অনলাইন ডেস্ক
চেক প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণ মোরাভিয়া অঞ্চলের এক প্রাগৈতিহাসিক খনিতে ছয় হাজার বছর আগে শ্রমজীবী দুই বোনের জীবনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। নতুন গবেষণার ভিত্তিতে এই দুই নারীর ‘হাইপাররিয়েলিস্টিক’ বা ৩ডি মুখাবয়ব পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে গত ১৮ জুন আর্কিওলজিক্যাল অ্যান্ড অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সায়েন্সেস সাময়িকীতে।
প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানান, এই দুই বোন একসঙ্গে একটি চের্ট পাথরের খনিতে কাজ করতেন। এই খনির মাটির নিচে দুই বোনের কঙ্কাল আবিষ্কৃত হয়েছে। ছোট বোনের কঙ্কালটি ২০ ফুট (৬ মিটার) গভীরে এবং বড় বোনেরটি তার নিচে আরও ৩ ফুট (১ মিটার) গভীরে ছিল।
গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য ও মোরাভিয়ান জাদুঘরের প্রত্নতত্ত্ববিদ মার্টিন অলিভা বলেন, ‘সম্ভবত তাঁরা যেখানে কাজ করতেন, সেখানেই তাঁদের দাফন করা হয়েছিল।’
তবে তাঁদের মৃত্যুর ধরন নিয়ে রহস্য কাটেনি। কঙ্কালে কোনো সহিংসতার চিহ্ন বা রোগের লক্ষণ ছিল না। তবে গবেষকেরা বলেন, সম্ভবত তাঁদের উৎসর্গ করা হয়েছিল বা শারীরিক আঘাতের কারণে কাজ করতে না পারায় তাঁদের ইচ্ছাকৃতভাবে ‘মৃত্যুর মুখে ঠেলে’ দেওয়া হয়েছিল।
এই সমাধি ঘিরে আরও কিছু অজানা রহস্য রয়েছে। ছোট বোনের কঙ্কালের কাছে একটি কুকুরের খুলি পাওয়া গেলেও বাকি হাড়গুলো মিলেছে বড় বোনের পাশে। আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো, বড় বোনের বুকের ওপর পাওয়া গেছে এক নবজাতকের কঙ্কাল। এই কঙ্কালের সঙ্গে দুই নারীরই জেনেটিক সম্পর্ক নেই।
গবেষক মার্টিন অলিভা আরও বলেন, ‘শিশুটির সম্পূর্ণ কঙ্কাল পাওয়া গেছে। তবে ওই দুই বোনের কঙ্কাল সম্পূর্ণ পাওয়া যায়নি। কুকুরেরও সব হাড় ছিল না। কেন তাঁদের একসঙ্গে কবর দেওয়া হয়েছে, আমরা এখনো নিশ্চিত নই।’
রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে, দুই বোনের মৃত্যুর সময় নির্ধারণ করা হয়। তাঁদের মৃত্যু হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৪ হাজার ৩৪০ থেকে ৪ হাজার ৫০ সালের মধ্যে। নতুন গবেষণায় তাঁদের দাঁতের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ, কঙ্কালের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা ও কার্বন-নাইট্রোজেন আইসোটোপ বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, শৈশবে তাঁরা অপুষ্টি ও রোগে ভুগলেও প্রাপ্তবয়সে পুষ্টিকর খাবার খেয়েছেন ও ছিলেন বলিষ্ঠ।
তাঁদের কঙ্কালে ভারী শ্রমের চিহ্ন রয়েছে। বিশেষ করে বড় বোনের ভাঙা হাতে আংশিকভাবে সেরে উঠেছিল। এরপরও তাঁকে খনিতে কাজ করতে বাধ্য করা হতো বলে ধারণা করেছেন গবেষকেরা।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ওই সময় সমাজে নতুন ধরনের শোষণমূলক কাঠামো গড়ে উঠছিল। সেই যুগে কঠিন কাজগুলো শক্তিশালীদের দিয়ে নয়, বরং যাঁদের জোর করে কাজে লাগানো যেত, তাঁদের দিয়েই করানো হতো।
দাঁত বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা জানিয়েছেন, ছোট বোনের বয়স ছিল আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ এবং বড় বোনের ৪০ বছর। তাঁদের উচ্চতা ছিল প্রায় ৪ ফুট ৮ ইঞ্চি (১ দশমিক ৫ মিটার), গড়ন ছিল চিকন তবে শক্তপোক্ত। খাদ্যাভ্যাসে মাংসের উপস্থিতি ছিল অপেক্ষাকৃত বেশি। সম্ভবত কঠোর পরিশ্রমের চাহিদা পূরণে বা অঞ্চলটির বনসম্পদপূর্ণ প্রকৃতির কারণে তাঁরা মাংস বেশি খেতেন।
জেনেটিক তথ্য অনুযায়ী, ছোট বোনের চোখ ছিল সবুজ বা হ্যাজেল রঙের এবং চুল ছিল কালো। আর বড় বোনের চোখ ছিল নীল ও চুল ছিল সোনালি। এসব বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে ৩ডি মডেলগুলোতে।
সমাধিতে পাওয়া সমসাময়িক কাপড়ের টুকরো বিশ্লেষণ করে পোশাকও পুনর্গঠন করা হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘নিওলিথিক যুগের সংরক্ষিত কাপড়গুলো কেবল উদ্ভিজ্জ তন্তু দিয়ে তৈরি—ফ্ল্যাক্স, ছালের তন্তু, চিটাগুঁড়া ইত্যাদি।’
বড় বোনের পরনে ছিল উদ্ভিজ্জ তন্তু দিয়ে তৈরি একটি সাদামাটা ব্লাউজ ও মোড়ানো কাপড়। তাঁর চুল বাঁধা ছিল একটি জাল দিয়ে। ছোট বোনের ব্লাউজ ছিল মোটা লিনেন কাপড়ের, আর তাঁর চুলে বোনা কাপড়ের ফিতা ছিল।
এই ৩ডি মুখাবয়ব দুটি প্লাস্টার ও সিলিকন দিয়ে তৈরি, যাতে চোখের কৃত্রিম প্রস্থেটিকস ও চুল যুক্ত করা হয়েছে। কঙ্কাল ভালোভাবে সংরক্ষিত থাকায় মাথার আকারও যথাযথভাবে পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়েছে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
চেক প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণ মোরাভিয়া অঞ্চলের এক প্রাগৈতিহাসিক খনিতে ছয় হাজার বছর আগে শ্রমজীবী দুই বোনের জীবনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। নতুন গবেষণার ভিত্তিতে এই দুই নারীর ‘হাইপাররিয়েলিস্টিক’ বা ৩ডি মুখাবয়ব পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে গত ১৮ জুন আর্কিওলজিক্যাল অ্যান্ড অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সায়েন্সেস সাময়িকীতে।
প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানান, এই দুই বোন একসঙ্গে একটি চের্ট পাথরের খনিতে কাজ করতেন। এই খনির মাটির নিচে দুই বোনের কঙ্কাল আবিষ্কৃত হয়েছে। ছোট বোনের কঙ্কালটি ২০ ফুট (৬ মিটার) গভীরে এবং বড় বোনেরটি তার নিচে আরও ৩ ফুট (১ মিটার) গভীরে ছিল।
গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য ও মোরাভিয়ান জাদুঘরের প্রত্নতত্ত্ববিদ মার্টিন অলিভা বলেন, ‘সম্ভবত তাঁরা যেখানে কাজ করতেন, সেখানেই তাঁদের দাফন করা হয়েছিল।’
তবে তাঁদের মৃত্যুর ধরন নিয়ে রহস্য কাটেনি। কঙ্কালে কোনো সহিংসতার চিহ্ন বা রোগের লক্ষণ ছিল না। তবে গবেষকেরা বলেন, সম্ভবত তাঁদের উৎসর্গ করা হয়েছিল বা শারীরিক আঘাতের কারণে কাজ করতে না পারায় তাঁদের ইচ্ছাকৃতভাবে ‘মৃত্যুর মুখে ঠেলে’ দেওয়া হয়েছিল।
এই সমাধি ঘিরে আরও কিছু অজানা রহস্য রয়েছে। ছোট বোনের কঙ্কালের কাছে একটি কুকুরের খুলি পাওয়া গেলেও বাকি হাড়গুলো মিলেছে বড় বোনের পাশে। আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো, বড় বোনের বুকের ওপর পাওয়া গেছে এক নবজাতকের কঙ্কাল। এই কঙ্কালের সঙ্গে দুই নারীরই জেনেটিক সম্পর্ক নেই।
গবেষক মার্টিন অলিভা আরও বলেন, ‘শিশুটির সম্পূর্ণ কঙ্কাল পাওয়া গেছে। তবে ওই দুই বোনের কঙ্কাল সম্পূর্ণ পাওয়া যায়নি। কুকুরেরও সব হাড় ছিল না। কেন তাঁদের একসঙ্গে কবর দেওয়া হয়েছে, আমরা এখনো নিশ্চিত নই।’
রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে, দুই বোনের মৃত্যুর সময় নির্ধারণ করা হয়। তাঁদের মৃত্যু হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৪ হাজার ৩৪০ থেকে ৪ হাজার ৫০ সালের মধ্যে। নতুন গবেষণায় তাঁদের দাঁতের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ, কঙ্কালের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা ও কার্বন-নাইট্রোজেন আইসোটোপ বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, শৈশবে তাঁরা অপুষ্টি ও রোগে ভুগলেও প্রাপ্তবয়সে পুষ্টিকর খাবার খেয়েছেন ও ছিলেন বলিষ্ঠ।
তাঁদের কঙ্কালে ভারী শ্রমের চিহ্ন রয়েছে। বিশেষ করে বড় বোনের ভাঙা হাতে আংশিকভাবে সেরে উঠেছিল। এরপরও তাঁকে খনিতে কাজ করতে বাধ্য করা হতো বলে ধারণা করেছেন গবেষকেরা।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ওই সময় সমাজে নতুন ধরনের শোষণমূলক কাঠামো গড়ে উঠছিল। সেই যুগে কঠিন কাজগুলো শক্তিশালীদের দিয়ে নয়, বরং যাঁদের জোর করে কাজে লাগানো যেত, তাঁদের দিয়েই করানো হতো।
দাঁত বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা জানিয়েছেন, ছোট বোনের বয়স ছিল আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ এবং বড় বোনের ৪০ বছর। তাঁদের উচ্চতা ছিল প্রায় ৪ ফুট ৮ ইঞ্চি (১ দশমিক ৫ মিটার), গড়ন ছিল চিকন তবে শক্তপোক্ত। খাদ্যাভ্যাসে মাংসের উপস্থিতি ছিল অপেক্ষাকৃত বেশি। সম্ভবত কঠোর পরিশ্রমের চাহিদা পূরণে বা অঞ্চলটির বনসম্পদপূর্ণ প্রকৃতির কারণে তাঁরা মাংস বেশি খেতেন।
জেনেটিক তথ্য অনুযায়ী, ছোট বোনের চোখ ছিল সবুজ বা হ্যাজেল রঙের এবং চুল ছিল কালো। আর বড় বোনের চোখ ছিল নীল ও চুল ছিল সোনালি। এসব বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে ৩ডি মডেলগুলোতে।
সমাধিতে পাওয়া সমসাময়িক কাপড়ের টুকরো বিশ্লেষণ করে পোশাকও পুনর্গঠন করা হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘নিওলিথিক যুগের সংরক্ষিত কাপড়গুলো কেবল উদ্ভিজ্জ তন্তু দিয়ে তৈরি—ফ্ল্যাক্স, ছালের তন্তু, চিটাগুঁড়া ইত্যাদি।’
বড় বোনের পরনে ছিল উদ্ভিজ্জ তন্তু দিয়ে তৈরি একটি সাদামাটা ব্লাউজ ও মোড়ানো কাপড়। তাঁর চুল বাঁধা ছিল একটি জাল দিয়ে। ছোট বোনের ব্লাউজ ছিল মোটা লিনেন কাপড়ের, আর তাঁর চুলে বোনা কাপড়ের ফিতা ছিল।
এই ৩ডি মুখাবয়ব দুটি প্লাস্টার ও সিলিকন দিয়ে তৈরি, যাতে চোখের কৃত্রিম প্রস্থেটিকস ও চুল যুক্ত করা হয়েছে। কঙ্কাল ভালোভাবে সংরক্ষিত থাকায় মাথার আকারও যথাযথভাবে পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়েছে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
আমরা যখন ‘নাসা’ নিয়ে ভাবি, তখন আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে রকেট আর মহাকাশ অভিযান। এটিই স্বাভাবিক, কারণ মহাকাশ-সংক্রান্ত নাসার অন্যান্য অর্জনই সংবাদমাধ্যমে বেশি প্রকাশ পায়। তবে অনেকেই জানেন না, নাসার রকেট বা মহাকাশযানের পাশাপাশি নিজস্ব যুদ্ধবিমানের বহর রয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগেবিশ্বজুড়ে অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য আলু। হাজার হাজার বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ অঞ্চলে এই শস্যের প্রথম চাষ শুরু হয়। এরপর ১৬শ শতাব্দী থেকে এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এতদিন আলুর বিবর্তন ও উৎপত্তি ঘিরে ছিল রহস্য। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানালেন, আলুর উৎপত্তি হয়েছিল টমেটো ও আলুর মতো দেখতে
১ দিন আগেনিশ্বাস নেওয়ার জন্য মানুষের মতো শুধু ফুসফুসের ওপর নির্ভর করে না ব্যাঙ। এরা ত্বক দিয়েই তারা শ্বাস নিতে পারে এবং পানি পান করতে পারে। ব্যাঙসহ অন্যান্য উভচর প্রাণীদের এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য পরিবেশের সঙ্গে তাদের গভীরভাবে সংযুক্ত করে রাখে।
১ দিন আগেআলোক-তড়িৎ বা ফটোইলেকট্রিক প্রভাব ব্যাখ্যা করার জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক হিসেবে পরিচিত অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। তবে নোবেল পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কর্মজীবনের প্রতি অতিরঞ্জিত শ্রদ্ধাবোধ আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে। আমি নিজেকে একপ্রকার অনিচ্ছুক প্রতারক ভাবতে বাধ্য হই।
২ দিন আগে