটির পেসার শরীফুল ইসলাম। ১৮ উইকেট নিয়ে এখন সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। এরপরে থাকা শেখ মেহেদী হাসান ও সাকিব আল হাসানের উইকেট ১৩টি করে। ব্যাট হাতেও ছন্দে ফিরেছেন সাকিব। ১১টি করে উইকেট কুমিল্লার তানভীর ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমানের। টুর্নামেন্টে এখনো পর্যন্ত সেরা ৬ বোলারই স্থানীয়। 

গ্যালারিতে ভক্ত-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। ছবি: সৌজন্য ছবি  স্থানীয় খেলোয়াড়েরা জ্বলে উঠলেও না পাওয়ার আক্ষেপও কম নয়। গত বিপিএল থেকে যেমন হৃদয়, তানভীর, তানজিম হাসান সাকিবদের মতো নতুন মুখের সন্ধান পেয়েছিল বাংলাদেশ, যাঁরা দ্রুত চলে আসেন আন্তর্জাতিক আঙিনায়। এবার বিপিএলে নজরকাড়া নতুন মুখ নেই বললেই চলে। যদি বলতেই হয়, কিছুটা আলো ছড়াচ্ছেন জাকের আলী অনিক। কুমিল্লার ফিনিশার ভূমিকায় সুযোগ পেয়ে সব ম্যাচেই রাখছেন অবদান। ৭ ম্যাচ ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ ম্যাচেই অপরাজিত। ৬৭ গড়, ১৩৪ স্ট্রাইকরেটে ১৩৪ রান তাঁর। 

হৃদয় ও জাকেরের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ কুমিল্লার কোচ সালাহ উদ্দিন গত পরশু ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘আমরা সঠিক ক্রিকেটারদের দলে নিয়েছি। তার (হৃদয়) ওপর আমাদের বিনিয়োগ খুব ভালো হয়েছে। বাংলাদেশের জন্যও সে বড় সম্পদ। আরেকটা ছেলে আছে। আপনারা জাকেরের কথাটা সব সময় ভুলে যান। বোর্ডেরও হয়তো তার প্রতি নজর কম। আপনারা ছয়-সাতে ব্যাটিং করার জন্য ব্যাটার খোঁজেন। তার স্ট্রাইকরেট ভালো, প্রতিটা দিন প্রয়োজনের সময় রান করে দিচ্ছে। আমার মনে হয় এই ছেলেকেও সুযোগ দেওয়া উচিত।’ 

প্রতিবারের মতো এবারও সুশৃঙ্খল দলগুলো ধারাবাহিক ভালো করছে। রংপুর, কুমিল্লা, বরিশাল রয়েছে সেরা তিনে। একসময় ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজির দারুণ সাফল্য থাকলেও গত দুই মৌসুমের মতো এবারও তারা ছন্নছাড়া এক দলের উদাহরণ হিসেবে পয়েন্ট টেবিলের নিচে পড়ে আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত