সম্পাদকীয়
করোনাকালে পথ হারানো মধ্যবিত্তের জীবনযাপন প্রক্রিয়া নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। মধ্যবিত্তের জীবন শুরুই হয় মোটামুটি শূন্য অবস্থা থেকে। আমাদের অর্থনীতির যে কাঠামো তাতে, নিম্নমাত্রার আয়ের সঙ্গে উচ্চমাত্রার ব্যয়ের কোনো সমন্বয় নেই। এই আয়-ব্যয়ের বৈষম্যের ফারাকের কারণে মধ্যবিত্তকে সেই প্রথম জীবন থেকেই টেনেটুনে সংসার চালাতে হয়। ঘাত-অভিঘাতের নানা সংকটে জীবনের সঙ্গে লড়াই চলে শেষ অবধি।
আগের মধ্যবিত্ত অনেক হিসেবি ছিল, তাই তো এতটা সংকটে পড়েনি—অনেকেই এমন খেদোক্তি করেন। কিন্তু সমাজ এগিয়েছে, সেই সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে জীবনযাপন প্রক্রিয়ায়। একবিংশ শতকের জীবনমানের সঙ্গে সেই বিংশ শতকের কোনো মিল নেই, থাকার কথাও নয়। মুক্তবাজার অর্থনীতি আর প্রযুক্তির উৎকর্ষের কারণে মানুষের জীবনযাপনে বৈচিত্র্য এসেছে। ভোগ্যপণ্যের বাজার বিস্তৃত হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই ব্যয় বেড়েছে। ৫০ বছর আগের ধ্যান-ধারণা দিয়ে এই সময়ে জীবনের গতিপ্রবাহ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
কে জানত হঠাৎ করে মহামারির উপদ্রব নিজের ঘরেই হাজির হবে, লণ্ডভণ্ড করে দেবে সবকিছু। তবে জানলেও হয়তো করার তেমন কিছু ছিল না। কারণ, বিশেষ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো অতিরিক্ত অর্থ জমিয়ে রাখার সামর্থ্য মধ্যবিত্তের কখনোই ছিল না। যাঁদের সেই সামর্থ্য তৈরি হয়েছে, তাঁরা উচ্চবিত্তের কাতারেই নাম লিখিয়েছেন। আমাদের মধ্যবিত্ত তাই আজ বর্ণনাতীত বিপদের সম্মুখীন; নিজের কক্ষপথ থেকে ছিটকে বাইরে পড়ে যাচ্ছে।
আমাদের মধ্যবিত্ত শ্রেণিটা নিজেদের সবসময়ই আত্মসম্মান আর অহমিকার আবরণে ঢেকে রাখে। সংকটে পড়লে তারা ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ে ঠিকই, কিন্তু সবার অগোচরে সেই সংকট থেকে মুক্ত হওয়ার পথ খোঁজে। যতক্ষণ সেটা অনিবার্য সহ্যসীমা অতিক্রম না করে, ততক্ষণ তা গোপনই থাকে। ফলে মধ্যবিত্তের সমস্যা সার্বজনীন হয়ে ওঠে না এবং সংগঠিত শক্তি হিসেবে তাদের দাবি সামগ্রিকভাবে দানা বাঁধতে পারে না। তাই চার দেয়ালের অন্দরেই তাদের নীরব কান্না, চাপা কষ্ট আটকে থাকে। করোনার সময়ে সৃষ্ট আর্থিক সমস্যা তারা নিজেরাই সামলানোর চেষ্টা করেছে।
এই পরিস্থিতিতে ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তের বিকাশ থেমে গেলে সেটা সমাজের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য শুভ হবে না। সমাজের ক্ষয়িষ্ণুতাকে রোধ করার জন্য, সংস্কৃতির সুস্থ বিকাশের জন্য এবং সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য মধ্যবিত্তের মূর্ত অবস্থানের কোনো বিকল্প নেই। তাই যেভাবেই হোক মধ্যবিত্তের ঝরে পড়া রোধ করতে হবে, না হলে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, সমাজ এবং দেশ পিছিয়ে যাবে বহুগুণে। মহামারির কালে টিকে থাকার নিরন্তর সংগ্রামে অসহায় মধ্যবিত্তের দেওয়ালে ঠেকা পিঠটা সোজা করার কঠিন উপায়ই হলো সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির অবসান ঘটিয়ে টেকসই উন্নয়ন আর পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক নিরাপত্তাব্যূহ তৈরি করা।
করোনাকালে পথ হারানো মধ্যবিত্তের জীবনযাপন প্রক্রিয়া নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। মধ্যবিত্তের জীবন শুরুই হয় মোটামুটি শূন্য অবস্থা থেকে। আমাদের অর্থনীতির যে কাঠামো তাতে, নিম্নমাত্রার আয়ের সঙ্গে উচ্চমাত্রার ব্যয়ের কোনো সমন্বয় নেই। এই আয়-ব্যয়ের বৈষম্যের ফারাকের কারণে মধ্যবিত্তকে সেই প্রথম জীবন থেকেই টেনেটুনে সংসার চালাতে হয়। ঘাত-অভিঘাতের নানা সংকটে জীবনের সঙ্গে লড়াই চলে শেষ অবধি।
আগের মধ্যবিত্ত অনেক হিসেবি ছিল, তাই তো এতটা সংকটে পড়েনি—অনেকেই এমন খেদোক্তি করেন। কিন্তু সমাজ এগিয়েছে, সেই সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে জীবনযাপন প্রক্রিয়ায়। একবিংশ শতকের জীবনমানের সঙ্গে সেই বিংশ শতকের কোনো মিল নেই, থাকার কথাও নয়। মুক্তবাজার অর্থনীতি আর প্রযুক্তির উৎকর্ষের কারণে মানুষের জীবনযাপনে বৈচিত্র্য এসেছে। ভোগ্যপণ্যের বাজার বিস্তৃত হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই ব্যয় বেড়েছে। ৫০ বছর আগের ধ্যান-ধারণা দিয়ে এই সময়ে জীবনের গতিপ্রবাহ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
কে জানত হঠাৎ করে মহামারির উপদ্রব নিজের ঘরেই হাজির হবে, লণ্ডভণ্ড করে দেবে সবকিছু। তবে জানলেও হয়তো করার তেমন কিছু ছিল না। কারণ, বিশেষ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো অতিরিক্ত অর্থ জমিয়ে রাখার সামর্থ্য মধ্যবিত্তের কখনোই ছিল না। যাঁদের সেই সামর্থ্য তৈরি হয়েছে, তাঁরা উচ্চবিত্তের কাতারেই নাম লিখিয়েছেন। আমাদের মধ্যবিত্ত তাই আজ বর্ণনাতীত বিপদের সম্মুখীন; নিজের কক্ষপথ থেকে ছিটকে বাইরে পড়ে যাচ্ছে।
আমাদের মধ্যবিত্ত শ্রেণিটা নিজেদের সবসময়ই আত্মসম্মান আর অহমিকার আবরণে ঢেকে রাখে। সংকটে পড়লে তারা ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ে ঠিকই, কিন্তু সবার অগোচরে সেই সংকট থেকে মুক্ত হওয়ার পথ খোঁজে। যতক্ষণ সেটা অনিবার্য সহ্যসীমা অতিক্রম না করে, ততক্ষণ তা গোপনই থাকে। ফলে মধ্যবিত্তের সমস্যা সার্বজনীন হয়ে ওঠে না এবং সংগঠিত শক্তি হিসেবে তাদের দাবি সামগ্রিকভাবে দানা বাঁধতে পারে না। তাই চার দেয়ালের অন্দরেই তাদের নীরব কান্না, চাপা কষ্ট আটকে থাকে। করোনার সময়ে সৃষ্ট আর্থিক সমস্যা তারা নিজেরাই সামলানোর চেষ্টা করেছে।
এই পরিস্থিতিতে ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তের বিকাশ থেমে গেলে সেটা সমাজের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য শুভ হবে না। সমাজের ক্ষয়িষ্ণুতাকে রোধ করার জন্য, সংস্কৃতির সুস্থ বিকাশের জন্য এবং সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য মধ্যবিত্তের মূর্ত অবস্থানের কোনো বিকল্প নেই। তাই যেভাবেই হোক মধ্যবিত্তের ঝরে পড়া রোধ করতে হবে, না হলে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, সমাজ এবং দেশ পিছিয়ে যাবে বহুগুণে। মহামারির কালে টিকে থাকার নিরন্তর সংগ্রামে অসহায় মধ্যবিত্তের দেওয়ালে ঠেকা পিঠটা সোজা করার কঠিন উপায়ই হলো সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির অবসান ঘটিয়ে টেকসই উন্নয়ন আর পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক নিরাপত্তাব্যূহ তৈরি করা।
মব ভায়োলেন্স তথা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ সহিংসতাই যেন কথিত নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের পথ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে উল্টো এর সাফাই গাওয়ায় এমন ধারণার উদ্রেক হওয়াটা কি খুব অস্বাভাবিক? মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের...
২ ঘণ্টা আগেউত্তেজনা একটি রোগ। এটি সংক্রামকও বটে। হঠাৎ করে আমাদের দেশ ও সমাজে উত্তেজনা এত বেড়েছে যে শান্তিতে থাকা যাচ্ছে না। আমরা বাস করি দেশের বাইরে অথচ এই দূরদেশেও সে উত্তেজনার আঁচ দেখতে পাচ্ছি। যত দিন যাচ্ছে, নিজেদের ভেতর অশান্তি আর গন্ডগোল যেন বেড়েই চলেছে। এর নিরসন কোথায় বা কীভাবে তা সম্ভব...
২ ঘণ্টা আগেবর্তমান সময়ে ঢাকা মহানগরীসহ যেকোনো শহর এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা যেভাবে জ্যামিতিক হারে বাড়ছে, তাতে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব পায়ে চালিত রিকশাকে জাদুঘরে দেখতে যাওয়ার সময় চলে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে তর্ক বা বিতর্কে যাওয়া যেতেই পারে, তবে আমার লেখার উদ্দেশ্য এর কোনোটিই...
২ ঘণ্টা আগেশুনলে মনে হয় রসিকতা। কিন্তু বাস্তবটা এতটাই তিক্ত যে চোখ কপালে ওঠে। গাজীপুরের শ্রীপুরে এক্স সিরামিকস লিমিটেড নামের একটি কারখানা, যাদের বিরুদ্ধে নদী দখল ও দূষণের একাধিক অভিযোগ প্রমাণসহ রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের নথিতে, তারা কিনা পেয়েছে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন...
২ ঘণ্টা আগে