Ajker Patrika

কমিউনিটি পুলিশিংসহ পুলিশ সংস্কারে যেসব প্রস্তাব দিল বিএনপি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪: ২১
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএনপির পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রধান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএনপির পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রধান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইউনিয়ন ও শহরাঞ্চলের ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ধারণা দিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি, পুলিশ বাহিনীকে সঠিক দিকনির্দেশনা, পরামর্শ এবং সহায়তা প্রদানে একটি পুলিশ কমিশন গঠনের কথাও বলেছে দলটি। এ ছাড়া, স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশের কার্যক্রমে সহায়তা দিতে নাগরিক কমিটি গঠনের কথাও বলেছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএনপির পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রধান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন।

বিএনপির দেওয়া প্রস্তাবগুলো হলো—

১. পুলিশ বাহিনীকে সঠিক দিকনির্দেশনা, পরামর্শ এবং সহায়তা প্রদানের জন্য একটি পুলিশ কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। কমিশনের কার্য পরিধির মধ্যে থাকবে—

(ক) পুলিশের জনবান্ধব ও গ্রহণযোগ্য আচরণ নিশ্চিত করা।

(খ) বাহিনীর কল্যাণ ও উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ।

(গ) বাহিনী পরিচালনায় প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন।

(ঘ) বাহিনীর সম্প্রসারণ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ।

(ঙ) সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে উন্নত বিশ্বের অনুকরণে আধুনিক প্রশিক্ষণ প্রদান।

(চ) সর্বোচ্চ বিভাগীয় কমান্ড কর্তৃক প্রচলিত আইন ও বিধির ব্যত্যয় ঘটার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ।

(ছ) রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পুলিশকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান।

(জ) দায়িত্ব পালনকালে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি রোধকল্পে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান।

(ঝ) সরকার কর্তৃক নির্দেশিত বিশেষ দায়িত্ব পালন।

কমিশনের চেয়ারম্যান হবেন স্বরাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান।

সদস্য ৮ (আট) জন হবেন—সরকার দলীয় সংসদ সদস্য (২ জন), বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য (১ জন), বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক (১ জন), উচ্চ আদালতের আইনজীবী (১ জন), সমাজের বিশিষ্ট নাগরিক (২ জন), স্বরাষ্ট্রসচিব মনোনীত অতিরিক্ত সচিব (১ জন)। আইজিপি মনোনীত একজন অতিরিক্ত আইজি হবেন সদস্যসচিব।

জাতীয় সংসদ বলবৎ না থাকলে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারক। সরকার বিধিবিধান দ্বারা এই কমিশনের সদস্য নির্বাচন পদ্ধতি, কাজের পরিধি ও কর্মকাল নির্ধারণ করবেন।

২. স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশকে অপরাধ দমনে সহায়তা প্রদান, জনসাধারণ পুলিশ সম্পর্ক উন্নয়নে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পরামর্শ প্রদানের জন্য প্রত্যেক উপজেলা/থানায় একটি নাগরিক কমিটি গঠন করা হবে। স্থানীয় গণ্যমান্য, সুশিক্ষিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিবর্গ সমন্বয়ে এই কমিটি গঠিত হবে।

কমিটির সভাপতি হবেন একজন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি। সদস্যসচিব হবেন সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ ছাড়া ২ (দুই) জন ইউপি সদস্য, ১ (এক) জন শিক্ষক, ১ (এক) জন ব্যবসায়ী, ১ (এক) জন পেশ ইমাম এবং সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রতিনিধি কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে ২ (দুই) বছর সময়কালের জন্য এই নাগরিক কমিটি গঠন করবেন।

৩. পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে থাকা র‍্যাব ইতিমধ্যে দেশে এবং বিদেশে ব্যাপকভাবে নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছে। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন, জাতিসংঘ, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং সুধীজন র‍্যাবকে দেশে সংঘটিত অধিকাংশ গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের জন্য দায়ী করেছে। বাহিনীটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে। এই প্রেক্ষাপটে র‍্যাবকে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করা হলো। র‍্যাবের দায়িত্ব আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং থানা-পুলিশ যেন পালন করতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪. কমিউনিটি কর্তৃক পরিচালিত পুলিশি ব্যবস্থাকেই বলা হয় কমিউনিটি পুলিশিং। এর উদ্দেশ্য হলো জনগণের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে অপরাধ দমন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সামাজিক সমস্যাদি সমাধানে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাজে বিবিধ অপরাধপ্রবণতা এবং সামাজিক অস্থিরতা কমবে, পুলিশ-জনসাধারণের মধ্যে দূরত্ব হ্রাস পাবে, জনসচেতনতা বাড়বে এবং আইনের শাসন জোরালো হবে।

এই উদ্দেশ্যে গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি ইউনিয়নে এবং শহরাঞ্চলে প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে একজন অবসরপ্রাপ্ত কমিউনিটি পুলিশ অফিসার (সাব-ইন্সপেক্টর পদের নিম্নে নয়) নিয়োজিত হবেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় তার একটি অস্থায়ী দপ্তর থাকবে। উক্ত অফিসার নিয়মিতভাবে এলাকার গণপ্রতিনিধি, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, ইমাম, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, মহিলা সমাজ, কৃষক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করবেন। সবার অংশগ্রহণে প্রাপ্ত সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে কমিউনিটি পুলিশ অফিসার সংশ্লিষ্ট এলাকায় অপরাধ দমন ও নিবারণে দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ ছাড়া এলাকায় জমির সীমানা, সম্পদের মালিকানা, মানহানি বা অন্যবিধ কারণে অধিবাসীদের মধ্যে মতবিরোধ, গৃহবিবাদ, শিশু ও নারী নির্যাতন, মাদক গ্রহণ, জুয়াখেলা, সুদ-ব্যবসা, গ্যাং কালচার, সাম্প্রদায়িক উসকানি ইত্যাদি আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা চালাবেন। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনি পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করবেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পুলিশ ও জনগণ মিলে নিরাপত্তা পেট্রলিংয়ের ব্যবস্থা নেবেন। নিয়োজিত কমিউনিটি পুলিশ অফিসারের বেতন-ভাতা সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ বহন করবেন।

কমিউনিটি পুলিশ অফিসার প্রতি মাসে তার গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে উপজেলা/থানা নাগরিক কমিটি এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উক্ত প্রতিবেদনে তার নিজের গৃহীত ব্যবস্থার বিবরণ লিপিবদ্ধ করে তা সার্কেল এএসপি/জোনাল এসির মাধ্যমে এসপি/ক্রাইম ডিসির কাছে পাঠাবেন। এসপি/ক্রাইম ডিসি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠাবেন। পুলিশ সদর দপ্তরে কমপক্ষে একজন অতিরিক্ত আইজি সারা দেশের এই কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যক্রম মনিটর করবেন এবং কর্তৃপক্ষের আদেশ-নির্দেশ ও দিকনির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে প্রতিপালনের জন্য পাঠাবেন। প্রতি মাসে প্রতি থানায় ‘শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশ অফিসার’ নির্ধারণ করা হবে এবং তাঁকে যথাযথ পুরস্কারে ভূষিত করা হবে।

৫. বাংলাদেশ পুলিশে বর্তমান জনবল প্রায় সোয়া ২ (দুই) লাখ। এঁদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যসংখ্যা যুক্ত হলে তা দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ৮ (আট) লাখ। এঁদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করার দায়িত্ব প্রতিটি বিভাগ বা জেলায় স্থাপিত পুলিশ হাসপাতালের। বর্তমানে এই সেবা বেশ অপ্রতুল বিধায় প্রতিটি জেলা শহরে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও জনবলসহ পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপন/সম্প্রসারণ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, রাজারবাগ, ঢাকা ছাড়া অন্য কোনো বিভাগীয়/জেলা হাসপাতালের কোথাও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান বা সরঞ্জাম নেই। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাঁদের সন্তানসন্ততিদের চিকিৎসা সেবা প্রদানকল্পে রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের অনুরূপ প্রতিটি বিভাগীয়/মেট্রোপলিটন শহরে বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিচালনা করা যেতে পারে। এই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ডাক্তার, টেকনিশিয়ান এবং যন্ত্রপাতি সন্নিবেশের প্রয়োজন হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম পান্না। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম পান্না। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিন ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের বেঞ্চ পৃথক শুনানির মাধ্যমে তাঁদের ছয় মাসের জামিন দেন।

লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না এবং মঞ্জুরুল আলমের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম ইব্রাহিম খলিল।

গত ২৯ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাবি অধ্যাপক কার্জনসহ ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে কারাগারে রয়েছেন লতিফ সিদ্দিকী।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২৮ আগস্ট রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির অডিটোরিয়ামে ‘মঞ্চ ৭১’ এর ব্যানারে একটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত থেকে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দেন এবং অন্যদের প্ররোচিত করেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া ৭০ থেকে ৮০ জনের মধ্যে ১৬ জনকে আটক করে পুলিশ।

এ ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন এসআই আমিরুল ইসলাম। পরে এ মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যমুনায় স্মারকলিপি নিয়ে জামায়াতসহ ৮ দলের প্রতিনিধিরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ২৭
স্মারকলিপি জমা দিতে যমুনার পথে জামায়াতসহ ৮টি দলের প্রতিনিধি দল। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্মারকলিপি জমা দিতে যমুনার পথে জামায়াতসহ ৮টি দলের প্রতিনিধি দল। ছবি: আজকের পত্রিকা

নির্বাচনের আগে গণভোট ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি জমা দিতে যমুনায় গিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলের একটি প্রতিনিধিদল।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পল্টন থেকে মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবন মোড় পর্যন্ত আসেন ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। পরে সেখান থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি স্মারকলিপি নিয়ে যমুনায় প্রবেশ করে।

প্রতিনিধিদলে রয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ফজলে বারী মাসউদসহ অন্যান্য দলের শীর্ষ নেতারা।

এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বর এবং কাকরাইল মোড়ে জড়ো হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। সকাল ১০টায় বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে আসেন তাঁরা।

স্মারকলিপি জমা দিতে যমুনার পথে জামায়াতসহ ৮টি দলের প্রতিনিধি দল। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্মারকলিপি জমা দিতে যমুনার পথে জামায়াতসহ ৮টি দলের প্রতিনিধি দল। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রচার সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন জানান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে পল্টন মোড় অভিমুখে মিছিল শুরু হয়। জামায়াতের অন্যান্য শাখাও যুক্ত হয় এই মিছিলে। সেখানে অন্যান্য ইসলামী দল একত্রে উপস্থিত হয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পেশ করতে যান তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাপলা চত্বর ও কাকরাইলে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীদের অবস্থান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
শাপলা চত্বর ও কাকরাইলে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীদের অবস্থান

নির্বাচনের আগে গণভোট ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেবে আন্দোলনরত আট দল।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বর এবং কাকরাইল মোড়ে জড়ো হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। সকাল ১০টায় বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে আসেন তাঁরা।

জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রচার সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন জানান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে পল্টন মোড় অভিমুখে মিছিল শুরু হবে। জামায়াতের অন্যান্য শাখাও যুক্ত হবে এই মিছিলে। সেখানে অন্যান্য ইসলামী দল একত্রে উপস্থিত হয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হবে।

এরপর প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পেশ করতে যাবেন তাঁরা। মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেবেন নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা: মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের সমর্থকদের বিক্ষোভ

  • কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে রেললাইনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ।
  • জামান মোল্লার মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবি সমর্থকদের।
  • এসব কর্মসূচির কারণে দিনভর সাধারণ মানুষের ভোগান্তি।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ অবরোধ করে কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-লালমাই) আসনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা রেললাইনের ওপর টায়ার জ্বালান। গতকাল বিকেলে নাঙ্গলকোট উপজেলার রেলস্টেশনে।	 ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ অবরোধ করে কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-লালমাই) আসনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা রেললাইনের ওপর টায়ার জ্বালান। গতকাল বিকেলে নাঙ্গলকোট উপজেলার রেলস্টেশনে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গত সোমবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বিএনপি। ঘোষণার পরপরই বিভিন্ন স্থানে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের সমর্থকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। গতকাল বুধবারও তাঁদের আন্দোলন অব্যাহত ছিল। এদিন নাম ঘোষণার পর মনোনয়ন স্থগিত রাখা মাদারীপুর-১ আসনের কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা সড়ক অবরোধ করেন।

রেললাইনে আগুন

রেললাইনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন কুমিল্লা-১০ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতা মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার নেতা-কর্মীরা। গতকাল নাঙ্গলকোট রেলস্টেশন এলাকায় এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা বিক্ষোভে পার্শ্ববর্তী লাকসাম রেলস্টেশনে সাগরিকা এক্সপ্রেস ও হাসানপুর স্টেশনে মহানগর গোধূলি আটকা পড়ে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পান সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া। আন্দোলনকারীদের দাবি, দীর্ঘদিন নাঙ্গলকোট ও লালমাই অঞ্চলে বিএনপির জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করা মোবাশ্বের আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হোক। তাঁরা মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন।

এ ছাড়া কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের নারী সমর্থকদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। গতকাল বিকেলে নগরীর ধর্মসাগরপাড়ে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি শুরু হয়। নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূবালী চত্বরে মিছিল শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি করা হয়। এ সময় তাঁরা সাবেক সংসদ সদস্য ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইয়াছিনকে দলীয় প্রার্থী করার দাবি তোলেন।

প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ

ময়মনসিংহ-৩ আসনের ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইনের প্রার্থিতা বদলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন মনোনয়নবঞ্চিত আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরনের সমর্থকেরা। গতকাল বিকেলে গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সহস্রাধিক কর্মী-সমর্থক বিক্ষোভ করেন। এ সময় পৌর শহরে সড়কে যানজট তৈরি হয়।

এদিকে মুন্সিগঞ্জ-১ (সিরাজদিখান-শ্রীনগর) আসনে ঘোষিত দলীয় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা। গতকাল দুপুরে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়ী এলাকায় এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মমিন আলীর শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন।

চাঁদপুর-৪ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতা এম এ হান্নানের অনুসারীরা টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। এ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংকিং ও রাজস্ববিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদকে প্রার্থী করা হয়েছে। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এম এ হান্নানের কর্মী-সমর্থকেরা এর বিরোধিতা করছেন।

অবরোধ চলাকালে হান্নানের সমর্থকেরা ফরিদগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এতে সড়কে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। এ সময় নেতা-কর্মীদের হাতে লাঠিসোঁটা দেখা যায়।

জামান মোল্লার সমর্থকদের বিক্ষোভ

মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত রাখার ঘটনায় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে গতকাল থেকে শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে অবস্থান নেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে প্রার্থী ঘোষণার সময় মাদারীপুর-১ আসনে জামানের নাম বলা হয়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করেন মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর সমর্থকেরা। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় দপ্তর থেকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে এ আসনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে।

এদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শহিদুল আলমকে মনোনয়ন না দেওয়ায় বিক্ষোভ-আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর সমর্থকেরা। গতকাল বিকেলে শহিদুলকে ধানের শীষের প্রার্থী করার দাবিতে কালীঞ্জ ব্রিজ থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মানববন্ধন করেন কর্মী-সমর্থকেরা।

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকায় আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিরা]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত