অনলাইন ডেস্ক
গত কয়েক দিনের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যার পর বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে বসছেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল। বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছিল। এর মধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্য প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়া এবং পরে মূল ধারার মিডিয়াতে আসার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে খবর বের হয়। বিষয়টি প্রথমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাহিদ ইসলামের মাধ্যমে গণমাধ্যমে আসে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাহিদ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম। প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন—এমন খবর পেয়েই তিনি সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন বলে জানান নাহিদ।
এরপর সরকার ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা আরও বাড়ে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য পোস্ট করা হয়। জামায়াতে ইসলামী সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব করে। চরমোনাই পীরের ডাকে এনসিপিসহ পাঁচটি দল বৈঠক করে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চান না।
সর্বশেষ আজ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না। তিনি আমাদের সঙ্গেই থাকছেন।’
এই পরিস্থিতিতে নজর এখন যমুনায় বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার অনুষ্ঠেয় বৈঠকের দিকে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বৈঠক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে। কী ঘোষণা আসতে পারে তা নিয়ে চলছে জল্পনা। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রধান দুটি ইস্যু হলো—নির্বাচনের রোডম্যাপ এবং সরকারের তিন উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্ক। এ ছাড়া সংস্কার, জুলাই সনদ, স্থানীয় নির্বাচন—এই ইস্যুগুলোও আলোচনার টেবিলে রয়েছে।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল রাতে রাজধানীর রমনার একটি বাসায় বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপির নেতাদের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ এই বৈঠকের কথা স্বীকার না করলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক মিত্র থাকলেও বর্তমানে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠা বিএনপি ও জামায়াত নির্বাচনের ব্যাপারে একক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পেরেছে। তারা ডিসেম্বর অথবা বড় জোর আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারকে সময় দিতে রাজি। তবে এনসিপি তাদের অবস্থানের ব্যাপারে এখনো কিছুটা অনমনীয়। তারা নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ ঘোষণা, সংস্কার, স্থানীয় নির্বাচন, গণপরিষদ নির্বাচন চায়। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনেরও পুনর্গঠন চেয়েছে এনসিপি।
আজ দুপুরে বাংলামোটরে অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নির্বাচনের বিষয়ে তাঁর দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দল অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জুলাই সনদ, সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে চায়।
ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের পরই নির্বাচনের রোডম্যাপের বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে। এই বিষয়টিতে সব দলই মোটামুটি একমত। শুধু দিন তারিখ সুনির্দিষ্ট করা বাকি। সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবে বিএনপি শুরু থেকেই ঘোরতর আপত্তি জানিয়ে আসছে। জামায়াত ও এনসিপি আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। গতকালের ত্রিদলীয় বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে কত দূর আলোচনা হয়েছে সেটি স্পষ্ট নয়।
সংস্কারের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান আগের মতোই। তাঁদের মতে, নির্বাচনের প্রস্তুতি ও সংস্কার প্রক্রিয়া দুটো সমান্তরালে চলতে পারে। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বহুবার বলেছেন, নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার দরকার সরকার ততটুকুই করুক। বাকিটা নির্বাচিত সরকার করবে। এই বিষয়টিতে বিশেষ করে এনসিপি বরাবর আপত্তি জানিয়ে এসেছে। তারা গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সংবিধানসহ রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই করার পক্ষে। জামায়াতের অবস্থানও অনেকটা এনসিপির পক্ষে। ফলে সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য এখনো অনিশ্চিত। এ বিষয়টি যমুনার বৈঠকেই খোলাসা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া বিশেষ করে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে নানা সময় আপত্তি জানাতে দেখা গেছে। গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠনের পর থেকে এই দুই উপদেষ্টার সরকারে থাকার নৈতিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিএনপি। তাঁরা দায়িত্বে থাকলে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলেও মন্তব্য করেছেন একাধিক নেতা। যদিও আমলাতন্ত্র, বিচার বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিএনপির প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও উঠেছে। এনসিপি তো বটেই, খোদ উল্লেখিত দুই উপদেষ্টার পক্ষ থেকেও এমন ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
আজ সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেছেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁরা গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবেই সরকারে গিয়েছিলেন। তাঁদের এনসিপির সঙ্গে যুক্ত করে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি খুবই উদ্দেশ্যমূলক।
সর্বশেষ ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি দুই উপদেষ্টা ইস্যুতে বিএনপি ও সরকারকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকারের সূত্রও বলছে, সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা এবং বাইরের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মন্তব্যের কারণে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে।
এই দুই উপদেষ্টাকে নিয়ে সরকারও এখন বেশ চাপে রয়েছে। আজ যমুনায় দুই দলের সঙ্গে বৈঠকে তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরানোও হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে ইঙ্গিত মিলছে।
এদিকে অনেকে বলছেন, সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর মতপার্থক্যের সুযোগেই এমন পরিস্থিতি দানা বাঁধছে। বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে কেন্দ্র করে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর টানাপোড়েন ক্রমে জটিল রূপ ধারণ করেছে বলে মনে করেন অনেকে।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ১৯৭৯ ব্যাচের পররাষ্ট্র কর্মকর্তা ড. খলিলুর রহমানকে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেনটেটিভ নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম এই পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অনেকে মনে করেন, জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে এমন বেসামরিক পদ এতদিন না থাকায় এখন তা বেসামরিক ও সামরিক এখতিয়ারের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। অনেক দিন ধরেই বিরোধ চড়ছিল বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকেরা। সেই বিরোধে ঘি ঢেলেছে রাখাইনে মানবিক করিডর নিয়ে আলোচনা। একপর্যায়ে বিএনপি ড. খলিলুর রহমানের পদত্যাগের দাবি তুলেছে।
নানামুখী আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে ড. খলিলুর রহমানের বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে। তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
মোটা দাগে বিএনপি সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ এবং তিন উপদেষ্টাকে সরানো—এই দুই ইস্যুতে অনড় থাকবে বলেই মনে হয়।
এই পরিস্থিতিতে জুলাই সনদ, স্থানীয় নির্বাচন, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীদের বিচার, সংস্কার ইত্যাদি বহুল আলোচিত ইস্যুগুলো অগুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়বে কি না সেটিই এখন দেখার বিষয়।
গত কয়েক দিনের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যার পর বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে বসছেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল। বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছিল। এর মধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্য প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়া এবং পরে মূল ধারার মিডিয়াতে আসার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে খবর বের হয়। বিষয়টি প্রথমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাহিদ ইসলামের মাধ্যমে গণমাধ্যমে আসে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাহিদ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম। প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন—এমন খবর পেয়েই তিনি সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন বলে জানান নাহিদ।
এরপর সরকার ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা আরও বাড়ে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য পোস্ট করা হয়। জামায়াতে ইসলামী সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব করে। চরমোনাই পীরের ডাকে এনসিপিসহ পাঁচটি দল বৈঠক করে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চান না।
সর্বশেষ আজ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না। তিনি আমাদের সঙ্গেই থাকছেন।’
এই পরিস্থিতিতে নজর এখন যমুনায় বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার অনুষ্ঠেয় বৈঠকের দিকে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বৈঠক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে। কী ঘোষণা আসতে পারে তা নিয়ে চলছে জল্পনা। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রধান দুটি ইস্যু হলো—নির্বাচনের রোডম্যাপ এবং সরকারের তিন উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্ক। এ ছাড়া সংস্কার, জুলাই সনদ, স্থানীয় নির্বাচন—এই ইস্যুগুলোও আলোচনার টেবিলে রয়েছে।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল রাতে রাজধানীর রমনার একটি বাসায় বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপির নেতাদের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ এই বৈঠকের কথা স্বীকার না করলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক মিত্র থাকলেও বর্তমানে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠা বিএনপি ও জামায়াত নির্বাচনের ব্যাপারে একক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পেরেছে। তারা ডিসেম্বর অথবা বড় জোর আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারকে সময় দিতে রাজি। তবে এনসিপি তাদের অবস্থানের ব্যাপারে এখনো কিছুটা অনমনীয়। তারা নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ ঘোষণা, সংস্কার, স্থানীয় নির্বাচন, গণপরিষদ নির্বাচন চায়। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনেরও পুনর্গঠন চেয়েছে এনসিপি।
আজ দুপুরে বাংলামোটরে অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নির্বাচনের বিষয়ে তাঁর দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দল অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জুলাই সনদ, সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে চায়।
ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের পরই নির্বাচনের রোডম্যাপের বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে। এই বিষয়টিতে সব দলই মোটামুটি একমত। শুধু দিন তারিখ সুনির্দিষ্ট করা বাকি। সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবে বিএনপি শুরু থেকেই ঘোরতর আপত্তি জানিয়ে আসছে। জামায়াত ও এনসিপি আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। গতকালের ত্রিদলীয় বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে কত দূর আলোচনা হয়েছে সেটি স্পষ্ট নয়।
সংস্কারের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান আগের মতোই। তাঁদের মতে, নির্বাচনের প্রস্তুতি ও সংস্কার প্রক্রিয়া দুটো সমান্তরালে চলতে পারে। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বহুবার বলেছেন, নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার দরকার সরকার ততটুকুই করুক। বাকিটা নির্বাচিত সরকার করবে। এই বিষয়টিতে বিশেষ করে এনসিপি বরাবর আপত্তি জানিয়ে এসেছে। তারা গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সংবিধানসহ রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই করার পক্ষে। জামায়াতের অবস্থানও অনেকটা এনসিপির পক্ষে। ফলে সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য এখনো অনিশ্চিত। এ বিষয়টি যমুনার বৈঠকেই খোলাসা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া বিশেষ করে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে নানা সময় আপত্তি জানাতে দেখা গেছে। গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠনের পর থেকে এই দুই উপদেষ্টার সরকারে থাকার নৈতিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিএনপি। তাঁরা দায়িত্বে থাকলে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলেও মন্তব্য করেছেন একাধিক নেতা। যদিও আমলাতন্ত্র, বিচার বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিএনপির প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও উঠেছে। এনসিপি তো বটেই, খোদ উল্লেখিত দুই উপদেষ্টার পক্ষ থেকেও এমন ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
আজ সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেছেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁরা গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবেই সরকারে গিয়েছিলেন। তাঁদের এনসিপির সঙ্গে যুক্ত করে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি খুবই উদ্দেশ্যমূলক।
সর্বশেষ ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি দুই উপদেষ্টা ইস্যুতে বিএনপি ও সরকারকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকারের সূত্রও বলছে, সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা এবং বাইরের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মন্তব্যের কারণে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে।
এই দুই উপদেষ্টাকে নিয়ে সরকারও এখন বেশ চাপে রয়েছে। আজ যমুনায় দুই দলের সঙ্গে বৈঠকে তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরানোও হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে ইঙ্গিত মিলছে।
এদিকে অনেকে বলছেন, সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর মতপার্থক্যের সুযোগেই এমন পরিস্থিতি দানা বাঁধছে। বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে কেন্দ্র করে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর টানাপোড়েন ক্রমে জটিল রূপ ধারণ করেছে বলে মনে করেন অনেকে।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ১৯৭৯ ব্যাচের পররাষ্ট্র কর্মকর্তা ড. খলিলুর রহমানকে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেনটেটিভ নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম এই পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অনেকে মনে করেন, জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে এমন বেসামরিক পদ এতদিন না থাকায় এখন তা বেসামরিক ও সামরিক এখতিয়ারের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। অনেক দিন ধরেই বিরোধ চড়ছিল বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকেরা। সেই বিরোধে ঘি ঢেলেছে রাখাইনে মানবিক করিডর নিয়ে আলোচনা। একপর্যায়ে বিএনপি ড. খলিলুর রহমানের পদত্যাগের দাবি তুলেছে।
নানামুখী আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে ড. খলিলুর রহমানের বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে। তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
মোটা দাগে বিএনপি সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ এবং তিন উপদেষ্টাকে সরানো—এই দুই ইস্যুতে অনড় থাকবে বলেই মনে হয়।
এই পরিস্থিতিতে জুলাই সনদ, স্থানীয় নির্বাচন, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীদের বিচার, সংস্কার ইত্যাদি বহুল আলোচিত ইস্যুগুলো অগুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়বে কি না সেটিই এখন দেখার বিষয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আজকের এই আলোচনায় আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছি। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে একটা দাবি ছিল আমাদের, যেটা ৩০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল; এ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, জুলাই আন্দোলনে যাঁরা আহত ও শহীদ হয়েছেন, তাঁদের পুন
৪৩ মিনিট আগেনির্বাচন কবে হবে, সেটা স্পষ্ট করা দরকার বলে মনে করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে জনগণের বড় ধরনের ভোগান্তি ছাড়া একটি স্বস্তিজনক সময়ে নির্বাচন হতে পারে।
১ ঘণ্টা আগেবিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা যমুনায় এসেছেন। আজ শনিবার রাতে তাঁরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান।
১ ঘণ্টা আগেআওয়ামী লীগের কাউকে বিএনপির সদস্য ফরম দিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া। আজ শনিবার বিকেলে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সদস্য ফরম বিতরণ ও সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেলিম ভূঁইয়া
১ ঘণ্টা আগে