বিভুরঞ্জন সরকার
বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সংবাদপত্র অফিসে হামলা, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যার মতো গুরুতর মামলায় নাম অন্তর্ভুক্তি এবং প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের পদক্ষেপগুলো কেবল গণমাধ্যমের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে না, বরং গণতান্ত্রিক সমাজের জন্যও এক বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি দেশের ভেতরে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে যেমন, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এর প্রভাব পড়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার যদিও বলছে তারা স্বাধীন সাংবাদিকতার পক্ষে এবং ঢালাও মামলার পক্ষে নয়, বাস্তব পরিস্থিতি এক ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছে। দেশের একাধিক মিডিয়া হাউসের সাংবাদিক হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হচ্ছেন, যা ন্যায্য বিচারের ধারণার পরিপন্থী। মিরপুরে এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করার প্রেক্ষাপটটি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। অভিযুক্ত সাংবাদিক তখন অন্য স্থানে লাইভ রিপোর্টিং করছিলেন, যা সহজেই প্রমাণ করা সম্ভব, কিন্তু তবু তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ রকম পরিস্থিতি শুধু সাংবাদিকদের পেশাগত জীবনে প্রভাব ফেলছে না, তাঁদের মানসিক স্থিতিতেও আঘাত হানছে।
অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের বিষয়টিও সাংবাদিকদের জন্য বড় আঘাত। সরকারের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আগে কার্ড প্রদান প্রক্রিয়ায় শৃঙ্খলার অভাব ছিল এবং তা সংশোধনের জন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে যাঁদের কার্ড বাতিল হয়েছে, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। বরং কার্ড বাতিলের কারণ হিসেবে রাজনৈতিক পক্ষপাত কিংবা পূর্ববর্তী সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অনুমান করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশকে আরও সীমাবদ্ধ করছে।
গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর উদ্বেগও স্পষ্ট। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার-এর অফিস ঘিরে পরিস্থিতি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা এবং তাঁদের ব্যাংক হিসাব জব্দের বিষয়টি নিয়ে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস ও সিপিজের বিবৃতি এসব হুমকির গভীরতাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ শুধু দেশের ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ন করছে না, এটি মুক্ত সাংবাদিকতার প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপর জনগণের আস্থাহীনতার পেছনে একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষাপট রয়েছে। গত দুই দশকে সাংবাদিকতার নামে রাজনৈতিক চাটুকারিতা, সুবিধাবাদী আচরণ এবং গণমাধ্যমের অংশবিশেষের পক্ষপাতিত্বপূর্ণ ভূমিকা সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিকে বিপন্ন করেছে। প্লট, ফ্ল্যাট কিংবা আরও কিছু ব্যক্তিগত প্রাপ্তির লোভে সাংবাদিকতার নীতি বিসর্জন দেওয়ার যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা সাধারণ মানুষের কাছে সাংবাদিকতার গ্রহণযোগ্যতাকে দুর্বল করেছে।
তবে এ বাস্তবতা যেন বর্তমান সরকার বা অন্য কোনো পক্ষকে পুরো গণমাধ্যমকেই দোষারোপ করার সুযোগ না দেয়। কিছু ব্যতিক্রমী আচরণের জন্য পুরো পেশাটিকে কলুষিত করা একেবারেই অন্যায়। বরং সাংবাদিকদের হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং তাঁদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
গণমাধ্যমকে চাপ দিয়ে কিংবা হয়রানির মাধ্যমে স্বাধীন সাংবাদিকতা বন্ধ করার যে চেষ্টা, তা সাময়িকভাবে হয়তো কারও স্বার্থ রক্ষা করতে পারে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এটি রাষ্ট্র এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকর। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেবল আইনের চোখে নয়, বাস্তব চর্চায়ও নিশ্চিত হওয়া জরুরি। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার সঠিক তদন্ত এবং প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন। একইভাবে, অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের মতো পদক্ষেপের জন্যও একটি স্বচ্ছ এবং ন্যায্য প্রক্রিয়া চালু করা প্রয়োজন।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব যেমন সরকারের, তেমনই সাংবাদিকদেরও নিজেদের পেশাগত নৈতিকতা এবং দায়িত্বের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। অতীতে সাংবাদিকতার নামে চাটুকারিতা কিংবা পক্ষপাতিত্বের যে উদাহরণ দেখা গেছে, তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে একটি স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম গড়ে তুলতে হলে সব পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেবল সাংবাদিকদের নয়, এটি গোটা সমাজের। কারণ, একটি স্বাধীন এবং দায়িত্বশীল গণমাধ্যমই পারে জনগণের মতপ্রকাশের অধিকারকে সুরক্ষিত করতে।
তাই, সংকট উত্তরণের জন্য সরকার, সাংবাদিক এবং জনগণের সমন্বিত উদ্যোগই হতে পারে একমাত্র পথ।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সংবাদপত্র অফিসে হামলা, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যার মতো গুরুতর মামলায় নাম অন্তর্ভুক্তি এবং প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের পদক্ষেপগুলো কেবল গণমাধ্যমের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে না, বরং গণতান্ত্রিক সমাজের জন্যও এক বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি দেশের ভেতরে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে যেমন, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এর প্রভাব পড়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার যদিও বলছে তারা স্বাধীন সাংবাদিকতার পক্ষে এবং ঢালাও মামলার পক্ষে নয়, বাস্তব পরিস্থিতি এক ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছে। দেশের একাধিক মিডিয়া হাউসের সাংবাদিক হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হচ্ছেন, যা ন্যায্য বিচারের ধারণার পরিপন্থী। মিরপুরে এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করার প্রেক্ষাপটটি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। অভিযুক্ত সাংবাদিক তখন অন্য স্থানে লাইভ রিপোর্টিং করছিলেন, যা সহজেই প্রমাণ করা সম্ভব, কিন্তু তবু তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ রকম পরিস্থিতি শুধু সাংবাদিকদের পেশাগত জীবনে প্রভাব ফেলছে না, তাঁদের মানসিক স্থিতিতেও আঘাত হানছে।
অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের বিষয়টিও সাংবাদিকদের জন্য বড় আঘাত। সরকারের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আগে কার্ড প্রদান প্রক্রিয়ায় শৃঙ্খলার অভাব ছিল এবং তা সংশোধনের জন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে যাঁদের কার্ড বাতিল হয়েছে, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। বরং কার্ড বাতিলের কারণ হিসেবে রাজনৈতিক পক্ষপাত কিংবা পূর্ববর্তী সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অনুমান করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশকে আরও সীমাবদ্ধ করছে।
গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর উদ্বেগও স্পষ্ট। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার-এর অফিস ঘিরে পরিস্থিতি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা এবং তাঁদের ব্যাংক হিসাব জব্দের বিষয়টি নিয়ে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস ও সিপিজের বিবৃতি এসব হুমকির গভীরতাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ শুধু দেশের ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ন করছে না, এটি মুক্ত সাংবাদিকতার প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপর জনগণের আস্থাহীনতার পেছনে একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষাপট রয়েছে। গত দুই দশকে সাংবাদিকতার নামে রাজনৈতিক চাটুকারিতা, সুবিধাবাদী আচরণ এবং গণমাধ্যমের অংশবিশেষের পক্ষপাতিত্বপূর্ণ ভূমিকা সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিকে বিপন্ন করেছে। প্লট, ফ্ল্যাট কিংবা আরও কিছু ব্যক্তিগত প্রাপ্তির লোভে সাংবাদিকতার নীতি বিসর্জন দেওয়ার যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা সাধারণ মানুষের কাছে সাংবাদিকতার গ্রহণযোগ্যতাকে দুর্বল করেছে।
তবে এ বাস্তবতা যেন বর্তমান সরকার বা অন্য কোনো পক্ষকে পুরো গণমাধ্যমকেই দোষারোপ করার সুযোগ না দেয়। কিছু ব্যতিক্রমী আচরণের জন্য পুরো পেশাটিকে কলুষিত করা একেবারেই অন্যায়। বরং সাংবাদিকদের হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং তাঁদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
গণমাধ্যমকে চাপ দিয়ে কিংবা হয়রানির মাধ্যমে স্বাধীন সাংবাদিকতা বন্ধ করার যে চেষ্টা, তা সাময়িকভাবে হয়তো কারও স্বার্থ রক্ষা করতে পারে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এটি রাষ্ট্র এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকর। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেবল আইনের চোখে নয়, বাস্তব চর্চায়ও নিশ্চিত হওয়া জরুরি। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার সঠিক তদন্ত এবং প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন। একইভাবে, অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের মতো পদক্ষেপের জন্যও একটি স্বচ্ছ এবং ন্যায্য প্রক্রিয়া চালু করা প্রয়োজন।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব যেমন সরকারের, তেমনই সাংবাদিকদেরও নিজেদের পেশাগত নৈতিকতা এবং দায়িত্বের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। অতীতে সাংবাদিকতার নামে চাটুকারিতা কিংবা পক্ষপাতিত্বের যে উদাহরণ দেখা গেছে, তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে একটি স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম গড়ে তুলতে হলে সব পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেবল সাংবাদিকদের নয়, এটি গোটা সমাজের। কারণ, একটি স্বাধীন এবং দায়িত্বশীল গণমাধ্যমই পারে জনগণের মতপ্রকাশের অধিকারকে সুরক্ষিত করতে।
তাই, সংকট উত্তরণের জন্য সরকার, সাংবাদিক এবং জনগণের সমন্বিত উদ্যোগই হতে পারে একমাত্র পথ।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবেশ ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এক গভীর রূপান্তরের ভেতর দিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলের পরিণতিতে যখন দেশে একধরনের দমন-পীড়ন ও এককেন্দ্রিক ক্ষমতার গঠন স্পষ্ট হয়ে উঠছিল, তখন নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজ মিলে গড়ে তোলে এক অভাবিত প্রতিরোধ,
২০ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানের বছর পূর্তিতে আমাদের অর্জন কী, সে প্রশ্ন আজ সবার। জুলাই আন্দোলনের সময় কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক বক্তব্য না থাকলেও শেখ হাসিনার পতনের পর মানুষের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল—রাষ্ট্রের যে পদ্ধতি শাসককে কর্তৃত্বপরায়ণ, স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্টে পরিণত করে, সেই ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।
২০ ঘণ্টা আগেআগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে জানানো হয়েছে। নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে আগামী নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে আগ্রহী ও উৎসাহী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গত সোমবার বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে
২০ ঘণ্টা আগেলুটপাটের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন শেখ হাসিনা ও তাঁর দলবল। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে তিনি সাঙ্গপাঙ্গদের দিয়েছিলেন সম্পদ লুণ্ঠনের অধিকার। গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও দেশে রয়ে গেছে লুটেরা সিন্ডিকেট। গণমাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লুটপাট, চাঁদাবাজি ও দখল
১ দিন আগে