অনলাইন ডেস্ক
পরিমাপের একক হিসেবে ‘মিটার’ ব্যবহার আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মুদির দোকান থেকে আলু কেনা বা গাড়িতে পেট্রল ভরার মতো সাধারণ কাজেও এটি ব্যবহার করা হয়। তবে এই সুবিধার পেছনে রয়েছে ১৫০ বছর আগের এক ঐতিহাসিক ‘মেট্রিক চুক্তি’ বা ‘মিটার কনভেনশন’।
১৮৭৫ সালের ২০ মে ফ্রান্সের প্যারিসে বিশ্বের ১৭টি দেশের প্রতিনিধি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। মূল উদ্দেশ্য ছিল—বিশ্বব্যাপী একক পরিমাপব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা বিজ্ঞান ও বাণিজ্যে উন্নয়ন ঘটাবে। তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, এমনকি একই দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যবহৃত হতো ভিন্ন ভিন্ন পরিমাপ পদ্ধতি।
এই চুক্তির মাধ্যমে গঠিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ব্যুরো অব ওয়েটস অ্যান্ড মেজারস’, যা প্রথমবারের মতো মিটার ও কিলোগ্রামের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে। পরে আরও কিছু একক যুক্ত হয়ে তৈরি হয় ইন্টারন্যাশনাল সিস্টেমস অব ইউনিটস (এসআই ইউনিটস), যা আজকের মেট্রিক পদ্ধতির ভিত্তি।
তবে মিটার এককের জন্ম এই চুক্তিরও অনেক আগে, ফরাসি বিপ্লবের সময়। ১৭০০ দশকের শেষ দিকে ফরাসি বিপ্লবীরা রাজতন্ত্র ও ধর্মীয় প্রথা পরিত্যাগ করে নতুন প্রজাতন্ত্র গঠনের উদ্যোগ নেয়। এই নতুন সমাজে পরিমাপ পদ্ধতিও হওয়া উচিত ছিল সবার জন্য সমান এবং প্রকৃতির মৌলিক গুণাবলির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ—রাজাদের বাহুর দৈর্ঘ্যের ওপর নির্ভরশীল নয়।
১৭৯০-এর দশকে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত নেন, এক মিটার হবে উত্তর মেরু থেকে বিষুবরেখা পর্যন্ত দূরত্বের দশ মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ। এই দূরত্ব হিসাবের দায়িত্ব পড়ে দুই জ্যোতির্বিদের ওপর। সাত বছরের প্রচেষ্টার পর ১৭৯৯ সালে তারা তাদের হিসাব জমা দেন ফরাসি একাডেমি অব সায়েন্সে। এরপর তৈরি করা হয় প্ল্যাটিনাম নির্মিত প্রথম মিটার বার—‘মিটার অব দ্য আর্কাইভস’।
পরে জানা যায়, সেই জ্যোতির্বিদদের হিসাবে সামান্য ভুল ছিল—আসল মিটার তার চেয়ে শূন্য দশমিক ২ মিলিমিটার বেশি হওয়া উচিত ছিল।
১৯ শতকের শেষ দিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয় প্ল্যাটিনাম-ইরিডিয়াম ধাতুর তৈরি প্রায় ৩০টি স্ট্যান্ডার্ড মিটার বার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বেনজামিন হ্যারিসন ১৮৯০ সালে গ্রহণ করেন এমন একটি মিটার বার। এগুলো কয়েক দশক ধরে মিটারের মান হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
তবে বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মিটারের সংজ্ঞাও পরিবর্তিত হতে থাকে। ১৯৬০ সালে বিজ্ঞানীরা আলো ব্যবহার করে মিটারের পরিমাপ পুনঃসংজ্ঞায়িত করেন, যেখানে কৃপ্টন গ্যাসের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে ভিত্তি হিসেবে নেওয়া হয়। নির্দিষ্ট এক রঙের আলোর ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩ দশমিক ৭৩ গুণ দৈর্ঘ্যকে এক মিটার হিসেবে ধরা হয়।
তবে আধুনিক ইলেকট্রনিকস ও ক্ষুদ্র প্রযুক্তির যুগে এই সংজ্ঞাও যথেষ্ট ছিল না। এদিকে পারমাণবিক ঘড়ি আবিষ্কারে সময় পরিমাপে বিপ্লব ঘটে। এসব ঘড়ির ‘টিক’ হয় প্রতি সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন বার এবং এটি ব্যবহার করে ১৯৮৩ সালে মিটারের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়।
নতুন সংজ্ঞাটি হলো—শূন্যস্থানে আলো এক সেকেন্ডের ১/ ২৯৯, ৭৯২, ৪৫৮ ভাগ সময়ে যতটা পথ অতিক্রম করে, সেটাই এক মিটার।
এই সংজ্ঞা এতটাই নির্ভুল যে, এটি ব্যবহার করে পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বও মাপা যায়। এই মাপেই জানা গেছে, চাঁদ প্রতিবছর গড়ে ৩ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার করে পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
চুক্তিতে স্বাক্ষরের প্রায় ৭০ বছর পর ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়া মেট্রিক চুক্তিতে সই করে। এরপর ১৯৭০ সালে ‘মেট্রিক কনভারশন’ চুক্তি পাশ হলে দেশটি মেট্রিক পদ্ধতি পুরোপুরি গ্রহণ করে।
তবে অনেক দেশেই এখনো পুরোনো পরিমাপ পদ্ধতি বহাল। যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তির মূল স্বাক্ষরকারীদের একজন হলেও আজও দৈনন্দিন জীবনে ইম্পিরিয়াল ইউনিট ব্যবহার করে।
অস্ট্রেলিয়াতেও কিছু ক্ষেত্রে ইম্পিরিয়াল ইউনিট টিকে আছে। উদাহরণস্বরূপ, পুরুষদের প্যান্টের কোমরের মাপ বা টেলিভিশন পর্দার আকার নির্ধারণে এই ইউনিট ব্যবহার করা হয়।
ন্যাশনাল ম্যাজারমেন্ট ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী ব্রুস ওয়ারিংটনের মতে, রান্নার ক্ষেত্রেও রয়েছে কিছু অসামঞ্জস্য। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ায় এক টেবিল চামচে ৪ চা-চামচ, যেখানে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে তা ৩ চা-চামচ। ফলে, রেসিপি কোন দেশ থেকে এসেছে, তা জানাটাও দরকার পড়ে সঠিক পরিমাপে রান্না করতে।
পরিমাপের একক হিসেবে ‘মিটার’ ব্যবহার আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মুদির দোকান থেকে আলু কেনা বা গাড়িতে পেট্রল ভরার মতো সাধারণ কাজেও এটি ব্যবহার করা হয়। তবে এই সুবিধার পেছনে রয়েছে ১৫০ বছর আগের এক ঐতিহাসিক ‘মেট্রিক চুক্তি’ বা ‘মিটার কনভেনশন’।
১৮৭৫ সালের ২০ মে ফ্রান্সের প্যারিসে বিশ্বের ১৭টি দেশের প্রতিনিধি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। মূল উদ্দেশ্য ছিল—বিশ্বব্যাপী একক পরিমাপব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা বিজ্ঞান ও বাণিজ্যে উন্নয়ন ঘটাবে। তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, এমনকি একই দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যবহৃত হতো ভিন্ন ভিন্ন পরিমাপ পদ্ধতি।
এই চুক্তির মাধ্যমে গঠিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ব্যুরো অব ওয়েটস অ্যান্ড মেজারস’, যা প্রথমবারের মতো মিটার ও কিলোগ্রামের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে। পরে আরও কিছু একক যুক্ত হয়ে তৈরি হয় ইন্টারন্যাশনাল সিস্টেমস অব ইউনিটস (এসআই ইউনিটস), যা আজকের মেট্রিক পদ্ধতির ভিত্তি।
তবে মিটার এককের জন্ম এই চুক্তিরও অনেক আগে, ফরাসি বিপ্লবের সময়। ১৭০০ দশকের শেষ দিকে ফরাসি বিপ্লবীরা রাজতন্ত্র ও ধর্মীয় প্রথা পরিত্যাগ করে নতুন প্রজাতন্ত্র গঠনের উদ্যোগ নেয়। এই নতুন সমাজে পরিমাপ পদ্ধতিও হওয়া উচিত ছিল সবার জন্য সমান এবং প্রকৃতির মৌলিক গুণাবলির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ—রাজাদের বাহুর দৈর্ঘ্যের ওপর নির্ভরশীল নয়।
১৭৯০-এর দশকে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত নেন, এক মিটার হবে উত্তর মেরু থেকে বিষুবরেখা পর্যন্ত দূরত্বের দশ মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ। এই দূরত্ব হিসাবের দায়িত্ব পড়ে দুই জ্যোতির্বিদের ওপর। সাত বছরের প্রচেষ্টার পর ১৭৯৯ সালে তারা তাদের হিসাব জমা দেন ফরাসি একাডেমি অব সায়েন্সে। এরপর তৈরি করা হয় প্ল্যাটিনাম নির্মিত প্রথম মিটার বার—‘মিটার অব দ্য আর্কাইভস’।
পরে জানা যায়, সেই জ্যোতির্বিদদের হিসাবে সামান্য ভুল ছিল—আসল মিটার তার চেয়ে শূন্য দশমিক ২ মিলিমিটার বেশি হওয়া উচিত ছিল।
১৯ শতকের শেষ দিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয় প্ল্যাটিনাম-ইরিডিয়াম ধাতুর তৈরি প্রায় ৩০টি স্ট্যান্ডার্ড মিটার বার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বেনজামিন হ্যারিসন ১৮৯০ সালে গ্রহণ করেন এমন একটি মিটার বার। এগুলো কয়েক দশক ধরে মিটারের মান হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
তবে বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মিটারের সংজ্ঞাও পরিবর্তিত হতে থাকে। ১৯৬০ সালে বিজ্ঞানীরা আলো ব্যবহার করে মিটারের পরিমাপ পুনঃসংজ্ঞায়িত করেন, যেখানে কৃপ্টন গ্যাসের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে ভিত্তি হিসেবে নেওয়া হয়। নির্দিষ্ট এক রঙের আলোর ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩ দশমিক ৭৩ গুণ দৈর্ঘ্যকে এক মিটার হিসেবে ধরা হয়।
তবে আধুনিক ইলেকট্রনিকস ও ক্ষুদ্র প্রযুক্তির যুগে এই সংজ্ঞাও যথেষ্ট ছিল না। এদিকে পারমাণবিক ঘড়ি আবিষ্কারে সময় পরিমাপে বিপ্লব ঘটে। এসব ঘড়ির ‘টিক’ হয় প্রতি সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন বার এবং এটি ব্যবহার করে ১৯৮৩ সালে মিটারের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়।
নতুন সংজ্ঞাটি হলো—শূন্যস্থানে আলো এক সেকেন্ডের ১/ ২৯৯, ৭৯২, ৪৫৮ ভাগ সময়ে যতটা পথ অতিক্রম করে, সেটাই এক মিটার।
এই সংজ্ঞা এতটাই নির্ভুল যে, এটি ব্যবহার করে পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বও মাপা যায়। এই মাপেই জানা গেছে, চাঁদ প্রতিবছর গড়ে ৩ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার করে পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
চুক্তিতে স্বাক্ষরের প্রায় ৭০ বছর পর ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়া মেট্রিক চুক্তিতে সই করে। এরপর ১৯৭০ সালে ‘মেট্রিক কনভারশন’ চুক্তি পাশ হলে দেশটি মেট্রিক পদ্ধতি পুরোপুরি গ্রহণ করে।
তবে অনেক দেশেই এখনো পুরোনো পরিমাপ পদ্ধতি বহাল। যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তির মূল স্বাক্ষরকারীদের একজন হলেও আজও দৈনন্দিন জীবনে ইম্পিরিয়াল ইউনিট ব্যবহার করে।
অস্ট্রেলিয়াতেও কিছু ক্ষেত্রে ইম্পিরিয়াল ইউনিট টিকে আছে। উদাহরণস্বরূপ, পুরুষদের প্যান্টের কোমরের মাপ বা টেলিভিশন পর্দার আকার নির্ধারণে এই ইউনিট ব্যবহার করা হয়।
ন্যাশনাল ম্যাজারমেন্ট ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী ব্রুস ওয়ারিংটনের মতে, রান্নার ক্ষেত্রেও রয়েছে কিছু অসামঞ্জস্য। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ায় এক টেবিল চামচে ৪ চা-চামচ, যেখানে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে তা ৩ চা-চামচ। ফলে, রেসিপি কোন দেশ থেকে এসেছে, তা জানাটাও দরকার পড়ে সঠিক পরিমাপে রান্না করতে।
বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্রমণ্ডল আলফা সেন্টরিতে এক বিশাল গ্যাস গ্রহ থাকার শক্ত প্রমাণ পেয়েছেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাবে সাড়ে চার আলোকবর্ষ দূরের এই প্রাণহীন গ্রহকে পৃথিবীর ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর উপগ্রহে জীবনের উপযোগী পরিবেশ থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে!
৫ ঘণ্টা আগেইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের ‘ক্রু-১১’ মিশনের মাধ্যমে চারজন নভোচারী একটি ব্যতিক্রমধর্মী বৈজ্ঞানিক গবেষণার উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছেছেন। গত ১ আগস্ট উৎক্ষেপণ হওয়া এই অভিযানে নভোচারীরা সঙ্গে নিয়েছেন রোগ সৃষ্টিকারী কয়েকটি ব্যাকটেরিয়া।
২ দিন আগেচাঁদের মাটিতে ২০৩০ সালের মধ্যে পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে নাসা। এই পদক্ষেপ চাঁদে মানুষের স্থায়ী বসতি গড়ার উচ্চাভিলাষের অংশ। কারণ, মানুষের বসবাসের জন্য সেখানে নিরবচ্ছিন্ন শক্তি সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
২ দিন আগেআমরা যখন ‘নাসা’ নিয়ে ভাবি, তখন আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে রকেট আর মহাকাশ অভিযান। এটিই স্বাভাবিক, কারণ মহাকাশ-সংক্রান্ত নাসার অন্যান্য অর্জনই সংবাদমাধ্যমে বেশি প্রকাশ পায়। তবে অনেকেই জানেন না, নাসার রকেট বা মহাকাশযানের পাশাপাশি নিজস্ব যুদ্ধবিমানের বহর রয়েছে।
৫ দিন আগে