মোহাম্মদ আব্দুর রহমান
মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ সফরের মধ্য দিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক সম্পর্কে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার দিকে নজর দিয়েছেন। তিনি সিরিয়া ও ইরানের মতো শত্রুরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই সফরের সময় ট্রাম্প প্রায় ৭০০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক ও সামরিক চুক্তি সম্পাদন করেছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশলের ইঙ্গিত দেয়।
তবে এই সফরের সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয় ছিল গাজা উপত্যকা নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব। তিনি ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখল করবে এবং সেখানে নতুন করে উন্নয়ন করবে, যাতে এটি ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ হয়ে ওঠে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পুনর্বাসনের কথা বলেন। এই প্রস্তাব আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে এবং অনেকেই এটাকে জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। হামাস এবং অন্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো এই প্রস্তাবকে তাদের অধিকারের বিরুদ্ধে একটি আক্রমণ হিসেবে দেখছে। তারা মনে করে, গাজা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং সেখানে ফিলিস্তিনিদের অধিকার অক্ষুণ্ন থাকা উচিত।
আরব দেশগুলোও ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জর্ডান ও মিসর স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের জন্য তাদের দেশে স্থান দেবে না। সৌদি আরবও জানিয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না। আরব লিগ এবং ওআইসিও এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে একটি বড় বাধা। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সমর্থন দিয়েছেন। তিনি এই প্রস্তাবকে ‘বিপ্লবী ও সৃজনশীল’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে এই পরিকল্পনা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিকভাবে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসনের বর্তমান নীতিমালায় ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিকে সরাসরি অস্বীকার করা হয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সংলাপ পুরোপুরি বন্ধ করা রয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের উন্নয়নের জন্য নতুন মডেল দরকার, যেখানে পশ্চিমা দেশ ও উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর অর্থায়ন থাকবে, কিন্তু নেতৃত্বে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ এবং তাদের অধিকার হরণ করা হবে। এই ধরনের পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে।
ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া, আরব বিশ্বের ঐক্য এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংলাপের অগ্রগতির ওপর। ট্রাম্পের প্রস্তাব যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এটি ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি অন্ধকার ভবিষ্যতের সূচনা করতে পারে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আনার জন্য ফিলিস্তিনিদের প্রকৃত স্বাধীনতা হতে পারে প্রধান দাবি।
লেখক: শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ সফরের মধ্য দিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক সম্পর্কে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার দিকে নজর দিয়েছেন। তিনি সিরিয়া ও ইরানের মতো শত্রুরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই সফরের সময় ট্রাম্প প্রায় ৭০০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক ও সামরিক চুক্তি সম্পাদন করেছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশলের ইঙ্গিত দেয়।
তবে এই সফরের সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয় ছিল গাজা উপত্যকা নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব। তিনি ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখল করবে এবং সেখানে নতুন করে উন্নয়ন করবে, যাতে এটি ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ হয়ে ওঠে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পুনর্বাসনের কথা বলেন। এই প্রস্তাব আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে এবং অনেকেই এটাকে জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। হামাস এবং অন্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো এই প্রস্তাবকে তাদের অধিকারের বিরুদ্ধে একটি আক্রমণ হিসেবে দেখছে। তারা মনে করে, গাজা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং সেখানে ফিলিস্তিনিদের অধিকার অক্ষুণ্ন থাকা উচিত।
আরব দেশগুলোও ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জর্ডান ও মিসর স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের জন্য তাদের দেশে স্থান দেবে না। সৌদি আরবও জানিয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না। আরব লিগ এবং ওআইসিও এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে একটি বড় বাধা। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সমর্থন দিয়েছেন। তিনি এই প্রস্তাবকে ‘বিপ্লবী ও সৃজনশীল’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে এই পরিকল্পনা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিকভাবে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসনের বর্তমান নীতিমালায় ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিকে সরাসরি অস্বীকার করা হয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সংলাপ পুরোপুরি বন্ধ করা রয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের উন্নয়নের জন্য নতুন মডেল দরকার, যেখানে পশ্চিমা দেশ ও উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর অর্থায়ন থাকবে, কিন্তু নেতৃত্বে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ এবং তাদের অধিকার হরণ করা হবে। এই ধরনের পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে।
ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া, আরব বিশ্বের ঐক্য এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংলাপের অগ্রগতির ওপর। ট্রাম্পের প্রস্তাব যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এটি ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি অন্ধকার ভবিষ্যতের সূচনা করতে পারে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আনার জন্য ফিলিস্তিনিদের প্রকৃত স্বাধীনতা হতে পারে প্রধান দাবি।
লেখক: শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
২১ ঘণ্টা আগেদেশে নারী জাগরণ অভূতপূর্ব। এটা বলে বোঝানোর দরকার পড়ে না। বীরকন্যা প্রীতিলতা, বেগম রোকেয়া থেকে জাহানারা ইমামে এর উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ শাসিত হয়েছে নারীর অধীনে। এরশাদের পতনের পর সরাসরি সামরিক শাসনের অবসান হলে খালেদা জিয়া দেশ শাসনে আসেন।
২১ ঘণ্টা আগেআকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুদিন পরেই বৃষ্টিতে নাজেহাল হয়ে ওঠা মানুষদের এমনটাই মনে হবে। বাইরে হয়তো রোদ তখন তেমন কড়া নয়, আবার কড়াও হতে পারে, শেফালির শাখে বিহগ-বিহগী কে জানে কী গেয়ে যাবে!
২১ ঘণ্টা আগেচাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছোট্ট গ্রাম সাড়ে পাঁচআনি। এখানেই বড় হচ্ছে সোহান—মাত্র সাড়ে পাঁচ বছরের এক বিস্ময়বালক, যার পায়ের জাদু দেখে বিস্মিত হচ্ছে দেশজুড়ে মানুষ।
২১ ঘণ্টা আগে