Ajker Patrika

ভোটের মাঠে জোটের আলাপ

  • তিন দলের একই কর্মসূচিতে জোটের আলাপ চাঙা।
  • বিএনপি ও জামায়াত ভাবছে সমমনাদের নিয়ে।
  • যদিও দলগুলো বলছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের সময় আসেনি।
  • জোট না করে স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার কথা বলছে এনসিপি।
রেজা করিম অর্চি হক, ঢাকা 
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ঘোষণা অনুযায়ী পাঁচ মাস পর আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। সে হিসাবে ভোটের তফসিল ঘোষণার সময় হাতে আছে আর মাত্র তিন-সাড়ে তিন মাস। কিন্তু জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও ভোটের পদ্ধতিসহ কিছু বিষয় নিয়ে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এখন পরিষ্কার দুই ধারায় বিভক্ত। এ বিষয়ে আলোচনা ও দর-কষাকষির মধ্যে একই দাবি ও কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ তিনটি দল।

ভোটের মাঠে তাই হঠাৎ করে চাঙা হয়েছে জোটের আলাপ। তবে কি দলগুলো সমমনাদের সঙ্গে নিয়ে শক্তি বাড়াতে চাইছে? ভোট সামনে রেখে দলগুলো কি জোট গড়ার চেষ্টায় আছে?

গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগবিহীন ভোটের মাঠে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে প্রধান দল হয়ে উঠেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মূলত এই তিন দলকেই ভোটের মাঠের প্রধান শক্তি হিসেবে ধরা হচ্ছে, আর নির্বাচনী জোটের আলাপও ঘুরছে তাদের কেন্দ্র করে।

বিগত সরকারের সময় সমমনা দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল বিএনপি। সেই দলগুলোকে নিয়ে এখনো এক ছাতার নিচেই আছে দলটি। পাশাপাশি অন্য আরও দলকে কীভাবে এই ছাতার নিচে আনা যায়, সে নিয়ে ভেতরে-ভেতরে চেষ্টা চলছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

একইভাবে জামায়াতে ইসলামীও তাদের সমমনাদের সঙ্গে নিয়ে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। তবে নির্বাচন ঘিরে দলগুলোর সম্মিলিত যাত্রা জোট-মোর্চায় গড়াবে নাকি, অন্য কোনো কাঠামোয় রূপ নেবে, তা এখনো ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন দলগুলোর নেতারা।

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া দলগুলোকে সঙ্গে নিয়েই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে বিভিন্ন সময়ে। এসব আলোচনার ভিত্তিতেই বিএনপি ও সমমনারা একসঙ্গে নির্বাচন করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। তবে জোট হবে, নাকি আসন সমঝোতা হবে—সে নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এক্ষেত্রে অন্তত অর্ধশত আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স গতকাল মঙ্গলবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, জোটের বিষয়ে এখনো বলার সময় আসেনি। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর এ বিষয়টি দৃশ্যমান হবে। তবে সব ধরনের চিন্তা মাথায় রেখে কাজ করতে হয়, বিএনপি তা-ই করছে।

বিএনপির সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে সমমনা দলের নেতাদের অনেকে বলেছেন, নির্বাচনে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করবেন। এ নিয়ে পারস্পরিক আলোচনা চলছে। তবে এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। জানতে চাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে জোট-মোর্চা হবে, নাকি আসন সমঝোতা হবে—এসব নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করব। এরপর এ বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে কথা বলব, যুগপৎ আন্দোলনে আরও যারা শরিক রয়েছে বা প্রগতিশীল দল রয়েছে, তাদের সঙ্গেও আলোচনা করব।’

নির্বাচনে জয়ের পাল্লা ভারী করতে ইসলামপন্থী দলগুলোকে নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী জোট করার আলাপ এর মধ্যেই বেশ পুরোনো হয়ে গেছে। দলটির সূত্র বলছে, এককভাবে নির্বাচন করে বড় জয় পাওয়া বর্তমান বাস্তবতায় বেশ দুরূহ। এ বাস্তবতা মেনে নিয়েই ইসলামপন্থী দলগুলোকে শেষ পর্যন্ত কাছে রাখার চেষ্টা করছে জামায়াত। দীর্ঘদিন ধরে দলগুলোর সঙ্গে চলছে আলোচনা ও নিবিড় যোগাযোগ। এর মধ্যেই অভিন্ন দাবিতে রাজপথে পৃথক কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াত এবং আরও দুটি ইসলামপন্থী দল—ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফতে মজলিস। এভাবেই একসঙ্গে থেকে মাঠ গরম রেখে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

জোট গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘এটা (নির্বাচনী জোট) আরও পরের কথা। জুলাই চেতনার সঙ্গে থাকা সব দলের সঙ্গে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’

এদিকে নির্বাচনী জোট নিয়ে বেশি না ভেবে আপাতত সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় রয়েছে এনসিপি। জোটে যাওয়ার আগে নিজেদের সাংগঠনিক ভিত্তি আরও মজবুত করতে চাইছেন দলটির নেতারা।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো জোটের কথা আমরা এখনো ভাবছি না। আমরা এখন আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম এবং ভিত্তি শক্ত করতে চাচ্ছি। আপাতত আমাদের মূল লক্ষ্য, ঢাকা এবং সারা দেশে সাংগঠনিক ভিত্তি সুদৃঢ় করা।’

তবে এনসিপিসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনী জোটের বিষয়ে দলের নেতাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা চলছে। একটি অংশ জামায়াতের সঙ্গে জোট বাঁধতে আগ্রহী। বাম ঘরানার আরেকটি অংশ আবার জামায়াতের মতো ইসলামপন্থী দলের সঙ্গে জোট চায় না। তারা এনসিপির স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করতে চায়। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দুই ছাত্র উপদেষ্টার একজন বিএনপির সঙ্গে এনসিপির জোট চান বলে দলটির ভেতর থেকে শোনা যাচ্ছে।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সে অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করার কথা বলছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু জুলাই সনদের বিষয়টি সুরাহা হয়নি। সনদের কাঠামো ঠিক হয়ে গেলেও গোল বেধেছে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে। নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দাবি করছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) আরও কয়েকটি দল। অন্যদিকে পিআর পদ্ধতি নিয়েও বিএনপির সঙ্গে মতভিন্নতা চলছে দলগুলোর। এসব বিষয় নিয়ে যখন আলোচনা চলছ, তখন দাবি আদায়ে রাজপথে কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ তিনটি দল। আবার এই কর্মসূচি ঘিরে পাল্টা বক্তব্য আসছে বিএনপির পক্ষ থেকেও। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে একমত থাকলেও আলোচনার মধ্যেই রাজপথের কর্মসূচির বিষয়ে দলটির সঙ্গে দ্বিমত রয়েছে এনসিপির।

গতকাল গুলশানের বাসায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ প্রস্তুত হয়ে গেছে। এখন তা স্বাক্ষরের অপেক্ষার আছে। বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এ নিয়ে আন্দোলন বা রাজপথে নামা অনুচিত। নির্বাচনকে বিলম্বিত অথবা বাধাগ্রস্ত করার জন্য যেকোনো কৌশলকে দেশের জনগণ প্রতিহত করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির এই নেতা।

এ প্রসঙ্গে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জামায়াতের যুগপৎ আন্দোলনে আমরা আপাতত যাচ্ছি না। কিন্তু তাদের একটি দাবির সঙ্গে আমরা সহমত, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। আরেকটি দাবি হচ্ছে, জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, সেটাও আমরা সমর্থন করি। তবে আলোচনা চলাকালে রাস্তায় আন্দোলন স্ববিরোধী অবস্থান সৃষ্টি করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। ফাইল ছবি
সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। ফাইল ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে মতপার্থক্য কাটাতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ চেয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক আটটি রাজনৈতিক দল। এ সংলাপে রেফারির ভূমিকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে চেয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের।

যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অফিসে সমমনা আট দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন তাহের। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ হলে সেখানে রেফারির অভাব হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা এখানে একটা রেফারির ভূমিকা পালন করবেন আগের মতো, এটা আমরা আশা করি।’

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত না দিতে পারলে সরকার নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তাহের বলেন, ‘আমরা যে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, তাতে হঠাৎ করে একটি দল বিরোধিতা করছে। আমরা আশা করি, তারা তাদের দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে গণভোট আগে আর পরে করে লাভ নেই; বরং গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ নির্বাচনের দিন হ্যাঁ বা না ভোটে কারও মনোযোগ থাকবে না।’

তাহের আরও বলেন, ‘আমি গতকালকে দলগুলোর মধ্যে একটি আলোচনার আহ্বান করেছিলাম। আজকে উপদেষ্টা পরিষদও সে রকম একটি আহ্বান দলগুলোর কাছে জানিয়েছে। আমরাও দেখতে চাই, প্রধান দলগুলো এই আহ্বানে যেন সাড়া দেয়। তারাও যদি আমাদের মোত একইভাবে সাড়া দেয়, তাহলে একটা রাস্তা বেরিয়ে আসবে।’

প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে ৮ দল

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দফা দাবিতে পঞ্চম পর্বের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের শরিক সমমনা আটটি রাজনৈতিক দল। আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গণমিছিল করে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে তারা।

রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘আমাদের আটটি দলের পাঁচ দফা দাবিতে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছি। অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই পৃথকভাবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করতে হবে। আরপিও সংশোধন করা হলে আমরা সেটা মানব না। অর্থাৎ আরপিও আগের মতোই রাখতে হবে। এগুলোই এখন আমাদের মূল দাবি।’

এসব দাবিতে ৬ নভেম্বর বেলা ১১টায় গণমিছিল করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, দাবি আদায় না হলে ১১ নভেম্বর রাজধানীতে সমাবেশ করবেন তাঁরা।

নতুন কর্মসূচি ঘোষণার আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও ডেভেলপমেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকার সাপলুডু খেলছে: আখতার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার সাপলুডু খেলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আখতার বলেন, ‘অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে লক্ষ করছি, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে সনদ দিয়ে। সরকার নিজেরা উদ্যোগ (সনদ বাস্তবায়নে) না নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ঠেলে দিয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার সাপলুডু খেলছে।’

সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারি করতে হবে বলে দাবি করে আখতার বলেন, ‘সংস্কার ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। অতি দ্রুত সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবি জানাই।’

এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, বিএনপি সংস্কার বাস্তবায়নের পথে বাধা হচ্ছে। সংস্কারকে ধারণ করে না বিএনপি। সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ নির্বাচনকে ভন্ডুল করতে চাচ্ছে। কিন্তু জনগণ এটা হতে দেবে না। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারি করতে হবে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দলীয় মতামত গণভোটে যাওয়া উচিত না। কোন দিন আদেশ জারি করবেন, সেটা সরকারকে জানাতে হবে। প্রধান উপদেষ্টাকে এই আদেশ জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে আদেশ জারি করা হলে ছাত্র-জনতা আবার মাঠে নামবে।

আসনের লোভ দেখিয়ে গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র নষ্টের জন্য একটি দল উঠেপড়ে লেগেছে। গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা জনগণ রুখে দেবে।

বিএনপির আসন ঘোষণা প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া তিন আসনে প্রার্থী হওয়ায় শুভেচ্ছা। তাঁর মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও সুসংহত হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে যেহেতু তিনি নির্বাচন করতে পারছেন, সেহেতু সংস্কার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসুন।’

নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে আমরা স্বাগত জানাই। আসেন, আমরা সবাই মিলে গণতন্ত্র চর্চা করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৭
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শিগগির প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে। ৭- ৮ নভেম্বরের দিকে এই তালিকা ঘোষণা করা হতে পারে বলে এনসিপি সূত্রে জানা গেছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যার পর বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে এনসিপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণাসংক্রান্ত সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি সত্য নয় বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কোনো প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করিনি। তবে ৭-৮ নভেম্বরের দিকে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারি। এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেন, প্রাথমিকভাবে ৭০-১০০ জনের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। কিছু আলাপ চলছে। তবে সেটা এখনো চূড়ান্ত নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তাজনুভা জাবীন। ছবি: সংগৃহীত
তাজনুভা জাবীন। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ২৩৭ আসনের বিপরীতে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এর কিছু সময় পরই দেশের কিছু বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণার খবর প্রচার করা হয়। এ নিয়ে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাবীন।

এক ফেসবুক পোস্টে জাবীন বলেছেন, ‘যাদের প্রার্থী তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হলো, তাদেরটা ব্রেকিং নিউজে জায়গা পেল না, কিন্তু ঠিক একই দিন একই সময় যারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা নিয়ে ব্রেকিং নিউজ যাচ্ছে।’

জাবীন আরও লেখেন, ‘ব্রেকিং নিউজের পেছনের রাজনীতি কী? কী বয়ান মানুষের কাছে দেওয়ার জন্য কারা এত ব‍্যাকুল?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত