Ajker Patrika

সুরক্ষিত সচিবালয় অনিরাপদ!

সম্পাদকীয়
সুরক্ষিত সচিবালয় অনিরাপদ!

ধরে নেওয়া হয় যে, সচিবালয় হচ্ছে রাষ্ট্রের সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থাপনা। অথচ সেই সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থাপনা অরক্ষিত ও অনিরাপদ!  খবরটি দুই দিন ধরে সর্বমহলে বেশ শোরগোল সৃষ্টি করেছে যে, সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জনগুরুত্বপূর্ণ অন্তত ১৭টি নথি গায়েব হয়ে গেছে।

বিষয়টি জানার পর গত বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বুধবার অফিস সময়ে নথিগুলো কেবিনেটে রাখা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার দুপুরে খোঁজ করে সেগুলো পাওয়া যায়নি। এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি সরানো ও মোবাইলে সেগুলোর ছবি তোলার অভিযোগ তুলে এক সাংবাদিককে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেই মামলায় কয়েক দিন কারাগারে থাকার পর এখন জামিনে আছেন তিনি। এ ঘটনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়। এর মধ্যেও নথিগুলো কীভাবে গায়েব হলো—এখন এ প্রশ্ন উঠেছে।

খবরে আরও জানা যায়, সচিবালয়ের ৩ নম্বর ভবনের নিচতলায় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের এক অতিরিক্ত সচিবের কক্ষসংলগ্ন একজন সাঁট মুদ্রাক্ষরিক ও কম্পিউটার অপারেটরের রুমের কেবিনেট থেকে নথিগুলো গায়েব হয়। এগুলো বিভিন্ন প্রকল্পের গাড়ি ক্রয়, মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের জন্য বরাদ্দ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরসহ কয়েকটি প্রকল্পের ক্রয়সংক্রান্ত বলে জানা যায়। নকল চাবি দিয়ে তালা খোলা হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি তদন্ত করে খুঁজে বের করার জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

এখন এ প্রশ্ন জরুরি হয়ে পড়েছে যে, স্বার্থান্বেষী মহল কি সচিবালয়ের সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থাপনাও চিনে গেছে? তাহলে কোনো কিছুরই আর নিরাপত্তা নেই? নাকি নিজ দপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউ এ অপকর্মে জড়িত? যদি তা-ই হয়, তবে তা খুবই ভয়ংকর কথা। তাহলে বলতে হবে, রাষ্ট্রের আর কোনো কিছু গোপন থাকবে না, যদি মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষিত কক্ষ থেকেই জনগুরুত্বপূর্ণ ফাইল গায়েব হয়ে যায়।

সিআইডি ইতিমধ্যে ৬ জনকে আটক করেছে। শক্ত তদন্ত দরকার। যতটুকু জানা গেছে, নথিগুলো বিভিন্ন প্রকল্পের কেনাকাটাসংক্রান্ত। তাহলে এসব নথি কারও না কারও স্বার্থসংশ্লিষ্ট হবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই।

তদন্ত কমিটি হলেও তা একই মন্ত্রণালয়ের। এটি কতটা স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তা ছাড়া, কমিটি হলেও শেষ পর্যন্ত তদন্তের রিপোর্ট জনসমক্ষে আসে না। এটি যেন সে রকম কিছু না হয়। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নথিই কেবল নয়; ভবিষ্যতে সচিবালয়ের মতো এত নিরাপত্তাবলয়ে থাকা স্থাপনা থেকে যেন কোনো কিছুই বেহাত না হয়, এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

মানবিক করিডর না ভূ-রাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

আইসিএক্স বাদ দিলে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত