সম্পাদকীয়
গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াওয়াড়ি গত শতাব্দীর সেই পঞ্চাশ-ষাটের দশকেই বুঝতে পেরেছিলেন শিক্ষার কোনো বিকল্প হয় না। যৌনকর্মীদের অধিকারের জন্য লড়াই করা, তাঁদের সন্তানদের শিক্ষা নিশ্চিতকরতে স্কুল-কলেজে গিয়ে কথা বলা—যেন সমাজে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে—এসব যুদ্ধ তিনি একাই করেছিলেন। এবং অধিকার আদায়ও করে নিয়েছিলেন ভারতের এই যৌনকর্মী। তাঁর এমন অদম্য লড়াইয়ের জন্যই তিনি খ্যাতনামা হয়েছিলেন। একটা সময় ডাক পেয়েছিলেন রাজনৈতিক দলেও।
গাঙ্গুবাঈয়ের যুগ এখন নেই। এ সময় শিক্ষা গ্রহণের জন্য কারও লড়াই করার কথা না। কারণ বর্তমানে শিক্ষা যেকোনো দেশের নাগরিকদেরই সাংবিধানিক অধিকার। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের পথ সহজ হওয়া উচিত। যেকোনো শ্রেণি-পেশার মানুষের সন্তানদের জন্য শিক্ষালয়ের দুয়ার উন্মুক্ত রাখতে হয়। তবু কেন যৌনকর্মীদের সন্তানেরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়? প্রশ্নটা উঠছে এই জন্য যে জন্মনিবন্ধনের ডিজিটাল ব্যবস্থায় বাবার পরিচয় দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় ফরিদপুরের যৌনপল্লির শিশুরা জন্মনিবন্ধন সনদ পাচ্ছে না। আর সনদ না থাকায় তাদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার পথ বন্ধ। এ নিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি খবর প্রকাশিত হয়েছে আজকের পত্রিকায়।
ফরিদপুর শহরের রথখোলা ও সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকার দুটি যৌনপল্লির ৩৮৯ যৌনকর্মীর ২৯৬টি শিশুসন্তান রয়েছে। তাদের অধিকাংশের জন্মনিবন্ধন নেই। এই শিশুদের আবাসিক ও পড়াশোনার সুবিধা দিয়ে আসছে শাপলা মহিলা সংস্থা। দি ফ্রিডম ফান্ডের সহযোগিতায় শিশুদের জন্মনিবন্ধন নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। এর কর্মকর্তারা জানান, ডিজিটাল হওয়ার আগে জন্মনিবন্ধন করা গেছে, কিন্তু এখন বাবার নাম দেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়ায় জন্মনিবন্ধন করা যাচ্ছে না এবং শিশুদের ভর্তি নিচ্ছে না স্কুল। যদিও অনেকে ক্লাস করতে পারছে কিন্তু স্কুল থেকে তাদের বলা হয়েছে, জন্মনিবন্ধন সনদ জমা দিলেই ভর্তি নেওয়া হবে। ভর্তি হতে না পারায় হাজিরা খাতায় নাম উঠছে না এই শিশুদের।
জন্মনিবন্ধন সনদ ছাড়া কোনো স্কুলে ভর্তি নেওয়া হয় না—এই কানুন সবার জন্য সমান। যৌনকর্মীদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নিয়ম নেই। তাঁদের পেশার কারণে তাঁরা সন্তানের বাবার পরিচয় সঠিকভাবে দিতে পারেন না। ফলে বাধ্যতামূলক নিয়ম অনুযায়ী বাবার পরিচয় ছাড়া সন্তানদের জন্মনিবন্ধন না পাওয়ায় তাদের স্কুলে ভর্তি করা সম্ভব হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হয়তো জন্মনিবন্ধন ও স্কুলে ভর্তির নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠা করার সময় যৌনকর্মীদের সন্তানদের কথা বেমালুম ভুলে গেছে।
সংকট যেহেতু দেখা দিয়েছে, তাই সরকার চাইলেই বিষয়টির সহজ সমাধান দিতে পারে। ফরিদপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম যেমন নির্দেশ দিয়েছেন শুধু মায়ের নাম দিয়েই জন্মনিবন্ধন সনদ করে দিতে। এই সমাধানটি শুধু ফরিদপুরের যৌনপল্লির শিশুদের জন্য নয়, পুরো দেশের যৌনকর্মীদের সন্তানদের জন্য প্রযোজ্য হোক। তাহলে একদিকে যেমন সবার জন্য শিক্ষার সুযোগ করে দিয়ে সাংবিধানিক শর্ত পূরণ করতে পারবে রাষ্ট্র, অপর দিকে স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে যেকোনো মায়ের সন্তান।
গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াওয়াড়ি গত শতাব্দীর সেই পঞ্চাশ-ষাটের দশকেই বুঝতে পেরেছিলেন শিক্ষার কোনো বিকল্প হয় না। যৌনকর্মীদের অধিকারের জন্য লড়াই করা, তাঁদের সন্তানদের শিক্ষা নিশ্চিতকরতে স্কুল-কলেজে গিয়ে কথা বলা—যেন সমাজে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে—এসব যুদ্ধ তিনি একাই করেছিলেন। এবং অধিকার আদায়ও করে নিয়েছিলেন ভারতের এই যৌনকর্মী। তাঁর এমন অদম্য লড়াইয়ের জন্যই তিনি খ্যাতনামা হয়েছিলেন। একটা সময় ডাক পেয়েছিলেন রাজনৈতিক দলেও।
গাঙ্গুবাঈয়ের যুগ এখন নেই। এ সময় শিক্ষা গ্রহণের জন্য কারও লড়াই করার কথা না। কারণ বর্তমানে শিক্ষা যেকোনো দেশের নাগরিকদেরই সাংবিধানিক অধিকার। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের পথ সহজ হওয়া উচিত। যেকোনো শ্রেণি-পেশার মানুষের সন্তানদের জন্য শিক্ষালয়ের দুয়ার উন্মুক্ত রাখতে হয়। তবু কেন যৌনকর্মীদের সন্তানেরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়? প্রশ্নটা উঠছে এই জন্য যে জন্মনিবন্ধনের ডিজিটাল ব্যবস্থায় বাবার পরিচয় দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় ফরিদপুরের যৌনপল্লির শিশুরা জন্মনিবন্ধন সনদ পাচ্ছে না। আর সনদ না থাকায় তাদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার পথ বন্ধ। এ নিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি খবর প্রকাশিত হয়েছে আজকের পত্রিকায়।
ফরিদপুর শহরের রথখোলা ও সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকার দুটি যৌনপল্লির ৩৮৯ যৌনকর্মীর ২৯৬টি শিশুসন্তান রয়েছে। তাদের অধিকাংশের জন্মনিবন্ধন নেই। এই শিশুদের আবাসিক ও পড়াশোনার সুবিধা দিয়ে আসছে শাপলা মহিলা সংস্থা। দি ফ্রিডম ফান্ডের সহযোগিতায় শিশুদের জন্মনিবন্ধন নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। এর কর্মকর্তারা জানান, ডিজিটাল হওয়ার আগে জন্মনিবন্ধন করা গেছে, কিন্তু এখন বাবার নাম দেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়ায় জন্মনিবন্ধন করা যাচ্ছে না এবং শিশুদের ভর্তি নিচ্ছে না স্কুল। যদিও অনেকে ক্লাস করতে পারছে কিন্তু স্কুল থেকে তাদের বলা হয়েছে, জন্মনিবন্ধন সনদ জমা দিলেই ভর্তি নেওয়া হবে। ভর্তি হতে না পারায় হাজিরা খাতায় নাম উঠছে না এই শিশুদের।
জন্মনিবন্ধন সনদ ছাড়া কোনো স্কুলে ভর্তি নেওয়া হয় না—এই কানুন সবার জন্য সমান। যৌনকর্মীদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নিয়ম নেই। তাঁদের পেশার কারণে তাঁরা সন্তানের বাবার পরিচয় সঠিকভাবে দিতে পারেন না। ফলে বাধ্যতামূলক নিয়ম অনুযায়ী বাবার পরিচয় ছাড়া সন্তানদের জন্মনিবন্ধন না পাওয়ায় তাদের স্কুলে ভর্তি করা সম্ভব হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হয়তো জন্মনিবন্ধন ও স্কুলে ভর্তির নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠা করার সময় যৌনকর্মীদের সন্তানদের কথা বেমালুম ভুলে গেছে।
সংকট যেহেতু দেখা দিয়েছে, তাই সরকার চাইলেই বিষয়টির সহজ সমাধান দিতে পারে। ফরিদপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম যেমন নির্দেশ দিয়েছেন শুধু মায়ের নাম দিয়েই জন্মনিবন্ধন সনদ করে দিতে। এই সমাধানটি শুধু ফরিদপুরের যৌনপল্লির শিশুদের জন্য নয়, পুরো দেশের যৌনকর্মীদের সন্তানদের জন্য প্রযোজ্য হোক। তাহলে একদিকে যেমন সবার জন্য শিক্ষার সুযোগ করে দিয়ে সাংবিধানিক শর্ত পূরণ করতে পারবে রাষ্ট্র, অপর দিকে স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে যেকোনো মায়ের সন্তান।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন। দীর্ঘ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। বর্তমানে ইমেরিটাস অধ্যাপক। মার্ক্সবাদী চিন্তাচেতনায় উদ্বুদ্ধ অধ্যাপক চৌধুরী নতুন দিগন্ত পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।
২ ঘণ্টা আগেরাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে শুরু হওয়া ‘জাতীয় ঐকমত্য’ প্রক্রিয়া তার শেষের দিকে এগিয়ে চলেছে, কিন্তু এখনো দেখা যাচ্ছে, প্রক্রিয়ার শুরুর জায়গাটিই ভালোভাবে গড়ে ওঠেনি। একদিকে রয়েছে ১৬৬টি প্রস্তাব, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের পাহাড়।
২ ঘণ্টা আগেলেখার শিরোনাম দেখেই যদি কেউ ভেবে থাকেন, এখানে অমূল্য রতন পেয়ে যাবেন, তাহলে ভুল করবেন। ফেব্রুয়ারি আর এপ্রিল নিয়ে এমন এক গাড্ডায় পড়েছে নির্বাচন যে, কোনো ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করার শক্তি কারও নেই। বিএনপির হাতে মুলা ধরিয়ে দিয়ে এই সরকারই আরও অনেক দিন ক্ষমতায় থাকার বাসনা পোষণ করছে কি না...
১ দিন আগেবিশ্বে পরিবেশদূষণকারী হিসেবে ১৫টি প্রধান দূষক চিহ্নিত করা হয়েছে। পয়লা নম্বরে আছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। বিশ্বব্যাপী পরিবেশদূষণে ৫ নম্বর দূষণকারী এখন প্লাস্টিক। দূষণের মাত্রা অনুযায়ী এই অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে।
১ দিন আগে