Ajker Patrika

যে দুই কারণে তিন পার্বত্য জেলা ‘উৎসবহীন’

ডয়চে ভেলে
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১: ২০
যে দুই কারণে তিন পার্বত্য জেলা ‘উৎসবহীন’

চলতি মাসে পর্যটকদের তিন পার্বত্য জেলায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। সম্মিলিত বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘ জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় এবার কঠিন চীবরদান হবে না৷ প্রশাসনের ‘রহস্যজনক’ ভূমিকা শঙ্কা বাড়িয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা৷

রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান—এই তিন পার্বত্য জেলায় ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ দিন পর্যটকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷ রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘তিন পার্বত্য জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করেই দেশি ও বিদেশি সব ধরনের পর্যটকের ওপর এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে।’

রাঙামাটি জেলা প্রশাসন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এসএমএস বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ‘অনিবার্য কারণবশত পর্যটকদের ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। এর আগে ৩ অক্টোবর রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের সাজেকে পর্যটকদের না যেতে পরামর্শ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বার্তায় বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কথা বলেছেন। একই নির্দেশনা জারি করা হয় বান্দরবান জেলা প্রশাসন থেকেও।

রবিবার একই দিনে রাঙামাটিতে সংবাদ সম্মেলন করে পাহাড়ে চলমান অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে এ বছর রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবরদান উদ্‌যাপন না করার ঘোষণা দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ। সংবাদ সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলার ১৫টি বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। রাঙামাটি বৌদ্ধ বিহারে এর মূল অনুষ্ঠান হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের যে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে প্রশাসনের আচরণ ছিল রহস্যজনক। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ওপর এভাবে বিনা বাধায় সাম্প্রদায়িক হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পবিত্র বিহারে আক্রমণ ও বৌদ্ধমূর্তি ভেঙে ফেলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এ ধরনের ঘটনা বারবার সংঘটিত হলেও প্রশাসনের আচরণ রহস্যজনক ও পক্ষপাতদুষ্ট।’

তাঁরা বলেন, ‘এরকম চরম অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীন পরিবেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ সমাজ ও ভিক্ষু সংঘ আসন্ন পবিত্র ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে কোনো উৎসাহ বোধ না করায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ভিক্ষু সংঘের মধ্যে আলোচনাক্রমে চলতি বছরের কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান না করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেও য়া হয়েছে।’

পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি শ্রদ্ধালংকার মহাথেরো ডয়চে ভেলেকে  বলেন, ‘আমাদের মনে যে বেদনা ও ক্ষোভের জন্ম হয়েছে, তা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ওই অনুষ্ঠান করতে পারি না। সব জায়গা থেকে অনুষ্ঠানে ভক্তরা আসবেন। তাঁরা যদি নিরাপত্তা না পান, তাঁদের ওপর যদি কোনোভাবে হামলা হয়, তাহলে তার দায় কে নেবে? আমরা তো এই পরিস্থিতির মধ্যে  উৎসব করতে পারি না। পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদের নিরাপত্তার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এখনো আশ্বস্ত হতে পারছি না। আমরা নিরাপদ বোধ করছি না।’

তার কথা, ‘পাহাড়ে বাড়ি-ঘর, মন্দিরে হামলা হলো, পুড়িয়ে দেয়া হলো। পবিত্র বিহারে আক্রমণ ও বৌদ্ধমূর্তি ভেঙে ফেলা হলো। ছয় জনকে হত্যা করা হলো। গুলি করে মারা হলো। তার বিরুদ্ধে তো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। আমরা এর বিচার চাই। এই পরিস্থিতিতে আমরা কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

চীবর মানে হলো ভিক্ষুদের পরিধেয় কাপড়। আশ্বিনী পূর্ণিমাকে প্রবারণা পূর্ণিমা বলা হয়। প্রবারণা পূর্ণিমার পর থেকে এক মাসের জন্য কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন করা হয়। এক মাস ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় ২০০ বিহারে ধারাবাহিকভাবে কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন করা হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা, সুতা থেকে চীবর তৈরি করা হয়। এই অনুষ্ঠান ঘিরে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক মাস ধরে উৎসব পালিত হয়। আশ্বিনী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলে। এ বছর ১৮ অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।

তিন পার্বত্য জেলার বর্তমান পরিস্থিতি

নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফের তৎপরতার কারণে ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর বান্দরবানের রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ির দুর্গম এলাকায় প্রথম পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পরে রুমা ও থানচি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও রোয়াংছড়িতে বহাল ছিল। এরপর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে দুই দফা সহিংসতার কারণে রাঙামাটির সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছিল প্রশাসন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি শহরে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। এতে আরও চারজন আদিবাসী নিহত হন। তিন পার্বত্য জেলায় আদিবাসীদের বাড়ি-ঘর ও দোকানপাটে হামলা ও আগুন দেওয়া হয়। এরপর খাগড়াছড়িতে এক স্কুলশিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর সহিংসতা ঠেকাতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। তিন জেলায় পরিস্থিতি শান্ত হলেও স্বাভাবিক হয়নি।

লেখক ও মানবাধিকারকর্মী ইলিরা দেওয়ান বলেন, ‘আসলে আমাদের এখানে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। এই আস্থার সংকট দূর না করলে পুলিশ বা সেনাবাহিনী দিয়ে নিরাপত্তা দিয়ে তেমন কোনো কাজ হবে না।’

তার কথা, ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রশাসনই তো প্রমাণ করল যে, তিন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি কেমন। এখানে যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ, তা তো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায়ই প্রমাণিত হয়।  তারা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না, তাহলে আমাদের নিরাপত্তার কী অবস্থা?’

তিনি বলেন, ‘কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান শুরু হয় গভীর রাতে। এরপর মাসব্যাপী চলে। তাদের নিরাপত্তা কে দেবে?’

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান, ‘তিন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। কিন্তু আমরা বলতে পারি না যে, কোনো ঘটনা ঘটবে না। তাই দেশি-বিদেশি সব ধরনের পর্যটককে এই তিন জেলা ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এর মানে হলো, আসলে এই সময়ে পর্যটকেরা ভ্রমণ করতে পারবেন না। আপনারা পরিস্থিতি তো জানেন। ফলে এর বাইরে আর কিছু এখন করণীয় নেই।’

কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান না করা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা ভিক্ষুদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সেনবাহিনী সবাই ছিল। গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারাও ছিলেন। আমরা তাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছি। নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করি তারা শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান করবেন।’

আর বান্দরবানের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কাওসার বলেন, ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন জেলা প্রশাসকেরা। তাঁরাই বলতে পারবেন এর কারণ। তবে আমার জেলাসহ তিন পার্বত্য জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা রিজভীকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজিজুর রহমান রিজভী। ছবি: সংগৃহীত
আজিজুর রহমান রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) আজিজুর রহমান রিজভীকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান এনসিপির দপ্তর সেলের সদস্য সাদিয়া ফারজানা দিনা।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘আজিজুর রহমান রিজভীর বিরুদ্ধে গুরুতর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের একটি ঘটনায় অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে এবং ওই ঘটনায় তাঁর আচরণ সংগঠনের নীতিবিরুদ্ধ বলে আমাদের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে। এমতাবস্থায় তাঁকে দলের সব দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হলো।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একই সাথে তাঁকে কেন দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, তার যথাযথ ব্যাখ্যা আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান অ্যাড. আব্দুল্লাহ আল-আমিন বরাবর দাখিলের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির ফাঁকা রাখা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে মাথাল প্রতীকের প্রার্থী জোনায়েদ সাকি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩৫
জোনায়েদ সাকি। ছবি: সংগৃহীত
জোনায়েদ সাকি। ছবি: সংগৃহীত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৯৪টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে গণসংহতি আন্দোলন। দলটির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে নির্বাচন করবেন। এই আসনে বিএনপি এখনো কোনো প্রার্থী মনোনয়ন দেয়নি।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

সংবাদ সম্মেলনে জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটা অপরিহার্য ব্যাপার। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে আবশ্যিকভাবে নির্বাচন লাগবে।

সাকি বলেন, ‘গণসংহতি আন্দোলনের প্রার্থীরা নিজ দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করবেন। কিন্তু কোনো দল যদি কোনো জোটের প্রতীকে নির্বাচন করতে চায়, সেই সুযোগটা রাখাও আমরা সমীচীন মনে করি।’

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, সংশোধিত আরপিওতে প্রার্থীদের জামানতের টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে নির্বাচন পদ্ধতি ক্রমাগত অর্থনির্ভর হচ্ছে এবং যাদের অর্থের দিক থেকে কম সক্ষমতা আছে, তাদের জন্য বিষয়গুলো কঠিন হয়ে উঠছে।

সাকি বলেন, ‘আমরা একটা ঐতিহাসিক কালে আছি। ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান পুরো বাংলাদেশকে আবার একটা পুনর্গঠনের দাবি নিয়ে সামনে এসেছে। সেই পুনর্গঠন কালটাতেও ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য হচ্ছে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য, যেটা রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করব। এবং এসবের মধ্য দিয়ে একটা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক নতুন বন্দোবস্ত আমরা কায়েম করতে চাই।’

পরে গণসংহতি আন্দোলনের ৫৫ সদস্যবিশিষ্ট নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি ও ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেন আবুল হাসান রুবেল। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের এক দশক পূর্তিতে ১৪ নভেম্বর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে দলীয় সমাবেশ ও মাথাল র‍্যালি কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য দেওয়ান আবদুর রশীদ নীলু, তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমী ও মনির উদ্দীন পাপ্পু; কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাচ্চু ভুইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক কুমার রায় প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাথাল প্রতীকে ৯৪ আসনে প্রার্থী দিল গণসংহতি আন্দোলন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
মাথাল প্রতীকে ৯৪ আসনে প্রার্থী দিল গণসংহতি আন্দোলন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৯৪টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে গণসংহতি আন্দোলন। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

সংবাদ সম্মেলনে জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটা অপরিহার্য ব্যাপার। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে আবশ্যিকভাবে নির্বাচন লাগবে।

সাকি আরও বলেন, ‘গণসংহতি আন্দোলনের প্রার্থীরা নিজদলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করবেন। কিন্তু কোনো দল যদি কোনো জোটের প্রতীকে নির্বাচন করতে চায়, সেই সুযোগ রাখাও আমরা সমীচীন মনে করি।’

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘সংশোধিত আরপিওতে প্রার্থীদের জামানতের টাকার অঙ্ক বাড়ানো হয়েছে। এটা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, নির্বাচন পদ্ধতি ক্রমাগত অর্থনির্ভর হচ্ছে এবং যাদের অর্থের দিক থেকে কম সক্ষমতা আছে, তাদের জন্য বিষয়গুলো কঠিন হয়ে উঠছে।

সাকি বলেন, ‘আমরা একটা ঐতিহাসিককালে আছি। ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান পুরো বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের দাবি সামনে নিয়ে এসেছে। সেই পুনর্গঠনকালটাতেও ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য হচ্ছে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য, যেটা রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করব এবং এসবের মধ্য দিয়ে একটা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক নতুন বন্দোবস্ত আমরা কায়েম করতে চাই।’

পরে গণসংহতি আন্দোলনের ৫৫ সদস্যবিশিষ্ট নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি ও ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেন আবুল হাসান রুবেল। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের এক দশক পূর্তিতে আগামী ১৪ নভেম্বর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে দলীয় সমাবেশ ও মাথাল র‍্যালি কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য দেওয়ান আবদুর রশীদ নীলু, তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমী ও মনির উদ্দীন পাপ্পু; কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক কুমার রায় প্রমুখ।

সংসদীয় আসনভিত্তিক গণসংহতি আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন—জোনায়েদ সাকি (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), আবুল হাসান রুবেল (পাবনা-৪ ও ঢাকা-১০), তাসলিমা আখতার (ঢাকা-১২), হাসান মারুফ রুমী (চট্টগ্রাম-৯), দেওয়ান আবদুর রশীদ নীলু (বরিশাল-৫), তরিকুল সুজন (নারায়ণগঞ্জ-৫), মনির উদ্দীন পাপ্পু (ঢাকা-৭), বাচ্চু ভূঁইয়া (ঢাকা-৩), জুলহাসনাইন বাবু (পাবনা-২), অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ (রাজশাহী-২), দীপক কুমার রায় (লালমনিরহাট-২ ও ৩), আলিফ দেওয়ান (টাঙ্গাইল-৬), সেন্টু আলী (নাটোর-১), এ কে এম শামসুল আলম (ময়মনসিংহ-১০), মোফাখখারুল ইসলাম মুন (রংপুর-২), তৌহিদুর রহমান (রংপুর-৩), সৈয়দ সাইফুল ইসলাম (মৌলভীবাজার-৪), মোস্তাফিজুর রহমান রাজীব (ময়মনসিংহ-৪), সৈকত আরিফ (মো. তোসাদ্দেক হোসাইন) (নওগাঁ-৫), জাহিদুল আলম আল-জাহিদ (চট্টগ্রাম-৪), নাসির উদ্দীন তালুকদার (চট্টগ্রাম-৬), মো. আশরাফুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২), মিজানুর রহমান (ঢাকা-১), মুনীর চৌধুরী সোহেল (খুলনা-২), জুয়েল রানা (রাজশাহী-৩), নুরুদ্দীন (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন (খুলনা-১), নাহিদা শাহান (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫), অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম (পিরোজপুর-৩), তানভীর আহমেদ (ঢাকা-১৯), সাজেদুর রহমান সাজু (পঞ্চগড়-১), তাহসিন মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৩), মনিরুল হুদা বাবন (ঢাকা-১৩), আব্দুল জলিল (ঢাকা-২), সৈয়দ সালাহউদ্দীন (শিমুল) (চট্টগ্রাম-১১), আল-আমিন শেখ (খুলনা-১), হাসান আল মেহেদী (লক্ষ্মীপুর-২), আরমানুল হক (কক্সবাজার-১), নাজমা বেগম (নারায়ণগঞ্জ-১), জাহিদ সুজন (নারায়ণগঞ্জ-৪), ফাতেমা রহমান বিথি (টাঙ্গাইল-৫), জিন্নাত আরা সুমু (রাজশাহী-২), সাকিবুল ইসলাম (বরিশাল-১), মহব্বত হোসেন মিলন (নীলফামারী-১), মো. রুবেল মিয়া (হিমু ভাই) (ঢাকা-৮), অঞ্জন দাস (নারায়ণগঞ্জ-৩), ময়েজ উদ্দীন (ঢাকা-৫), এস এম ওয়াশিফ ফায়সাল (কুষ্টিয়া-৩), মোফাখারুল ইসলাম মানিক (নওগাঁ-৪), আবু সাকের মোহাম্মদ জাকারিয়া (গাজিপুর-৬), আব্দুর রশীদ (বগুড়া-৪), আরিফুল ইসলাম (জয়পুরহাট-২), সুলতান মাহমুদ শিশির (দিনাজপুর-৫), গোলাম মোস্তফা (গাইবান্ধা-১), তাহমিদা ইসলাম তানিয়া (নাটোর-৪), দ্বিজেন্দ্রনাথ রায় (দিনাজপুর-৪), সাইফুর রহমান দুলাল (কুড়িগ্রাম-১), রুস্তম আলী (কুড়িগ্রাম-২), বেলায়েত শিকদার (শরিয়তপুর-৩), আজহারুল ইসলাম (পাবনা-৫), আমজাদ হোসেন (গাজীপুর-২), অ্যাডভোকেট খালিদ সাইফুল্লাহ (গাজীপুর-৩), এফ এম নুরুল ইসলাম (ঢাকা-১৪), প্রদীপ রায় (নীলফামারী-৩), ইলিয়াস জামান (মুন্সিগঞ্জ-৩), মাহবুব রতন (ঢাকা-১৫), ইমরাদ জুলকারনাইন ইমন (কুমিল্লা-৬), মো. বিপ্লব খান (মুন্সিগঞ্জ-২), আবু রায়হান খান (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩), সাইফুল্লাহ সিদ্দিক রুমন (ঢাকা-১৬), আমজাদ হোসেন (পটুয়াখালী-২), জুনেদ আহমেদ (মৌলভীবাজার-৩), আলফাত হোসেন (সাতক্ষীরা-৪), নজরুল ইসলাম (ঝিনাইদহ-১), কায়কোবাদ সাগর (ফেনী-২), জহির রায়হান সাগর (কুমিল্লা-৯), প্রভাষক রিপন চক্রবর্তী (বান্দরবান-১), মো. সেলিমুজ্জামান (ঢাকা-৮), মো. রিপন (ফেনী-২), অপুর্ব নাথ (চট্টগ্রাম-১০), কেরামত আলী (জামালপুর-৬), আবু বক্কর রিপন (ঢাকা-৬), অধ্যাপক আব্দুল কাদের (মানিকগঞ্জ-৩), গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. খালেদ হোসাইন (অব.) (ময়মনসিংহ-১১), জাহাঙ্গির আলম পালোয়ান (গাজীপুর-৪), রফিকুল ইসলাম রাসেল (মাদারীপুর-২), মো. আবদুল কাদের খান (ঝালকাঠি-২), মো. আব্দুল কাদের (রংপুর-৪), মো. নজরুল ইসলাম সরকার (ময়মনসিংহ-৫), আল-আমীন রহমান (কিশোরগঞ্জ-৫), লোকমান হোসেন (গাজীপুর-৫), রেক্সোনা পারভিন (নড়াইল-১), অ্যাডভোকেট বিলকিস নাসিমা রহমান তুহিন (ঢাকা-১৮) ও মিজানুর রহীম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-২)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘বিএনপির কাছে ২০ আসন চায় এনসিপি, চায় মন্ত্রিসভায়ও হিস্যা’ শিরোনামে সংবাদ ভিত্তিহীন: এনসিপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৭
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

‘বিএনপির কাছে ২০ আসন চায় এনসিপি, চায় মন্ত্রিসভায়ও হিস্যা’—এই শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) দলটির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে সংবাদটিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দেওয়া হয়।

আজ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদকে তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিএনপির কাছে ২০ আসন চায় এনসিপি, চায় মন্ত্রিসভায়ও হিস্যা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা ও মন্ত্রিসভায় হিস্যা চাওয়ার খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এনসিপি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট, আসন সমঝোতা বা ক্ষমতা ভাগাভাগি বিষয়ে কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত নেয়নি। এমন কোনো প্রস্তাবও দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদে কখনো গৃহীত হয়নি।

এনসিপি বিশ্বাস করে, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি হবে জনগণের অধিকার, জবাবদিহি, সংস্কার ও গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের। সে লক্ষ্যেই দলটি সারা দেশে সাংগঠনিক প্রস্তুতি ও প্রার্থী যাচাইপ্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথাকথিত ‘সূত্র’ সম্পূর্ণ অনুমাননির্ভর এবং সাংবাদিকতার মৌলিক নীতির পরিপন্থী। এতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়েছে এবং দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

এনসিপি অবিলম্বে সেই সংবাদপত্রকে প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ ও সংশোধনী প্রকাশের আহ্বান জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা পুনরায় স্পষ্ট করছি, এনসিপি কোনো দলের কাছে আসন বা মন্ত্রিসভায় অংশগ্রহণের দাবি তোলেনি। আমরা জনগণের আস্থায় একটি বাংলাদেশপন্থী, দায়িত্বশীল ও স্বতন্ত্র রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত