Ajker Patrika

সংবিধান দেশের নাগরিকদের ৫৩ বছরেও আপন করে নিতে পারেনি: রুমিন ফারহানা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭: ৫০
সংবিধান দেশের নাগরিকদের ৫৩ বছরেও আপন করে নিতে পারেনি: রুমিন ফারহানা

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সংবিধান দেশের নাগরিকদের আপন করে নিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা। 

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ সেন্টার ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে বৈঠকের আয়োজন করে। 

বৈঠকে রুমিন ফারহানা বলেন, ৫৩ বছরে সংবিধান দেশের নাগরিকদের আপন করে নিতে পারেনি। এই দেশের মানুষ ভোট দিয়েছে, কিন্তু যারা ক্ষমতায় গেছে তারা বিষয়টিকে কুক্ষিগত করেছে। বাকি যারা সাধারণ মানুষ তারা নিজেদের রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে মনে করতে পারেনি। 

তিনি আরও বলেন, ‘আইনে আপনি কী লিখছেন, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবে কী করছেন। আইন সবার জন্য সমান—এটা আমরা সবাই বলি। কিন্তু এটা কতটা মানা হয়? সংবিধান সংশোধন করেন, আর নতুন করে লিখেন, তাতে কিছুই হবে না—যদি না রাজনীতিবিদেরা আপ্তবাক্য হিসেবে মানেন।’ 

সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, ‘দেশে যখন কোনো বিপ্লব হয়—সেটা কি সংবিধান মেনে হয়? যদি না হয়, ’২৪–এর গণ–অভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় জীবনে বড় এক ঘটনা, তাহলে সংবিধান কি এটা ধারণ করে? কেন করে না? সংবিধান কি বিপ্লব, গণ–অভ্যুত্থানের কোনো অপশন রাখে না? যে ঘটনা আমাদের পুরো জাতিকে পরিবর্তন করে দেয়, পুরো জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে দেয়, সেটা সংবিধান ধারণ করে না, তাহলে এটা কেমন সংবিধান?’ 

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কি সংবিধানের আলোকে হয়েছিল—প্রশ্ন রেখে মাসুদ কামাল বলেন, ‘৫ আগস্ট যে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেল, এটা কি সংবিধান অনুযায়ী হয়েছে? 

‘তাহলে আমরা যেটাকে সংবিধান বলছি, যা আমাদের পুরো জাতিকে দিকনির্দেশনা দেবে, যা যা করতে হবে—এই অনুযায়ী আমরা করব। কিন্তু এটা তো আমরা করলাম না, তাহলে সংবিধান লঙ্ঘন করা কি সংবিধানের সর্বোচ্চ প্রতিপালন?’ 

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা যদি নতুন করে সংবিধান লিখতে চাই, তাহলে আমাদের সামনে গণপরিষদের প্রশ্ন আসবে, সে গণপরিষদে সদস্য কারা হবেন—সে প্রশ্ন আসবে। রাজনৈতিক দলগুলো রাজি কি না—সে প্রশ্ন আসবে। এই মুহূর্তে আমরা ঐকমত্যে আসতে পারব কি না, সে প্রশ্নও আসবে। সেখানে আমরা ঐকমত্যে আসতে না পারলে সংকট প্রকট হবে এমন ভয় আমার মধ্যে আছে।’ 
 
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে একটা নতুন রাজনৈতিক বন্দবস্ত দরকার, নতুন রিপাবলিক দরকার। এই বিষয়ে সম্ভবত সবাই একমত হবে। কিন্তু এর ক্যারেক্টর কি? একটা গণতান্ত্রিক রিপাবলিক একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সে ব্যাপারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এটার ভিত্তি কী হবে। সংবিধান নতুন চাই অথবা সংস্কার চাই; একটা গণতান্ত্রিক সংবিধান চাই—সে ব্যাপারে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। 

আন্দোলন শেষ হওয়ার দুই মাস পূরণ হওয়ার আগেই বিভক্তি শুরু হয়ে গেছে জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আন্দোলনে কার কতজন শহীদ হয়েছেন, কে আন্দোলনের প্রবক্তা, কোন দলের কতটা অবদান—সে নিয়ে কথা বলা শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু আন্দোলনের স্পিরিটে তো এটা ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের পরেও আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত