Ajker Patrika

আমাদের লক্ষ্য দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা: মুফতি রেজাউল করীম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় প্রেসক্লাবে ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর আয়োজিত শীর্ষক সিরাত কনফারেন্সে বক্তব্য দিচ্ছেন মুফতি রেজাউল করীম। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় প্রেসক্লাবে ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর আয়োজিত শীর্ষক সিরাত কনফারেন্সে বক্তব্য দিচ্ছেন মুফতি রেজাউল করীম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুফতি রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, ‘আমাদের রাজনীতি কোনো মন্ত্রিত্ব বা এমপিত্বের জন্য নয়, আমাদের লক্ষ্য এই দেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা। আর এই কল্যাণ রাষ্ট্রের নীতি হলো ইসলাম।’

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর আয়োজিত ‘কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় রাসুল (সা.)-এর শিক্ষা’ শীর্ষক সিরাত কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতি রেজাউল করীম আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের পর যখন ভারতের মিডিয়াতে সংখ্যালঘুদের নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছিল, তখন ইসলামী নীতি-আদর্শে বিশ্বাসীরাই কিন্তু তাদের জানমাল, ইজ্জত ও উপাসনালয় রক্ষায় পাহারার দায়িত্ব পালন করেছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা যখন থমকে গিয়েছিল, তখন তারাই রাস্তায় ট্রাফিক সামলানোর কাজ করেছে। এই হলো আমাদের আদর্শের বাস্তবতা। অন্যদিকে গতানুগতিক রাজনৈতিক দলগুলো কী করেছে? যখন মায়ের বুক খালি হয়েছে, যখন সন্তানের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়েছে, তখন তারা নেমেছে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কেস-বাণিজ্য আর নিজেদের মধ্যে খুনোখুনিতে। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা দেশকে অশান্তির আগুনে পুড়িয়েছে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কথা বলা হচ্ছে মন্তব্য করে মুফতি রেজাউল করীম বলেন, ‘বলা হচ্ছে, আমরা নাকি কোথা থেকে এলাম! গত ১৫ বছর ধরে আমাদের একজন এমপিও সংসদে যাননি। এর মানে এই নয় যে আমাদের সুযোগ ছিল না। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি—সবাই আমাদের ক্ষমতার অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি।’

চরমোনাই পীর আরও বলেন, ‘দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে আমরা দেশের নির্বাচনপদ্ধতির সংস্কার চেয়েছি। ৫৩ বছর ধরে যে প্রহসনের নির্বাচন দেখে এসেছি, যেখানে দিনের ভোট রাতে বাক্সবন্দী হয়, যেখানে কেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়, সেই পদ্ধতি আমরা আর চাই না। এই পদ্ধতি বহু মায়ের বুক খালি করেছে, বহু জীবন পঙ্গু করেছে।’

রেজাউল করীম আরও বলেন, ‘আমরা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনপদ্ধতির প্রস্তাব করেছি। এই পদ্ধতি যদি কার্যকর হয়, তাহলে প্রতিটি ভোটারের ভোটের সঠিক মূল্যায়ন হবে। সব দলের প্রতিনিধি সংসদে যাওয়ার সুযোগ পাবে। ফ্যাসিবাদী চরিত্র তৈরির প্রবণতা কমে যাবে। এমপিরা সংসদে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন, এলাকায় গিয়ে চাঁদাবাজি বা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবেন না। আমাদের এই প্রস্তাবকে যারা ‘‘খায় না মাথায় দেয়’’ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, তারা আসলে দেশের ভালো চায় না। তারা নিজেদের ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থকে বড় করে দেখে।’

অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফী, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি ইসমাইল সিরাজী আল মাদানী, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমদ সাকী এবং জাতীয় ওলামা পরিষদ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মুফতি আবু মোহাম্মদ রহমানি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত