Ajker Patrika

ছাত্রলীগ সভাপতি জয় ‘ছাত্রদল’ করতেন, দাবি সহসভাপতির

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৩৭
ছাত্রলীগ সভাপতি জয় ‘ছাত্রদল’ করতেন, দাবি সহসভাপতির

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের বিরুদ্ধে ছাত্রদল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রলীগেরই সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ। গতকাল শনিবার রাত ১১টায় নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে লাইভে এসে এসব বক্তব্য দেন তিনি। একই সঙ্গে জয়ের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন আল নাহিয়ান। অভিযোগ আছে, তখন তাঁর ফুফাতো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তাঁর কক্ষে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোচিং করেছেন, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন আল নাহিয়ান। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন। সাম্প্রতিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আপন চাচাতো ভাইকে নিজের ক্ষমতাবলে নৌকার বিরুদ্ধে জিতিয়েছেন আল নাহিয়ান। 

অভিযোগের কোনো স্বচ্ছ জবাব জয় দিচ্ছেন না উল্লেখ করে রিয়াদ বলেন, ‘যাঁরা ছাত্ররাজনীতি করবেন তাঁদের স্বচ্ছতার সঙ্গে ছাত্ররাজনীতি করতে হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে যখন কোনো অভিযোগ ওঠে তখনই তাঁরা যেন অভিযোগের বিষয় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা না করেন। যদি তাঁরা ধামাচাপা দেন, তাহলে কর্মীদের মাঝে, শিক্ষার্থীদের মাঝে, যাঁরা আমাদের অনুসরণ করেন তাঁদের মধ্যে ধোঁয়াশা, বিভ্রান্তি তৈরি হবে। ছাত্রনেতা হিসেবে যেটি মোটেও কাম্য নয়।’ 

ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরও বলেন, আল নাহিয়ানের বাবা ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বাবুগঞ্জ-উজিরপুর আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সেই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তাঁর বাবা ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বিমা কোম্পানিতে চাকরি করেছিলেন। তিনি তৎকালীন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার পিএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির যে নির্বাচন আওয়ামী লীগ বর্জন করেছিল, সেই নির্বাচনে বিএনপির ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন আল নাহিয়ানের বাবা। 

ছাত্রলীগের সভাপতিকে এসব অভিযোগের জবাব দেওয়ার আহ্বান জানান রিয়াদ। তিনি বলেন, অভিযোগ উঠতেই পারে। অভিযোগের জবাব তাঁকেই দিতে হবে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তাঁকে নিয়ে যেন কোনো ধোঁয়াশা তৈরি না হয়, নেতা-কর্মীরা যাতে বিভ্রান্ত ও আদর্শচ্যুত না হন, সেই জায়গা থেকে তাঁর উচিত অভিযোগগুলো খণ্ডন করা। 

লাইভের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন রিয়াদ। তিনি বলেন, আল নাহিয়ান ও লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তাঁরা অনিয়মতান্ত্রিক ও সংগঠনবিরোধী অনেক কর্মকাণ্ড করে সংগঠনকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন। এসব বিষয় নিয়ে যাঁরা কথা বলেন, যাঁরা দুঃসময়ের আওয়ামী পরিবারের সন্তান, তাঁরা তাঁদের চিহ্নিত করে সংগঠন থেকে দূরে সরিয়ে রাখছেন। 

অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য আল নাহিয়ান খান জয়কে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে তাঁর পক্ষ হয়ে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা ফেসবুকে লেখালেখি করছেন। 

আরেক সহসভাপতি রাকিব হোসেন লিখেন, ‘কিছুদিন আগেও জয় ভাইয়ের পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, জয় ভাইয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এ রকম নিউজ হওয়ার পর ওই সাংবাদিককে আপনি শিবির বলে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আপনি আইন অনুষদে গিয়ে জয় ভাইয়ের সঙ্গে গলাগলি ধরে অনেকক্ষণ কথা বললেন। স্বার্থে আঘাত লাগলে সবাই কমবেশি ক্ষোভ প্রকাশ করে, সেখানে আমিও বিপরীত নই। কিন্তু মানুষের মিনিমাম একটু চক্ষুলজ্জা থাকা দরকার, আপনার সঙ্গে এখন যাঁদের সখ্য, তাঁরাও আপনাকে নিয়ে বিব্রত।’ 

কেউ কেউ লিখেছেন, ‘ক্যাম্পাসের প্রতিটি মানুষ জানে তাঁর সবচেয়ে কাছের বন্ধু আপনি (ইয়াজ আল রিয়াদ)। দুজনে একসঙ্গে হলের সেক্রেটারি হয়েছেন, একই ব্লকে রাজনীতি করেছেন, দীর্ঘদিন একসঙ্গে চলেছেন। এত দিন কোনো  অভিযোগ ছিল না, কোনো অনুযোগ ছিল না, হঠাৎ কি এমন ঘটল যে গত ২-৩ মাস থেকে তিনি আপনার কাছে অনুপ্রবেশকারী, বিএনপি ফ্যামিলির হয়ে গেল!’ 

একই কমিটির ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক ইমরান জমাদ্দার লিখেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না, জয় ভাই-লেখক দাদাকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা আপা নিজে এক নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন, পরবর্তী সময়ে তাঁরা আপার আস্থা অর্জনের মাধ্যমে আপার সিদ্ধান্তেই পূর্ণ সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সুতরাং আপনারা তাঁদের কাজের সমালোচনা করতে পারেন কিন্তু তাঁদের অতীত নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করার হীন চেষ্টার মাধ্যমে আপনারা পরোক্ষভাবে আপার সিদ্ধান্তের প্রতি প্রশ্ন তুলতে পারেন না।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিক্ষোভ থেকে সহিংসতায় উত্তাল ভাঙ্গা, মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা

দাওয়াত না দেওয়ায় মাদ্রাসার সব খাবার খেয়ে গেলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা

উত্তাল ভাঙ্গা: থানাসহ চারটি সরকারি দপ্তরে হামলা-ভাঙচুর, পুলিশসহ আহত অনেকে

সন্তানের গলা কেটে লাশ বাবার হাতে তুলে দিলেন মা

কক্সবাজার, মাদারীপুর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ডিসি প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত