Ajker Patrika

করোনামুক্ত কারাগার

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১২: ১১
করোনামুক্ত কারাগার

করোনাভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার রয়েছে চালকের আসনে। করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ থেকে এখনো এই কারাগার রয়েছে দূরে। আর একটু হলেই মুখ ফসকে বেরিয়ে যেত, লকডাউনে কাজ না হলে জনগণকে কারাগারে জায়গা দেওয়া হোক। তাতে অন্তত সংক্রমণ কমবে। কিন্তু বিনা অপরাধে কারাগারে রাখা তো যায় না, তাই কারাগার হয়ে উঠতে পারে না করোনার চিকিৎসালয়। অথচ দেখুন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার কত সহজে রোগটিকে তাদের চৌহদ্দির বাইরে রেখেছে! 

ইতিমধ্যে এই এক বছরে বাঙালি প্রমাণ করেছে, তারা লড়াকু জাতি। কিছু কিছু ধর্মব্যবসায়ী করোনার বিষয়ে তাদের নিজস্ব থিসিস দিয়ে করোনার বিস্তার ঘটানোর সহায়ক শক্তি হয়ে উঠেছেন। ব্যবসায়ীদের প্রভাবের কারণে সরকার সময়োচিত পদক্ষেপ না নেওয়ায় আগেপিছে অনেক সময় শিল্পকারখানার শ্রমিকেরা বিপদে পড়েছেন। বিপদে পড়েছেন সাধারণ চাকরিজীবী মানুষ। কৃষকের কথা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না।

এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে ধীরে ধীরে করোনা হয়ে উঠেছে আরও ভয়ংকর। তারপরও অল্প যেকটি নির্দেশনা মেনে চলতে হয়, তা মানার ব্যাপারে এই লড়াকু জাতির অনেক সদস্যের মধ্যে ছিল অনীহা, যার ফল দেখা যাচ্ছে এখন।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার অভিনব কিছু করেনি। ধারণক্ষমতার তিন গুণ বন্দী থাকার পরও শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সমস্ত শর্ত পূরণ করেছে বলেই আজ পর্যন্ত কোনো কয়েদি করোনার শিকার হননি। দুয়েকজন জেল কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বটে, কিন্তু সেটা জেল চৌহদ্দির মধ্যে থেকে নয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার বুঝিয়ে দিল, সুব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যেকোনো কঠিন সংক্রমণকেই দূরে রাখতে পারে। কিন্তু যারা কারাগারের বাইরে জীবনযাপন করছেন, তাদের অনেকের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কিংবা সুযোগ বুঝে মুনাফা লাভের জন্য অন্যের স্বাস্থ্যকে বিপদের মুখে ফেলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

একটা ধাঁধা বিপর্যস্ত করে তুলছে আমাদের। তাহলে কি মুক্তজীবনের চেয়ে বন্দিজীবন ভালো? শুধু সেখানেই কি মেলে শৃঙ্খলা? আর মুক্ত জীবন শুধু বিশৃঙ্খলাকেই মহান করে তোলে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত