বিজন সাহা
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ রাশিয়ার অষ্টম পার্লামেন্ট নির্বাচন হলো। কিছুদিন আগে এ নিয়ে লিখেছিলাম। তাই আজ মূলত লেখাটি সীমাবদ্ধ থাকবে নির্বাচনের ফলাফলের মধ্যে। এবারের নির্বাচন হচ্ছে নতুন পরিস্থিতিতে। গত বছর রাশিয়ার সংবিধানে ব্যাপক পরিবর্তনের পরে পার্লামেন্ট আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ক্ষমতার অধিকারী হয়েছে। আগে এ দেশের মূল ক্ষমতা সীমাবদ্ধ ছিল প্রেসিডেন্ট আর মন্ত্রিসভার হাতে। পার্লামেন্ট ছিল আইন প্রণয়নের মূল সংস্থা। এ দেশের পার্লামেন্ট ভারতের লোকসভার মতো জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়। এ ছাড়া আছে ফেডারেল কাউন্সিল, যা অনেকটা ভারতের রাজ্যসভার মতো বিভিন্ন স্টেটের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত। সে ক্ষেত্রে গুরুত্বের দিক থেকে পার্লামেন্ট চতুর্থ স্থানে।
এত দিন পর্যন্ত আইন প্রণয়নের বাইরেও পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট কর্তৃক প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভা অনুমোদন করা বা না করার ক্ষমতা রাখত। নব্বইয়ের দশকে যেখানে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ছিল কমিউনিস্ট পার্টি, তখন প্রায়ই পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নিত। ভ্লাদিমির পুতিন ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। তাঁর সমর্থিত দল বরাবরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ফলে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টের কনফ্রন্টেশন আজ অতীত কাহিনি। এ জন্য অনেকেই বর্তমান পার্লামেন্টকে পুতিনের পকেট পার্লামেন্ট বলে মনে করে।
আসলে ঘটনা হলো প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুতিন ইয়েলৎসিনের চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয় আর সেই জনপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি করে তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়েছে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল গঠন করা; বিশেষ করে ২০০৭ সালে যখন পুতিন মিউনিখে পশ্চিমা বিশ্বের কাছ থেকে সমান অধিকার দাবি করেন, তখন থেকেই কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি বিরূপ কিন্তু সোভিয়েত অতীতে গর্ববোধ করেন এমন অনেকেই তাঁর মধ্যে রাশিয়ার ভবিষ্যৎ দেখেন। অবশ্য এর মধ্যে চেচনিয়ায় যুদ্ধ সমাপণ করে পুতিন ব্যাপক জনসমর্থন অর্জন করতে সমর্থ হন।
এই প্রথম পার্লামেন্ট শুধু মন্ত্রিসভার অনুমোদনই দেবে না, পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মন্ত্রিসভার নামও প্রস্তাব করবে। আর সে কারণেই প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, ডিফেন্স মিনিস্টার সের্গেই শইগু, যাঁরা এত দিন পর্যন্ত সরাসরি প্রেসিডেন্ট দ্বারা নিযুক্ত হতেন–পার্লামেন্টে নির্বাচিত হয়েছেন। সেদিক থেকে দেখলে ফরমালি হলেও বর্তমান পার্লামেন্ট আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী হবে। একই সঙ্গে কমবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা। অনেকের ধারণা, ২০২৪ সালে পুতিন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন না করলে শক্তিশালী পার্লামেন্টের মাধ্যমে এ দেশের রাজনীতিতে নিজের প্রভাব বজায় রাখবেন।
যদিও পুতিনের ইউনাইটেড রাশিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রেখেছে; তবু ২০১৬ সালের তুলনায় তাদের সমর্থন ৫৪ দশমিক ২ থেকে কমে ৪৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ হয়েছে। পক্ষান্তরে কমিউনিস্টদের সমর্থন ১৩ দশমিক ৩৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে খারাপ করেছে ঝিরিনভস্কির লিবারেল ডেমক্র্যাট পার্টি। ২০১৬ সালের ১৩ দশমিক ১৪ থেকে নেমে সেটা হয়েছে ৭ দশমিক ৫১। অন্যদিকে মিরনভের ন্যায্য রাশিয়া ৬ দশমিক ২২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৪৭। এবার এই চারটি পার্টির বাইরে ‘নতুন মানুষ’ নামে আরও একটা দল পার্লামেন্টে এসেছে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ সমর্থন নিয়ে। ২০১৬ সালে ৭৪টির জায়গায় এবার ৩২টি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল; তবে পার্লামেন্টে প্রবেশের জন্য মিনিমাম ৩ শতাংশ ব্যারিয়ার আর কোন দল পার হতে পারেনি। ২ দশমিক ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়ে অল্পের জন্য মিস করেছে পেনশনভোগীদের দল। যেসব দল ৩ শতাংশ ব্যারিয়ার পাড়ি দিতে পারেনি, তাদের ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ ভোট আনুপাতিক হারে পার্লামেন্ট পার্টিগুলোর মধ্যে বণ্টিত হয়েছে।
৪৫০ আসনের এ দেশের পার্লামেন্টে ২২৫ আসন ভোটের আনুপাতিক হারে বিভিন্ন দলের মধ্যে বণ্টিত হয়। বাকি ২২৫ আসনে হয় সরাসরি নির্বাচন। ফলে প্রত্যেক ভোটার অন্তত দুটো করে ভোট দেন। একটা পার্টিকে, আরেকটা প্রার্থীকে। ইউনাইটেড রাশিয়া ২১৭ আসনে প্রার্থী দিয়ে ১৯৮ আসনে জয়লাভ করেছে। ফলে ৪৫০ আসনের পার্লামেন্টে তাদের সদস্যসংখ্যা ১৯৮ + ১২৬ = ৩২৪। এবার মিরনভ জাখার প্রিলেপিনের মতো জনপ্রিয় লেখকের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় আসায় ধারণা করা গিয়েছিল তারা আরও ভালো করবে। অন্যদিকে পেনশনের বয়সসীমা বাড়ানোর মতো অজনপ্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় পুতিনের দল সমর্থন হারাবে বলে ধারণা করা গিয়েছিল; বিশেষ করে অন্যান্য দলের পেনশনের বয়সসীমা কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। এ ছাড়া করোনার বিরুদ্ধে সবার আগে ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও প্রথম দিকে করোনা মোকাবিলায় যথেষ্ট এফেক্টিভ হলেও পরবর্তী পর্যায়ে ব্যাপক মৃত্যু ইউনাইটেড রাশিয়ার জনপ্রিয়তা কমাবে বলে ধারণা করা গিয়েছিল। যদিও ২০১৬ সালের তুলনায় জনপ্রিয়তা কমেছে, সেটা ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারবে বলে মনে হয় না।
রাশিয়ার মোট ৮৫টি প্রশাসনিক এলাকার মধ্যে ৭টিতে অনলাইন ভোটের কারণেই কি না কে জানে, এবার ভোটের সংখ্যা ২০১৬ সালের তুলনায় কিছুটা বেশি। এটা ক্রমাগত নিম্নগামী ভোট গণনার ক্ষেত্রে ভালো লক্ষণ।
ইলেকশন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, একবিংশ শতাব্দীতে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনগুলোতে প্রদত্ত ভোটের পরিমাণ মিলিয়ন ও শতকরা হিসেবে নিম্নরূপ: ২০০৩ (৬০.৭; ৫৫.৭ %); ২০০৭ (৬৯.৬; ৬৩.৮ %) ; ২০১১ (৬৫.৮; ৬০.২ %); ২০১৬ (৫২.৭; ৪৭.৯%) এবং ২০২১ (৫৩.৩; ৫১.৭ %)। উপরিউক্ত পাঁচটি দল বাদেও জন্মভূমি, সিভিল প্ল্যাটফর্ম ও বৃদ্ধি দলের একজন করে এবং পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন।
তবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন আছে; বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব ধরেই নিয়েছে এখানে কারচুপি ছাড়া নির্বাচন হতে পারে না। পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা উল্টো পুতিনকে জনপ্রিয় করেছে। নির্বাচনে কারচুপির ব্যাপারে কেউই সঠিক তথ্য দিতে পারবে না। কেননা, সারা বিশ্বের সব নির্বাচনকেই আজ প্রশ্নের মুখোমুখি করা হয়েছে। তবে এটা বলা যায়, নির্বাচন কমিশন সব অভিযোগ যাচাই করে দেখছে। কিন্তু সমস্যা হলো একদল লোক যেমন ‘নির্বাচনে কারচুপি হবেই’ সেটা অন্ধভাবে বিশ্বাস করে, আরেক দল করে উল্টোটা। যত দিন না আমরা নিজেদের যেকোনো ধরনের অন্ধবিশ্বাস থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারব, তত দিন এসব হবেই। তবে যেটা অনেকটা আস্থার সঙ্গে বলা যায় তা হলো, অদূর ভবিষ্যতে রাশিয়ার বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতিতে ড্রামাটিক কোনো পরিবর্তন ঘটবে না।
লেখক: বিজন সাহা গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, দুবনা, রাশিয়া
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ রাশিয়ার অষ্টম পার্লামেন্ট নির্বাচন হলো। কিছুদিন আগে এ নিয়ে লিখেছিলাম। তাই আজ মূলত লেখাটি সীমাবদ্ধ থাকবে নির্বাচনের ফলাফলের মধ্যে। এবারের নির্বাচন হচ্ছে নতুন পরিস্থিতিতে। গত বছর রাশিয়ার সংবিধানে ব্যাপক পরিবর্তনের পরে পার্লামেন্ট আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ক্ষমতার অধিকারী হয়েছে। আগে এ দেশের মূল ক্ষমতা সীমাবদ্ধ ছিল প্রেসিডেন্ট আর মন্ত্রিসভার হাতে। পার্লামেন্ট ছিল আইন প্রণয়নের মূল সংস্থা। এ দেশের পার্লামেন্ট ভারতের লোকসভার মতো জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়। এ ছাড়া আছে ফেডারেল কাউন্সিল, যা অনেকটা ভারতের রাজ্যসভার মতো বিভিন্ন স্টেটের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত। সে ক্ষেত্রে গুরুত্বের দিক থেকে পার্লামেন্ট চতুর্থ স্থানে।
এত দিন পর্যন্ত আইন প্রণয়নের বাইরেও পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট কর্তৃক প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভা অনুমোদন করা বা না করার ক্ষমতা রাখত। নব্বইয়ের দশকে যেখানে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ছিল কমিউনিস্ট পার্টি, তখন প্রায়ই পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নিত। ভ্লাদিমির পুতিন ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। তাঁর সমর্থিত দল বরাবরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ফলে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টের কনফ্রন্টেশন আজ অতীত কাহিনি। এ জন্য অনেকেই বর্তমান পার্লামেন্টকে পুতিনের পকেট পার্লামেন্ট বলে মনে করে।
আসলে ঘটনা হলো প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুতিন ইয়েলৎসিনের চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয় আর সেই জনপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি করে তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়েছে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল গঠন করা; বিশেষ করে ২০০৭ সালে যখন পুতিন মিউনিখে পশ্চিমা বিশ্বের কাছ থেকে সমান অধিকার দাবি করেন, তখন থেকেই কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি বিরূপ কিন্তু সোভিয়েত অতীতে গর্ববোধ করেন এমন অনেকেই তাঁর মধ্যে রাশিয়ার ভবিষ্যৎ দেখেন। অবশ্য এর মধ্যে চেচনিয়ায় যুদ্ধ সমাপণ করে পুতিন ব্যাপক জনসমর্থন অর্জন করতে সমর্থ হন।
এই প্রথম পার্লামেন্ট শুধু মন্ত্রিসভার অনুমোদনই দেবে না, পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মন্ত্রিসভার নামও প্রস্তাব করবে। আর সে কারণেই প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, ডিফেন্স মিনিস্টার সের্গেই শইগু, যাঁরা এত দিন পর্যন্ত সরাসরি প্রেসিডেন্ট দ্বারা নিযুক্ত হতেন–পার্লামেন্টে নির্বাচিত হয়েছেন। সেদিক থেকে দেখলে ফরমালি হলেও বর্তমান পার্লামেন্ট আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী হবে। একই সঙ্গে কমবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা। অনেকের ধারণা, ২০২৪ সালে পুতিন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন না করলে শক্তিশালী পার্লামেন্টের মাধ্যমে এ দেশের রাজনীতিতে নিজের প্রভাব বজায় রাখবেন।
যদিও পুতিনের ইউনাইটেড রাশিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রেখেছে; তবু ২০১৬ সালের তুলনায় তাদের সমর্থন ৫৪ দশমিক ২ থেকে কমে ৪৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ হয়েছে। পক্ষান্তরে কমিউনিস্টদের সমর্থন ১৩ দশমিক ৩৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে খারাপ করেছে ঝিরিনভস্কির লিবারেল ডেমক্র্যাট পার্টি। ২০১৬ সালের ১৩ দশমিক ১৪ থেকে নেমে সেটা হয়েছে ৭ দশমিক ৫১। অন্যদিকে মিরনভের ন্যায্য রাশিয়া ৬ দশমিক ২২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৪৭। এবার এই চারটি পার্টির বাইরে ‘নতুন মানুষ’ নামে আরও একটা দল পার্লামেন্টে এসেছে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ সমর্থন নিয়ে। ২০১৬ সালে ৭৪টির জায়গায় এবার ৩২টি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল; তবে পার্লামেন্টে প্রবেশের জন্য মিনিমাম ৩ শতাংশ ব্যারিয়ার আর কোন দল পার হতে পারেনি। ২ দশমিক ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়ে অল্পের জন্য মিস করেছে পেনশনভোগীদের দল। যেসব দল ৩ শতাংশ ব্যারিয়ার পাড়ি দিতে পারেনি, তাদের ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ ভোট আনুপাতিক হারে পার্লামেন্ট পার্টিগুলোর মধ্যে বণ্টিত হয়েছে।
৪৫০ আসনের এ দেশের পার্লামেন্টে ২২৫ আসন ভোটের আনুপাতিক হারে বিভিন্ন দলের মধ্যে বণ্টিত হয়। বাকি ২২৫ আসনে হয় সরাসরি নির্বাচন। ফলে প্রত্যেক ভোটার অন্তত দুটো করে ভোট দেন। একটা পার্টিকে, আরেকটা প্রার্থীকে। ইউনাইটেড রাশিয়া ২১৭ আসনে প্রার্থী দিয়ে ১৯৮ আসনে জয়লাভ করেছে। ফলে ৪৫০ আসনের পার্লামেন্টে তাদের সদস্যসংখ্যা ১৯৮ + ১২৬ = ৩২৪। এবার মিরনভ জাখার প্রিলেপিনের মতো জনপ্রিয় লেখকের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় আসায় ধারণা করা গিয়েছিল তারা আরও ভালো করবে। অন্যদিকে পেনশনের বয়সসীমা বাড়ানোর মতো অজনপ্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় পুতিনের দল সমর্থন হারাবে বলে ধারণা করা গিয়েছিল; বিশেষ করে অন্যান্য দলের পেনশনের বয়সসীমা কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। এ ছাড়া করোনার বিরুদ্ধে সবার আগে ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও প্রথম দিকে করোনা মোকাবিলায় যথেষ্ট এফেক্টিভ হলেও পরবর্তী পর্যায়ে ব্যাপক মৃত্যু ইউনাইটেড রাশিয়ার জনপ্রিয়তা কমাবে বলে ধারণা করা গিয়েছিল। যদিও ২০১৬ সালের তুলনায় জনপ্রিয়তা কমেছে, সেটা ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারবে বলে মনে হয় না।
রাশিয়ার মোট ৮৫টি প্রশাসনিক এলাকার মধ্যে ৭টিতে অনলাইন ভোটের কারণেই কি না কে জানে, এবার ভোটের সংখ্যা ২০১৬ সালের তুলনায় কিছুটা বেশি। এটা ক্রমাগত নিম্নগামী ভোট গণনার ক্ষেত্রে ভালো লক্ষণ।
ইলেকশন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, একবিংশ শতাব্দীতে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনগুলোতে প্রদত্ত ভোটের পরিমাণ মিলিয়ন ও শতকরা হিসেবে নিম্নরূপ: ২০০৩ (৬০.৭; ৫৫.৭ %); ২০০৭ (৬৯.৬; ৬৩.৮ %) ; ২০১১ (৬৫.৮; ৬০.২ %); ২০১৬ (৫২.৭; ৪৭.৯%) এবং ২০২১ (৫৩.৩; ৫১.৭ %)। উপরিউক্ত পাঁচটি দল বাদেও জন্মভূমি, সিভিল প্ল্যাটফর্ম ও বৃদ্ধি দলের একজন করে এবং পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন।
তবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন আছে; বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব ধরেই নিয়েছে এখানে কারচুপি ছাড়া নির্বাচন হতে পারে না। পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা উল্টো পুতিনকে জনপ্রিয় করেছে। নির্বাচনে কারচুপির ব্যাপারে কেউই সঠিক তথ্য দিতে পারবে না। কেননা, সারা বিশ্বের সব নির্বাচনকেই আজ প্রশ্নের মুখোমুখি করা হয়েছে। তবে এটা বলা যায়, নির্বাচন কমিশন সব অভিযোগ যাচাই করে দেখছে। কিন্তু সমস্যা হলো একদল লোক যেমন ‘নির্বাচনে কারচুপি হবেই’ সেটা অন্ধভাবে বিশ্বাস করে, আরেক দল করে উল্টোটা। যত দিন না আমরা নিজেদের যেকোনো ধরনের অন্ধবিশ্বাস থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারব, তত দিন এসব হবেই। তবে যেটা অনেকটা আস্থার সঙ্গে বলা যায় তা হলো, অদূর ভবিষ্যতে রাশিয়ার বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতিতে ড্রামাটিক কোনো পরিবর্তন ঘটবে না।
লেখক: বিজন সাহা গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, দুবনা, রাশিয়া
জাতীয় প্রেসক্লাবে ৭ সেপ্টেম্বর গণশক্তি আয়োজন করে ‘জুলাই সনদ ও নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা। সেই সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না যে প্রশ্নটি করেছেন, তা কোটি টাকার সঙ্গে তুলনা করাই যায়। তাঁর সহজ জিজ্ঞাসা—‘ভোটের দিন যাঁর যেখানে শক্তি আছে, তাঁর যদি মনে হয় জিততে পারবেন না...
৮ ঘণ্টা আগেহিমালয়কন্যা নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ভূদৃশ্যটি পর্বতমালার মতোই চড়াই-উতরাইয়ে ভরা। ১০ বছরের মাওবাদী বিদ্রোহের রক্তক্ষরণের পর ২০০৮ সালে উচ্ছেদ হয়েছিল রাজতন্ত্র। সেই থেকে ১৩ বার সরকার বদল হয়েছে। ক্ষমতার মসনদে ঘুরেফিরে দেখা যাচ্ছিল গুটিকয়েক নেতাকে।
৮ ঘণ্টা আগেবেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) পরিচালিত ‘২০২৫ সালের মধ্যবর্তী সময়ে দেশের পরিবারসমূহের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি’ শীর্ষক সাম্প্রতিক জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে যে তিন বছরে (২০২২-২৫) দেশে দারিদ্র্যের হার ৯ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে এখন ২৮ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় একটি পরিচিত শব্দবন্ধ হলো বায়ুচড়া। এর আভিধানিক অর্থ হলো পাগলামি। পাগলামি, উন্মাদনা বা উন্মত্ততা অর্থে আমরা ‘মাথা গরম হওয়া’র কথা কমবেশি সবাই জানি। একই অর্থে বায়ুরোগ বা বায়ুগ্রস্ততাও তুলনামূলকভাবে পরিচিত। এমনকি পাগলামি অর্থে ‘মাথা ফোরটি নাইন হওয়া’র কথাও প্রচলিত রয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে