Ajker Patrika

যেই লাউ সেই কদু

সম্পাদকীয়
যেই লাউ সেই কদু

এক গুজবেই ব্যবসায়ীদের বাজিমাত, সাধারণ ক্রেতা কুপোকাত! আমাদের দেশে আপাত অবিশ্বাস্য যে ব্যাপারগুলো প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকে, তারই একটি আবার এসে হাজির হয়েছে সামনে। আবার পেঁয়াজ নিয়ে তেলেসমাতি কারবার! সহনীয় পর্যায়েই ছিল দামটা—৪০ টাকার এদিক-ওদিকেই পাওয়া যাচ্ছিল। হঠাৎ কোথা থেকে ছড়িয়ে গেল গুজব—ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি করছে না। আর যায় কোথায়, রাতারাতি ২০ টাকা করে বেড়ে গেল কেজিপ্রতি দাম।

বেশ কয়েক বছর ধরেই পেঁয়াজ বনেদি হয়ে উঠেছে। কখনো কখনো পেঁয়াজের কেজি যে ২০০ টাকাও ছাড়িয়ে যায়, সেটা দেখার অভ্যাসও আছে আমাদের।

পেঁয়াজ নিয়ে গুজবটা ছড়ানোর পর সাধারণ ক্রেতা প্রথমেই কী ভাবেন? আমজাদ হোসেনের ঈদের নাটকের ভাষায়: তখন ‘গো অ্যান্ড স্টক’ করার কথাই ভাবেন। কারণ, তিনি মনে করেন, এখন তো ষাট টাকায় পাচ্ছি, কদিন পর কিনতে হবে দুই শ টাকা কেজি! ব্যস, যিনি পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কেনেন সাধারণত, তিনি কেনা শুরু করবেন ১০-১৫ কেজি। কিনবেন ওই বাড়তি দামেই। তাতে আড়তে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেবে, সেই ঘাটতি কৃত্রিম হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। যাঁরা কিনে ফেললেন বাড়তি দামে, তাঁরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন এবং মনে করলেন জিতে গেছেন। আর যাঁরা ওই বাড়তি টাকার সংস্থান করতে পারলেন না, তাঁরা ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপকে বানালেন অস্ত্র, তাতেই ছুড়ে দিলেন পেঁয়াজের ঝাঁজ।

যখন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা হয়ে গেল, একটা গুজবকে কেন্দ্র করেই একদল অসাধু ব্যবসায়ী হঠাৎ করেই বাড়িয়ে দিয়েছেন পেঁয়াজের দাম, তখন হয়তো টনক নড়বে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। চলবে হম্বিতম্বি। কে সারা জাতির এই অনিষ্ট করল, তার খোঁজ পড়বে।

তারপর কী হবে? প্রবাদ বলে: তারপর যা হবে, তা হলো, ‘যেই লাউ সেই কদু’। কিছুদিনের মধ্যেই মানুষ ভুলে যাবে, কয়েক দিনের চক্করে কতিপয় পেঁয়াজ ব্যবসায়ী স্রেফ গুজব ছড়িয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। কারা এই বদমায়েশির সঙ্গে যুক্ত, তা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়বে। যখন জানা যাবে, গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত তিন দফায় ভারত থেকে যে ৮৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে, শুল্ক পরিশোধের পর প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়েছে ২৬ হাজার ৩৪৫ টাকা। যার অর্থ, ২৬ টাকা ৩৪ পয়সা কেজি। তখন তো স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, সেই পেঁয়াজ কেন ৬০-৬৫ টাকা দিয়ে কিনতে হলো সাধারণ ক্রেতাকে?

এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে না। কারণ, আমাদের সমাজে লুকিয়ে থাকা বদমায়েশরা এই অব্যবস্থার পুরোটাই তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। আর সেই নিয়ন্ত্রণ যেন একচ্ছত্র হয়, সে জন্য যা যা করার, তার সবকিছুই করে। দিনের পর দিন জনগণের ওপর চলা এই ভোগান্তিই চোখে আঙুল দিয়ে
বুঝিয়ে দেয়, কেন আমাদের দেশ এতটা দুর্নীতিগ্রস্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত