Ajker Patrika

অবসরের আগে পদোন্নতি নিয়ে আগের পথেই অন্তর্বর্তী সরকার

  • এক ডজন কর্মকর্তার এভাবে পদোন্নতি।
  • পদোন্নতিপ্রাপ্তরা পেনশনে বাড়তি সুবিধা পাবেন।
  • চুক্তিতে নিয়োগের পথ খুলেছে অনেকের।
শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
অবসরের আগে পদোন্নতি নিয়ে আগের পথেই অন্তর্বর্তী সরকার

জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় না হলেও দলীয় সরকারের সময় অনুগত কর্মকর্তাদের অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে পদোন্নতি দিয়ে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ার পর আসা অন্তর্বর্তী সরকারও সে ধারা অব্যাহত রেখেছে। অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে পদোন্নতি পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মীর কিছু প্রাপ্তিযোগ ঘটলেও সরকারের কোনো লাভ হচ্ছে না।

অবসরের আগে আগে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়মিত চাকরি শেষে চুক্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং সরাসরি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় পদে যোগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া পেনশনেও বাড়তি আর্থিক সুবিধা ভোগ করেন তাঁরা।

চাকরির মেয়াদ কত দিন বাকি থাকতে ওপরের স্তরের পদে পদোন্নতি দেওয়া যাবে, তার নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। ফলে সরকার চাইলে যেকোনো সময় যে কাউকে পদোন্নতি দিতে পারে। এ রকম পদোন্নতির পরিসংখ্যান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নেই। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় অন্তত এক ডজন কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে সচিব, গ্রেড-১ এবং অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।

গত বছরের ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (বেপজা) কর্তৃপক্ষের সদস্য, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ফারুক আলমকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে একই প্রজ্ঞাপনে ওএসডি করা হয়। ফলে পদোন্নতি পাওয়া পদে যোগ দেওয়ার সুযোগই পাননি তিনি। কিন্তু সচিবের বেতন স্কেল অনুযায়ী তাঁর পেনশন হিসাব করা হবে। গত বছরের ২১ নভেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিক, ২৫ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান হোছাইনী, ২৯ ডিসেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, ১২ ফেব্রুয়ারি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শেখাবুর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল হাকিম, ১৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রবিউল ইসলাম এবং ২ মার্চ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নায়েব আলী মণ্ডলকে অবসরে যাওয়ার ঠিক আগে গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। অবসরে যাওয়ার সুবিধার জন্য তাঁদের পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনেই ওএসডি করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে নানা ধরনের আলোচনা রয়েছে। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নাম-পরিচয় প্রকাশ করে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, একটি ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের ১৫০ জন কর্মকর্তা থাকলে তাঁদের সঙ্গে ২৫ শতাংশ কোটায় অন্য ক্যাডার থেকে আরও কিছু কর্মকর্তা যোগ হন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৭০ জন কর্মকর্তা সচিব পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেন; কিন্তু পদোন্নতি পান হাতে গোনা কয়েকজন। তিনি আরও বলেন, কাউকে যদি প্রাইজ প্রমোশন দেওয়া হয়, তা নিয়ে সমালোচনা হবেই। কিন্তু এসব নিয়ে কথা বললে জটিলতায় পড়তে হবে। কারণ এসব পদোন্নতিতে বিধিবিধানের কোনো লঙ্ঘন হয় না; কিন্তু এমন পদোন্নতি দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক, সে প্রশ্ন আছে।

অবসরের আগে আগে পদোন্নতির বিষয় নিয়ে গত সরকারের সময় আলোচনা হয়েছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, একজন কর্মকর্তাকে চাকরির শেষ সময়ে সচিব করে একটি মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছিল। ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বিষয়টি জানতে পেরে তা নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তখন সরকারপ্রধান বলেন, চাকরির মেয়াদ দুই বছরের কম রয়েছে এমন কাউকে সচিব না করা হলেই ভালো হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার কথা কয়েকজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। তবে এ নিয়ে কোনো লিখিত নির্দেশনা নেই।

কয়েকটি আলোচিত পদোন্নতি

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীকে অবসরে যাওয়ার মাত্র দুই দিন আগে গত বছরের ৮ মে সচিব পদে পদোন্নতি দেয় সরকার। চাকরির মেয়াদ না থাকায় নতুন কোনো দপ্তরে তাঁকে পদায়ন না করে পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনেই ওএসডি করা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগে সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব মো. খাইরুল ইসলামকে গত বছরের ২ জুলাই পদোন্নতি সচিব করা হয়। কিন্তু একই প্রজ্ঞাপনে তাঁকে ওএসডি করা হয়। বিসিএস অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডারের কর্মকর্তা খাইরুল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস-১) দায়িত্বে ছিলেন। পদোন্নতির পর গত বছরের ১ অক্টোবর তাঁকে এক বছরের চুক্তিতে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সদস্যপদে নিয়োগ দেয় সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে অবসরে পাঠানোর আগের দিন ২০২৪ সালের ২৩ মে জ্যেষ্ঠ সচিব করা হয়। পরদিন তাঁকে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ উইংয়ের মহাপরিচালক আনোয়ার ফারুককে ভারপ্রাপ্ত কৃষিসচিব করা হয়। তখন অতিরিক্ত সচিবদের মধ্য থেকে প্রথমে ভারপ্রাপ্ত সচিব করে মন্ত্রণালয় বা বিভাগে বদলি করা হতো। এরপর আলাদা আদেশে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হতো। অবসরে যাওয়ার এক দিন আগে ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আনোয়ার ফারুককে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব থেকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। পরদিন চাকরি থেকে অবসরে যান তিনি।

এ পদোন্নতিতে যেসব লাভ

অবসরের ঠিক আগে সচিব, গ্রেড-১ বা অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির পর আর কোনো দপ্তরে পদায়ন না হলেও কর্মকর্তারা আর্থিকভাবে লাভবান হন। সামাজিক মর্যাদাও বাড়ে। অবসরের পর বিভিন্ন করপোরেশন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বড় পদে চাকরি পান তাঁরা।

বেতন কাঠামোয় সচিবদের মূল বেতন নির্ধারিত রয়েছে ৭৮ হাজার টাকা। আর অতিরিক্ত সচিবদের সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৬ হাজার ৪৯০ টাকা। কোনো অতিরিক্ত সচিব অবসরের আগে যত কম সময়ের জন্যই হোক, সচিব পদে পদোন্নতি পেলে তাঁর পেনশন সুবিধা ১ হাজার ৫১০ টাকা বেড়ে ৭৮ হাজার টাকায় হিসাব করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের মূল বেতন ৮৬ হাজার টাকা। জ্যেষ্ঠ সচিব ও সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের মূল বেতন ৮২ হাজার টাকা। কোনো সচিব যদি জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে অবসরে যান, তাঁর মূল বেতন ৭৮ হাজার থেকে বেড়ে ৮২ হাজার হবে এবং ৮২ হাজার টাকা মূল বেতন ধরে তাঁকে পেনশন সুবিধা দেওয়া হবে।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়ার মতে, অবসরের মাত্র দু-এক দিন আগে পদোন্নতি দেওয়ার সঙ্গে জনস্বার্থের বিষয়টি থাকে না। তিনি বলেন, ‘নির্দলীয় সরকার তাঁদের অনুগত এবং পছন্দের ব্যক্তিকে এমন পদোন্নতি দিচ্ছে কি না, তা দেখতে হবে। নিরপেক্ষভাবে এ সুবিধা না দেওয়া হলে সেটা অন্যায়। এভাবে পদোন্নতি দেওয়া হলে বেছে বেছে না দিয়ে যোগ্য সবাইকে দেওয়া উচিত। কারণ আগের সরকারের সময় দেখা গেছে, তাঁদের গুডবুকে থাকা কর্মকর্তারা এমন সুবিধা পেয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশের খসড়া

ফোনে অশোভন বার্তা পাঠালে ২ বছরের দণ্ড

  • সাজা হবে জরিমানা বা কারাদণ্ড কিংবা উভয়ই।
  • টেলিফোনে বিরক্ত করলে জরিমানা ১ লাখ।
  • বিধান অমান্য করে আড়ি পাতলে ২ বছরের সাজা।
  • মতামত জানানো যাবে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফোনে অশোভন বার্তা পাঠালে ২ বছরের দণ্ড

ফোনে কাউকে অশ্লীল, অশোভন বার্তা পাঠালে হতে পারে দুই বছরের কারাদণ্ড ও দেড় কোটি টাকা জরিমানা। আর কাউকে টেলিফোনে বিরক্ত করার সাজা হতে পারে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং তা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড। ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ায় এসব কথা বলা হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ গতকাল এই খসড়া প্রকাশ করেছে। সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও সাধারণ নাগরিকদের মতামত নেওয়ার জন্য খসড়াটি বিভাগের ওয়েবসাইটে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার ধারা ৭০-এ টেলিফোনে বিরক্ত করা সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে যদি এমনভাবে বারবার ফোন করেন যে তা ওই ব্যক্তির জন্য বিরক্তিকর হয় বা অসুবিধার সৃষ্টি করে, তাহলে বিষয়টি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

অধ্যাদেশে অশ্লীল, অশোভন বার্তা পাঠালে হতে পারে দুই বছরের জেল, দেড় কোটি টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ধারা ৬৯-এ বলা হয়েছে অশ্লীল, অশোভন ইত্যাদি বার্তা পাঠানোর অপরাধ ও এর সাজা বিষয়ে। এতে বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি বা বেতার যন্ত্রপাতির সাহায্যে কোনো অশ্লীল, ভীতি প্রদর্শনমূলক বা গুরুতরভাবে অপমানকর কোনো বার্তা, ছবি বা ছায়াছবি পাঠালে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট যন্ত্র পরিচালনাকারী ব্যক্তির কাছে এ কাজের প্রস্তাবকারী বা প্রেরণকারী কিংবা ক্ষেত্রমতো, উভয়েই অনধিক দুই বছর কারাদণ্ড বা অনধিক দেড় কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন। আইনের দফা (গ)-এর ক্ষেত্রে প্রেরণকারী অনধিক পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে এবং অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সাইবার সুরক্ষা আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

বেআইনিভাবে আড়ি পাতলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক দেড় কোটি টাকা জরিমানা কিংবা উভয় সাজার বিধান রাখা হয়েছে।

অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী, ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা—যেমন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, অনলাইন মেসেজিং ও ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপ—সবই সরকারের অনুমোদনের আওতায় আসবে। এসব সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে এখন থেকে বাংলাদেশে নিবন্ধন নিতে হবে এবং প্রয়োজনে নিরাপত্তা সংস্থাকে তথ্য সরবরাহ করতে হবে।

খসড়া অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এই খাতে একটি স্বাধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কমিশন গঠন করা হবে, যা লাইসেন্স প্রদান, নীতিনির্ধারণ, স্পেকট্রাম বণ্টন ও প্রযুক্তিগত মান নিয়ন্ত্রণ করবে। কমিশন হবে পাঁচ সদস্যের, যার একজন চেয়ারম্যান ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান থাকবেন।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, অনুমতিহীনভাবে টেলিযোগাযোগ সেবা পরিচালনা বা বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে সরকার প্রয়োজনে যেকোনো প্ল্যাটফর্ম স্থগিত বা বন্ধ করতে পারবে।

অধ্যাদেশের খসড়ার বিষয়ে মতামত পাঠানো যাবে [email protected] ই-মেইল ঠিকানায় অথবা ডাকযোগে সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা ঠিকানায়। ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মতামত দেওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ হামলার টার্গেট ছিলেন না—অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবৃতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ হামলার টার্গেট ছিলেন না—অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবৃতি

চট্টগ্রাম-৮ আসনের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনী প্রচারণা অনুষ্ঠানে সহিংস হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) তাৎক্ষণিক তদন্তের কথা উল্লেখ করে বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—জনাব এরশাদ উল্লাহ এই হামলার টার্গেট ছিলেন না; বিক্ষিপ্তভাবে ছোড়া একটি গুলি তাঁর শরীরে এসে বিদ্ধ হয়। সরকার এই ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং গুলিতে আহত জনাব এরশাদ উল্লাহর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে।

সরকার এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থী এবং নাগরিকের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে।

বিবৃতিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্ত, গ্রেপ্তার এবং বিচারের আওতায় আনতে নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস নির্দেশ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আরও বলা হয়—‘আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের কোনো স্থান নেই। সিএমপি ইতিমধ্যেই হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে।’

বিবৃতিতে সকল রাজনৈতিক দল এবং তাদের সমর্থকদের শান্ত থাকার, সংযম প্রদর্শনের এবং ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচন যেন শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায্যতার পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এ ছাড়া সারা দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাইলটের উড্ডয়নের ত্রুটিতে মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনা: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিং করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: পিআইডি
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিং করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: পিআইডি

রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যে বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছিল, এর কারণ হিসেবে যুদ্ধবিমানের পাইলটের উড্ডয়ন ত্রুটি চিহ্নিত হয়েছে তদন্তে।

ঘটনার তিন মাস পর আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত প্রতিবেদনের কিছু তথ্য ও সুপারিশ তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, ‘দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল, পাইলটের উড্ডয়নের ত্রুটি। ট্রেনিংয়ের সময় যখন ফ্লাই করছিলেন, পরিস্থিতি তাঁর আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। এটা হচ্ছে কনক্লুশন। এই পুরো তদন্ত কমিটি ১৫০ জনের সঙ্গে কথা বলেছে। তার মধ্যে এক্সপার্ট আছেন, আই উইটনেস আছেন, ভিকটিমস আছেন। সবার সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। উনারা ১৬৮টি তথ্য উদ্‌ঘাটন করেছেন এবং তার মধ্যে তাঁরা ৩৩টি রিকমেন্ডেশন করেছেন। প্রতিবেদনে অনেকগুলো ফাইন্ডিংসে অনেকগুলো রিকমেন্ডেশন এসেছে।’

প্রেস সচিব আরও বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে বিমানবন্দর ও আশপাশের ফায়ার স্টেশনগুলোর জন্য বিশেষ সরঞ্জাম ও ফোমের মতো উপকরণ থাকা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। উড়োজাহাজের উড্ডয়ন ও অবতরণের পথে যে অংশ পড়ে (ফানেল), তার মধ্যে নির্মিত কাঠামোর উচ্চতার বিধিনিষেধ কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এই ওঠানামার পথ বা ফানেলের আশপাশে আন্তর্জাতিক চর্চা অনুযায়ী হাসপাতাল, স্কুল বা বেশি জনসমাগম হয় এমন স্থাপনা নির্মাণের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ৩৬ জন নিহত হয়, এর অধিকাংশই শিক্ষার্থী। বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামও নিহত হন।

এ ঘটনা নিয়ে ৯ সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিশনকে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিত, কারণ, দায়দায়িত্ব ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং ঘটনাসংশ্লিষ্ট অপরাপর বিষয় চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবধান! ৯৯৯ ক্লোন করে বিকাশ-নগদের পিন চাচ্ছে প্রতারকেরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৭
সাবধান! ৯৯৯ ক্লোন করে বিকাশ-নগদের পিন চাচ্ছে প্রতারকেরা

সম্প্রতি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর ক্লোন করে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারকেরা ৯৯৯ নম্বর ব্যবহার করে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর ও ব্যাংকের কার্ডসংক্রান্ত তথ্য জানতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর প্রধান অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মহিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কখনোই কোনো নাগরিকের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বা ব্যাংক কার্ডের পিন নম্বর জানতে চায় না। নাগরিকদের চাহিদা অনুযায়ী জরুরি মুহূর্তে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্সসেবা দেওয়া হয়।

আজ সকাল ১০টার দিকে এ ধরনের দুটি প্রতারণার ঘটনা ঘটে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিয়াডাঙ্গা থানার আরপুর বাগানপাড়া এলাকার এক বাসিন্দাকে প্রতারকেরা ৯৯৯ নম্বর ক্লোন করে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টের তথ্য জানতে চায়। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে সরাসরি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করেন। পরে ৯৯৯ থেকে স্থানীয় থানার সঙ্গে ভুক্তভোগীর যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয় এবং ঘটনাটি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।

আরও এক ঘটনায় এক ব্যক্তিকে ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানানো হয় এবং বিকাশ অ্যাকাউন্টের তথ্য দাবি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ও ব্যাংকের কার্ডের পিন নম্বর কোনো অবস্থায় কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। এ ধরনের প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকা ও তাদের সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট থানা বা ৯৯৯ নম্বরে জানাতে জনগণকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত