Ajker Patrika

জাতীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন

জ্যামিতিক নকশার ত্রুটিতে মৃত্যুফাঁদ মল্লিকপুর

সৌগত বসু, ঢাকা 
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯: ৩৯
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দুর্ঘটনাস্থল। ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দুর্ঘটনাস্থল। ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক

গত মাসের মাঝামাঝিতে ভোরবেলায় ফরিদপুরের মল্লিকপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে খাগড়াছড়ি পরিবহন ও গ্রিন এক্সপ্রেস বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে সংঘটিত দুর্ঘটনার পেছনে সড়ক অবকাঠামোতে ত্রুটিসহ বেশ কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছে জাতীয় তদন্ত কমিটি। এসব কারণে দুর্ঘটনাস্থলটিকে ‘ব্ল্যাক স্পট’ বা বারংবার দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মৃতুফাঁদে পরিণত ওই সড়কের কাঠামোগত ত্রুটি সারানোসহ একগুচ্ছ সুপারিশ করে জরুরি ভিত্তিতে তা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে কমিটি।

গত ১৫ অক্টোবর ভোর ৩টা থেকে ৩টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে ফরিদপুর সদরের কানাইপুরের মল্লিকপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসের সুপারভাইজার ও হেলপারসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের চার জন সকলে খাগড়াছড়ি পরিবহন বাসের যাত্রী। ওই ঘটনায় ২৫ জন আহত হয়েছেন।

আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে ৩৫ থেকে ৪০ জন ইটভাটা শ্রমিক খাগড়াছড়ি পরিবহনের বাসে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এই দুর্ঘটনায় ঘটে। এসময় অধিকাংশ যাত্রী ঘুমে ছিল। গ্রিন এক্সপ্রেসের বাসটি ঢাকার আব্দুল্লাপুর থেকে ঝিনাইদহ যাচ্ছিল।

তদন্ত কমিটিতে সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে রয়েছেন বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক। আরমানা সাবিহা হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গত ১৫ অক্টোবর ভোরে যে দুর্ঘটনা ঘটে, তার প্রধান কারণ হলো— স্পাইরাল কার্ভ অনিরাপদ ছিল। একের পর এক এস কার্ভের কারণে এলাকাটি দুর্ঘটনাপ্রবণ। উপরন্তু সেই সড়কে লেন আলাদা করে যে ধরণের মার্কিং করা কথা, সেটি করা হয়নি। অনুসন্ধানে সড়কের জ্যামিতিক নকশাই আমরা অনিরাপদ হিসেবে দেখতে পাই। এই ভুলটিকে এ দুর্ঘটনার বড় কারণ হিসেবে দেখছি।’

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে জাতীয় তদন্ত কমিটির সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক। ছবি:  ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে জাতীয় তদন্ত কমিটির সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক। ছবি: ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক

ফরিদপুরের মল্লিকপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ওই অংশটি পড়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) অধীনে। নিয়ম অনুযায়ী, মহাসড়কের টানা সাদা দাগ থাকার কথা, যাতে চালক গাড়ির লেন পরিবর্তন করতে না পারেন। কিন্তু এই নিয়মের ব্যতয় ঘটিয়ে সেখানে সড়কে কাটা সাদা লাইন ছিল। এই লাইনের অর্থ— চালক সতর্কতার সঙ্গে লেন পরিবর্তন করতে পারেন।

জাতীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ওই ভয়ঙ্কর বাঁকে ভুল মার্কিং করা হয়েছে। পাশাপাশি বাসের অতিরিক্ত গতি, চালকের ওভারটেকিং করার প্রবণতা, মহাসড়কের পাশে যথাযথ পরিসর (ট্রাভার্সেবল ক্লিয়ারিং জোন) না থাকার কথাও দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দুর্ঘটনাস্থল। ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দুর্ঘটনাস্থল। ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক

দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনার সময় খাগড়াছড়ি পরিবহনের বাসটি তার লেনেই ছিল। গ্রিন এক্সপ্রেস বাসটি উল্টো দিক এসে দ্রুত গতিতে লেন পরিবর্তন করতে গিয়ে বাসটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

ড. আরমানা বলেন, ‘ফরিদপুরের দুর্ঘটনাটি ঘটেছে স্পাইরাল কার্ভে (এস আকৃতির)। এসব কার্ভ এমনিতেই বিপদজনক। সেখানে সলিড মার্কিং (দাগ) না করে ভাঙা ভাঙা মার্কিং করা হয়েছে। ফলে সড়কের এই অংশ আরো বিপদজনক হয়েছে। এটি চালককে নিয়ম বহির্ভূতভাবে লেন পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে। আমরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, সড়কের ওই অংশে অতিরিক্ত গতিতে গাড়িগুলো নিয়মিতভাবে ওভারটেক করে। মহাসড়কে যানবাহনের গতি পরিমাপ করে দেখেছি, ঢাকাগামী যানবাহনগুলোর গতি থাকে অতিরিক্ত।’

তদন্ত কমিটিতে সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে রয়েছেন বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক
তদন্ত কমিটিতে সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে রয়েছেন বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক

বুয়েট শিক্ষক সাবিহা বলেন, সড়কের এই ভয়াবহ বাঁকের অংশটি ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন। দুপাশে গাছের ঘন সারি থাকায় বাসের হেডলাইটের আলো কম প্রতিফলিত হয়েছে। কোনো সড়ক বাতির ব্যবস্থা ছিল না। সড়কের যে বাঁক রয়েছে সেটিরও নির্দেশনা সাইন ছিল না। সড়কের উভয় পাশে ১০ মিটারের মধ্যে কোনো স্থাপনা না থাকার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হয়নি। তার অর্থ মূল সড়ক থেকে কোনো গাড়ি নামতে বাধ্য হলে তার জন্য যথেষ্ট জায়গা থাকতে হবে, যেটিকে ট্রাভার্সেবল ক্লিয়ারিং জোন বলা হয়। সেটি ছিল না সেখানে।

জাতীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০ আসনবিশিষ্ট খাগড়াছড়ি পরিবহনের বাসের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৩২টি করা হয়েছিল। বাসটির ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, রুট পারমিট সবই ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। গ্রিন এক্সপ্রেসের বাসটির রুট পারমিট ছিল শুধু। এই বাসের আসন সংখ্যা ৪১টি থেকে বাড়িয়ে ৪৫টিতে উন্নীত করা হয়েছিল। দুর্ঘটনার পরে দুই বাসের চালকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। দুই চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

দুর্ঘটনা কবলিত বাসের ভেতরের অংশ। ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক
দুর্ঘটনা কবলিত বাসের ভেতরের অংশ। ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, খাগড়াছড়ি পরিবহনের বাসটির আসনগুলো ছিল নড়বড়ে, কোনোরকমে ঢালাই করা হয়েছিল। দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার পেছনে এটি উল্লেখযোগ্য কারণ।

জাতীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে আরো কিছু সুপারিশ করা হয়েছে—

#সড়ক-মহাসড়কে চলাচলকারী বাসগুলোর ফিটনেস, চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্সগুলো নিয়মিত তদারকি করতে হবে।

#রুট পারমিটবিহীন কোনো বাস যেন সড়কে নামার অনুমতি না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

#কোনো বাস চালক যেন ৫ ঘণ্টার বেশি টানা বাস চালাতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে।

#দূরপাল্লার বাসগুলোতে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং তা ব্যবহার করতে পরিবহন শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

#মহাসড়কে থ্রি হুইলার যানবাহন বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

দুর্ঘটনা কবলিত বাস। ছবি: আরমানা সাবিহা হক
দুর্ঘটনা কবলিত বাস। ছবি: আরমানা সাবিহা হক

বুয়েটের এই শিক্ষক আরো বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে তিনি বেশ কয়েকটা জায়গাকে অনিরাপদ পেয়েছেন। ‘আঞ্চলিক একটা সড়কের সঙ্গে এই মহাসড়কের এমন একটি সংযোগস্থল পাওয়া গেছে যেখানে কোন সাইন ছিল না। যিনি এই রাস্তা করেছেন, তিনি এই বিষয়ে অবগত নন।’

ড. আরমানা বলেন, ‘সড়কের ওই জায়গার নকশাকে বিপদমুক্ত করতে হলে কার্ভ নিরাপদ করতে হবে। কার্ভের উপর শেভরন সাইন, রেক্ট্রো রিফ্লেক্টিং মার্কিং বসাতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ওভারটেকিং কমানোর জন্য পর্যাপ্ত সেফটি মেজার নিতে হবে।’

তবে এই প্রতিবেদন পাওয়ার পর শুধুমাত্র ভাঙা মার্কিংগুলোকে সলিড মার্কিংয়ে পরিণত করা ছাড়া সুপারিশ বাস্তবায়নে সওজ থেকে আর কোনো কিছু করা হয়নি বলে তিনি জানান।

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দুর্ঘটনা কবলিত বাস। ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দুর্ঘটনা কবলিত বাস। ছবি: ড. আরমানা সাবিহা হক

জাতীয় তদন্ত কমিটির এই প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চাইলে বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মল্লিকপুরের সড়ক দুর্ঘটনার পরে জাতীয় তদন্ত কমিটি সওজকে বেশকিছু সুপারিশ দিয়েছে। আমরা সেই মোতাবেক কিছু কাজ করছি।’

সড়কে ভুল মার্কিংয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট তো মাত্র এসেছে আমাদের হাতে। আমরা কাজ করছি। কারা জড়িত, কাদের কী ভুল, এসব আমি বিস্তারিত বলতে পারব না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

  • সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় উঠছে আজ।
  • প্যানেলে আছেন দুদকে অনুসন্ধান চলা কর্মকর্তাও।
  • একসঙ্গে এত কর্মকর্তা আগে প্যানেলভুক্ত হননি।
  • ‘নতুন পদ ও আদালতের কারণে সংখ্যা বেড়েছে।’
এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা  
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আইন মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি ১১ শতাধিক বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় উঠছে। এ সভায় বিষয়টি অনুমোদিত হলে তা আবারও পাঠানো হবে আইন মন্ত্রণালয়ে। এরপর সময়ে সময়ে ওই প্যানেল থেকে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য প্যানেল তৈরি করে রাখা হয়। পদ খালি হলে পর্যায়ক্রমে শূন্য পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় ওই প্যানেল থেকে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে আজ ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বেলা ৩টায় সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ জন, সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে এবারের পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম রয়েছে।

এবারের পদোন্নতির প্যানেলে কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তাঁদের পদোন্নতির বিষয়ে অবশ্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ফুলকোর্ট সভা। ফুলকোর্ট সভার মতামত অনুযায়ী পদোন্নতির বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

এবারের মতো এত বেশিসংখ্যক কর্মকর্তার নাম কখনো একসঙ্গে পদোন্নতির প্যানেলে পাঠানো হয়নি বলে জানিয়েছেন একাধিক বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা। এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সম্প্রতি ১৯১টি জেলা জজের পদ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত পৃথক করায় নতুন আদালত সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণেই একসঙ্গে এত বিচারকের পদোন্নতির জন্য প্যানেল করে রাখতে হচ্ছে।

এ নিয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইনও কিছুটা অনুরূপ জবাব দেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এবারের ফুলকোর্টে ২০২৬ সালের ক্যালেন্ডার ও পদোন্নতি-সংক্রান্ত কিছু বিষয় অনুমোদনের জন্য রয়েছে। ...আড়াই শর মতো নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাচের একসঙ্গে পদোন্নতির জন্য প্রস্তাব এসেছে। এ কারণে সংখ্যাটা বেশি মনে হচ্ছে। তবে এটি স্বাভাবিক।’

সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। এ কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির আদেশ জারি করা হয়। তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন দেওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে। এরপর পদ খালি হওয়া সাপেক্ষে সময়ে সময়ে আদেশ জারি করা হয়।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনেক সময় এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন বছরের পর বছর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: সমঝোতার জন্য দলগুলোকে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিল সরকার

  • দলগুলো আলোচনা করে এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে জানাবে।
  • অপেক্ষা শেষে সরকার নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৭: ৩০
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে গণভোট এবং নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) নিয়ে সৃষ্টি হওয়া সংকট সমাধানের ভার রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে। গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠক চলে প্রায় ২ ঘণ্টা। পরে বৈঠকের বিষয় নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি জানান, জুলাই সনদের গুরুত্ব প্রস্তাবে ও গণভোটের দিনক্ষণ নিয়ে দলগুলোর মতভিন্নতায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

সংকট সমাধানে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোগী দলগুলোকে নিজেদের উদ্যোগে বৈঠক করার আহ্বান জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। আসিফ নজরুল বলেন, ‘দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে (সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যে কোনো সুযোগ নেই, তা-ও আমাদের সবার বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।’

আদেশ কবে জারি হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেছে। তাঁদের কিছু সময় দিতে চায় সরকার। যেসব বিষয় উল্লেখ করেছি, সেগুলোতে তারা আলোচনা করে একমত হতে পারে কি না, আমরা দেখি।’

দলগুলো একমত না হলে সরকার কী করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করব, তারপর অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত (অ্যাক্ট) নেবে।’

রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আয়োজন সরকার করে দেবে না কি, এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘সরকারের আয়োজনে বহু আলোচনা হয়েছে। সরকার আর কোনো আয়োজন করতে যাচ্ছে না। ফ্যাসিবাদ- বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৫ বছর নিজেরা নিজেরা আলোচনা করে বহু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁরা অত্যন্ত প্রতিকূল সময়ে একসঙ্গে আন্দোলন করেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

এখন তাঁরা নিজ উদ্যোগে আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেবেন, এ প্রত্যাশা করছি। আমি কালকেই দেখলাম একটি দলের পক্ষ থেকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে—আমরা এটাকে স্বাগত জানাই।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ২৭ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে সুপারিশ জমা দেয়। যেখানে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির কথা বলা হয়। পাশাপাশি সনদ বাস্তবায়নে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটের আগে সরকার জাতীয় সনদের ভিত্তিতে একটি খসড়া বিল প্রস্তুত করবে, যা গণভোটে উপস্থাপন করা হবে। ফল ইতিবাচক হলে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা একই সঙ্গে এমপি ও সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁরা প্রথম অধিবেশন থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করবেন। নির্ধারিত সময় পার হলে বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে বিলের কথা বলা নেই। এক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়। তবে তারা প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার শেষ করবে এবং এরপর পরিষদের কার্যক্রম শেষ হবে। বাকি ধারাগুলো একই আছে। দুটি প্রস্তাবেই পরিষদের কার্যক্রম শেষ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে পিআরের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে।

বাস্তবায়নের সুপারিশে নোট অব ডিসেন্ট না থাকায় এর সমালোচনা করছে বিএনপি। দলটি আপত্তির বিষয়টি সনদে যুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছে, প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে আদেশ জারি করতে হবে, দলটি গণভোটের প্রশ্নে ছাড় দিতে চায়।

গত সপ্তাহে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধন করা হয়। সেখানে বলা হয়, জোটভুক্ত দলগুলোকে নিজ দলের প্রতীকেই ভোট করতে হবে। বিষয়টিতেও রয়েছে আপত্তি বিএনপির। এটি সংশোধনে দলের পক্ষ থেকে আইন উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। জামায়াত ও এনসিপি জোটভুক্ত দলগুলোকে নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার পক্ষে, যা নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে দেশের রাজনীতিতে নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

সংকট সমাধানে গত সপ্তাহ থেকে সরকারের চার উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ একাধিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। সেখানে আলোচনা হয়, পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি আপত্তি প্রত্যাহার করলেই তারা ভোটের দিন গণভোট মেনে নেবে জামায়াত। এনসিপিও পিআরে উচ্চকক্ষের দাবি করে আসছে। অন্যদিকে বিএনপির দাবি অনুযায়ী, আরপিও সংশোধন করবে সরকার। তবে পিআরে উচ্চকক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া সনদে থাকা বিএনপির বাকি আপত্তিগুলোর কী হবে, সেটি নিয়ে সমাধান হয়নি। কমিশনের দ্বিতীয় প্রস্তাব অনুযায়ী, ২৭০ দিনের সময়সীমা উঠিয়ে দিয়ে আদেশ জারির পরিকল্পনা সরকার নিয়েছিল। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। আদেশ জারির পর নতুন সংকট সৃষ্টির পথ বন্ধ করতে দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে এক সপ্তাহ সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এক্ষেত্রে দলগুলো একমত না হলে আগামী সপ্তাহে সরকার আদেশ জারি করবে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সালমানসহ ৩৪ জনের নামে দুদকের পাঁচ মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সালমান এফ রহমান। ফাইল ছবি
সালমান এফ রহমান। ফাইল ছবি

প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি, আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানসহ ৩৪ জনের নামে পৃথক পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি জানান কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধান শেষে গত বৃহস্পতিবার মামলা করার আবেদন করলে কমিশন তা অনুমোদন করে।

দুদকের মহাপরিচালক বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে জালিয়াতি, প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎসহ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মামলাগুলো করা হয়।

এই পাঁচ মামলার বাদী হলেন দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন রহমান ও সাজ্জাদ হোসেন, উপসহকারী পরিচালক রোমান উদ্দিন ও এলমান আহম্মদ অনি।

মামলাগুলোতে সালমান এফ রহমান ছাড়াও তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, সালমানের ভাই এ এস এফ রহমান, তাঁর ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানসহ তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১৮ জন ও রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের ১২ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন বেক্সিমকো লিমিটেডের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক, রীম এইচ শামসুদ্দোহা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান কাওসার চৌধুরী, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি আনোয়ারুল বাশার, পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজ লিমিটেডের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন, পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার, মোসা. নুসরাত হায়দার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন খান মজলিস, পরিচালক আব্দুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলসের এমডি মাহফুজুর রহমান খান, পরিচালক সৈয়দ তানভীর এলাহী, পিয়ারলেস গার্মেন্টসের এমডি ওয়াসীউর রহমান, পরিচালক রিজিয়া আক্তার।

জনতা ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে তাঁরা হলেন ব্যাংকটির সাবেক এমডি ও সিইও আবদুস ছালাম আজাদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (অব.) মো. আব্দুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. শহিদুল ইসলাম, ডিজিএম (অব.) মো. মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক মো. সালেহ আহমেদ, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (অব.) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম মোহাম্মদ শাজাহান, ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির ঢালী ও ব্যবস্থাপক শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশা।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পিয়ারলেস গার্মেন্টস ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস ১ কোটি ৮৯ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৯ ডলার, কাঁচপুর অ্যাপারেলস ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৪৪ ডলার, স্কাইনেট অ্যাপারেলস ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার এবং নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ দশমিক ৪৬ ডলারসহ মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ ডলার বা (প্রতি ডলার ৯০ টাকা হারে) ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার ৯৪ টাকা জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎ করে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

সালমানের বিরুদ্ধে আরও ২০ মামলা হচ্ছে

জনতা ব্যাংক থেকে ঋণের নামে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালমান এফ রহমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আরও ২০টি মামলা করা হবে বলে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন।

দুদকের ওই কর্মকর্তা জানান, এসব মামলায় জনতা ব্যাংক থেকে এলসি সুবিধা নেওয়ার নামে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হবে।

মামলাগুলোতে সায়ান ফজলুর রহমান, সোহেল ফশিউর রহমানের (এ এস এফ রহমান), আহমেদ শাহরিয়ার রহমান ও জনতা ব্যাংকের সাবেক এমডি আবদুস ছালামসহ প্রায় ৬০০ জনকে আসামি করা হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভার নির্দেশ ‎ইসির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভা আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ ‎সোমবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের সই করা এ-সংক্রান্ত চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ইসির সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের এর মধ্যে এ নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে গত ১৬ অক্টোবর মাসিক সমন্বয় সভায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারের ৩১টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে প্রাক-প্রস্তুতি সভা করেছে ইসি।

এর ধারাবাহিকতায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভোটের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা জানাতে তাঁদের সঙ্গেও নির্বাচনী প্রস্তুতিমূলক সভায় বসবে ইসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত