Ajker Patrika

অভ্যুত্থানের পর মবের সংস্কৃতি চালু হয়েছে: সাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ১৮: ৫০
আজ মঙ্গলবার সকালে হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার সকালে হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আমরা গভীর পরিতাপ ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে দেশে একধরনের মব তৈরি করে হামলা, অবমাননা, নির্যাতনের সংস্কৃতি চালু হচ্ছে—এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এর আগে সংখ্যায় কম এমন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপরে আক্রমণ হয়েছে, মাজারে আক্রমণ হয়েছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপরে আক্রমণ হয়েছে, বিভিন্ন ব্যক্তির ওপরে আক্রমণ হয়েছে।’

আজ মঙ্গলবার সকালে হাতিরপুলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা এবং দলের সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলটির প্রধান সমন্বয়ক।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের ১০ মাস অতিবাহিত হলেও এসব ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কার্যকর কোনো ভূমিকায় আমরা দেখতে পাইনি, বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের উপস্থিতি থাকলেও নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। আমরা এ রকম পরিস্থিতিতে সরকারের এবং আইনশৃঙ্খলা কাজে নিয়োজিত সকল বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখতে চাই। শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় সারলে চলবে না—অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ’১৮ সালের নৈশ নির্বাচনের হোতা নূরুল হুদাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে জুতার মালা গলায় পরানোর ঘটনা দেখলাম। বাংলাদেশে ’১৪, ’১৮ ও ’২৪-এর প্রহসনে নির্বাচনের পেছনে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই এসব নির্বাচনের ও গণতন্ত্র ধ্বংসের দায় আছে এবং তাঁদের সকলকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। কিন্তু বিচারের আগেই তাঁদের মব সৃষ্টি করে হেনস্তার মাধ্যমে অপরাধীর বি-মানবিকীকরণের যে উদাহরণ সৃষ্টি হচ্ছে, তা মোটেই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কোনো দৃষ্টান্ত নয়।’

সাকি বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা ন্যায়বিচার দেখতে চাই। বিচারের নামে কোনো প্রহসন কিংবা মব বিচার যাতে আর কোনোভাবেই চলতে না পারে; সে জন্য সরকারকে অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।’ এ ছাড়া তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে সামগ্রিকভাবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। তিনি জানান, আগামী ১০-১২ অক্টোবর দলের পঞ্চম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে উপলক্ষে ৪ জুলাই ‘জুলাইযোদ্ধা’ এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের সম্মিলন, ৫ জুলাই গণসংহতি আন্দোলনের তরুণ জুলাইযোদ্ধাদের নতুন বাংলাদেশ ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় ও বিশেষ জাতীয় বর্ধিত সভা, ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিবিজড়িত রংপুর জেলায় জুলাই সমাবেশ, ২৫ জুলাই ঢাকায় জুলাই গণসমাবেশ, ১ আগস্ট শহীদ জুলফিকার শাকিলের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকার মিরপুরে জুলাই সমাবেশ এবং ৪ আগস্ট ’জুলাই-আগস্টের’ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান কর্মসূচি পালন করবে দলটি বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দিপক কুমার রায়, কেন্দ্রীয় সদস্য আলিফ দেওয়ান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন, জাতীয় পরিষদ সদস্য পপী রানী সরকার, তৌহিদুর রহমানসহ আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত