Ajker Patrika

নভেম্বরে গণভোট দাবিসহ ইসিতে ১৮ দফা প্রস্তাব জামায়াতের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৪৭
নভেম্বরে গণভোট দাবিসহ ইসিতে ১৮ দফা প্রস্তাব জামায়াতের

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সম্প্রতি বিএনপির ৩৬ দফার পর নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ১৮ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট চাইলেও জামায়াত নভেম্বরে গণভোটের প্রস্তাব জানিয়েছে চিঠিতে।

এদিকে জোটের ভোটে প্রতীক ব্যবহারের ক্ষেত্রে দলগুলোর স্বাধীনতা চেয়েছিল বিএনপি। জামায়াত এর বিরোধিতা করে জোটের ক্ষেত্রে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার পক্ষে মত দিয়েছে এবং ইসির কাছে এই বিধান বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

ইসিতে জমা দেওয়া জামায়াতের ১৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—

১. আইনি ভিত্তি দেওয়ার লক্ষ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির পরই আগামী নভেম্বরে গণভোটের আয়োজন করা।

২. উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত সর্বশেষ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ২০ নম্বর অনুচ্ছেদের সর্বশেষ সংশোধনীর বিধান অনুযায়ী প্রতি রাজনৈতিক দলকে তাদের নিজস্ব দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে হবে। অন্য কোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না। এ বিধান বহাল রাখতে হবে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জোটগতভাবে নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার বিধান অন্তর্ভুক্তির জন্য নির্বাচনব্যবস্থাসংক্রান্ত সংস্কার কমিশনই সুপারিশ করেছে। ফলে এই বিধান কোনোক্রমেই পরিবর্তন করা যাবে না। সংশোধিত বিধানই বহাল রাখতে হবে।

৩. ইসি ও প্রশাসনের প্রতি স্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা।

৪. নির্বাচনী কাজের জন্য নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যথা প্রিসাইডিং, পোলিং, আনসার, আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীকে নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা।

৫. সব ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা।

৬. সব ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনী বুথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার দাবি জানিয়েছে দলটি।

৭. দলটির পক্ষ থেকে বিগত অবৈধ নির্বাচনগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল—এমন সব প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগামী নির্বাচনে নির্বাচনী দায়িত্ব না দেওয়া। শতভাগ লটারির ভিত্তিতে মাঠপর্যায়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসি) নিয়োগ দেওয়া।

৮. রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশাসনের কর্মকর্তার সঙ্গে সঙ্গে সাধ্যমতো ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা।

৯. সব ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে সামরিক বাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করা।

১০. নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে নির্বাচনী মাঠ সমতল করা।

১১. সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এ ছাড়া বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে দলীয় লোকদের রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করে তা সরকারের কাছে জমা দিতে হবে।

১২. নির্বাচনী এলাকাগুলোতে যারা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে থাকে, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

১৩. ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে ভোটকেন্দ্রের নির্ধারিত এলাকার মধ্যেই শুধু নয়, বরং এর বাইরেও নির্বাচনী এলাকার যেকোনো স্থানে সন্ত্রাসী তৎপরতার খবর পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তা দমন করা।

১৪. ছবিসহ ভোটার তালিকায় ভোটারদের ছবি পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে না। তাই স্পষ্ট ছবিসহ ভোটার তালিকা পোলিং এজেন্টদের যথাসময়ে সরবরাহ করা।

১৫. নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত পোলিং ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং আনসার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারী—সবাইকে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাঁদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া।

১৬. প্রবাসী ভোটারদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি সহজ করার জন্য ভোটার আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট যেকোনো একটির মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। রেজিস্টার্ড প্রবাসী ভোটারদের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোকে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সরবরাহ করা।

১৭. নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের রাজনৈতিকসংশ্লিষ্টতা ও নিরপেক্ষতা যাচাই করা।

১৮. ফ্যাসিস্ট আমলে নিজেদের সুবিধামতো ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে সেগুলো এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করার দাবি জানিয়েছে জামায়াত।

বৈঠক শেষে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগেই আগামী নভেম্বরের মধ্যে গণভোট অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে জামায়াত। জুলাই মাসে তৈরি জাতীয় সনদে বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোকে পরিবর্তন করে যে সংস্কারগুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে, সে সম্পর্কে জাতিকে জানাতে হবে। এ ছাড়া একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে নির্বাচনী কেন্দ্রে সহিংসতা সৃষ্টি হতে পারে, দু-চারটা কেন্দ্রে ভোট বন্ধ হলে গণভোটের দশা কী হবে—এমন টেকনিক্যাল সমস্যা আলোচনা করা হয়।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইসিকে অবশ্যই ‘জুলাই সনদ’ ও সংস্কারের বিষয়গুলো পাবলিক করতে হবে, যাতে ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। গণভোট আয়োজনে ইসির পক্ষ থেকে কোনো চ্যালেঞ্জ বা অক্ষমতার কথা জানানো হয়নি।

বিএনপির পক্ষ থেকে ইসলামী ব্যাংকসহ কিছু প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের নিয়োগ না দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে জামায়াত নেতা বলেন, তারা যে প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা বলেছে, তার কোনো একটার মালিকানার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এটিকে ব্যাড ট্র্যাডিশন আখ্যা দিয়ে বলেছে, পাল্টাবিবৃতি বা তালিকা দেওয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরপিও সংশোধনের সিদ্ধান্ত একটি দলের অযৌক্তিক দাবির প্রতি নতি স্বীকার: তাহের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ২০
নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ফাইল ছবি
নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। ওই বার্তায় তিনি নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও সংশোধনের সিদ্ধান্তে সরকারের নিরক্ষেপতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পাশাপাশি নির্বাচনের প্রতীক ব্যবহার, জুলাই সনদের বিষয়েও কথা বলেছেন তিনি।

আজ শনিবার (১ নভেম্বর) গণমাধ্যমকে পাঠানো ভিডিও বার্তায় আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘গত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এর আগের সপ্তাহে গৃহীত আরপিও সংশোধনের সিদ্ধান্ত একটি দলের অযৌক্তিক দাবির কাছে নতি স্বীকারের শামিল। এর মাধ্যমে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।’

এই সরকারের কর্মকাণ্ড অতীতেও একটি বিশেষ দলের প্রতি আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে—এমন অভিযোগ করে তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে গিয়ে একটি দলের চাপে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে পরিষদের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন তারই উদাহরণ।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীক ব্যবহারের বিষয়ে পরিষদের গৃহীত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা সরকারের নিরপেক্ষতার ক্ষতি করেছে বলে মনে করেন এই জামায়াত নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা এই সিদ্ধান্ত মানি না এবং এর নিন্দা জানাই।’

জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, ‘ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা পরিষদ উভয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, প্রতিটি দল নিজ নিজ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবে। আমরা সেই সিদ্ধান্তের পক্ষেই আছি এবং জাতিও এর সঙ্গে একমত। তাই আমরা আগের সিদ্ধান্ত পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় এর বিরুদ্ধে রাজপথে প্রতিবাদ হবে।’

সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত—মন্তব্য করে তাহের বলেন, ‘জনগণ ফেব্রুয়ারিতে একটি জাতীয় নির্বাচন চায়। নির্বাচনের ঠিক আগে এ ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। আমরা আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা কোনো চাপে নতি স্বীকার করবেন না।’

জামায়াত নেতা বলেন, ‘জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাওয়া মানে হবে নিজেরই সংস্কার কর্মসূচি পরিত্যাগ করা। প্রধান উপদেষ্টা নিজের পরিকল্পনাকে নিজ হাতে ধ্বংস করবেন, এটা জাতি বিশ্বাস করে না। আমরা আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ় অবস্থান নেবেন, সংস্কার বাস্তবায়নে সঠিক ও সাহসী সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সম্মেলনের তিন মাস পর রাজশাহী মহানগর কমিটি ঘোষণা বিএনপির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ২১
মামুনুর রশিদ মামুন এবং মাহফুজুর রহমান রিটন। ছবি: সংগৃহীত
মামুনুর রশিদ মামুন এবং মাহফুজুর রহমান রিটন। ছবি: সংগৃহীত

মামুনুর রশিদ মামুনকে সভাপতি এবং মাহফুজুর রহমান রিটনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৪ সদস্যের নাম উল্লেখ করে দলের রাজশাহী মহানগরের আংশিক কমিটি গঠন করেছে বিএনপি।

আজ শনিবার দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

সম্প্রতি রাজশাহী মহানগর বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। মামুনুর রশিদ মামুন সদ্য বিলুপ্ত মহানগর কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন। মাহফুজুর রহমান রিটন যুবদল মহানগরের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নতুন কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি নজরুল হুদা, সহসভাপতি আসলাম সরকার, ওলিউল হক রানা, মো. আলী আশরাফ মাসুম, সফিকুল ইসলাম সাফিক, আবুল কালাম আজাদ সুইট, মুক্তার হোসেন, জয়নাল আবেদিন শিবলী এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বজলুল হুদা মন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম মিলু, ১ নম্বর সদস্য এরশাদ আলী ঈসা ও ২ নম্বর সদস্য মো. মাইনুল আহসান (পান্না)।

রুহুল কবির রিজভী জানান, মামুনুর রশিদ মামুনকে সভাপতি এবং মাহফুজুর রহমান রিটনকে সাধারণ সম্পাদক করে রাজশাহী মহানগর বিএনপির ১৪ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি গঠিত হয়েছে। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় ও ঢাবি কমিটি ঘোষণা, নেই কাদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সদস্যসচিব জাহিদ আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আবু বাকের মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত
সদস্যসচিব জাহিদ আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আবু বাকের মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রশক্তির চার সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার রাতে এই কমিটি প্রকাশ করা হয়। তবে নতুন করে ঘোষিত কমিটির শীর্ষ কোনো পদে ‘বাগছাসের’ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক ও ডাকসুর ভিপিপ্রার্থী আব্দুল কাদেরের নাম দেখা যায়নি।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু বাকের মজুমদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) পুনর্গঠনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় ছাত্রশক্তি। আত্মপ্রকাশের এক সপ্তাহ পর কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হলো। এতে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন বাগছাসের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বাগছাসের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন আবু তৌহিদ মো. সিয়াম (উত্তরাঞ্চল) ও মহির আলম (দক্ষিণাঞ্চল)।

আরও বলা হয়, বালাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের পুনর্গঠনের মাধ্যমে প্রকাশিত জাতীয় ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হলো। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশিত হবে।

আজ পৃথক এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি গঠনের কথাও জানানো হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আল আমিন সরকার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুল্লাহ।

আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ঢাবি শাখারও পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ হবে বলে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাপলা নিয়ে ইসিকে ‘ইগো’ বাদ দিতে বললেন এনসিপি নেতা তুষার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুর অঞ্চলের এনসিপির সমন্বয় সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফরিদপুর অঞ্চলের এনসিপির সমন্বয় সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগে না বলেছি, এখন দিলে কেমন হবে, নির্বাচন কমিশনকে শাপলা প্রতীক নিয়ে এই ‘ইগো’ বাদ দিতে বললেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার।

আজ শুক্রবার এনসিপির ফরিদপুর অঞ্চলের সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ফরিদপুর অম্বিকা মেমোরিয়াল হলরুমে সমন্বয় সভায় ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার নেতারা অংশগ্রহণ করেন।

বিএনপিকে জুলাই সনদে হ্যাঁ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কিন্তু জুলাই সনদে হ্যাঁ ভোট দেবেই। আপনার ৩০% না ভোটের পরেও জুলাই সনদ হ্যাঁ ভোটে জিতবে। এরপর বাংলাদেশের মানুষের কাছে কীভাবে মুখ দেখাবেন, এইটা বিবেচনা করেন।’

সারোয়ার তুষার বলেন, ‘গণভোট নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের অ্যাকটিভস্টরা “না” ক্যাম্পেইন করছে। অথচ এই দল গঠন করেছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার সময় গণভোটের আয়োজন করেছিলেন এবং বিপুলসংখ্যক মানুষ হ্যাঁ ভোট দিয়েছিল। এমন একটি দল আজকে না ভোটের ক্যাম্পেইন করছে।’

তুষার বলেন, ‘তারা আমাদের ভয় দেখাচ্ছে, বিএনপি যদি না ভোট দেয়, তাহলে জুলাই সনদ পাস হবে না। আমরা তাদের বলতে চাই, জুলাই সনদ ব্যাপক মাত্রায় জনগণের ভোটে পাস হবে, তখন বিএনপি আয়নায় মুখ দেখাতে বা টিকতে পারবে না। এখনো সময় আছে, আপনারা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে না দাঁড়িয়ে জুলাই সনদে হ্যাঁ-এর পক্ষে আসেন। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন, চতুর্দশ সংশোধনীতে আপনাদের ভুল রাজনীতির কারণে লগি-বইঠার তাণ্ডবে ১/১১ এসেছিল।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এই দেশ থেকে ভারতের আধিপত্য বিতাড়িত করার একমাত্র রাস্তা হচ্ছে জুলাই সনদকে হ্যাঁ ভোটে জয় করানো। জুলাই সনদ জনগণের হ্যাঁ ভোটে জিতবে এবং যারা না ভোট দেবে, তাদের দুমড়ে-মুচড়ে পদ্মা ও আড়িয়ল খাঁ নদে ছুড়ে ফেলে দেবেন।’

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জনগণ জুলাই সনদে হ্যাঁ ভোটের পাশাপাশি শাপলায় ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। আপনারা দেখেছেন, ফুল চেয়েছি, কলি দিয়েছে এবং এ কলি থেকে সামনে ফুল ফুটবে। আপনারা কলিকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন, তাতে বোঝা যায়, চাইলে শাপলাকেও অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। আপনারা অনেক জল ঘোলা করেছেন আর জল ঘোলা করার দরকার নেই। আর কোনো কথা বলার আগেই আপনারা দ্রুত শাপলা দিয়ে দেন। এতে আপনাদের কোনো পরাজয় হবে না। মাননীয় ইলেকশন কমিশনার, এটা নিয়ে ইগো করার দরকার নেই, যে আগে না বলেছি, এখন দিলে কেমন হবে।’

ফরিদপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী সৈয়দা নীলিমা দোলার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন যুগ্ম সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক রাসেল আহম্মেদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত