সম্পাদকীয়
বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আন্তক্যাডার বৈষম্য নিয়ে দ্বন্দ্ব ৫ আগস্টের পর ব্যাপকভাবে প্রকাশ্যে আসা শুরু করে। বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ করা সরকারের ২৬টি ক্যাডারে সবাই একই পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রবেশ করলেও ধীরে ধীরে ক্যাডারভেদে বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে। ২৬টি ক্যাডারের মধ্যে বাকি ২৫টি ক্যাডারকে নিয়ন্ত্রণ করে একটিমাত্র ক্যাডার। এই পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতামত প্রকাশের কারণে ২৫ ক্যাডারের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার অভিযোগ উঠেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় ১২ জানুয়ারি একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
আমাদের দেশ ‘আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্র’—এটা বুদ্ধিজীবী মহলে পরিচিত কথা। এর মূল কারণ, রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক সরকার দ্বারা পরিচালিত হলেও এর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন আমলারা। আর আমলারা হলেন জনপ্রশাসনের লোক। সরকার পরিবর্তন হলেও আমলাতন্ত্রের পরিবর্তন হয় না। ব্রিটিশ আমলের তৈরি করা আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্র আমরা আজও বদলাতে পারিনি। কেন ও কীভাবে জনপ্রশাসনের লোকেরা অন্য ক্যাডারের লোকদের ওপর যা ইচ্ছে তাই করতে পারে, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার ওপরই নির্ভর করছে আন্তক্যাডার দ্বন্দ্বের সমাধানের পথ।
ঘটনার সূত্রপাত আসলে আন্তক্যাডার বৈষম্য নিয়ে। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও নানা সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত থাকলেও অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা এ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। প্রশাসন ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তারা সুদমুক্ত গাড়ির ঋণ সুবিধাসহ প্রতি মাসে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ পেলেও অন্যদের এ সুযোগ নেই। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ অন্যান্য বিভাগের মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রধান হয়ে থাকেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে। তাই দেখা যায়, একই গ্রেডের চাকরি হলেও জেলা প্রশাসকের তুলনায় নির্বাহী প্রকৌশলী, সিভিল সার্জন, কৃষি কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা বেশ নগণ্য বলে বিবেচিত হন। সমমানের অন্যান্য ক্যাডারে এসব সুবিধা নেই। ফলে মেধাবীরা অন্যান্য ক্যাডারে ইতিমধ্যে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। অদূর ভবিষ্যতে সার্ভিস সেক্টর ও বিশেষায়িত ক্যাডারে যোগ্য ও উপযুক্ত কর্মকর্তা পাওয়া দুষ্কর হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন’ গঠন করেছে। সেই কমিশনের অধিকাংশ সদস্যই হলেন জনপ্রশাসন ক্যাডারের। তাহলে এ কমিশনও কি বৈষম্য নির্মূলের চেয়ে বাড়াতে তৎপর থাকবে?
এসব বৈষম্য নিয়ে কথা বলার জন্য একজন ক্যাডারের বিপরীতে ২৫ জন ক্যাডার ঐক্যবদ্ধ হয়ে যখন কথা বলছেন, সেই সময়েই বেশ কয়েকজন নিপীড়িত ক্যাডার ফেসবুকে মতামত প্রকাশ করায় বরখাস্ত হয়েছেন, যা সরকারি চাকরির নিয়ম-বিধির লঙ্ঘন। সরকারি কোনো কর্মকর্তাকে বরখাস্ত
করার আগে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হয়। তিনি যথার্থ উত্তর দিতে না পারলে পরবর্তী সময়ে বরখাস্ত করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করেই এভাবে বরখাস্ত করা অনৈতিক বটে।
এখন দ্বন্দ্বরত পক্ষগুলোকে একত্র করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করা দরকার। এ ছাড়া সরকারি প্রশাসনে ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে এই দ্বন্দ্বের মূল কারণগুলো দূর করা উচিত।
বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আন্তক্যাডার বৈষম্য নিয়ে দ্বন্দ্ব ৫ আগস্টের পর ব্যাপকভাবে প্রকাশ্যে আসা শুরু করে। বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ করা সরকারের ২৬টি ক্যাডারে সবাই একই পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রবেশ করলেও ধীরে ধীরে ক্যাডারভেদে বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে। ২৬টি ক্যাডারের মধ্যে বাকি ২৫টি ক্যাডারকে নিয়ন্ত্রণ করে একটিমাত্র ক্যাডার। এই পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতামত প্রকাশের কারণে ২৫ ক্যাডারের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার অভিযোগ উঠেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় ১২ জানুয়ারি একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
আমাদের দেশ ‘আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্র’—এটা বুদ্ধিজীবী মহলে পরিচিত কথা। এর মূল কারণ, রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক সরকার দ্বারা পরিচালিত হলেও এর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন আমলারা। আর আমলারা হলেন জনপ্রশাসনের লোক। সরকার পরিবর্তন হলেও আমলাতন্ত্রের পরিবর্তন হয় না। ব্রিটিশ আমলের তৈরি করা আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্র আমরা আজও বদলাতে পারিনি। কেন ও কীভাবে জনপ্রশাসনের লোকেরা অন্য ক্যাডারের লোকদের ওপর যা ইচ্ছে তাই করতে পারে, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার ওপরই নির্ভর করছে আন্তক্যাডার দ্বন্দ্বের সমাধানের পথ।
ঘটনার সূত্রপাত আসলে আন্তক্যাডার বৈষম্য নিয়ে। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও নানা সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত থাকলেও অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা এ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। প্রশাসন ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তারা সুদমুক্ত গাড়ির ঋণ সুবিধাসহ প্রতি মাসে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ পেলেও অন্যদের এ সুযোগ নেই। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ অন্যান্য বিভাগের মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রধান হয়ে থাকেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে। তাই দেখা যায়, একই গ্রেডের চাকরি হলেও জেলা প্রশাসকের তুলনায় নির্বাহী প্রকৌশলী, সিভিল সার্জন, কৃষি কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা বেশ নগণ্য বলে বিবেচিত হন। সমমানের অন্যান্য ক্যাডারে এসব সুবিধা নেই। ফলে মেধাবীরা অন্যান্য ক্যাডারে ইতিমধ্যে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। অদূর ভবিষ্যতে সার্ভিস সেক্টর ও বিশেষায়িত ক্যাডারে যোগ্য ও উপযুক্ত কর্মকর্তা পাওয়া দুষ্কর হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন’ গঠন করেছে। সেই কমিশনের অধিকাংশ সদস্যই হলেন জনপ্রশাসন ক্যাডারের। তাহলে এ কমিশনও কি বৈষম্য নির্মূলের চেয়ে বাড়াতে তৎপর থাকবে?
এসব বৈষম্য নিয়ে কথা বলার জন্য একজন ক্যাডারের বিপরীতে ২৫ জন ক্যাডার ঐক্যবদ্ধ হয়ে যখন কথা বলছেন, সেই সময়েই বেশ কয়েকজন নিপীড়িত ক্যাডার ফেসবুকে মতামত প্রকাশ করায় বরখাস্ত হয়েছেন, যা সরকারি চাকরির নিয়ম-বিধির লঙ্ঘন। সরকারি কোনো কর্মকর্তাকে বরখাস্ত
করার আগে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হয়। তিনি যথার্থ উত্তর দিতে না পারলে পরবর্তী সময়ে বরখাস্ত করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করেই এভাবে বরখাস্ত করা অনৈতিক বটে।
এখন দ্বন্দ্বরত পক্ষগুলোকে একত্র করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করা দরকার। এ ছাড়া সরকারি প্রশাসনে ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে এই দ্বন্দ্বের মূল কারণগুলো দূর করা উচিত।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন। দীর্ঘ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। বর্তমানে ইমেরিটাস অধ্যাপক। মার্ক্সবাদী চিন্তাচেতনায় উদ্বুদ্ধ অধ্যাপক চৌধুরী নতুন দিগন্ত পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।
৫ ঘণ্টা আগেরাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে শুরু হওয়া ‘জাতীয় ঐকমত্য’ প্রক্রিয়া তার শেষের দিকে এগিয়ে চলেছে, কিন্তু এখনো দেখা যাচ্ছে, প্রক্রিয়ার শুরুর জায়গাটিই ভালোভাবে গড়ে ওঠেনি। একদিকে রয়েছে ১৬৬টি প্রস্তাব, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের পাহাড়।
৫ ঘণ্টা আগেলেখার শিরোনাম দেখেই যদি কেউ ভেবে থাকেন, এখানে অমূল্য রতন পেয়ে যাবেন, তাহলে ভুল করবেন। ফেব্রুয়ারি আর এপ্রিল নিয়ে এমন এক গাড্ডায় পড়েছে নির্বাচন যে, কোনো ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করার শক্তি কারও নেই। বিএনপির হাতে মুলা ধরিয়ে দিয়ে এই সরকারই আরও অনেক দিন ক্ষমতায় থাকার বাসনা পোষণ করছে কি না...
১ দিন আগেবিশ্বে পরিবেশদূষণকারী হিসেবে ১৫টি প্রধান দূষক চিহ্নিত করা হয়েছে। পয়লা নম্বরে আছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। বিশ্বব্যাপী পরিবেশদূষণে ৫ নম্বর দূষণকারী এখন প্লাস্টিক। দূষণের মাত্রা অনুযায়ী এই অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে।
১ দিন আগে