আজকের পত্রিকা ডেস্ক
জীবন বা প্রাণ সত্যিই ‘জ্যোতির্ময়’ বা আলোক বিচ্ছুরণ করে। এমনটাই বলছেন কানাডার ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল অব কানাডার গবেষকেরা। ইঁদুর ও দুটি ভিন্ন প্রজাতির গাছের পাতা নিয়ে করা এক ব্যতিক্রম পরীক্ষণে ‘বায়োফোটন’ নামক এক রহস্যময় ঘটনার সরাসরি প্রমাণ মিলেছে। দেখা গেছে, মৃত্যুর পর এই আলোক নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায়।
এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, জীবিত থাকাকালে মানুষসহ সব প্রাণী সুস্থ অবস্থায় আক্ষরিক অর্থেই আলোক কণা বিকিরণ করে। তবে মারা গেলে এই বিচ্ছুরণ বন্ধ হয়ে যায়।
প্রথম বিবেচনায় এই ফলাফল কিছুটা অদ্ভুত মনে হতে পারে। জীবন্ত প্রাণীর শরীর থেকে নির্গত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বা তড়িচ্চৌম্বকীয় বিকিরণ নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার কথা শুনলে সহজে বাতিল হওয়া বা অতিপ্রাকৃত ‘অরা’ বা আভার কথা মনে পড়ে।
তত্ত্বীয়ভাবেও জৈবিক প্রক্রিয়ায় নির্গত দৃশ্যমান তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো এতটাই ক্ষীণ হওয়ার কথা যে এটি চারপাশের তীব্র তড়িচ্চৌম্বকীয় তরঙ্গ ও শরীরের বিপাকক্রিয়ায় উৎপন্ন তাপের প্রভাবে সহজে ঢাকা পড়ে যাওয়ার কথা। ফলে শরীরজুড়ে এর সঠিক পরিমাপ করা অত্যন্ত কঠিন।
তবু ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ ভাহিদ সালারি এবং তাঁর দলের দাবি, তাঁরা ঠিক এটিই পর্যবেক্ষণ করেছেন। জীবিত প্রাণীর শরীর থেকে নির্গত অতি ক্ষীণ আলো মৃত্যুর অব্যবহিত পর (ঘণ্টাখানেক পর্যন্ত) নির্গত আলোর তুলনায় অনেক বেশি স্পষ্ট ছিল। এ ছাড়া কয়েকটি গাছের পাতায়ও এই আলো দেখা গেছে।
বায়োফোটনের পেছনের বৈজ্ঞানিক ধারণাও একটি বিতর্কিত ধারণা থেকে এসেছে। ধারণাটি হলো—বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়া স্পষ্টতই কেমিলুমিনিসেন্স (রাসায়নিক আভা) আকারে উজ্জ্বল আলো উৎপন্ন করে এবং বিগত কয়েক দশকে গরুর হৃৎপিণ্ডের টিস্যু থেকে শুরু করে ব্যাকটেরিয়ার কলোনি পর্যন্ত বিভিন্ন জীবন্ত কোষ থেকে ২০০ থেকে ১০০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের স্বতঃস্ফূর্ত আলো নিঃসরণ রেকর্ড করা হয়েছে।
এই বিকিরণের একটি শক্তিশালী সম্ভাব্য উৎস হলো অক্সিজেনের প্রতি সংবেদনশীল বিভিন্ন প্রজাতি। তাপ, বিষাক্ত উপাদান, রোগজীবাণু বা পুষ্টির অভাবের চাপে পড়লে জীবন্ত কোষ এগুলো তৈরি করে। যেমন কোনো প্রজাতির কোষে পর্যাপ্ত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থাকলে, ফ্যাট এবং প্রোটিনের মতো উপাদান এমন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে পারে, যা কোষের ইলেকট্রনগুলোকে উচ্চ শক্তি স্তরে উত্তেজিত করে। এরপর ইলেকট্রনগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার সময় এক বা দুটি ফোটন (আলোর কণা) নির্গত করে।
প্রাণীর পুরো শরীর থেকে নির্গত আলো পরিমাপ করা সম্ভব কি না, তা নির্ধারণ করতে গবেষকেরা ইলেকট্রন-মাল্টিপ্লায়িং চার্জ-কাপল্ড ডিভাইস এবং চার্জ-কাপল্ড ডিভাইস ক্যামেরা ব্যবহার করেছেন। তাঁরা ইঁদুরের শরীর থেকে নির্গত ক্ষীণতম আলো তুলনা করেছেন—প্রথমে জীবিত অবস্থায়, তারপর মৃত অবস্থায়। চারটি স্থির ইঁদুরকে আলাদা অন্ধকার বাক্সে রেখে এক ঘণ্টা ধরে ছবি তোলা হয়েছিল। এরপর এদের ব্যথাহীনভাবে মেরে ফেলা হয় এবং আরও এক ঘণ্টা ধরে ছবি তোলা হয়। মৃত্যুর পরেও তাদের দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা হয়েছিল, যাতে তাপ একটি পরিবর্তনশীল কারণ না হয়।
গবেষকেরা দেখতে পান, মৃত্যুর আগে এবং পরে ইঁদুরের কোষ থেকে নির্গত দৃশ্যমান আলোকণা অর্থাৎ ফোটনগুলো তাঁরা ক্যামেরাবন্দী করতে পেরেছেন। মৃত্যুর পর পরিমাপকালে অতি ক্ষীণ আলোর বিচ্ছুরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে দেখা গেছে, যা স্পষ্ট পার্থক্য নির্দেশ করে।
থ্যালে ক্রেস ও ডোয়ার্ফ আমব্রেলা ট্রি নামের দুই প্রজাতির গাছের পাতার ওপর করা একটি পরীক্ষায়ও অনুরূপ ফল মিলেছে। শারীরিক আঘাত এবং রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে গাছগুলোতে চাপ সৃষ্টি করে শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে, অক্সিজেনের প্রতি সংবেদনশীল প্রজাতিই এই ক্ষীণ আলোর উৎস হতে পারে।
গবেষকেরা বলেছেন, ‘আমাদের ফলাফলে দেখা গেছে, ১৬ ঘণ্টা ধরে ছবি তোলার পুরো সময়জুড়ে সব কটি পাতার আঘাতপ্রাপ্ত অংশগুলো আঘাতবিহীন অংশের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি উজ্জ্বল ছিল।’
এতে ধারণা করা যায়, চাপে থাকা কোষ থেকে উৎপন্ন এই অতি ক্ষীণ, অস্পষ্ট আভা হয়তো একদিন আমাদের বলে দিতে পারবে, আমরা কতটা সুস্থ বা দীপ্তিমান।
দ্য জার্নাল অব ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি লেটার্সে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে অনূদিত
জীবন বা প্রাণ সত্যিই ‘জ্যোতির্ময়’ বা আলোক বিচ্ছুরণ করে। এমনটাই বলছেন কানাডার ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল অব কানাডার গবেষকেরা। ইঁদুর ও দুটি ভিন্ন প্রজাতির গাছের পাতা নিয়ে করা এক ব্যতিক্রম পরীক্ষণে ‘বায়োফোটন’ নামক এক রহস্যময় ঘটনার সরাসরি প্রমাণ মিলেছে। দেখা গেছে, মৃত্যুর পর এই আলোক নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায়।
এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, জীবিত থাকাকালে মানুষসহ সব প্রাণী সুস্থ অবস্থায় আক্ষরিক অর্থেই আলোক কণা বিকিরণ করে। তবে মারা গেলে এই বিচ্ছুরণ বন্ধ হয়ে যায়।
প্রথম বিবেচনায় এই ফলাফল কিছুটা অদ্ভুত মনে হতে পারে। জীবন্ত প্রাণীর শরীর থেকে নির্গত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বা তড়িচ্চৌম্বকীয় বিকিরণ নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার কথা শুনলে সহজে বাতিল হওয়া বা অতিপ্রাকৃত ‘অরা’ বা আভার কথা মনে পড়ে।
তত্ত্বীয়ভাবেও জৈবিক প্রক্রিয়ায় নির্গত দৃশ্যমান তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো এতটাই ক্ষীণ হওয়ার কথা যে এটি চারপাশের তীব্র তড়িচ্চৌম্বকীয় তরঙ্গ ও শরীরের বিপাকক্রিয়ায় উৎপন্ন তাপের প্রভাবে সহজে ঢাকা পড়ে যাওয়ার কথা। ফলে শরীরজুড়ে এর সঠিক পরিমাপ করা অত্যন্ত কঠিন।
তবু ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ ভাহিদ সালারি এবং তাঁর দলের দাবি, তাঁরা ঠিক এটিই পর্যবেক্ষণ করেছেন। জীবিত প্রাণীর শরীর থেকে নির্গত অতি ক্ষীণ আলো মৃত্যুর অব্যবহিত পর (ঘণ্টাখানেক পর্যন্ত) নির্গত আলোর তুলনায় অনেক বেশি স্পষ্ট ছিল। এ ছাড়া কয়েকটি গাছের পাতায়ও এই আলো দেখা গেছে।
বায়োফোটনের পেছনের বৈজ্ঞানিক ধারণাও একটি বিতর্কিত ধারণা থেকে এসেছে। ধারণাটি হলো—বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়া স্পষ্টতই কেমিলুমিনিসেন্স (রাসায়নিক আভা) আকারে উজ্জ্বল আলো উৎপন্ন করে এবং বিগত কয়েক দশকে গরুর হৃৎপিণ্ডের টিস্যু থেকে শুরু করে ব্যাকটেরিয়ার কলোনি পর্যন্ত বিভিন্ন জীবন্ত কোষ থেকে ২০০ থেকে ১০০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের স্বতঃস্ফূর্ত আলো নিঃসরণ রেকর্ড করা হয়েছে।
এই বিকিরণের একটি শক্তিশালী সম্ভাব্য উৎস হলো অক্সিজেনের প্রতি সংবেদনশীল বিভিন্ন প্রজাতি। তাপ, বিষাক্ত উপাদান, রোগজীবাণু বা পুষ্টির অভাবের চাপে পড়লে জীবন্ত কোষ এগুলো তৈরি করে। যেমন কোনো প্রজাতির কোষে পর্যাপ্ত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থাকলে, ফ্যাট এবং প্রোটিনের মতো উপাদান এমন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে পারে, যা কোষের ইলেকট্রনগুলোকে উচ্চ শক্তি স্তরে উত্তেজিত করে। এরপর ইলেকট্রনগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার সময় এক বা দুটি ফোটন (আলোর কণা) নির্গত করে।
প্রাণীর পুরো শরীর থেকে নির্গত আলো পরিমাপ করা সম্ভব কি না, তা নির্ধারণ করতে গবেষকেরা ইলেকট্রন-মাল্টিপ্লায়িং চার্জ-কাপল্ড ডিভাইস এবং চার্জ-কাপল্ড ডিভাইস ক্যামেরা ব্যবহার করেছেন। তাঁরা ইঁদুরের শরীর থেকে নির্গত ক্ষীণতম আলো তুলনা করেছেন—প্রথমে জীবিত অবস্থায়, তারপর মৃত অবস্থায়। চারটি স্থির ইঁদুরকে আলাদা অন্ধকার বাক্সে রেখে এক ঘণ্টা ধরে ছবি তোলা হয়েছিল। এরপর এদের ব্যথাহীনভাবে মেরে ফেলা হয় এবং আরও এক ঘণ্টা ধরে ছবি তোলা হয়। মৃত্যুর পরেও তাদের দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা হয়েছিল, যাতে তাপ একটি পরিবর্তনশীল কারণ না হয়।
গবেষকেরা দেখতে পান, মৃত্যুর আগে এবং পরে ইঁদুরের কোষ থেকে নির্গত দৃশ্যমান আলোকণা অর্থাৎ ফোটনগুলো তাঁরা ক্যামেরাবন্দী করতে পেরেছেন। মৃত্যুর পর পরিমাপকালে অতি ক্ষীণ আলোর বিচ্ছুরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে দেখা গেছে, যা স্পষ্ট পার্থক্য নির্দেশ করে।
থ্যালে ক্রেস ও ডোয়ার্ফ আমব্রেলা ট্রি নামের দুই প্রজাতির গাছের পাতার ওপর করা একটি পরীক্ষায়ও অনুরূপ ফল মিলেছে। শারীরিক আঘাত এবং রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে গাছগুলোতে চাপ সৃষ্টি করে শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে, অক্সিজেনের প্রতি সংবেদনশীল প্রজাতিই এই ক্ষীণ আলোর উৎস হতে পারে।
গবেষকেরা বলেছেন, ‘আমাদের ফলাফলে দেখা গেছে, ১৬ ঘণ্টা ধরে ছবি তোলার পুরো সময়জুড়ে সব কটি পাতার আঘাতপ্রাপ্ত অংশগুলো আঘাতবিহীন অংশের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি উজ্জ্বল ছিল।’
এতে ধারণা করা যায়, চাপে থাকা কোষ থেকে উৎপন্ন এই অতি ক্ষীণ, অস্পষ্ট আভা হয়তো একদিন আমাদের বলে দিতে পারবে, আমরা কতটা সুস্থ বা দীপ্তিমান।
দ্য জার্নাল অব ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি লেটার্সে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে অনূদিত
প্লাস্টিক বর্জ্যকে নতুনভাবে ব্যবহার করার এক বিস্ময়কর উপায় সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে। বিজ্ঞানীরা ‘ইশেরিশিয়া কোলাই’ বা ‘ই. কোলি’ নামে একধরনের সাধারণ ব্যাকটেরিয়াকে জিনগত পরিবর্তন করে এমনভাবে তৈরি করেছেন, যাতে এটি প্লাস্টিকজাত অণু খেয়ে তা হজম করে ব্যথানাশক ওষুধ প্যারাসিটামল উৎপাদন করতে পারে।
৬ ঘণ্টা আগেবহু প্রাচীনকাল থেকেই গল্পকার, কবি, জ্যোতির্বিদ ও মহাকাশচারীদের অভিভূত করে আসছে চাঁদ। আর ভবিষ্যতে খনিজ শিল্পেরও প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারে পৃথিবীর এই একমাত্র উপগ্রহ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, শত কোটি বছর ধরে অ্যাস্টেরয়েডের (গ্রহাণু) আঘাতে চাঁদের পৃষ্ঠে অনেক মূল্যবান ধাতু সঞ্চিত হয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেচাঁদে মরিচা ধরছে। আর এর জন্য দায়ী আমাদের পৃথিবী। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমনই এক চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছেন। তাঁদের গবেষণায় দেখা , পৃথিবী থেকে চাঁদের দিকে ছুটে যাওয়া অক্সিজেন কণার প্রভাবে চাঁদের খনিজ পদার্থ হেমাটাইটে (haematite) রূপান্তরিত হচ্ছে।
২ দিন আগেঅর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় (৫৩ বছর) পর আবারও চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা করতে চলেছে মানবজাতি। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আর্টেমিস ২ নামের এই মিশনে চারজন নভোচারী চাঁদকে ঘিরে ১০ দিনের মিশনে অংশ নেবেন। ১৯৭২ সালে অ্যাপোলো ১৭-এর পর এই প্রথম কোনো নভোচারী পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথের বাইরে পা রাখবেন।
৩ দিন আগে