Ajker Patrika

গণপরিবহনে চাঁদাবাজি

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৪: ০২
গণপরিবহনে চাঁদাবাজি

খবরটা মানিকগঞ্জের। তবে একই দৃশ্য পুরো দেশেরই।

মানিকগঞ্জে গণপরিবহন থেকে যে চাঁদাবাজি করা হয়, সে খবরটা চোখে পড়ল আজ। মনে হলো, প্রতি বছর একই খবর বার বার পড়তে হয়। তারপরও একঘেয়ে লাগে না চাঁদার অঙ্কটি জানার ঊৎসুক্য থাকে বলে। চাাঁদাবাজিতে কে কাকে ছাড়িয়ে গেল, তা দেখতে হবে না!

বছরে জেলা পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে এই চাঁদা তোলা হয়। এই চাঁদাবাজির পেছনে কোনো সদুদ্দেশ্য আছে, এমন কথা বলা যাবে না। মূলত ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই এই চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে এবং পুলিশ এর ভাগ পায় বলে তারাও মৌন থাকে।

চাঁদা দিতে দিতে মানিকগঞ্জের সাধারণ বাস মালিকদের ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। প্রতিদিন গড়ে ৩০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে ৭০০ বাস থেকে। সিএনজি ও অটোরিকশা থেকেও তোলা হয় চাঁদা। বাদ যায় না মিনিবাস, মাইক্রোবাস আর ভাড়ায় চালিত সেডান গাড়ি।

বিভিন্ন ব্যানারে চাঁদাবাজি হয়ে উঠেছে  লুটপাটের মাধ্যম। একটু একটু করে এই অবৈধ চাঁদাবাজি দখল করে নিয়েছে গোটা দেশের গণপরিবহনকে। এটাই যেন ঐতিহ্য। বাস মালিকদের কেউ ভাবতেও পারে না, চাঁদা না দিয়ে টিকে থাকবেন রাস্তায়। বিভিন্ন সমিতি বানিয়ে তাদের কল্যাণ করাটাই যেন পরিবহন মালিকদের অবশ্যকর্তব্য!

মালিক সমিতির ব্যানারে চাঁদা তোলা হয় কেন? এই রীতিটি কেন তার ঐতিহ্য বজায় রেখে এখনও বিদ্যমান? আচ্ছা, কেউ কি বুঝিয়ে বলবেন, কেন এই চাঁদা নেওয়া হয়? এই চাঁদা কাদের কল্যাণে লাগে?

চাাঁদাবাজি থেকে বাদ যায় না অটোরিকশাগুলোও। সমিতি আর পৌরসভা মিলেমিশে চাঁদার ভাগিদার।

সুমন চট্টোপাধ্যায়ের গানের ‘কোথাও কোনো নিয়ম নেই’ পংক্তিটি যেন বড় বাজল বুকে। প্রত্যেকটি এলাকায় যারা মালিক ও শ্রমিক সমিতিগুলোর দায়িত্বে থাকেন, তারাই কিন্তু মালিক ও শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ চাঁদাবিহীন জীবনের নিশ্চয়তা দিতে পারেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়ে বলতে পারেন , আমাদের এখানে চাঁদাবাজি চলবে না। কল্যাণের জন্য যদি কোনো চাঁদা দিতে হয়, তাহলে তা বছরে একবার কল্যাণ সমিতিকে দিতে হবে এবং সেই টাকা দিয়ে কার কল্যাণ হবে, সেটা পরিস্কার করতে হবে।

কিন্তু যে যায় লঙ্কায়, সে–ই হয় রাবণ। সমিতির নেতৃত্বের সঙ্গে অবৈধ অর্থের যোগাযোগ যেন সোনায় সোহাগা হয়ে বিরাজমান। ক্ষমতাসীন দল ও আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্থানীয় নেতৃত্ব ও কর্মকর্তাদের যদি জবাবদিহিতা থাকত, অবৈধ চাঁদাবাজির জন্য শাস্তি হতো, তাহলে পরিবহন সেক্টরকে অন্তত চাঁদাবাজির আতঙ্কে থাকতে হতো না।

প্রতিকার নেই বলে মেনে নিতে হয়। প্রতিকার থাকলে প্রত্যাঘাতের কথা ভাবা যায়, নিরুপোদ্রব বেঁচে থাকা যায়। কিন্তু আপাতত সেটা সোনার হরিণ বলেই মনে হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত