Ajker Patrika

সরকারের উন্নয়নের কথা শুনে মানুষ বেকুব হয়ে যাচ্ছে: মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৪৯
সরকারের উন্নয়নের কথা শুনে মানুষ বেকুব হয়ে যাচ্ছে: মান্না

এ দেশের উন্নয়নের কথা শুনে কেউ বিস্মিত হচ্ছে না, বেকুব হয়ে যাচ্ছে। সাড়ে ৩ কোটি মানুষ প্রায় দরিদ্র হয়ে গেছে। তারপরও ওনারা বলছেন, ‘আমরা উন্নয়নের মডেল তৈরি করছি।’

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত কল্যাণরাষ্ট্র ভাবনাবিষয়ক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। 

মান্না বলেন, ‘এই সরকারকে মানুষ পছন্দ করে না, সামগ্রিকভাবে ভোট ডাকাতি করার কারণে, দুঃশাসন চালানোর জন্য, শুধু এক ব্যক্তির কাছে সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার কারণে আজ মানুষ তাদের পছন্দ করে না। এ সরকার সত্য কথা বললেও মানুষ বিশ্বাস করে না। মানুষের সুখও একটা বড় জিনিস। আমার কাছে টাকা আছে, কিন্তু রাস্তায় বের হলে হঠাৎ কোনো এক গাড়ি আমাকে চাপা দিতে পারে। সেটা সিটি করপোরেশনের গাড়ি অথবা সুন্দর কোনো গাড়ি। আমার রাস্তায় কোনো নিরাপত্তা নেই, চলাফেরায় কোনো নিরাপত্তা নেই। আমি যে টাকা বেতন পাই, তা দিয়ে চলে না। কারণ, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। উন্নয়ন আমি সেইটাকেই বলব যেটা মানুষের সমস্ত প্রয়োজন মিটিয়ে সমতার দিকে নিয়ে যায়।’ 

সরকারকে ফাঁকিবাজ আখ্যা দিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ফাঁকি দিয়ে মানুষের ভোট কেড়ে নেয়, ফাঁকি দিয়ে মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়, ফাঁকি দিয়ে অর্থনীতি বোঝায়, জিডিপিনির্ভর উন্নয়নও এ রকম ফাঁকি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছে।’ 

নিজেদের কল্যাণরাষ্ট্র ভাবনার ব্যাপারে বলতে গিয়ে সাবেক এই ডাকসু ভিপি বলেন, ‘অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে জন্য নাগরিক ঐক্যের কথা বলছি, সোশ্যাল অর্গানাইজেশনের কথা বলছি। ক্ষমতায় গিয়ে কল্যাণের কাজ করতে হবে। অনেকেই হয়তো খেয়াল করবেন, বিএনপি কল্যাণরাষ্ট্রের কথা বলে, আওয়ামী লীগ কল্যাণরাষ্ট্রের কথা বলে, জামায়াতে ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্রের কথা বলে। তারা যদি কল্যাণরাষ্ট্রের কথা বলে থাকে তাহলে আজ কেন বেগম জিয়াকে চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে ধরনা দিতে হচ্ছে?’ 

পরিবেশ আইনজীবী সমিতি-বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা এমন এক দেশে বসবাস করি যেখানে করোনার সময় অনেক বড়লোকেরা চার্টার্ড প্লেনে করে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়। যখনই বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে তারা দেশ ছেড়েছে। আমরা এমন একটা রাষ্ট্রে আছি আমরা সংগত কারণে আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। কিন্তু এখনো দেখেন আমাদের একজন রাজনৈতিক নেত্রী তাঁর চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। এটার মানে হচ্ছে আমরা এখনো দেশটাকে সেভাবে প্রস্তুত করতে পারিনি।’

রেজওয়ানা বলেন, ‘কল্যাণরাষ্ট্র বলতে আমরা পুলিশ রাষ্ট্রের বিপরীত রাষ্ট্র বুঝি। আমার শিক্ষা, আমার স্বাস্থ্য ও আমার সামাজিক নিরাপত্তা এক পাশে রেখে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা কোনো উন্নয়ন নয়। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্র কোনো চাহিদার বিষয় না। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া তাদের অন্যতম চাহিদা।’ 

সভা সঞ্চালনা করেন নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় সদস্য ডাক্তার জাহেদুর রহমান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দলের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মমিনুল ইসলাম, জিন্নুর চৌধুরী দিপু, মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, মাহবুব মুকুল, আনিসুর রহমান খসরু, মঞ্জুর কাদির, বেগ শাহিন জাহান, শাহনাজ রানু, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত