Ajker Patrika

পিআর আদায় করে ছাড়বে জামায়াত, সমাবেশে ঘোষণা

তানিম আহমেদ ও সাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গতকাল জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের একাংশ। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ সাত দফা দাবিতে এর আয়োজন করা হয়। সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদ, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গতকাল জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের একাংশ। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ সাত দফা দাবিতে এর আয়োজন করা হয়। সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদ, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সংসদের নিম্নকক্ষ, উচ্চকক্ষ ও সংরক্ষিত নারী আসন—সব ক্ষেত্রেই ভোটের সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চায় জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু বিএনপিসহ কয়েকটি দলের অবস্থান এর বিপক্ষে। এই অবস্থায় পিআর পদ্ধতিতে ভোটের ঘোষণা দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জামায়াত। সেই দাবি মানা না হলে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায়ের ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গতকাল শনিবার জাতীয় সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেন জামায়াতের নেতারা। সমাবেশে শেষ পর্যায়ে ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে দুই দফা পড়ে যান দলের আমির শফিকুর রহমান। পরে মঞ্চে বসেই সংক্ষেপে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

আমির শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বেলা ২টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৫টার কিছু সময় পরে। তবে শনিবার ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের অবস্থান উদ্যান ছাড়িয়ে আশপাশের সড়ক, রমনা পার্কে ছড়িয়ে পড়ে। সমাবেশের আশপাশের সড়কে বিশাল বিশাল স্ক্রিনের মাধ্যমে সরাসরি দেখানো হয় নেতাদের বক্তৃতা।

এর আগে সকাল থেকেই জামায়াতের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে মঞ্চ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। সমাবেশে পিআর পদ্ধতিতে ভোটের পক্ষের দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। যাতে জামায়াতের নেতারা ছাড়াও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিসের নেতারাসহ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের সদস্য, জুলাই যোদ্ধারা বক্তব্য দেন। তবে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বক্তব্য শুরু করেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। কয়েক মিনিট কথা বলার পর কিছুটা অসুস্থ অনুভব করায় প্রথমে টুপি খুলে বক্তব্য দেন। এরপর কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে তিনি পড়ে যান। নেতা-কর্মীরা তাঁকে উঠিয়ে দিলে আবার বক্তব্য শুরু করেন তিনি। এ সময় তিনি আবার পড়ে যান। তখন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমির গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁর কথা বলা ঠিক হবে না। তবে আমির বসে থাকা অবস্থাতেই বক্তব্য শুরু করেন।

জাতীয় ঐক্যের নামে অহংকার, তুচ্ছতাচ্ছিল্য আর অরাজনৈতিক ভাষা ব্যবহারকারীদের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আবু সাঈদরা যদি বুক পেতে না দিত, হয়তো আজকের বাংলাদেশ আমরা দেখতাম না। অনেকের জীবন হয়তো ফ্যাসিবাদীদের হাতে চলে যেত। আজকে যারা বিভিন্নভাবে দাবিদাওয়া তুলে ধরছেন, তখন তাঁরা কোথায় থাকতেন? সুতরাং অহংকার করে, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, কাউকে ছোট করে কথা না বলি। না হলে আমরা বুঝে নেব, স্বৈরাচারী বীজ তাদের মনে বাসা বেঁধেছে।’

জামায়াত সরকার গঠন করলে কোনো এমপি-মন্ত্রী ভবিষ্যতে সরকারি প্লট গ্রহণ করবেন না বলে ঘোষণা দেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, কোনো এমপি এবং কোনো মন্ত্রী ট্যাক্সবিহীন কোনো গাড়ি চড়বেন না। কোনো এমপি এবং কোনো মন্ত্রী তাঁর নিজের হাতে কোনো টাকা চালাচালি করবেন না। কোনো এমপি এবং কোনো মন্ত্রী যদি তাঁর নির্দিষ্ট কোনো কাজের জন্য বরাদ্দ পেয়ে থাকেন, কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে তাঁরা তার প্রতিবেদন তুলে ধরতে বাধ্য হবেন।

আমির বলেন, ‘চাঁদা আমরা নিব না, দুর্নীতি আমরা করব না। চাঁদা আমরা নিতে দেব না, দুর্নীতি আমরা সহ্য করব না।’

বক্তব্যে জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আজব বাংলাদেশ, চাঁদা না দিলে জীবন শেষ। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে আগামীর বাংলাদেশ, চাঁদা চাইলে জীবন শেষ। এ আইন চালু করতে হবে। তাহলে চাঁদা বন্ধ হয়ে যাবে।’

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কেন্দ্র দখল করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন আরেক নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, টাকা দিয়ে ভোট কেনা যাবে না। এই পদ্ধতি হলে কারচুপি সম্ভব নয়, আর তাই অনেকে এটার বিরোধিতা করছে।

সংস্কার বিষয়ে তাহের বলেন, মিডিয়ার সামনে সবাই সংস্কার চান, কিন্তু মিটিংয়ে বসে অনেকে এমন ভান করেন যেন এসব সংস্কারের কোনো প্রয়োজনই নেই। তাহলে সমস্যা কোথায়? সংস্কার তো সবার কল্যাণেই। যারা সংস্কার চায় না, তাদের ভিন্ন মতলব আছে বলেই মনে হচ্ছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের কথা তুলে ধরে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, সেখানে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে। অবিলম্বে সরকারকে সংবিধানে পিআর পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আজাদ বলেন, ‘এ পদ্ধতি অনুসরণ করে নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে। অন্যথায় রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে এ দাবি আদায় করে ছাড়ব।’

বক্তব্যে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে উচ্চকক্ষ চাই না, এই বক্তব্য যারা দেয়, তারা জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে। বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার বাইরে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।’

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘ফ্যাসিস্টবিরোধী আমাদের যে শক্তি, এদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ থাকতে গিয়ে অন্ধভাবে কারও দালালি করা যাবে না। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু তার সৌন্দর্য নষ্ট করা যাবে না। তবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’

বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন কার্যালয় স্থাপনের সমালোচনা করেন হেফাজতে ইসলামীর নায়েবে আমির মহিউদ্দিন রাব্বানী। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকারের নামে কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কর্মকাণ্ড বরদাশত করব না।’

নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত না করে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) নির্বাচনের দিকে হাঁটবেন না। তাহলে সেটা আরেকটি প্রতারণামূলক নির্বাচনই হবে।’

সমাবেশে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনে নিহত বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘৬ বছর হয়ে গেছে। ছেলে হত্যার বিচার এখনো পাইনি। আমি চাই, দ্রুত যেন আমার ছেলে হত্যার বিচার করা হয়।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রংপুরে নিহত আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী বলেন, ‘দীর্ঘ এক বছর পেরিয়ে গেলেও ভাইয়ের হত্যার বিচারও পাইনি। আমাদের শহীদ ভাইদের হত্যার বিচারের দরকার আছে কি নাই? আমি মনে করি, নির্বাচনের আগে এই শহীদ ভাইদের হত্যার বিচারের রায় প্রয়োজন।’

জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধা তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জুনায়েদুর রহমান বলেন, ‘সংস্কারের নামে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন এখনো চালু রয়েছে। ফ্যাসিবাদের শিকড় যতই গভীরে থাকুক, তার মূলোৎপাটন না করা অব্দি আমাদের লড়াই চলমান থাকবে।’

হিন্দু মহাজোটের সভাপতি গোবিন্দ প্রামাণিক জামায়াতে ইসলামীকে শুধু একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, বরং একটি ‘ইউনিভার্সাল ইউনিভার্সিটি’ আখ্যা দেন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য এ টি এম আজহারুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের, নেজামে ইসলামের মহাসচিব মুসা বিন ইযহার প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। ফাইল ছবি
সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। ফাইল ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে মতপার্থক্য কাটাতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ চেয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক আটটি রাজনৈতিক দল। এ সংলাপে রেফারির ভূমিকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে চেয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের।

যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অফিসে সমমনা আট দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন তাহের। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ হলে সেখানে রেফারির অভাব হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা এখানে একটা রেফারির ভূমিকা পালন করবেন আগের মতো, এটা আমরা আশা করি।’

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত না দিতে পারলে সরকার নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তাহের বলেন, ‘আমরা যে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, তাতে হঠাৎ করে একটি দল বিরোধিতা করছে। আমরা আশা করি, তারা তাদের দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে গণভোট আগে আর পরে করে লাভ নেই; বরং গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ নির্বাচনের দিন হ্যাঁ বা না ভোটে কারও মনোযোগ থাকবে না।’

তাহের আরও বলেন, ‘আমি গতকালকে দলগুলোর মধ্যে একটি আলোচনার আহ্বান করেছিলাম। আজকে উপদেষ্টা পরিষদও সে রকম একটি আহ্বান দলগুলোর কাছে জানিয়েছে। আমরাও দেখতে চাই, প্রধান দলগুলো এই আহ্বানে যেন সাড়া দেয়। তারাও যদি আমাদের মোত একইভাবে সাড়া দেয়, তাহলে একটা রাস্তা বেরিয়ে আসবে।’

প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে ৮ দল

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দফা দাবিতে পঞ্চম পর্বের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের শরিক সমমনা আটটি রাজনৈতিক দল। আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গণমিছিল করে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে তারা।

রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘আমাদের আটটি দলের পাঁচ দফা দাবিতে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছি। অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই পৃথকভাবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করতে হবে। আরপিও সংশোধন করা হলে আমরা সেটা মানব না। অর্থাৎ আরপিও আগের মতোই রাখতে হবে। এগুলোই এখন আমাদের মূল দাবি।’

এসব দাবিতে ৬ নভেম্বর বেলা ১১টায় গণমিছিল করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, দাবি আদায় না হলে ১১ নভেম্বর রাজধানীতে সমাবেশ করবেন তাঁরা।

নতুন কর্মসূচি ঘোষণার আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও ডেভেলপমেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকার সাপলুডু খেলছে: আখতার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার সাপলুডু খেলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আখতার বলেন, ‘অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে লক্ষ করছি, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে সনদ দিয়ে। সরকার নিজেরা উদ্যোগ (সনদ বাস্তবায়নে) না নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ঠেলে দিয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার সাপলুডু খেলছে।’

সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারি করতে হবে বলে দাবি করে আখতার বলেন, ‘সংস্কার ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। অতি দ্রুত সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবি জানাই।’

এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, বিএনপি সংস্কার বাস্তবায়নের পথে বাধা হচ্ছে। সংস্কারকে ধারণ করে না বিএনপি। সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ নির্বাচনকে ভন্ডুল করতে চাচ্ছে। কিন্তু জনগণ এটা হতে দেবে না। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারি করতে হবে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দলীয় মতামত গণভোটে যাওয়া উচিত না। কোন দিন আদেশ জারি করবেন, সেটা সরকারকে জানাতে হবে। প্রধান উপদেষ্টাকে এই আদেশ জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে আদেশ জারি করা হলে ছাত্র-জনতা আবার মাঠে নামবে।

আসনের লোভ দেখিয়ে গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র নষ্টের জন্য একটি দল উঠেপড়ে লেগেছে। গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা জনগণ রুখে দেবে।

বিএনপির আসন ঘোষণা প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া তিন আসনে প্রার্থী হওয়ায় শুভেচ্ছা। তাঁর মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও সুসংহত হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে যেহেতু তিনি নির্বাচন করতে পারছেন, সেহেতু সংস্কার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসুন।’

নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে আমরা স্বাগত জানাই। আসেন, আমরা সবাই মিলে গণতন্ত্র চর্চা করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৭
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শিগগির প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে। ৭- ৮ নভেম্বরের দিকে এই তালিকা ঘোষণা করা হতে পারে বলে এনসিপি সূত্রে জানা গেছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যার পর বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে এনসিপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণাসংক্রান্ত সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি সত্য নয় বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কোনো প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করিনি। তবে ৭-৮ নভেম্বরের দিকে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারি। এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেন, প্রাথমিকভাবে ৭০-১০০ জনের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। কিছু আলাপ চলছে। তবে সেটা এখনো চূড়ান্ত নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তাজনুভা জাবীন। ছবি: সংগৃহীত
তাজনুভা জাবীন। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ২৩৭ আসনের বিপরীতে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এর কিছু সময় পরই দেশের কিছু বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণার খবর প্রচার করা হয়। এ নিয়ে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাবীন।

এক ফেসবুক পোস্টে জাবীন বলেছেন, ‘যাদের প্রার্থী তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হলো, তাদেরটা ব্রেকিং নিউজে জায়গা পেল না, কিন্তু ঠিক একই দিন একই সময় যারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা নিয়ে ব্রেকিং নিউজ যাচ্ছে।’

জাবীন আরও লেখেন, ‘ব্রেকিং নিউজের পেছনের রাজনীতি কী? কী বয়ান মানুষের কাছে দেওয়ার জন্য কারা এত ব‍্যাকুল?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত