অনলাইন ডেস্ক
সাধারণত গাছের চাহিদা বুঝতে নিজের অভিজ্ঞতা ও অনুমানের ওপর নির্ভর করেন কৃষকেরা। তবে ভবিষ্যতে গাছও জানাতে পারবে তার প্রয়োজনের কথা। কখন তার পানির প্রয়োজন বা কীটের আক্রমণ হয়েছে, তা সে নিজেই কৃষককে জানিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, কৃষকও গাছকে ‘বার্তা’ পাঠাতে পারবেন—‘খরা আসছে, পানি বাঁচিয়ে রাখো’। শুনতে কল্পবিজ্ঞান মনে হলেও বাস্তবে এমন যোগাযোগ প্রক্রিয়া তৈরির জন্য কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।
উদ্ভিদের সঙ্গে দ্বিমুখী যোগাযোগের দ্বার খুলে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর রিসার্চ অন প্রোগ্রামেবল প্ল্যান্ট সিস্টেমসের (সিআরওপিপিএস) বিজ্ঞানীরা। তাঁরা এক প্রাচীন রহস্যের সমাধান করেছেন, যা শতাব্দীজুড়ে গবেষকদের মাথাব্যথার কারণ ছিল। এই রহস্য হলো—যখন গাছ চাপে বা কষ্টে থাকে, তখন নিজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে কীভাবে তথ্য বা সংকেত পাঠায়।
গাছের এই প্রাকৃতিক যোগাযোগব্যবস্থা বোঝা গেলে ভবিষ্যতে এমন গাছ তৈরি করা সম্ভব হতে পারে, যেগুলো মানুষের সঙ্গে ‘কথা’ বলতে পারে, এমনকি নির্দেশনার প্রতি প্রতিক্রিয়াও দেখাতে পারে।
এই যোগাযোগ নির্ভর করে মূলত ‘নেগেটিভ প্রেশার’-এর ওপর। এটি গাছের শাখা, শিকড় ও পাতার মধ্যে পানি ধরে রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে শুষ্ক আবহাওয়ার সময়।
যখন গাছ কোনো ধরনের চাপ অনুভব করে, যেমন—কীটপতঙ্গের কামড়ে বা খরার সম্মুখীন হয়, তখন এই চাপের ভারসাম্য পরিবর্তন হয়। এসব পরিবর্তনের ফলে গাছের ভেতরের তরলগুলো চলাচল করে, যা মেকানিক্যাল এবং রাসায়নিক সংকেত বহন করে এবং গাছের অন্যান্য অংশকে সতর্ক করে, যাতে তারা পদক্ষেপ নিয়ে ভারসাম্য পুনঃস্থাপন করতে পারে।
সিআরওপিপিএসের পোস্ট ডক্টরাল অ্যাসোসিয়েট এবং গবেষণার প্রধান ভেসনা বাচেভা বলেন, ‘আমরা গাছের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের প্রক্রিয়া কীভাবে ঘটে, তা বুঝতে চেষ্টা করছি।’
এব স্ট্রুক্ক এবং মার্গারেট ফ্র্যাংকের সঙ্গে মিলে এই গবেষণা পরিচালনা করেন বাচেভা প্রফেসর। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তারা দেখেন যে, গাছের স্ট্রেস বা উদ্বেগ হওয়ার সংকেত কীভাবে তার ভাসকুলার সিস্টেমের মাধ্যমে চলাচল করে। উল্লেখ্য, ভাসকুলার সিস্টেম হলো—গাছের ছোট ছোট নালিকাগুলোর একটি নেটওয়ার্ক, যা পানি ও পুষ্টি পরিবহন করে।
গাছগুলো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারে—এমন ধারণা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রচলিত। কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করতেন যে, গাছগুলো হরমোন বা রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে বার্তা পাঠায়। আবার অন্যরা মনে করতেন যে, এখানে মেকানিক্যাল শক্তি কাজ করছে।
তবে এই নতুন গবেষণা দেখায় যে, আসলে উভয় ধারণাই সঠিক। অভ্যন্তরীণ চাপের পরিবর্তনের ফলে পানির প্রবাহ শুরু হয়, যা রাসায়নিক সংকেত বহন করে এবং চাপের পরিবর্তন বিশেষ সেন্সরগুলোকে সক্রিয় করে, যা ক্যালসিয়াম আয়নগুলোর মতো পদার্থ নিঃসরণ করে, যা পরে গাছের প্রতিরোধব্যবস্থা সক্রিয় করে।
উদাহরণস্বরূপ, যখন একটি পোকা গাছের পাতায় কামড় দেয়, তখন চাপের পরিবর্তন রাসায়নিক সংকেত বহন করে। এই সংকেত গাছের অন্যান্য অংশকে জানায় যেন, তারা তিক্ত অ্যাসিড উৎপাদন করে, যা কীটপতঙ্গদের দূরে রাখতে সাহায্য করে। একইভাবে চাপের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম সংকেতগুলো উদ্রেক করে জিনের কার্যকলাপে পরিবর্তন আনতে পারে, যা গাছের প্রতিরোধব্যবস্থা শক্তিশালী করে।
এখন গবেষকেরা ‘রিপোর্টার প্ল্যান্ট’ তৈরির পরিকল্পনা করছেন, যেগুলো তাদের চাহিদা স্পষ্টভাবে দেখাতে পারবে। যেমন: নিজেদের রং পরিবর্তন করা বা পানি প্রয়োজন হলে জ্বলে ওঠা। গবেষকদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো দুমুখী যোগাযোগ: গাছ শুধু সংকেত পাঠাতে পারবে না, বরং কৃষকও গাছকে সংকেত পাঠাতে পারবেন, যাতে গাছগুলো শুষ্ক মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করতে প্রস্তুত থাকে।
প্রফেসর স্ট্রুক্ক বলেন, ‘আমরা জীববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, প্রকৌশল এবং কৃষিকে একত্রিত করে কিছু সম্পূর্ণ নতুন সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি। এই আবিষ্কার সত্যিই কৃষির ভবিষ্যৎকে রূপান্তর করতে পারে।’
তথ্যসূত্র: নোরিডজ
সাধারণত গাছের চাহিদা বুঝতে নিজের অভিজ্ঞতা ও অনুমানের ওপর নির্ভর করেন কৃষকেরা। তবে ভবিষ্যতে গাছও জানাতে পারবে তার প্রয়োজনের কথা। কখন তার পানির প্রয়োজন বা কীটের আক্রমণ হয়েছে, তা সে নিজেই কৃষককে জানিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, কৃষকও গাছকে ‘বার্তা’ পাঠাতে পারবেন—‘খরা আসছে, পানি বাঁচিয়ে রাখো’। শুনতে কল্পবিজ্ঞান মনে হলেও বাস্তবে এমন যোগাযোগ প্রক্রিয়া তৈরির জন্য কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।
উদ্ভিদের সঙ্গে দ্বিমুখী যোগাযোগের দ্বার খুলে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর রিসার্চ অন প্রোগ্রামেবল প্ল্যান্ট সিস্টেমসের (সিআরওপিপিএস) বিজ্ঞানীরা। তাঁরা এক প্রাচীন রহস্যের সমাধান করেছেন, যা শতাব্দীজুড়ে গবেষকদের মাথাব্যথার কারণ ছিল। এই রহস্য হলো—যখন গাছ চাপে বা কষ্টে থাকে, তখন নিজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে কীভাবে তথ্য বা সংকেত পাঠায়।
গাছের এই প্রাকৃতিক যোগাযোগব্যবস্থা বোঝা গেলে ভবিষ্যতে এমন গাছ তৈরি করা সম্ভব হতে পারে, যেগুলো মানুষের সঙ্গে ‘কথা’ বলতে পারে, এমনকি নির্দেশনার প্রতি প্রতিক্রিয়াও দেখাতে পারে।
এই যোগাযোগ নির্ভর করে মূলত ‘নেগেটিভ প্রেশার’-এর ওপর। এটি গাছের শাখা, শিকড় ও পাতার মধ্যে পানি ধরে রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে শুষ্ক আবহাওয়ার সময়।
যখন গাছ কোনো ধরনের চাপ অনুভব করে, যেমন—কীটপতঙ্গের কামড়ে বা খরার সম্মুখীন হয়, তখন এই চাপের ভারসাম্য পরিবর্তন হয়। এসব পরিবর্তনের ফলে গাছের ভেতরের তরলগুলো চলাচল করে, যা মেকানিক্যাল এবং রাসায়নিক সংকেত বহন করে এবং গাছের অন্যান্য অংশকে সতর্ক করে, যাতে তারা পদক্ষেপ নিয়ে ভারসাম্য পুনঃস্থাপন করতে পারে।
সিআরওপিপিএসের পোস্ট ডক্টরাল অ্যাসোসিয়েট এবং গবেষণার প্রধান ভেসনা বাচেভা বলেন, ‘আমরা গাছের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের প্রক্রিয়া কীভাবে ঘটে, তা বুঝতে চেষ্টা করছি।’
এব স্ট্রুক্ক এবং মার্গারেট ফ্র্যাংকের সঙ্গে মিলে এই গবেষণা পরিচালনা করেন বাচেভা প্রফেসর। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তারা দেখেন যে, গাছের স্ট্রেস বা উদ্বেগ হওয়ার সংকেত কীভাবে তার ভাসকুলার সিস্টেমের মাধ্যমে চলাচল করে। উল্লেখ্য, ভাসকুলার সিস্টেম হলো—গাছের ছোট ছোট নালিকাগুলোর একটি নেটওয়ার্ক, যা পানি ও পুষ্টি পরিবহন করে।
গাছগুলো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারে—এমন ধারণা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রচলিত। কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করতেন যে, গাছগুলো হরমোন বা রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে বার্তা পাঠায়। আবার অন্যরা মনে করতেন যে, এখানে মেকানিক্যাল শক্তি কাজ করছে।
তবে এই নতুন গবেষণা দেখায় যে, আসলে উভয় ধারণাই সঠিক। অভ্যন্তরীণ চাপের পরিবর্তনের ফলে পানির প্রবাহ শুরু হয়, যা রাসায়নিক সংকেত বহন করে এবং চাপের পরিবর্তন বিশেষ সেন্সরগুলোকে সক্রিয় করে, যা ক্যালসিয়াম আয়নগুলোর মতো পদার্থ নিঃসরণ করে, যা পরে গাছের প্রতিরোধব্যবস্থা সক্রিয় করে।
উদাহরণস্বরূপ, যখন একটি পোকা গাছের পাতায় কামড় দেয়, তখন চাপের পরিবর্তন রাসায়নিক সংকেত বহন করে। এই সংকেত গাছের অন্যান্য অংশকে জানায় যেন, তারা তিক্ত অ্যাসিড উৎপাদন করে, যা কীটপতঙ্গদের দূরে রাখতে সাহায্য করে। একইভাবে চাপের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম সংকেতগুলো উদ্রেক করে জিনের কার্যকলাপে পরিবর্তন আনতে পারে, যা গাছের প্রতিরোধব্যবস্থা শক্তিশালী করে।
এখন গবেষকেরা ‘রিপোর্টার প্ল্যান্ট’ তৈরির পরিকল্পনা করছেন, যেগুলো তাদের চাহিদা স্পষ্টভাবে দেখাতে পারবে। যেমন: নিজেদের রং পরিবর্তন করা বা পানি প্রয়োজন হলে জ্বলে ওঠা। গবেষকদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো দুমুখী যোগাযোগ: গাছ শুধু সংকেত পাঠাতে পারবে না, বরং কৃষকও গাছকে সংকেত পাঠাতে পারবেন, যাতে গাছগুলো শুষ্ক মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করতে প্রস্তুত থাকে।
প্রফেসর স্ট্রুক্ক বলেন, ‘আমরা জীববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, প্রকৌশল এবং কৃষিকে একত্রিত করে কিছু সম্পূর্ণ নতুন সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি। এই আবিষ্কার সত্যিই কৃষির ভবিষ্যৎকে রূপান্তর করতে পারে।’
তথ্যসূত্র: নোরিডজ
প্রস্তর যুগে চীনের পূর্বাঞ্চলে সমাজের নেতৃত্বে ছিল নারী। সম্প্রতি প্রাপ্ত ডিএনএ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমনই অভূতপূর্ব তথ্য। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার আগের কঙ্কালের জিনগত উপাদান বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, সেই সময়কার সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক এবং সমাজের সদস্যরা অন্তত ১০ প্রজন্ম ধরে মায়ের বংশ অনুসারে...
১৮ ঘণ্টা আগেপ্রতি বছর নদী, সমুদ্র ও অন্য বিভিন্ন জলাশয় থেকে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মাছ ধরা হয়। এদের বেশির ভাগই খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে এই বিপুল-সংখ্যক মাছ ধরার পরে তাদের যে পদ্ধতিতে মারা হয়, তা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাছকে পানি থেকে তোলার পর তারা গড়ে প্রায় ২২ মিনিট পর্যন্ত
৩ দিন আগেপৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক মরুভূমিগুলোর কেন্দ্রে অবস্থিত আরব অঞ্চল একসময় সবুজে মোড়ানো স্বর্গোদ্যান ছিল। মরুপ্রধান অঞ্চল হলেও পৃথিবীর দীর্ঘ ইতিহাসে এই ভূমি নানা সময়ে আর্দ্র আবহাওয়ার দেখা পেয়েছে, আর তখনই সেখানে জন্ম নিয়েছে লেক-নদী, বনভূমি এবং জীববৈচিত্র্যের স্বর্গ। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এমনটাই
৫ দিন আগেপ্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরে তৈরি একটি বুনন করা লিনেন পোশাক এখন বিশ্বের সর্বপ্রাচীন বুনন করা পোশাক জামা হিসেবে স্বীকৃত। কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে জানা গেছে, ‘তারখান ড্রেস’ নামে পরিচিত এই পোশাকটি ৩৫০০ থেকে ৩১০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে তৈরি হয়েছে।
৫ দিন আগে