Ajker Patrika

দেশে হাইব্রিড গণতন্ত্র চলছে: খন্দকার মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে হাইব্রিড গণতন্ত্র চলছে: খন্দকার মোশাররফ

আন্তর্জাতিকভাবে এটা স্বীকৃতি যে বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নাই। আমেরিকার বাংলাদেশকে হাইব্রিড সরকারের দেশ বলেছে। এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার লালসা থেকে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ভাবে সমালোচিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। 

আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নবীন দল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় এ কথা বলেন তিনি। 

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে আমেরিকায় গণতান্ত্রিক একটা কনভেনশন হয়েছে। গণতান্ত্রিক সব দেশকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশকে তারা আমন্ত্রণ জানায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমেরিকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশে গণতন্ত্র নাই, হাইব্রিড শাসন চলছে সেহেতু বাংলাদেশ এখানে যুক্ত না।’ 

বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। এরা দিনের ভোট রাতে চুরি করা, বিনা ভোটের সরকার বলে জনগণের প্রতি এই সরকারের কোন দায়িত্ববোধ নাই বলে মন্তব্য করেন খন্দকার মোশাররফ। তিনি বলেন, ‘এ জন্যই এই সরকার এক লাফে জ্বালানি তেলর দাম পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি করে। পৃথিবীতে এমন কোনো নজির নাই।’ 

বৃহস্পতিবার মিরপুরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পুলিশ সবাই একসঙ্গে হয়ে হামলা করেছে অভিযোগ করেন খন্দকার মোশাররফ। তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কথা বলতে গেলে পাখির মতন গুলি করে তারা হত্যা করে। জ্বালানি তেল ও দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে আন্দোলন এটা বিএনপির কিছু না, এটা জনগণের দাবি। তাদের দাবি তুলে ধরার কারণে এই হামলা চালানো হচ্ছে। পুলিশ সেখানে টিয়ারগ্যাস ছাড়ছে, গুলি করছে যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’ 

মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, ‘যেই দেশে গণতন্ত্র নাই, সেই দেশ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা শুধু আমরা বলছি না। এ জন্য আমেরিকার র‍্যাবকে স্যাংশান দিয়েছে। 

এ সময় তিনি সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান, পুলিশ প্রধানসহ ছয় সাতজনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করেন। এ জন্য বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনীতি আজ ধ্বংসের শেষ সীমায়। এটা শুধু আমরা বলছি না। আইএমএফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এমনকি এই ফ্যাসিবাদী সরকারের একজন মন্ত্রী নিজেও বলছেন যে বাংলাদেশের অর্থনীতি খাদের কিনারায় চলে গেছে। তারাই বলছে এখন এই কথা। 

শ্রীলঙ্কার অবস্থার কথা উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দুই ভাইয়ের শাসনে সেখানে স্বৈরাচারী, একনায়কতন্ত্র চলেছে। তারা দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে নাই দুর্নীতি করেছে। মেগা প্রজেক্ট করে মেগা দুর্নীতি করেছে। শ্রীলঙ্কার মানুষ রাস্তায় নেমেছে। বাংলাদেশ সামাজিক, রাজনৈতিক, রাজনৈতিক দিক থেকে শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ অবস্থানে আছে। এখন বাকি শুধু রাস্তায় নামা। 

সকলকে ঐক্য বদ্ধ হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন রাস্তায় না নেমে এই মহা সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারবে না। অর্থনীতিকে লুটপাট করে, ডাকাতি করে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে জনগণের স্বার্থে তাদের পক্ষে অর্থনীতি চালনা করা সম্ভব নয়। আইনের শাসন, সংবিধানকে লঙ্ঘন করে, গুম খুন করে আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত