Ajker Patrika

সরকারকে ‘উন্নয়ন অস্বীকার’ আইন করার পরামর্শ রুমিন ফারহানার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সরকারকে ‘উন্নয়ন অস্বীকার’ আইন করার পরামর্শ রুমিন ফারহানার

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকারকে নিরাপত্তা দিচ্ছে না বলে মনে করেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। তাই সরকারকে হলোকাস্ট ডিনায়াল অ্যাক্টের মতো উন্নয়ন অস্বীকার আইন করার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, এই আইনের মাধ্যমে তাহলে সরকার তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমালোচকদের জেলে দিতে পারবে।

আজ বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনীত সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

পদ্মা সেতু নিয়ে টিকটক ভিডিও করায় শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা ও রিমান্ড প্রসঙ্গ তুলে ধরে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এই দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সম্পর্কে সবাই জানে। কথায় কথায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা, গ্রেপ্তার, রিমান্ড নেওয়া কোনো বিষয় না।’ 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকারকে খুব বেশি সরকারকে নিরাপত্তা দিচ্ছে না বলে মনে করেন রুমিন। তিনি বলেন, ‘তাই আমি প্রস্তাব করব, এখন সময় এসেছে হলোকাস্ট ডিনায়াল অ্যাক্টের মতো উন্নয়ন অস্বীকার আইন করা হোক।’ 

বিএনপি দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, যে আইনের মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে একমত না হওয়া, লুটপাটকে অনুমোদন না দেওয়া, দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের বিষয়ে কথা বলা ব্যক্তিদের জেলে নেওয়া যাবে। তিনি এ তালিকায় আরও যুক্ত করেন সরকার ঘোষিত প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় এবং অবকাঠামো নির্মাণকে একমাত্র উন্নয়ন বলে অস্বীকার করা, মানবাধিকার, ভোটাধিকার, সুশাসন, ন্যায়বিচার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের কথা বলা ব্যক্তিদের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘সেই সব মানুষকে না হয় উন্নয়ন অস্বীকার করার মামলায় জেলে নেওয়া যাবে; যত দিন খুশি তত দিন।’ 

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘সংসদটা অতিরিক্ত মিষ্টি হয়ে গেছে। এত বেশি মিষ্টি স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো না। তাই আমি কিছু তেতো কথা বলব, যাতে ভারসাম্যটা রক্ষা হয়। আর সেই সঙ্গে প্রদীপের নিচে অন্ধকারের দিকেও আমরা তাকাতে পারি।’ 

সংসদ সদস্য বলেন, লিথুনিয়ার কৌনাস পৌরসভার মেয়র একটি শিপিং কনটেইনারের মধ্যে দেড় কোটি টাকায় টয়লেট বানিয়েছিলেন। একই মানের একটি টয়লেট পাশের টেনিস ক্লাবে নির্মাণ করা হয় সাড়ে চার লাখ টাকায়। মানুষ মজা করে ওই টয়লেটের নাম দিয়েছিল সোনার টয়লেট। একই রকম কিংবা একটু বেশি দৈর্ঘ্যের বিশ্বের অন্যান্য সেতুর সঙ্গে পদ্মা সেতুর বর্তমান ব্যয় তুলনা করলে বলতেই হবে আমাদের সোনার সেতু। এটা কৌনাস সোনার টয়লেট মামলার মতো, বাংলাদেশ সোনার সেতু মামলাও দুর্নীতির উদাহরণ হিসেবে থাকবে। 

এ সময় পদ্মা সেতুর সঙ্গে ভারতের কয়েকটি সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের কথা তুলে ধরেন রুমিন ফারহানা। এই সেতুতে নির্মাণ ব্যয় দফায় দফায় বাড়ানো হয় বলে জানান তিনি। ভারতের ১০ কিলোমিটারের ৬ লেনের সেতু নির্মাণে ৩ হাজার কোটি টাকা বলে জানান তিনি। এই সংসদ সদস্য বলেন, এই টাকা দিয়ে একই দৈর্ঘ্যের ১০টি সেতু সেখানে করতে পারে। লুটপাট আর কাকে বলে। 

পদ্মা সেতুতে রেল যোগাযোগের অন্যতম কারণ ছিল পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের সংযোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বহু টাকা নয়-ছয় করে পায়রাকে আর গভীর সমুদ্র বন্দর করে নাই। সুতরাং রেল কন্টেইনার পরিবহনের যে পরিকল্পনা হয়েছিল, সেটিও হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, রেলসেতু আর লাভজনক নয়। 

রুমিন ফারহানা বলেন, পদ্মা সেতু এমনি এক গোল্ডেন সেতু, যার পরতে পরতে কেবল দুর্নীতি, আর দুর্নীতি। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের ৫৫ কিলোমিটার নির্মাণ হচ্ছে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কিলোমিটার ২০০ কোটি টাকার বেশি। 

বিশ্বব্যাংকের ঋণ সরকার না নেওয়ার কারণ হিসেবে রুমিন দাবি করেন, বিশ্বব্যাংকের ঋণ নিলে জবাবদিহি থাকতে হয়। কিন্তু এই সরকার হরিলুট করেছে, সেটা তাদের থেকে ঋণ নিলে সম্ভব হতো না। যতই অস্বাভাবিক হোক সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার জো নেই। আজকের সংসদের পরিবেশের দিকে তাকালে মনে হয় কি বীভৎস, অসহিষ্ণু এক সংসদ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিস আলমের শ্বশুর

গুলি–ককটেল ছুড়তে ছুড়তে গজারিয়ার দুর্গম চরের পুলিশ ফাঁড়িতে ডাকাত দলের হামলা

কুমিল্লায় দুই ট্যাংকে পানি, তদন্ত শেষ হয়নি ১ মাসে

জিন সম্পাদনায় নতুন সাফল্য, ডায়াবেটিস রোগীদের আর ইনসুলিন নিতে হবে না

ট্রাম্পের শুল্ক এড়াতে ১০৩টি বোয়িং বিমান কিনবে দক্ষিণ কোরিয়া

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত